কী হবে যদি আমরা পৃথিবীর ময়লা-আবর্জনা আগ্নেয়গিরির মধ্যে ফেলে দিই?
দারুন আইডিয়া তাই না? ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য আলাদা জায়গা রাখতে হবে না; জাঙ্ক ইয়ার্ডের জন্য বিরাট জায়গা বরাদ্দ করা লাগবে না।
আবর্জনা পোড়ানোর জন্য আলাদা করে আগুন জ্বালানোর কি দরকার? আগ্নেয়গিরিতে ফেলে দিলেই মামলা খতম! কিন্তু ব্যাপারটা আসলে মোটেও তা না।
এতে বেশ কিছু অসুবিধা হবে।
১. লাগবে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি
আবর্জনা পোড়ানোর জন্য আমাদের একটি বর্তমানে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি সনাক্ত করতে হবে, যার একটি লাভা হ্রদও রয়েছে। এই ধরনের আগ্নেয়গিরিগুলি বেশ বিরল।
২. প্রয়োজন হবে বিশাল বাজেটের
আবর্জনা পরিবহন করতে ব্যয় করতে হবে প্রচুর সময়, অর্থ এবং বিপুল পরিমাণ জ্বালানি। পুরো পৃথিবীর সমস্ত জায়গা থেকে আবর্জনা এনে আগ্নেয়গিরিতে ফেলতে হলে, কখনো লাগবে বিশালাকার ট্রাক, আবার কখনো বিরাট ক্রুজ শিপ। আর একেবারে শেষ পর্যায়ে আগ্নেয়গিরির উপরে গিয়ে ময়লা-আবর্জনাগুলো ঢালতে লাগবে বড়সড় বিমান।
৩. ক্ষতিকারক নির্গমন নিয়ন্ত্রণ
আধুনিক আবর্জনা পোড়ানোর কারখানাগুলো আগ্নেয়গিরির তুলনায় বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকারক নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করতে আরও দক্ষ। যেহেতু আগ্নেয়গিরি ক্ষতিকর নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, এর প্রভাব পরবে এটমোস্ফিয়ারে, মানে বায়ুমণ্ডলে।
৪. বিপদে পড়তে হবে অগলিত আবর্জনা নিয়ে
লাভার তাপমাত্রা সাধারণত ১,৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ২,২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়।
এটি খুব গরম হলেও এতে সবকিছু গলে যায় না। সুতরাং, অবশিষ্ট আবর্জনাগুলো কেবল ভেসে উঠবে এবং আগ্নেয়গিরিটি যখন বিস্ফোরিত হবে আবর্জনাগুলো আশেপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। ফলস্বরূপ মাটি দূষিত হবে।
৫. ঝামেলা করবে H2O
আবর্জনার সাথে লাভাতে আটকা পড়বে আবর্জনার জল। প্রচন্ড তাপে বাষ্প হয়ে এর মূল ভলিউমটি কয়েকগুণ প্রসারিত হবে। এই প্রসারিত বাষ্প লাভাকে চাপ দিবে। যার ফলে লাভা ফেটে ছোটখাটো বিস্ফোরণ তৈরি হবে।
ভাবছেন, আবর্জনার জল মানে?
এর মানে হলো, ধরুন, একটি বোতল ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং বোতলে একটু পানি ছিল। আগ্নেয়গিরিতে ফেলার পর বোতলের প্লাস্টিক তো ঠিকই গলে গেল। কিন্তু পানি? এই পানি বাষ্পীভূত হয়েই বাঁধাবে ঝামেলা।
শেষঅবধি, হ্রদ আছে এমন সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বেশ বিরল। আর বর্তমানে মোটামুটি সক্রিয়, একটুখানি ধোঁয়া ছাড়ে, মাঝেমধ্যে গর্জন করে এমন আগ্নেয়গিরিগুলো খুব সেন্সিটিভ।