আশা করছি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
গত পর্বের ধারাবাহিকতায় আজ আরো দুজন বিজ্ঞানীর জীবনী নিয়ে হাজির হলাম।
3.ইবনে সিনা (আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক)
ইবনে সিনা যিনি কঠোর জ্ঞান সাধনা ও অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে কাটিয়ে ছিলেন সারাটা জীবন, এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেও ধন-সম্পদ, ভোগ বিলাস ও প্রাচুর্যের মোহ যাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি, যিনি ছিলেন মুসলমানদের গৌরব। তিনি হলেন ইবনে সিনা। তাঁর আসল নাম আবু আলী আল্ হুসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে সিনা। তিনি সাধারণত ইবনে সিনা, বু-আলী সিনা এবং আবু আলী সিনা নামেই অধিক পরিচিত।
৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে তুর্কীস্থানের বিখ্যাত শহর বোখারার আফসানা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ এবং মাতার নাম সিতারা বিবি। পিতা আব্দুল্লাহ ছিলেন খোরাসানের শাসনকর্তা। জন্মের কিছু কাল পরই তিনি ইবনে সিনাকে বোখারায় নিয়ে আসেন এবং তাঁর লেখাপড়ার সুব্যবস্থা করেন। ছোট বেলা থেকেই তাঁর মোধ্যে লুকিয়ে ছিল অসামান্য মেধা ও প্রতিভা। মাত্র ১০ বছর বয়সেই তিনি পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্ত করে ফেলেন।
তাঁর তিন জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইসমাইল সূফী তাঁকে শিক্ষা দিতেন ধর্মতত্ত্ব, ফিকাহ্ শাস্ত্র তাফসীর; মাহমুদ মসসাহ শিক্ষা দিতেন গণিত শাস্ত্র এবং বিখ্যাত দার্শনিক আল্ না’ তেলী শিক্ষা দিতেন দর্শন, ন্যায় শাস্ত্র, জ্যামিতি, টলেমির আল্ মাজেস্ট, জওয়াহেরে মান্তেক প্রভৃতি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সকল জ্ঞান লাভ করে ফেলেন। বিখ্যাত দার্শনিক আল্ না’ তেলী’র এমন কোন জ্ঞান আর অবশিষ্ট ছিল না, যা তিনি ইবনে সিনাকে শিক্ষা দিতে পারবেন। এরপর তিনি ইবনে সিনাকে নিজের স্বাধীন মত গবেষণা দেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি চিকিৎসা বিদ্যায় ইন্দ্রজালের সৃষ্টি করে বাদশাহকে সুস্থ করে তোলেন। বাদশাহ কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তাঁর জন্যে রাজ দরবারের কুতুবখানা উন্মুক্ত করে দেন। মাত্র অল্প কয়েকদিনে তিনি অসীম ধৈর্য ও একাগ্রতার সাথে কুতুবখানার সব কিতাব মুখস্ত করে ফেলেন। জ্ঞান বিজ্ঞানের এমন কোন বিষয় বাকি ছিল না যা তিনি জানেন না।
মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতি, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যামিতি, ন্যায়শাস্ত্র, খোদতত্ত্ব, চিকিৎসা শাস্ত্র, কাব্য, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে অসীম জ্ঞানের অধিকারী হন। ২১ বছর বয়সে ‘আল মজমুয়া’ নামক একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন, যার মধ্যে গণিত শাস্ত্র ব্যতীত প্রায় সকল বিষয়াদি লিপিবদ্ধ করেছিলেন।
১০০১ খ্রিষ্টাব্দে পিতা আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। এ সময় তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। নেমে আসে তাঁর উপর রাজনৈতিক দুর্যোগ।
এর পরবর্তী জীবনে তার জীবনে সুখ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি,ফলে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে।তবে এসবের মধ্যেও তার জ্ঞানসাধনায় বিন্দুমাত্র বাধা পড়েনি।
বাবা মারা যাবার পর বু-আলী বুখারা ছেড়ে চলে যান ফুরজান এ। সেখানে কাওয়ারিজম শাহ তাঁকে স্বাগত জানান। সেখানে সাক্ষাৎ পান আল বেরুনীর। এরপর তিনি চলে যান ‘রে’ নামের এক জায়গায়। তারও পরে যান হামাজান-এ। সেখানেই তিনি লিখেন তার বিখ্যাত বই আল কানুন ফি-অলি তিব’। এরপর চলে যান ইস্পাহান-এ।
ইবনে সিনার প্রবাদসব বই আল-কানুন পাশ্চাত্যে পরিচিত ছিল কানুন’ নামে। এটি ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অবাক বিস্ময়। এটি এক মহা বিশ্বকোষ, যার বিষয় চিকিৎসা বিজ্ঞান। এ বিশ্বকোষে আছে ১০ লাখেরও বেশি শব্দ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যাবতীয় জ্ঞানের বিষয় এতে আলােচিত হয়। বিশেষ করে এসব জ্ঞানের সমাহার ঘটানাে হয় প্রাচীন মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের রেখে যাওয়া উৎস থেকে।
আল কানুন কিতাবটি ল্যাটিন,
ইংরেজি, হিব্রু প্রভৃতি ভাষায় অনুদিত
হয় এবং তৎকালীন ইউরোপের চিকিৎসা
বিদ্যালয় গুলোতে পাঠ্যপুস্তকে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আল কানুন ৫টি বিশাল খণ্ডে বিভক্ত যার পৃষ্ঠা
সংখ্যা ৪ লক্ষাধিক। কিতাবটিতে
শতাধিক জটিল রোগের কারণ, লক্ষণ,
পথ্যাদির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া
হয়।
আল-কানুন বইটি রাজীর ‘হাওই’ এবং আলী ইবনে আব্বা ‘মালিকী বইটিকেও উৎসকর্ষতায় ছাড়িয়ে যায়। এমনকি গ্যালনের কর্মসফলতাও অন্ধকারে তলিয়ে যায় আল-কানুনের সাফল্যে। পুরাে ছয় শতাব্দীব্যাপী আল-কানুন বিরাজ করেন শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা বিষয়ক বিশ্বকোষ হিসেবে। এই বিশ্বকোষ বিশ্ববাসীকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অতীত জ্ঞান সম্পর্কে অবহিত হওয়ার অনন্য এক সুযােগ করে দেয়। এই বইয়ে প্রতিফলিত হয়েছে ইবনে সিনার নানা মৌল অবদান।
তিনি ফার্মাকোলজি ও
ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের প্রভূত উন্নয়ন করেন। তবে তার মূল অবদান
ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে। তিনি
হলিস্টিক মেডিসিনের প্রণেতা।
যেখানে একই সাথে শারীরিক,
মানসিক এবং আত্মিক যোগসূত্রকে
বিবেচনায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি মানুষের চোখের সঠিক এনাটমি
বর্ণনা করেন। যক্ষ্মা রোগ নিয়ে
তিনি অভিমত দেন যে যক্ষ্মা একটি
ছোয়াচে রোগ। যা তার পরের পশ্চিমা
চিকিৎসকবৃন্দ প্রত্যাখ্যান করেন এবং
যা আরো পরে সঠিক বলে প্রমানিত হয়। তিনিই প্রথম মেনিনজাইটিস
রোগটি সনাক্ত করেন।
প্রকৃত পক্ষে
তিনিই আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের
জনক। আশ শেফা দর্শন শাস্ত্রের
আরেকটি অমূল্য গ্রন্থ, যা ২০ খণ্ডে
বিভক্ত ছিল। এতে ইবনে সিনা রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রানীতত্ত্ব ও
উদ্ভিদতত্ত্ব সহ যাবতীয় বিষয়কে
অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
পানি ও ভূমির মাধ্যেমে যে সকল রোগ
ছড়ায় তা তিনিই আবিষ্কার
করেছিলেন। তিনিই প্রথম
অ্যারিস্টটলের দর্শন ভালভাবে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু অ্যারিস্টটলের
কিছু কিছু মতবাদের সাথে তিনি একমত
হলেও সকল মতবাদের সাথে তিনি
একমত হতে পারেননি।
গণিত, পদার্থবিদ্যা ও সঙ্গীতে তার অবদান উজ্জ্বল ও দীপ্তিশীল। Casting out of nines’-এর ব্যাখ্যা দেন তিনি। বর্গ ও ঘন এর প্রয়ােগ-পরীক্ষাও করেন তিনি। পদার্থ বিদ্যায় শক্তি, তাপ, আলাে, বল, শূণ্যগর্ভ, অসীম ইত্যাদি ক্ষেত্রে রয়েছে তার উল্লেখযােগ্য অবদান। তিনিই প্রথম ঘােষণা করেন, সময় ও গতির মধ্যেকার আন্তঃক্রিয়ার বিষয়টি। তিনি গবেষণা করে গেছেন : আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ে। তিনি ব্যবহার করেছিলেন একটি এয়ার থার্মোমিটার বা বায়ু থার্মোমিটার।
সঙ্গীত জগতে তার অবদান সে সময়কার সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তিনি ফারাবি’র কিছু কাজের উন্নতি সাধন করেছিলেন। হারমনিক সিস্টেমে চতুর্থ এবং পঞ্চমটির দ্বিগুণ করা ছিল অগ্রগতির এক ধাপ। ইবনে সিনা লক্ষ করেন যখন n = ৪৫ তখন কানে আসা শব্দে সুর সময় থাকে না। সুর সমন্তয়ের সিরিজ উপস্থাপিত হয় (n+1/n সূত্রের মাধ্যমে।
তিনি মানুষের
কল্যাণ ও জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতি
ভ্রমণ করেছেন জ্ঞানের সন্ধানে।
জীবন সায়াহ্নে ফিরে আসেন তিনি হামাদানে। অতিরিক্ত পরিশ্রমের দরুণ আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হন। একদিন তাঁর এক ভৃত্য ঔষধের সাথে আফিম মিশিয়ে দেয়। আফিমের বিষক্রিয়ায় তাঁর জীবনী শক্তি শেষ হয়ে আসে। ১০৩৭ খ্রিস্টাব্দে মহাজ্ঞানী বিশ্ববিখ্যাত এ মনীষী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হামাদানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
4.ইবনুন নাফিস (রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থার সত্যিকারের আবিষ্কারক,রিসার্চ্যুটরি ফিজিওলজি এর জনক, পরীক্ষামূলক শারীরস্থান পরিচলনের অগ্রগামীএবং নাফিসিয়ান শারীরস্থান,শারীরবৃত্ত এর প্রতিষ্ঠাতা)
ইবনুন নাফিস ১২০৮ খৃস্টাব্দ মোতাবেক ৬০৭ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরাে নাম আলাউদ্দীন আবুল হাসান আলী ইবন আবুল হাজকম ইবনুন নাফিস আল কোরায়েশী আল মিসরী।
মানব দেহ ছিল ইবনে-আল-নাফিস এর কাছে এক অবাক বিস্ময়। তিনি ব্রতী ছিলেন এর রহস্য উদ্ঘাটনে। গভীরভাবে তিনি নিমগ্ন ছিলেন মানুষের শরীরের কাঠামাে ও পরিচালন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানার ব্যাপারে। তাঁর কঠোর শ্রম সাধনার ফলেই আমরা মানুষের ফুসফুসের সত্যিকার কাঠামাে সম্পর্কে জানতে পাই। তিনি প্রথম অনুভব করেন, মানুষের শরীরের ভেতরে অব্যাহতভাবে চলছে রক্ত আর বায়ু প্রবাহ। তার কথা ছিল, এই রক্ত আর বায়ুপ্রবাহের ফলে অবশ্যই স্নায়ু ব্যবস্থায় এক ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে। তিনি আসলে, এর মাধ্যমে আমাদের যথার্থ সত্যটিই জানান। তিনি প্রথম উপস্থাপন করেন ধমনী ব্যবস্থার সঠিক ব্যাখ্যা। এই ধমনী ব্যবস্থাই হৃৎপিণ্ডে রক্ত পৌছে দেয়।
তিনি ফুসফুস এবং হৃৎপিন্ডের এনাটমি নিয়ে আলােচনা করেন। তার মতে হৃৎপিন্ডে মাত্র দু’টো হৃৎপ্রকোষ্ঠ আছে। একটা থাকে রক্তে পরিপূর্ণ এবং এটা থাকে ডান দিকে আর অন্যটিতে থাকে জীবনতেজ, এটা রয়েকে বাম দিকে এ দুয়ের মধ্যে চলাচলের কোন পথই নেই।
যদি তা থাকত তাহলে রক্ত জীবনতেজের জায়গায় বয়ে গিয়ে সেটাকে নষ্ট করে ফেলতে। হৃৎপিন্ডের এনাটমি নিয়ে আলােচনা করতে গিয়ে ইবনুন নাফিস যুক্তি দেখান যে, ডান দিকের হৎ্প্রকোষ্ঠে কোন কার্যকরী চলন নেই এবং হপিন্ডকে মাংসপেশীই বলা হউক বা অন্য কিছুই বলা হউক তাতে কিছু আসে যায় না। বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ মতবাদটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞান সম্মত বলে গৃহীত হলেও ইবনুন নাফিসকে বিজ্ঞান জগতে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
ইবনুন নাফিস মানব দেহে রক্ত সঞ্চলন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালী, হৃৎপিণ্ড, শরীর, শিরা উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ প্রভৃতি সম্পর্কে গবেষণা করেন। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে তিনি যে কারণে অমর হয়ে আছেন তা হচ্ছে মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে তার মতবাদ।তিনি সর্বপ্রথম (উইলিয়াম হার্ভের ৩০০ বৎসর পূর্বে) রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতি সম্বন্ধে সঠিক বর্ণনা করেন।
শরেহ তসরিহে ইবনে সিনা’ নামক গ্রন্থে এ বিষয়ে বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি ফুসফুস এবং হৃদপিণ্ডের এনাটমি নিয়ে আলােচনা করেন (বিজ্ঞান মনীষা, পৃ. ১২৯)। বিভিন্ন রোগের ঔষধ সম্পর্কে ‘কিতাবুশ শামিল ফিল সিনায়াত তিব্বিয়া তাঁর গ্রন্থটিতে চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন কঠিন সমস্যার সমাধান প্রদান করেছেন তিনি।
ইবনে-আল-নাফিস ওষুধ বিজ্ঞানে নতুন দুয়ার খুলে দেন। তিনি লিখে গেছেন বেশ কিছু বই। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বইয়ের নাম : ‘আল-শামিল ফি আল তিব’ । এই বইটি ছিল ৩০০ খণ্ডের। সবগুলো মিলে কার্যত সৃষ্টি হতাে একটি বিশ্বকোষের। কিন্তু মৃত্যু হঠাৎ এসে তাকে ছিনিয়ে নিলো। ফলে সে স্বপ্ন আর সত্য হয়নি।
বইটির পাণ্ডুলিপি এখনাে দামেস্কে পাওয়া যায়। তিনি চক্ষু বিজ্ঞান নিয়ে লিখে গেছেন একটি পূর্ণাঙ্গ মৌলিক বই। এতে প্রকাশ করা হয়েছে তাঁর নিজস্ব গবেষণার বিষয়। সুখের কথা, বইটি এখনাে পাওয়া যায়। তাঁর একটি বই মুয়াজ-আল কানুন আর সবগুলােকে ছাপিয়ে যায়। তার আগের সময়ের দার্শনিকদের লেখা নিয়ে তিনি লিখেছেন বেশ কটি বই। এর মধ্যে রয়েছে হিপােক্রিটাসের কর্ম নিয়ে একটা বই।
ইবনে সিনার বিখ্যাত বই কানুন’ নিয়ে তিনি লিখেছেন বেশ কিছু খণ্ডে একটি বই। এই বইটিও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়। পুষ্টি সম্পর্কে রয়েছে তাঁর একটি আকর্ষণীয় বই। এই বইটির নাম : ‘কিতাব আল- মুখতার ফি-আল-আখিদিয়া। সে বইয়ে তিনি উপস্থাপন করেছেন একটি সূষম খাদ্য তালিকা।
এছাড়া হাদীস শাস্ত্রের উপর রয়েছে তার গুরুত্ব পূর্ণ সব রচনা। এ বিষয়ে গ্রন্থহুলাে হলো-আল মুখতার মিনাল আগকিয়া (মানবদেহে খাদ্যের প্রভাব সম্পর্কে), ‘আল কিতাবুল মুহাজ ফিল কহল’ (চক্ষুরােগ বিষয়ে), রিসালাত ফি মানাফিয়েল আদাল ইনসানিয়াত (মানবদেহের অঙ্গ প্রতঙ্গের কাজ বিষয়ে), মুখতাসারুল মানতেক, তরিকুল ফাসাহ’ শরহে মাসায়েল ফিত তিবু প্রভৃতি।
তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিসেবেই পৃথিবীব্যাপী পরিচিত। চিকিৎসাবিদ্যা ছাড়াও তিনি আইন, ধর্ম, সাহিত্য ও লজিক শাস্ত্রেও পাণ্ডিত্যের ছাপ রেখেছেন।
এ মহান বৈজ্ঞানিক ১২৮৮ খৃস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর মােতবেক ৬৮৭ হিজরী ২১ জিলকদ ইন্তেকাল করেন।
আল্লাহ হাফেজ।