Who Am I: এই পর্যন্ত ইতিহাসের সেরা হ্যাকিং মুভির রিভিউ + লিংক
mehedi81402
? Movie: Who Am I ?
? IMDb R : 7.6/10
? Release : 25 Sep 2014
? প্রযুক্তিনির্ভর এই আধুনিক বিশ্বে সবকিছুই কতো সহজলভ্য হয়ে গেছে সেটা আমাদের আশেপাশে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রযুক্তির খারাপ দিকগুলো কতোটা ভয়ংকর তা নিয়ে কি চিন্তা করি কখনও আমরা❓ আপনার একান্ত ব্যক্তিগত কোনো তথ্য অথবা কোনো মূহুর্ত যদি আপনার অগোচরে বাহিরের কেউ জেনে যায় তাহলে বিষয়টা কেমন হবে একবার কল্পনা করেন❗ আমাদের আশেপাশে এরকম অনেকেই এই বিড়ম্বনার শিকার। আর এগুলো যারা করে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো একদল হ্যাকারগ্রুপ। ওরা আপনার অজান্তেই আপনার গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়ে যাবে যেটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। আর আমার কাছে হ্যাকার নির্ভর সেরা মুভি হলো (Who Am I – Kein System ist sicher)।
? এসব হ্যাকিং, প্রযুক্তি নির্ভর আর কম্পিউটার সম্পর্কিত মুভিগুলো আমার মতো অনেকের কাছে একটু কঠিন মনে হয়। কারন এগুলো সম্পর্কে এতো বেশি জ্ঞান নেই আমাদের৷ কিন্তু কঠিন কঠিন বিষয় সহজ করে বুঝিয়ে দেয়া আর সেটাকে আবার উপভোগ্য করে তুলতে কয়জন পারে বলেন❗ আমার মনে হয় সে জায়গায় ডিরেক্টর দশে দশ পেয়ে যাবেন৷
?? হালকা স্পয়লার ??
? কাহিনি সংক্ষেপ : মুভিতে কয়েকটা বিষয় লক্ষ্য করতে পারবেন আপনারা। প্রথমে একটা ছেলে যার বাবা ছোটবেলায় রেখে চলে গেছে তারপর মা আর নানির কাছে বড় হওয়া আস্তে আস্তে। এরপর মা জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়ে সুইসাইডকে আপন করে নেয়ার পর নানির কাছেই একাকিত্বকে সঙ্গী করে বড় হওয়া। তারপর হ্যাকিং দুনিয়ায় প্রবেশ ও ডার্কনেটের মতো অন্ধকার জগতে হারিয়ে যাওয়া। ভালো কিছু করে বেঁচে থাকা অথবা খারাপ কিছু করে আঘাত পাওয়া। এরপর টুইস্ট আর টুইস্ট।
♣ মুভির শুরুতেই দেখতে পাবেন বেনঞ্জামিন নামক ছেলেটি তার নিজের একাকিত্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে আপনাকে। একাকিত্ব থেকেই কম্পিউটারের প্রতি আসক্তি হয়ে যায় যার। খুঁটিনাটি ঘেঁটে ঘেঁটে হ্যাকিং এ পারদর্শী হয়ে যায় সে। পোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শিখে অল্প কয়েকদিনে সে দক্ষ হয়ে যায় যেকোনো কিছু হ্যাকিং এ। তারপর সে প্রবেশ করে ডার্কনেটে। একটা ইন্টারনেটের ভিতর আরেকটা ইন্টারনেটের মতো বিষয় হলো এই ডার্কনেট। হটাৎ ঘটনাক্রমে তার সাথে দেখা হয় আরও তিনজনের যারা একেকজন একেকটা কাজে দক্ষ। গঠন করে ফেলে ওদের গ্রুপ ক্লে। আর গ্রুপের সাথে করতে থাকে অনেক ক্রাইম। তবে ওরা ডার্কনেটের দুনিয়ার একজনকেই কিং মনে করে সে হলো এমআরএক্স।
এমআরএক্সের সামনে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণিত করার জন্য হ্যাকিং জিনিসটাকে খারাপ দিকে ব্যবহার করা শুরু হয় এরপর। জড়িয়ে পড়ে রাশিয়ান মাফিয়াদের চক্করে। আর তাদের পিছনে দক্ষ সাইবার ক্রাইম অফিসাররা তো সবসময় লেগে আছেই। সাইভার ক্রাইম যে কতোটা ভয়ানক সেটা দেখতে পাবেন মুভিতে। কোনো সিস্টেম সেফ নয় সেটাও বুঝতে পারবেন৷ মুভির শেষের দিকের টুইস্ট গুলো আপনার মস্তিষ্ককে নাড়িয়ে দিবে একদম। কি থেকে কি হচ্ছে সেটা ধরতে পুরো মনোযোগ স্ক্রিনে দিতে হবে।
♦ মুভির একটা কথা আমার কাছে বেস্ট লেগেছে, ” হ্যাকিং হলো অনেকটা ম্যাজিকের মতো, দুটোরই কাজ হলো সবাইকে ধোঁকা দেওয়া”।
? আমার কাছে মনে হয় জার্মান এই মুভি দিয়ে বিশ্বে ভালোই প্রভাব ফেলতে পেরেছে। আবার অনেকে মনে হয় Who Am i দিয়েই জার্মান ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেছেন।ডার্কনেট অনেক জটিল একটা বিষয়। স্বাভাবিকভাবে বললে অনেকেই এগুলো মাথায় ঢুকাতে পারবে না। কিন্তু খুব সুন্দর আর সহজ করে ডিরেক্টর তুলে ধরেছেন বিষয়গুলোকে। যারা হ্যাকিং নির্ভর মুভি পছন্দ করেন তাদের জন্য মাস্টওয়াচ মুভি এটা।
?? যদি পজিটিভ চিন্তা করেন ??
? একাকিত্ব আসলে অনেক খারাপ জিনিস। সমাজ থেকে আপনাকে একপেশে করে দিবে। নিজেকে অতিনগণ্য আর অপ্রয়োজনীয় বস্তুর মতো মনে হবে। কিন্তু এই একাকিত্ব কিন্তু অনেকের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। কারন একটা মানুষ একা থাকলেই পৃথিবীর বাহ্যিকতা নিয়ে ভাবতে পারে নতুন কোনো কিছু করার ট্রাই করতে পারে। অনেকে অনেক জটিল কোনো কিছু আবিষ্কার করে ফেলে আবার অনেকে ভালো কোনো এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে হাজির হয় সমাজে। বড় বড় উদ্ভাবন যারা করেছে তাদের অধিকাংশের প্রথম সাথী ছিলো এই একাকিত্ব।
? একাকিত্বময় দুনিয়ায় আপনার রাজ্যের রাজা শুধু আপনি। নিজের মতো সবকিছু করা যায়। যদি পজিটিভলি দেখি তাহলে মুভিতে বেনঞ্জামিন হ্যাকিং এর মতো কঠিন বিষয়গুলো কিন্তু একাকী ছিলো বলেই শিখেছে। সে একাকী থাকার কারনেই এদিকে আসক্ত হয়েছে। তবে সে সেটাকে ভালো কিছুতে ধরে রাখেনি। আপনি মুভিতে এই মেসেজটা পাবেন৷ ডার্কনেটের জটিল বিষয়গুলোকে সহজ ভাবে বুঝতে পারার জন্য মুভিটা একবার হলেও দেখা দরকার আপনার। যদিও বিস্তারিত এতো তথ্য নেই যে সবকিছু আপনি শিখে ফেলবেন। বিপদে পড়লে বন্ধুদের একা ফেলে না গিয়ে একসাথে সেটার মোকাবেলা করতে হয় সেটাও দেখতে পাবেন।
এই অসাধারণ মুভিটি দেখতে চাইলে নিচের লিংকে ক্লিক করে ডাউনলোড করেন নিন।