Site icon Trickbd.com

জেনে নিন , কলম আবিষ্কারের ঘটনা ও মজার মজার কিছু তথ্য । এবং স্পেসে কলমের ব্যবহার । (পর্ব-১)

Unnamed

কলমের ইতিহাস অনেক দিনের । ইংরেজিতে ‘পেন’ (pen) শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ পেন্না (penna) থেকে, যার অর্থ “পাখির পালক” । কারণ এক সময় লেখালেখি করার জন্য পালক ব্যবহার করা হতো । ভারতেও এক সময় ব্যবহার করা হতো খাগের কলম , পাখির পালক ইত্যাদি । মিশরীয়রা সম্ভবত কাঠির ডগায় তামার নিবের মতো কিছু একটা পরিয়ে লেখা আরম্ভ করেছিল !

 

  কলমের আবিষ্কারঃ
আদিম অবস্থায় মানুষ যখন গুহার ভিতরে বাস করতো তখন গুহার ভিতরের দেওয়ালে কোন তীক্ষ জিনিস দিয়ে বিভিন্ন ছবি আকঁত বা হিজিবিজি আকঁতো । আবার অনেক সময় কোন পাতা রস বা পশুর রক্ত দিয়ে আকিবুকি করতো ।
তার অনেক পরে যখন সভ্যতার একটু একটু উন্মেষ ঘটলো তখন কাদামাটির পাটায় বা নরম পাথরে লিখা শুরু করে । এদের মাঝে চীনে উটের লোম দিয়ে তৈরি তুলির ব্যাবহার লক্ষ করা যায় ।

তবে প্রথমে মিশরীয়রা একটা কাঠির ডগায় তামার নিবের মত কিছু একটা পরিয়ে লেখালেখি শুরু করে । প্রায় হাজার চারের বছর আগে গ্রীসবাসীরা রীতিমত লিখা শুরু করে দেয় । এরা কলম তৈরি করতো হাতির দাঁত বা এই জাতীয় কিছু দিয়ে । যার নাম ছিল স্টাইলস (Stylus ) । সেজন্যই মূলত লেখালেখির ধরণকে বর্তমানে ” স্টাইল ” (Style) বলা হয় ।
আর মধ্যযুগে কাগজের আবিস্কারের পরে পালকের কলম দিয়ে লিখা প্রচলিত হয় ।

 

 

 

আধুনিক কলমের আবিষ্কার :
      ইংল্যান্ডে ১৭৮০ সালে নিব পরান কলমের প্রচলন ছিল কিন্তু তার প্রায় ৫০ বছর ধরে খুব একটা ব্যবহার হত না । ১৮৮৪ সালে ওয়াটারম্যান (L.E.Waterman ) আবিস্কার করেন ফাউন্টেন পেন । তবে এর নিব তৈরিতে প্রয়োজন হত ১৪ ক্যারেট সোনা । আর ডগা তৈরিতে লাগত ইরিডিয়াম ।

এরপরে অনেক দেশও ফাউন্টেন পেন তৈরি করা শুরু করে । আর বিংশ শতাব্দীতে তৈরি হয় বল পয়েন্ট পেন বা বল পেন (Ball point pen বা ball pen ) ।

  জন লাউড নামের একজন মার্কিনি চামড়া ব্যবসায়ী ব্যবসার জন্য চামড়ার ওপর লেখার জন্য বলপেন আবিষ্কার করেন। কিন্তু এটা দিয়ে চামড়ায় লেখা গেলেও কাগজের ওপর লেখা যেত না। প্রয়োজনের তাগিদে একজন সাধারণ মানুষও হয়ে ওঠে বিজ্ঞানী ! তাই এর প্রায় ৫০ বছর পরেই হাঙ্গেরির একজন সাংবাদিক তরল কালির পরিবর্তে কলমে ছাপাখানার শুকনো কালি ভরে দেন। তারপর কলমের নিবের মাথায় বসিয়ে দিলেন ছোট্ট একটি ঘুরন্ত বল। যাতে কালির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সহজে লেখার জন্য আধুনিক বলপয়েন্ট পেন আবিষ্কার হয়ে গেল।

 

 

মহাকাশের কলম আবিষ্কারের পিছনের ইতিহাস জানেন কি ?  

জ্বী হ্যাঁ মহাকাশেও কলমের প্রয়োজন পড়েছিল । তার আগে আসি , ভাইরাসের পেন মনে আছে ? এই ভাইরাস সেই ভাইরাস না ! থ্রি ইডিয়টস সিনেমার সেই প্রোফেসর – ভাইরাস( short form ) ।
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় আমির খানের সেই বিশেষ কলমের কথা সবারই নিশ্চয়ই মনে আছে ? প্রফেসর দাবি করতো যে ঐ কলম দিয়ে মহাশূন্যেও নির্বিঘ্নে লেখা যাবে । শুধু সিনেমাতেই নয়, আসলে বাস্তবেও এমন বিশেষ কলম আছে। ছবিতে দেখানো কলমটিই সেই বিশেষ মহাকাশের কলম !


প্রথম দিকে নাসা যখন মহাকাশযান পাঠানো আরম্ভ করলো, তখন বুঝলো যে বলপয়েন্ট কলম অভিকর্ষ ছাড়া কাজ করবে না। তখন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হলো, এমন এক কলম বানানোর জন্য যেটা যে কোনো পৃষ্ঠে, যে কোনো কোণে, শূন্যের নিচে থেকে শুরু করে ৩০০ ডিগ্রী সেণ্টিগ্রেড তাপমাত্রা পর্যন্ত কাজ করবে !!!


তো যায় হোক , অপর দিকে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে কলমের গুরুত্ব একটি মাত্র পোস্টে লিখে শেষ করা সম্ভব নয় । আগামী পোস্টে কলম ও ইসলাম সম্পর্কে লিখবো ইনশাআল্লাহ । এই পর্বে মোটামুটি কলম সম্পর্কে কিছু তথ্য জানলাম এবং কলম আবিস্কারের ইতিহাস সম্পর্কে জানলাম । আগামী পর্বের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি এই পর্বের ।
ততদিন সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ।

সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।
আল্লাহাফেজ ।