টেলিকাইনোসিস এমনই একটা ক্ষমতা যার দ্বারা আপনি কোন বস্তু কিছু না ছুয়েই তাকে এক জায়গা হতে আরেক জায়গাতে স্থানান্তর করতে পারবেন; এই বিষয়টা আপনি রাস্তার ম্যাজিশিয়ান হতে ইউটিউবের টিউবিয়ান(নয়া শব্দ) পর্যন্ত দেখতে পাবেন যেগুলা সিংহভাগই ফেইক।
দুইটা কথা মনে রাখবেন:
(১) টেলিকাইনোসিস এমন কোন বিদ্যা নয় যা আপনি শো অফ করতে পারবেন।
(২) বিশ্বাস এমন একটা শক্তি যেটার মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভবে পরিণত করতে পারবেন।
আমি টেলিকাইনোসিস শিখতে চাই:
ধরুন সত্যি সত্যিই আপনি টেলিকাইনোসিস করতে পারেন, এখন তাহলে কি করবেন? নিশ্চয়ই আপনার বন্ধুদের মাঝে সেটা দেখিয়ে মজা করবেন নয়তো নিজের প্রয়োজনে সেটা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করবেন তাইতো??
তাহলে জেনে রাখুন “টেলিকাইনোসিস শিখতে হলে সবার আগে আপনাকে প্রমিস করতে হবে যে সেটা আপনি কাউকে বলতে বা জানাতে অথবা দেখাতে পারবেন না এবং সেটাকে শুধুমাত্র তখনই ব্যবহার করবেন যখন আপনার নিজের হাতে সেটা করার ক্ষমতা নেই”।
এখন দুইটা প্রশ্ন আসতে পারে যে (১) প্রমিস কার কাছে করবেন (২) প্রমিস কেন করবেন।
লেটস ডিসকাস ইট উইথ লজিক….যেহেতু টেলিকাইনোসিস একটি মনোবিদ্যা তাই প্রমিস আপনি আপনার নিজের মনের কাছেই করবেন। আর প্রমিস করবেন এই কারনে যে তাতে আপনার ঐ বিষয়ের প্রতি আরও বেশী ইনআরশিয়া বাড়বে। বিষয়টা একটু সহজভাবে পরীক্ষা করে দেখুন “আপনার ক্লাসে আপনার সবচেয়ে অপছন্দের মানুষটিকে মনে মনে ঘৃনা করুন এবং তার সাথে কথা না বলার প্রমিস করুন….আস্তে আস্তে দেখবেন তার সকল কাজ, সকল মুভমেন্ট, কথা বার্তা এমনকি হাটা চলাও আপনার কাছে খারাপ লাগবে” এটাই হলো সাইকোলজিক্যাল ইনআরশিয়া বা মানবিক জড়তা।
[বিষয়টা শুধু টেলিকাইনোসিসে সীমাবদ্ধ থাকবে কেন?আপনি যদি লাইফে ছ্যাকা খান এবং উক্ত মানুষটিকে ভুলতে চান তাহলে এটা কাজে দিতে পারে, তথাপি হিংসা, ঘৃনা এবং রাগ পুষে রাখা অনুচিত]।
টেলিকাইনোসিসের পেছনে আদতে কি কোন সায়েন্স আছে??
সায়েন্স তো আছেই তবে প্রমাণ নেই, তাইবলে প্রমান না থাকলেই যে সেটা মিথ্যা এমনটা সায়েন্সের বলার সাহস নেই…বিকজ সায়েন্স ইজ এ স্টুপিড ইনোসেন্স গার্ল; ঠিক সেই কারনেই সায়েন্সে বিভিন্ন থিউরি বা থিসিস পাবেন যেগুলা প্রমান ব্যতিরেকে মনে নেওয়া হয় এবং সেই থিসিসের ভিত্তিতে অন্যান্য ঘটনা ব্যাখা করা হয়। যেমন রাদারফোর্ডের থিউরি ততো পর্যন্তই সত্য ছিলো যতোক্ষন না পর্যন্ত নীলস বোর তার থিউরি পেশ করলেন…ইটস কোয়াইট রিলেটিভ ড্যুড!!!
যাই হউক আমরা কথা বলছিলাম টেলিকাইনোসিস নিয়ে সেখানে এমন পারমানবিক আলাপ সাজে না, আসুন আবার আসল আলোচনাতে ফিরি…..
আমাদের মাথার ভেতরে আছে ব্রেইন যেখানে আছে অগনিত নিউরন, এই নিউরনে চলে ইলেকট্রিক সিগন্যাল এনালাইসিস এরপর নিউরন সেই সিগন্যাল এনালাইসিস করে আপনার বডিতে ফিজিকাল কমান্ড প্রদান করে।
আচ্ছা কল্পনা করুন একটা কম্পিউটারের কি বোর্ডে আছে একটা ছোট্ট একটা চিপ আছে( মিয়া বিশ্বাস না হইলে কিবোর্ডের কাভার খুলে পিছের দিকে কালো একটা আইসি দেখতে পাবেন) সেই চিপে আছে অসংখ্য সিলিকন- জার্মেনিয়াম সেমিকন্ডাক্টর জংশন, এখন আপনি যদি কি বোর্ডে K টাইপ করেন তবে সেই চিপের ভেতরে থাকা অর্ধপরিবাহি সেই সিগন্যাল এনালাইসিস করে তারের মাধ্যমে সিপিইউতে পাঠাবে এবং সিপিইউ হতে সেটা মনিটের শো করবে তাইনা??
আচ্ছা কিবোর্ডে যদি তার না থাকতো তাহলে কি হতো…কি আর হতো এখন তো ওয়্যারলেস কিবোর্ড- মাউসও পাওয়া যায়!!!
সোজাসাপ্টা কথা আমি নিজেই টেলিকাইনোসিস করতে চাই!!
এটা সম্ভব নয় যে আপনি চাইলেন আর আমি আপনাকে টেলিকাইনোসিস ক্ষমতা দিয়ে দিলাম কেননা কার্যত আমার হাতে আপনার টেলিকাইনোসিস ক্ষমতা নেই; প্রত্যেকের মাথাতে তার ব্রেইন যেমন ইউনিক তেমনি টেলিকাইনোসিস নামক ক্ষমতাটাও ইউনিক তবে আল্লাহ সৃষ্টির সময়ই একেক জনের ভেতরে এই ক্ষমতা কিছু না কিছু দিয়েছেন। বস্তুত যারা প্রতিবদ্ধি তাদের ভেতর এই ক্ষমতার মাত্রা’টা একটু বেশী পরিমানেই দেখা যায় ঠিক যেমন একজন অন্ধ ব্যক্তির শ্রবন ক্ষমতা একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের তুলনায় বেশী হয় আরকি!
তবুও আসুন একটা পরীক্ষা করা যাক…
আবদ্ধ একটা অন্ধকার ঘরে একটা মোমবাতি জ্বালান, তারপর মোমের আগুনের দুইপাশে বৃদ্ধ এবং তর্জনী আঙ্গুল কাছাকাছি রাখুন তবে এমন নয় যে আগুনে হাত লাগাবেন কিংবা হাতে খুব বেশী উত্তাপ বা আচ লাগবে। এবার দম বন্ধ করে আঙ্গুল দুইটি এমনভাবে কাপান বা স্পন্দিত করুন যেন আপনি আগুনের ঐ শিখাটাকে নাচাচ্ছেন, দেখতে পাবেন আপনার হাতের কম্পনের সাথে আগুনের শিখটিও কাঁপছে….এবার একটু একটু দূরে সরিয়েও এটা ট্রাই করতে পারেন।
এখন আমাদের সন্দেহবাতিক মন এটার পিছনেও লজিক খুজবে….লজিক খোজা খারাপ নয় তবে সেটার যদি হয় শিক্ষার জন্য তবেই সাধুবাদ।
চলুন আমিই আয়না সত্যটা দেখিয়ে দিচ্ছি…….
(১) এটা কি ঐ মোমবাতির আলোর শিখার পাশে বাতাসে কম্পনের জন্য হয়েছে? (২) আলোর শক্তির বিকিরনের জন্য কি এমনটা হয়েছে?
উত্তর:(১) হ্যা মোমবাতির পাশে বাতাস ছিলো যেটা শিখার ঊর্ধ্ব বায়ুর চেয়ে অনেকটাই ভারী ও ঠান্ডা এবং রুমের স্বাভাবিক বায়ুর তুলনায় হালাকা ও উত্তপ্ত তবে এখানে আপনি মনের শক্তিকে হাতের মাধ্যমে বাতাসের অনবিক শক্তি মতোই স্থানান্তরিত করছেন…তাইবলে আবার বইলেন না যে ফু দিলেই তো মোমবাতি হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ হইয়্যা গেল!!!
(২) যদি এমনটাই শক্তির বিকিরনের কারনে শিখার ওমন নাড়াচাড়া হয়ে থাকে তবে আবার চিন্তা করুন আপনি নিজের হাত দিয়ে শক্তি নিয়ন্ত্রণ করছেন যেখানে কোন প্রকার স্পর্শ ছাড়াই আগুনকে সাম্যকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন।
আদতে এটি কিন্তু এক্সট্রিম টেলিকাইনোসিস নয় তবে টেলিকাইনোসিস শিক্ষা অর্জনের প্রাথমিক ইনস্পাইরেশন হিসেবে কাজ করবে।
টেলিকাইনোসিস এর কিছু নিগূঢ় কথা:
আপনি যদি সত্যি সত্যিই টেলিকাইনোসিস শিখতে চান তবে সেই শিক্ষার প্রতি এমনই জেদী হতে হবে যেন আপনি সেটা অর্জন না করা পর্যন্ত নিবৃত্ত হবেন না; এছাড়াও আপনাকে এমন মনে করতে হবে যেন আপনি নিজে একটি লম্বা কালো ছায়া মানব যে সকল সকল জায়গা হতে শক্তি নিজের মাঝে চুষে নিচ্ছে এবং স্টোরেজ করে রাখছে যাতে প্রয়োজনের সময় সে সেটা ইউটিলাইজ করতে পারে তথা ইমিটিং করতে পারে; এই ভাবনার পিছে যুক্তি হতে পারে কালো বস্তুর আলোক শক্তি তথা ফোটন প্যাকেট/প্যাকেজ শোষন করার ক্ষমতা যেখানে সাধারন আয়না কিংবা সাদা বস্তু সেটা রিফ্লেক্স উৎসের দিকে নিয়ত/অনিয়নত কোণে ফিরিয়ে দেয়। আর শক্তির এইরূপ নিজের মাঝে আত্মীয়করণ প্রক্রিয়ায় শক্তির নিত্যতা সূত্রাঅনুযায়ী আপনাকেও তো নিজের শরীর থেকে কিছুটা এনার্জি ছেড়ে দিতে হয় তাইনা?? ঠিক সেই কারনেই টেলিকাইনোসিস শিক্ষার শুরুতেই নিজের মনটাকে ফ্রেশ এবং শরীরটাকে এমনি নির্ভার করে দিতে বলা হয় যেন শরীর ও মন হতে শক্তি নির্গত হয় এইরূপ জাগতিক চিন্তা চেতনা হতে রিলিফ পাওয়ার মাধ্যমে।
আবার টেলিকাইনোসিস শিক্ষার ক্যান্ডেল কো-অর্ডিনেশনের সময় আয়না এই কারনেই সামনে রাখা হয় যেন অবশিষ্ট বিকিরিত শক্তি সামনের আয়নাতে আপতন কোণ= প্রতিফন কোণ= শূন্য ডিগ্রি হয়ে একই রেখা বরাবর শক্তির ট্রানজেকশন হয়ে থাকে; তথাপি বাকি বেশ কিছু শক্তি তথায় আলোক ফোটন প্যাকেজ পারিপার্শ্বিক অবস্থানে থেকে যায় সেগুলিকে এন্টোনিম এনার্জি চিহ্নিত করা হয়।
আমার কি টেলিকাইনোসিস শেখা উচিত?
সত্য বলতে আমাদের কারোরই টেলিকাইনোসিস নিয়ে এতোটা মাথা ঘামানো উচিত নয় বিশেষত আমরা মুসলিম তাই আমাদের সকল বিষয়ে আল্লাহর কাছেই আব্দার তথায় প্রার্থনা এনাফ। এই কথাটা কেন বললাম জানেন…কারন টেলিকাইনোসিস শিক্ষার মধ্যবর্তী স্থানে নিজেকে নিজের সামনে ডেভিল(ক্রিশ্চিয়ান বা ক্যাথলিক ধর্ম মতে এটা খারাপ শক্তির সর্বময় অধিকারী) রূপে কল্পনা করা এবং এক্সট্রিম পর্যায়ে নিজেকে God হিসেবে কল্পনা করা( আল্লাহু মাফ করুন) হয়ে থাকে যা স্পষ্টত শিরক; আসলে এইসব কল্পনা বা চিন্তা চেতনা আপনাকে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ বা উদ্বুদ্ধ করলেও এটার পেছনে থাকা নেগেটিভ ইফেক্ট আপনার ন্যচারাল লাইফ হ্যাম্পার করবে এটিই স্বাভাবিক
টেলিকাইনোসিস হতে আমি কি কোনভাবে উপকৃত হতে পারি?
হ্যা..যদিওবা আমি পারসোনালিটি কখনোই টেলিকাইনোসিস শিখতে রেকোমেন্ড করবো না তবুও টেলিকাইনোসিস শিক্ষার কিছু কিছু অভ্যাস হয়তো আপনার লাইফ’টাকে আমূল পাল্টে দিতে পারে…আপনি সুপার হিউম্যান হতে না পারলেও আপনি সুপার-ডুপার কিছু করে ফেলতে পারেন…লেটস মেক সামথিং এমাজিং!
(১) পড়ার টেবিল পড়তে বসার আগে এমন নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করুন যেন আপনি যতোসময় পড়বেন আপনার দৃষ্টিসীমা পড়ার টেবিলের ওপরেই থাকে এর বাইরে তাকাবেন না…মন চাইলেও তাকাবেন না; এমনটা ১/২ মাস করতে থাকুন এরপর দেখবেন একটা সময় কনসানট্রেশন চলে আসবে।
(২) লাল রুমে নিজেকে মোটিভেট করুন, কথাটা বোধহয় আপনার লাইফে এই প্রথন শুনলেন তাইনা?
(৩) মনে করুন আপনার আব্বু/আম্মু আপনাকে খুউব বকা দিচ্ছে এবং আপনার খুব খারাপ লাগছে তাহলে আপনি নিজের শরীর ও মনটা উপরের টেলিকাইনোসিসের মতো করেই নির্ভার করে দিন, দেখুন আপনার এক্সসাইটমেন্ট কমে যাবে।
বস্তুত আপনি যখন রাগকে কনট্রোল করতে পারবেন তখন সফলতা এমনিই আপনার পায়ে এসে চুমি দিবে।
শেষকথা:
আমাদের দৃষ্টিসীমানার বাইরে একই সমান্তরালে আছে আরেকটা জগত; দুই জগতের মাঝে আছে একটি দরজা সেই দরজার চাবি হলো শিক্ষা….সুতরাং জানতে হলে এবং জিনিয়াস হতে চাইলে জ্ঞান অর্জন করতে থাকুন।
ফেসবুকে আমি→নিশান আহম্মেদ নিয়ন
[টেলিকাইনোসিস নিয়ে এরপর আর কোন লেখা প্রকাশ করা হবেনা]
আল্লাহ হাফেজ