কলমের ইতিহাস অনেক দিনের । ইংরেজিতে ‘পেন’ (pen) শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ পেন্না (penna) থেকে, যার অর্থ “পাখির পালক” । কারণ এক সময় লেখালেখি করার জন্য পালক ব্যবহার করা হতো । ভারতেও এক সময় ব্যবহার করা হতো খাগের কলম , পাখির পালক ইত্যাদি । মিশরীয়রা সম্ভবত কাঠির ডগায় তামার নিবের মতো কিছু একটা পরিয়ে লেখা আরম্ভ করেছিল !
আদিম অবস্থায় মানুষ যখন গুহার ভিতরে বাস করতো তখন গুহার ভিতরের দেওয়ালে কোন তীক্ষ জিনিস দিয়ে বিভিন্ন ছবি আকঁত বা হিজিবিজি আকঁতো । আবার অনেক সময় কোন পাতা রস বা পশুর রক্ত দিয়ে আকিবুকি করতো ।
তার অনেক পরে যখন সভ্যতার একটু একটু উন্মেষ ঘটলো তখন কাদামাটির পাটায় বা নরম পাথরে লিখা শুরু করে । এদের মাঝে চীনে উটের লোম দিয়ে তৈরি তুলির ব্যাবহার লক্ষ করা যায় ।
তবে প্রথমে মিশরীয়রা একটা কাঠির ডগায় তামার নিবের মত কিছু একটা পরিয়ে লেখালেখি শুরু করে । প্রায় হাজার চারের বছর আগে গ্রীসবাসীরা রীতিমত লিখা শুরু করে দেয় । এরা কলম তৈরি করতো হাতির দাঁত বা এই জাতীয় কিছু দিয়ে । যার নাম ছিল স্টাইলস (Stylus ) । সেজন্যই মূলত লেখালেখির ধরণকে বর্তমানে ” স্টাইল ” (Style) বলা হয় ।
আর মধ্যযুগে কাগজের আবিস্কারের পরে পালকের কলম দিয়ে লিখা প্রচলিত হয় ।
আধুনিক কলমের আবিষ্কার :
এরপরে অনেক দেশও ফাউন্টেন পেন তৈরি করা শুরু করে । আর বিংশ শতাব্দীতে তৈরি হয় বল পয়েন্ট পেন বা বল পেন (Ball point pen বা ball pen ) ।
মহাকাশের কলম আবিষ্কারের পিছনের ইতিহাস জানেন কি ?
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় আমির খানের সেই বিশেষ কলমের কথা সবারই নিশ্চয়ই মনে আছে ? প্রফেসর দাবি করতো যে ঐ কলম দিয়ে মহাশূন্যেও নির্বিঘ্নে লেখা যাবে । শুধু সিনেমাতেই নয়, আসলে বাস্তবেও এমন বিশেষ কলম আছে। ছবিতে দেখানো কলমটিই সেই বিশেষ মহাকাশের কলম !
প্রথম দিকে নাসা যখন মহাকাশযান পাঠানো আরম্ভ করলো, তখন বুঝলো যে বলপয়েন্ট কলম অভিকর্ষ ছাড়া কাজ করবে না। তখন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হলো, এমন এক কলম বানানোর জন্য যেটা যে কোনো পৃষ্ঠে, যে কোনো কোণে, শূন্যের নিচে থেকে শুরু করে ৩০০ ডিগ্রী সেণ্টিগ্রেড তাপমাত্রা পর্যন্ত কাজ করবে !!!
তো যায় হোক , অপর দিকে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কলমের গুরুত্ব একটি মাত্র পোস্টে লিখে শেষ করা সম্ভব নয় । আগামী পোস্টে কলম ও ইসলাম সম্পর্কে লিখবো ইনশাআল্লাহ । এই পর্বে মোটামুটি কলম সম্পর্কে কিছু তথ্য জানলাম এবং কলম আবিস্কারের ইতিহাস সম্পর্কে জানলাম । আগামী পর্বের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি এই পর্বের ।
ততদিন সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ।
আল্লাহাফেজ ।