Site icon Trickbd.com

আসুন জেনে নিই, X-ray কিভাবে কাজ করে এবং X-ray আবিষ্কারের ইতিহাস। বিস্তারিত পোস্টে।

Unnamed


আসসালামু আলাইকুম।
সবাই কেমন আছেন?
আজকে অনেকদিন পর আবার নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। গত কালকে আমি ইনফ্রারেড সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম।আজ আমি X-ray সম্পর্কে আলোচনা করবো কারণ ইনফ্রারেডের সাথে X-ray জরিত। তো চলুন সরাসরি মূল কথায় চলে যায়।
বিস্তারিত পোস্টঃ আলোর কণা তত্ত্বকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিল ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট বা আলোর তড়িৎক্রিয়া। যেখানে ফোটন কণিকার আঘাতে ধাতুপৃষ্ঠ থেকে ইলেকট্রন বেরিয়ে আসে। অন্যভাবে বললে ফোটন কণিকা ইলেকট্রনকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়। এ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন আইনস্টাইন।

এরপরই যে প্রশ্নটি উঠতে শুরু করে তা হচ্ছে, বিপরীত আলোক তড়িৎক্রিয়া বা ইনভার্স ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট (inverse photoelectric effect) সম্ভব কিনা যেখানে ইলেকট্রনের গতিশক্তি ফোটনে রূপান্তরিত হবে। আসলে প্ল্যাঙ্ক এবং আইনস্টাইনের গবেষণার আগেই ইনভার্স ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট আবিষ্কৃত হয়েছিল কিন্তু সেটি ঠিক কিভাবে হচ্ছে বুঝে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। বলে নেয়া ভালো এই ইনভার্স ফটোইলেকট্রিক ইফেক্টই হচ্ছে রঞ্জন রশ্মি বা এক্স রে নির্গমনের ঘটনা।

যেভাবে আবিষ্কৃত হলঃ
১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী উইলিয়াম রন্টজেন লক্ষ্য করেন দ্রুতগতির ইলেকট্রন ধাতুপৃষ্ঠে আঘাত হানলে অদ্ভুত রকমের বিকিরণ সৃষ্টি হচ্ছে। এই রশ্মি বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত হয় না, সরলরেখায় চলে এবং ভেদন ক্ষমতা অনেক বেশি। কাঠ, চামড়াসহ অনেককিছু ভেদ করার ক্ষমতা রয়েছে অজানা এ রশ্মির। অজানা বলেই নাম দেয়া হয় এক্স-রে বা এক্স রশ্মি। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন এক্স রশ্মির প্রতিপ্রভা ধর্ম রয়েছে ফলে ফসফরে পড়লে দৃশ্যমান আলো উৎপন্ন হয় এবং ফটোগ্রাফিক প্লেটে দাগ সৃষ্টি করতে পারে। দ্রুতই এটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে এক্স-রে আসলে একধরনের তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ।

চার্জিত কণিকায় ত্বরণ ঘটলে সেখান থেকে তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ উৎপন্ন হবে এমন পূর্বাভাস তড়িৎচৌম্বক তত্ত্ব থেকে আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
রন্টজেনের পরীক্ষায় গতিশীল ইলেকট্রন ধাতুপৃষ্ঠে আঘাতের পর থেমে যায়। একে ত্বরণ (ঋণাত্মক ত্বরণ বা মন্দন) বলা যায়। এক্স-রশ্মি আবিষ্কারের এ ঘটনা নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছিল রন্টজেনকে।
এক্স-রে আসলে কিঃ
আলট্রাভায়োলেট রশ্মি এবং ইনফ্রারেড রশ্মির মত এক্স-রে’ও তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। এক্স-রে দু’ধরনের: সফট এক্স-রে এবং হার্ড এক্স-রে। তড়িৎ চুম্বকীয় বর্ণালীর আলট্রাভায়োলেট বা অতিবেগুনী রশ্মি এবং গামা রশ্মির মধ্যবর্তী এলাকার রশ্মিকে বলা হয় সফট এক্স-রে। এদের কম্পাংক 3 × 1016  হার্জ (Hz) থেকে 3 × 1018 হার্জ এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০ ন্যানো মিটার থেকে ১০০ পিকোমিটারের মধ্যে। এদিকে হার্ড এক্স-রে এর ক্ষেত্রে কম্পাংক 1018হার্জ থেকে 1020 হার্জ আর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০০ পিকোমিটার থেকে  ১ পিকোমিটার। আসলে তড়িৎচৌম্বক বর্ণালীতে হার্ড এক্স-রে আর গামা-রে এর অবস্থান একই জায়গায়। এক্ষেত্রে ইলেকট্রনের ত্বরণের ফলে সৃষ্ট রশ্মিকে বলা হয় এক্স-রে আর তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে উৎপন্ন রশ্মিকে বলা হয় গামা-রে বা গামা রশ্মি।

এক্স-রে টিউব যেভাবে কাজ করেঃ
একটি ফিলামেন্ট ক্যাথোডের কাজ করে। বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে সেটিকে উত্তপ্ত করা হলে তাপ-আয়নিক নি:সরণের মাধ্যমে ইলেকট্রন নির্গত হয়। এদিকে টিউবের অন্য প্রান্তে ভারী ধাতুর তৈরি একটি অ্যানোড থাকে। উচ্চমাত্রার বৈদ্যুতিক বিভব পার্থক্যের কারণে ইলেকট্রন অ্যানোডের দিকে ধাবিত হয়। ইলেকট্রনের চলার পথকে নির্বিঘ্ন করতে টিউবকে বায়ুশূন্য করা হয় আর অ্যানোড যেটি ফিলামেন্ট থেকে আসা ইলেকট্রনের জন্য টার্গেট হিসেবে কাজ করে সেটিকে একদিকে বাঁকা বা ঢালু অবস্থায় রাখা হয় যাতে টার্গেট থেকে বেরিয়ে আসা এক্স রশ্মি টিউব থেকে বাইরের দিকে চলে যেতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রনের গতিশক্তি এক্স-রে’তে রূপান্তরিত হয়।

কণাত্বরকের মাধ্যমে এক্স-রে উৎপাদনঃ
আগেই উল্লেখ করেছি ইলেকট্রনের ত্বরণের ফলে এক্স-রে উৎপন্ন হয়। কণাত্বরণ যন্ত্র বা পার্টিকেল এক্সিলারেটরে (particle accelerator) ইলেকট্রনের ত্বরণ সৃষ্টি করা সম্ভব। সেখানকার বৃত্তাকার পথে প্রচণ্ড বেগে ভ্রমণের সময় সৃষ্ট কৌণিক ত্বরণের কারণে প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি হলে এক্স-রে উৎপন্ন হয়।

→তো আজ এই পর্যন্তই। এই পোস্টা আপনাদের কেমন লাগল? জানাতে ভুলবেন না।
যদি কোনো কারণে আমাকে আপনাদের দরকার হয় তাহলে ফেসবুক অথবা ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন।
★ফেসবুকে আমাকে নক করুন এখানে ক্লিক করে
★অথবা আমাকে মেইল করুন।

E-mail: akashahmed5556@gmail.com
ধন্যবাদ।