আশা করি ভালো আছেন সবাই ।
আজকের বিষয়
রসায়নের ইলেকট্রন বিন্যাস নির্ণয়ের ম্যাজিক পদ্ধতি ।
শুরু হয়ে গেছে আমাদের HSC পরীক্ষা । কিছুদিন পরেই আসছে রসায়ন পরীক্ষা । আমাদের যাদের এখনো ইলেকট্রন বিন্যাস নিয়ে সমস্যা আছে তারা মাত্র ৩০ মিনিট এই পোস্টের পিছনে ব্যয় করলে বিষয়টি একদম ক্লিয়ার হয়ে যাবে । তাছাড়া মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীদের জন্যও এটি অনেক উপকারি ।
সন্দেহ নেই রসায়নের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইলেকট্রন বিন্যাস । রসায়নের আরো কিছু বিষয়ের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এই ইলেকট্রন বিন্যাস । সেই ৮ম শ্রেণি থেকেই এর প্রাথমিক ধারণা শুরু হয় । এটি আসলে সহজ একটি টপিক হলেও অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এটি শিখতে শিখতে যাই তারপরেও HSC পরীক্ষায় আমরা অনেক সময় ভূল করে বসি কিংবা পরীক্ষার হলে এটি নিয়ে ভাবতে অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলি । ক্রমবিন্যাসটি মনে থাকেনা বা থাকলেও উল্টাপাল্টা লাগিয়ে মাথা নষ্ট করে ফেলি হলের ভিতরে । এবার একটু মাথা নষ্ট করা সেই ক্রমবিন্যাসটি দেখে নিই যেটি আমাদেরকে সবসময় মুখস্ত রাখতে হয়
উপরের ক্রমবিন্যাসটি আমরা মুখস্ত করি ঠিকই কিন্তু অনেকদিন রিভিশন না করলে ভূলে যাই বা উল্টাপাল্টা লাগিয়ে দেই ।
কেমন হয় যদি ক্রমবিন্যাসটি ভূলে গেলেও পরিক্ষার হলে ম্যাজিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে আমরা ইলেকট্রন বিন্যাসের এই বিন্যাসটি মনে করে ফেলতে পারি ।
তাহলে আমার সাথে একটি খাতা ও কলম নিয়ে লিখতে শুরু করুন ।
সিরিয়াল অনুযায়ী অরবিটাল ৪টি হলো s p d f
প্রতিটি অরবিটালের সর্বোচ্চ ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হলো
এবার দেখুন কিভাবে মুখস্ত না থাকলেও সঠিক বিন্যাসটি বের করবেন ।
প্রথমে একটি অরবিটাল মানে শুধু s কে দুইবার নিবেন । যেমন s s
এরপরে দুইটি অরবিটাল কে মানে p s কে দুইবার নিবেন । যেমন p s p s
তারপরে তিনটি অরবিটাল অর্থাত্ d p s কে দুইবার নিবেন মানে হলো d p s d p s
তারপর অবশেষে চারটি অরবিটাল কে একসাথে করে f d p s একবার নিলেই চলবে কারন এ পর্যন্ত গেলেই পর্যায় সারণির সব মৌলের বিন্যাস করা সম্ভব হবে ।
এবার যার যার ধারণ ক্ষমতা বসিয়ে দেই ।
এখন সব অরবিটালদেরকে রোল নং বসিয়ে দিব । প্রথমে সকল s কে রোল নং বসিয়ে দেই । যেহেতু চারটি অরবিটালের মধ্যে s প্রথমে থাকে তাই এখানে s এর রোল নং 1 থেকে শুরু করে প্রথম s কে 1 দ্বিতীয় s কে 2 এভাবে যত s আছে তাদেরকে নাম্বারিং করি ।
এরপর যতগুলি p আছে তাদের কে 2 থেকে শুরু করে নাম্বারিং করি ।
এরপর যতগুলি d আছে তাদেরকে 3 থেকে শুরু করে নাম্বারিং করি ।
এরপর যতগুলি f আছে তাদেরকে 4 থেকে শুরু করে নাম্বারিং করি ।
এভাবে অতি সহজে ক্রমটি বের করতে পারি মুখস্ত না করেই ।
এবার উদাহরন
Na(11) এর জন্য 1s2 2s2 2p6 3s2 পর্যন্ত গেলেই চলে কিন্তু এতে 12 টি হয়ে যায় যেহেতু সোডিয়ের পারমানবিক সংখ্যা 11 তাই শেষের অরবিটালে 3s2 না দিয়ে 3s1 দিব । এভাবে সবমৌলের শেষ অরবিটালে যতটি লাগবে ততটি দিতে হবে ।
ব্যতিক্রমী ইলেকট্রন বিন্যাস উপরের নিয়ম অনুযায়ী Cr(24)=1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 4s2 3d4 হওয়ার কথা কিন্তু এটি না হয়ে আসলে হবে 1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 4s1 3d5 কারন হলো d এর ধারন ক্ষমতা 10 হয়ত একে অর্ধপূর্ণ করে 5টি দিতে হবে না হলে পুরো 10 টি ই দিতে । তাই d4 & d9 হলো উত্তেজিত অবস্হা একে d5 & d10 করে দিতেই হবে তাহলে স্হায়িত্ব লাভ করবে । আর বাড়তি এই একটি ইলেকট্রন টি আগের জনের কাছ থেকে এনে দিতে হবে । এভাবে শেষে f8 হলে একে f7 করে দিতে হবে এক্ষেত্রে বাড়তি ইলেকট্রনটি পরের শেলে চলে যাবে । আবার f13 হলে f14 করে দিতে হবে ।
তবে বিশেষ কথা হলো পার্থক্য শুধু ১ হলেই কেবল আগের শেল থেকে ইলেকট্রন আনতে পাবরে কিংবা পরের শেলে চলে যেতে পারবে । পার্থক্য যদি দুই হয় তাহলে যা আছে তাই হবে । যেমন যদি d3 বা d8 হয় তাহলে কিন্তু দুইটি ইলেকট্রন আগের শেল থেকে সরিয়ে d5 বা d10 করা যাবেনা । আবার La(57) এর ক্ষেত্রে শেষের শেলগুলো 5p6 6s2 4f1 হওয়ার কথা কিন্তু তা না হয়ে হবে 5p6 6s2 4f0 5d1 এখানে 4f এর ইলেকট্রনটি 4f অতিক্রম করে 5d তে চলে যাবে । কারন এখানেও 4f1 হলো অস্থায়ী যদিও একে স্হায়ী করতে গিয়ে d এর করুন অবস্হা করে ফেললাম । কিন্তু বেশি ঝামেলার থেকে কম ঝামেলা করা ভালো । এই নীতি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । তুলনা করতে হবে আগের শেলের সাথে যে ঝামেলা কম হবে কোনটি করলে ।
বিঃ দ্রঃ :: উপরের ক্রম অনুযায়ী ইলেকট্রনগুলো প্রবেশ করবে কিন্তু লেখার সময় শুধু n মান অনুযায়ী সাজিয়ে লিখতে হবে । সেক্ষেত্রে ইলেকট্রন বিন্যাসের পরে 3d আগে এবং পরে 4s লিখতে হবে । যেমন Br(35)= 1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 4s2 3d10 4p5 বিন্যাসে ইলেকট্রন বন্টন করার পরে লিখতে হবে 1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d10 4s2 4p5
কিছু কথা
পরীক্ষায় হলে কিন্তু এত বড় পোস্ট লিখতে হবেনা ঝটপট s p d f বসিয়ে তাদের ধারন ক্ষমতা বসাবেন তারপর রোল বসাবেন । আর পরীক্ষায় বেশি বড়গুলো অত আসেনা পারমানবিক সংখ্যা ১ থেকে ৩৫ এর মধ্যেই আসে ।
ধন্যবাদ
ভালো থাকুন ।