মোবাইল আমাদের জীবনের একটি অংশ। আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকি। এই স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় আমাদের মাথায় একটা প্রশ্ন আসে যে স্মার্টফোনের রেডিয়েশন আসলে কতটা ক্ষতিকর বা আদৌ ক্ষতিকর কিনা। অনেকে মনে করে স্মার্টফোনের রেডিয়েশন মানুষের ব্রেইন ক্যান্সার এবং ব্রেইন টিউমারের সৃষ্টি করে। প্রত্যেকটি স্মার্টফোনের রেডিয়েশন লিমিট করে দেওয়া হয় যাকে SAR(specific absorption rate) value বলে। এই লিমিট প্রত্যেকটি স্মার্টফোনে করে দেওয়া হয়।
যেহেতু এই রেডিয়েশন লিমিট করে দেওয়া হয় তাই অনেকেই এই রেডিয়েশনকে ক্ষতিকারক মনে করে। আসলে এটা মোটেও ক্ষতিকর নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর উপর বেশ কিছু study করেছে এবং বর্তমানে কিছু study চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ঘোষণা দিয়েছিল যে স্মার্টফোনের রেডিয়েশন আমাদের শরীরের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। এখন আমরা এই জিনিসটা কিভাবে বুঝব যে এটি ব্রেইন ক্যান্সারের জন্য দায়ী নয়? এটি বুঝার জন্য আমাদের ইতিহাসের দিকে তাকাতে হবে।
তোমরা খেয়াল করলে দেখবে যে সিগারেটের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে এবং এটির ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে ফুসফুসে ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও বাড়ছে। অন্যদিকে সেই ১৯৯০ সাল থেকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং এটির ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে কিন্তু ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে না। অর্থাৎ এটি স্বাভাবিক রয়েছে। এই ব্যাপারটা না হয় বুঝলাম। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন মোবাইলের রেডিয়েশন আমাদের শরীরের কেনো ক্ষতি করে না?
এটি বুঝতে হলে আগে রেডিয়েশন সম্পর্কে বুঝতে হবে। রেডিয়েশন দুই প্রকার। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বা Non Ionizing রেডিয়েশন এবং নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন বা Ionizing রেডিয়েশন। মোবাইলের রেডিয়েশন হচ্ছে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন। আমরা প্রতিনিয়ত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন দ্বারা exposed হয়ে থাকি। উদারণ স্বরূপ টিবি, রেডিও, মাইক্রোওভেন ইত্যাদি।
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন এর Wavelength অনেক লম্বা হয় এবং এর এনার্জি অনেক কম থাকে। তাই এটি যখন কোনো এটমে হিট করে তখন এটমে সামান্য কম্পন সৃষ্টি হয় কিন্তু এর ভিতরের ইলেকট্রন বাইরে বের হয়ে আসতে পারে না। অন্যদিকে নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন এর Wavelength অনেক চিকন হয় কিন্তু এর এনার্জি অনেক বেশি থাকে। তাই এটি কোনো এটমে হিট করলে এটম এর ভিতরের ইলেকট্রন কম্পনের ফলে ছিটকে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং এটম Ionized হয়ে যায়।
এই বিষয় নিয়েও বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা গবেষণা করছে এইটা বোঝার জন্য যে long term মোবাইল ব্যবহারের কারণে এই ধরনের রোগ হয় কিনা। তবে এর সম্ভাবনা খুবই কম। আশাকরি এই ব্যাপারটা তোমরা বুঝতে পেরেছ যে কেন মোবাইলের রেডিয়েশন আমাদের শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। তোমরা বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা বা World Health Organization(WHO) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এই ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে পারবে।
তো বন্ধুরা দেখা হবে পরবর্তী অন্য কোন টিউনে। সে পর্যন্ত সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের টিউন এখানেই শেষ করছি। সকলে সুস্থ থেকো।