কুরআন ও হাদিস মানুষের জন্য পথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ
তুলনাহীন উপদেশ গ্রন্থ। আল্লাহ তাআলা এ শ্রেষ্ঠ
উপদেশ গ্রন্থ কুরআন নাজিল করেছেন সবচেয়ে
মর্যাদাবান পবিত্র রমজান মাসে। উদ্দেশ্য যাতে
মানুষ হেদায়েত লাভ করতে পারে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ
কুরআনের মর্মার্থ ও বিধানগুলো বর্ণনা এবং এর রহস্য
লক্ষ্য উদ্দেশ্য মানুষের কল্যাণে তুলে ধরেছেন।
যারা কুরআন এবং হাদিসের উপদেশগুলো গ্রহণ করবে
তাদের জন্যই পবিত্র এ রমজান মাসে রয়েছে অগণিত
অসংখ্য রহমত বরকত মাগফেরাত সর্বোপরি
জাহান্নাম থেকে নাজাত।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ঘোষিত মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় গুরুত্বপূর্ণ
কিছ উপদেশ তুলে ধরা হলো-
>> প্রিয়নবি বলেন, ‘কোনো মানুষ যদি পরিপূর্ণ
ঈমানদার হতে চায়, তবে সে যেন উত্তম চরিত্র অর্জন
করে।’ প্রিয়নবি ঘোষিত উত্তম চরিত্র অর্জনের
শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পবিত্র কুরআনুল কারিমের জ্ঞান
অর্জন করা। এ রমজানই কুরআনের জ্ঞান অর্জনের
সর্বশ্রেষ্ঠ সময়।
>> ‘যে বক্তি সবচেয়ে বড় আলেম হতে চায়, তার জন্য
তাকওয়া অর্জন করা আবশ্যক। কারণ আল্লাহর ভয়
ছাড়া আলেম হওয়া সম্ভব নয়।’ আল্লাহ তাআলা
কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন-
‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও
এক নারী হতে; পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি
বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে; যাতে তোমরা পরস্পরের
সঙ্গে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ওই
ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাবান যে
অধিক আল্লাহ ভীরু।’ আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং
সব খবর রাখেন। (সুরা হুজরাত : আয়াত ১৩)
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মানুষকে নির্লোভী হতে উপদেশ দিয়ে বলেন,
‘সবচেয়ে বেশি সম্মানিত হতে পারবে ওই ব্যক্তি, যে
মানুষের নিকট কোনো কিছু হাত পেতে চায় না।’
>> তিনি সব সময় আল্লাহ তাআলার স্মরণ করতে
উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর নিকট সর্বাধিক
সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে
আল্লাহর জিকির করে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে
অধিক পরিমাণে জিকির করার নির্দেশ দিয়ে
বলেন-
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক
পরিমাণে স্মরণ কর; এবং সকাল বিকাল আল্লাহর
পবিত্রতা বর্ণনা কর; তিনিই তোমাদের প্রতি রহম
করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও তোমাদেরকে
অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখানোর জন্য রহমতের
দোয়া করে। তিনি মুমিনদের প্রতি দয়ালু।’ (সুরা
আহযাব : আয়াত ৪১-৪৩)
>> যে ব্যক্তি সবসময় অজুর সহিত থাকে, আল্লাহ
তাআলা তার রিজিকের প্রশস্ততা বৃদ্ধি করে দেন।
>> আল্লাহ তাআলার নিকট ইবাদত বন্দেগি কবুলের
প্রথম শর্তই হলো হারাম থেকে বেঁচে থাকা।
প্রিয়নবি বলেন, ‘ওই ব্যক্তির সব দোয়া (চাওয়া-
পাওয়া) আল্লাহর দরবারে কবুল হয়, যে ব্যক্তি সব
সময় হারাম থেকে বেঁচে থাকে।’
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লাম
মুমিনদের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিয়ে বলেন,
‘কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলার দরবারে
গোনাহমুক্ত ভাবে উপস্থিত হওয়ার আমল হলো, স্ত্রী
সহবাসের পর দ্রুত পবিত্র হয়ে নেয়া।’
>> ‘পরকালে ওই ব্যক্তি আল্লাহর নূরসহ ওঠবে; যে
ব্যক্তির দ্বারা কখনও মানুষ অত্যাচিরত হবে না।’
>> তিনি বলেন, ‘আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা হবে
ওই ব্যক্তি যে, আল্লাহ তাআলার ফরজ বিধানের
প্রতি যথাযথ যত্নবান হবে।’
>> যে ব্যক্তি দুনিয়ার বিপদাপদে সবর বা ধৈর্য
ধারণ করবে, ওই ব্যক্তির দ্বারা জাহান্নামের আগুণ
নেভানো সম্ভব হবে।’
বিশেষ করে-
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
মানুষকে আল্লাহর রাগ থেকে হেফাজত থাকতে
তিনটি উপায় বর্ণনা করেছেন। আর তা হলো-
>> অতি গোপনে সাদকা তথা দান-অনুদান প্রদান
করা;
>> আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলা,
>> কোনো ভাবেই মানুষের ওপর রাগ বা অভিমান
করা যাবে না। এক কথায় সর্বাবস্থায় রাগ বর্জন
করা।
পরিশেষে…
উল্লেখিত নসিহতগুলো মানুষের বাস্তবজীবনে
প্রশিক্ষণ নেয়ার উত্তম মাস হলো পবিত্র রমজান
মাস। কারণ আল্লাহ তাআলা এ মাসেই মানুষের
হেদায়েত গ্রন্থ কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন।
যেন মানুষ সহজে কুরআনুল কারিমের হেদায়েত গ্রহণ
করতে পারে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ
উপদেশগুলোকে পরিপূর্ণভাবে দৈনন্দিন জীবনে
বাস্তবায়ন করে স্বার্থক ও সুন্দর জীবন গঠন করার
তাওফিক দান করুন। আমিন।