আসসালামু আলাইকুম।
নিয়ে হাঁজির হয়েছি। আমি রেগুলার ট্রিকবিডি তে পোস্ট
পাবলিশ করি, এবং ভবিষ্যতেও করবো। কিন্তু একটা কথা হলো
আপনার যদি পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে লাইক দিয়ে পাশে
থাকবেন অথবা কোনো মন্তব্য বা পরমর্শের জন্য কমেন করে
জানাতে পাবেন। ……….………..…………….……………….……………… …….……….…………………………..………………………………………….……. …………………………………..………………..………………….……….…..
বিস্তারিত পোস্টঃ
বিস্তারিত পোস্টঃ
যাইহোক, আজকে যে বিষয় নিয়ে টিউন করবো তা হলো-
কিভাবে একটি কীবোর্ড দিয়েই যেকোনো এনকোডিং-এ নির্ভুলভাবে লিখতে পারবেন সে বিষয়ে।
ভুমিকা :
আজকাল যেকোনো এক্সপার্ট কম্পিউটার ব্যবহারকারীর কাছে যেটা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা হলো লেখালেখি, সেটা হতে পারে কোনো ব্লগ সাইটের জন্য অথবা ফেসবুকে লেখা পোস্ট দেয়ার জন্য অথবা হতে পারে সেটা ভিন্ন এনকোডিং এ লিখে গ্রাফিক্সে ব্যবহার করার জন্য।
বাংলা লেখালেখির জন্য যে বিষয়টা সবচে প্রথমে আসে তা হলো একটা ভালোমানের কীবোর্ড। কীবোর্ড ভালো না হলে লেখা কচ্চপের মত ধীরগতিতে চলে । অনেকসময় ভুল কারেকশন করতেই অনেক টাইম চলে যায়!
একটা কীবোর্ডেই যদি যেকোনো এনকোডিং-এ নির্ভুলভাবে লেখার ব্যবস্থা থাকতো তবে কেমন হতো?
এরকম একটা কীবোর্ড নিয়েই আজকে কথা হবে !
সেরা তিনটি কীবোর্ড নিয়ে আলোচনা:
- বিজয়
- অভ্র
- বর্ণ
বাংলাদেশে যে কীবোর্ডটি সবচে বেশি ব্যবহৃত হয় তা হলো “বিজয়”। বিজয়ের বিভিন্ন ভার্সন আছে, যেমন “বিজয় বাহান্ন”, “বিজয় একুশে”, “বিজয় একাত্তর”। বিজয় বাহান্ন এবং বিজয় একুশে কীবোর্ডে ক্লাসিক এনকোডিং ব্যবহার করে sutonnymj ফন্টে লেখা যায়। আর বিজয় একাত্তর ভার্সনে ক্লাসিক এবং একাত্তর এনকোডিং ব্যবহার করা যায়। তবে আমি বিজয় ব্যবহার করিনা বেশ কয়েকটা কারণে, তার মধ্যে দুইটা কারণ হলো এতে Ctrl+Alt+B এই বড় একটা শর্টকাট এর মাধ্যমে কীবোর্ড মোড সুইচ করতে হয়, যা আমার কাছে প্রচুর ঝামেলার মনে হয়।
আরেকটা কারণ হলো এই কীবোর্ড দিয়ে অনেকবার চেষ্টা করেও আমি “Nox” নামক সফটওয়্যার এ ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখতে ব্যর্থ হয়েছি। একটা ওয়ার্ডও লেখা যায়না এই কীবোর্ড দিয়ে। সেজন্য এই কীবোর্ডটা আমি শুরুতেই বাদ দিয়ে দিয়েছি, বেশিদিন ব্যবহার করিনি। তবে এর লে-আউট টা সবার মত আমারও প্রচুর ভালো লাগে।
সেজন্য পরবর্তীতে বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত এবং সাড়া জাগানো কীবোর্ড অভ্রতে ইউনিবিজয়ে বহুদিন টাইপ করেছি। এবং এতে “Ctrl+Space” -চাপলেই কীবোর্ড মোড পরিবর্তন হয় এই বিষয়টা প্রচুর ভালো লেগেছে। এবং এতে কীবোর্ড মোড পরিবর্তনও করা যায় অতি দ্রুত। তবে অভ্রতে লিখতে লিখতে সমস্য হয়ে গেলো এক জায়গায় এসে, গ্রাফিক্সে যখন কাজ করা শুরু করি তখন আনসিতে বেশ কয়েকটা যু্ক্তবর্ণ ঠিকমতো লেখা যায়না, যেমন:
1. স এবং ত যুক্ত হয়না, যেমন: বাস্তব 2. ম এবং ন যুক্ত হয়না, যেমন: নিম্ন 3. রু লেখা যায়না 4. ল এবং ল লেখা যায়না, যেমন: বিসমিল্লাহ 5. স এবং ন যুক্ত করা যায়না, যেমন: স্নেহ 6. ম এবং ল যুক্ত হয়না, যেমন: অম্ল 7. ন এবং ত যুক্ত হয়না, যেমন: অন্তর 8. প এবং ল যুক্ত হয়না, যেমন: প্লাবন 9. ব এবং ল যুক্ত হয়না, যেমন: ব্লেন্ডার 10. দ্রু, গ্রু, প্রু, ব্রু, শ্রু, ধ্রুবতারা এসব লেখা যায়না ইত্যাদি।
সমস্যার কারণ:
অভ্রতে যে আনসি এনকোডিংটা ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো বিজয় ২০০০ ভার্সন এর এনকোডিং থেকে নেয়া, কারণ পূর্বে এই এনকোডিং টা এবং ২০০০ ভার্সনের sutonnyjm ফন্টটা বেশ জনপ্রিয় ছিলো। আর এখন বিজয়ের আপডেট ভার্সনগুলোতে ফন্টের বেশকিছু পরিবর্তন করা হয়েছে, যার ফলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেক কনফিউশনেরও তৈরি হয়েছে। এমন কি বিজয় সফটওয়্যার অনেক সময় নিজেই নিজের ফন্টের সাথে কম্পাটিবল হয়না! বিজয় ইন্সটল দেয়া সত্বেও অনেকসময় অন্য ভার্সনের ফন্টে লেখা কোনো ফাইল খুললে ফন্টগুলো আনসি কোডেই দেখায়! বাংলায় দেখায়না! তখন অন্য আনসি ফন্ট দিয়ে এই ফাইলটা আবার ব্যবহরোপযোগী করতে হয়।
সমস্যার সমাধান:
অভ্রতে শুদ্ধভাবে লেখার জন্য বিজয়ের ২০০০ ভার্সনের ফন্টটি আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল করে নিয়ে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে এই ফন্টে লেখাগুলো পরবর্তীতে বিজয়ের অন্য ফন্টগুলোর সাথে কাজ করবেনা, উপরে উল্লেখিত ঐসব ভুল আসবে। সুতরাং সবসময় ২০০০ ভার্সনের ফন্ট দিয়েই ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে বর্তমানে যতগুলো আনসি আপডেট ফন্ট আছে সেগুলো ব্যবহারে কিঞ্চিত বঞ্চিত হতে পারেন।
তবে সমস্তরকমের ক্লাসিক আনসি ফন্টের জন্যও সমাধান দেয়া সম্ভব অবশ্য। তবে সেগুলো মেনুয়্যালি সলভ করতে হবে। আমি একটা পিডিএফ ফাইল তৈরি করেছি সেখানে সমস্ত সমস্যা এবং সমস্যার সমাধনও দেয়া হয়েছে। যুক্তবর্ণও দিয়েছি অনেকগুলো যেগুলোতে সমস্যা হয় অভ্র দিয়ে লিখতে।
দুইটা পদ্ধতিতে সমাধান দিয়েছি, আপনি যেকোনো একটা পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা পিডিএফ থেকে কপি পেস্ট করেও কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন!
তবে এইভাবে মেনুয়্যালি কাজ করতে সামান্য হলেও সময়ের অপচয় ঘটে, সেজন্য অভ্র কিছুদিন যাবৎ ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছি। তবে বাংলা ভাষা অর্থাৎ আমার আপনার মায়ের ভাষা বিনামূল্যে সবার মাঝে কিঠোর পরিশ্রম করেও বিনা পারিশ্রমিকে ছড়িয়ে দিয়েছে এই অভ্র, সুতরাং অভ্রের জন্য শ্রম দেয়া সকলকে আমার পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা জানাই।
বিশেষ করে জনাব মেহদী হাসান খান এবং তাবিন ইসলাম সিয়াম ভাইয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। যদিও অভ্রতে বর্তমানে বেশকিছু ইমপ্রুভমেন্ট দরকার বর্তমান সময়ের আনসি এনকোডিং-এর সাথে কম্পাটিবল করার জন্য, অথবা লে-আউট এডিটরের সাথে সিকোয়েন্স এবং কম্বিনেশন অপশন এড করে দেয়া হলেও মেনুয়ালি লে-আউট তৈরি করে সব সমস্যার সমাধান করা যেত, এমনকি একাত্তর এনকোডিং এও লেখা সম্ভব হতো। যাইহোক, তবুও অভ্র কীবোর্ডের প্রতি শুরু থেকে ভালোবাসা ছিলো, এখনো আছে, আর ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।
এবার আমার ব্যক্তিগত মতামতে সবচে সেরা কীবোর্ডের আলোচনা হপ্পে ভায়া! নড়েচড়ে বসেন সবাই!
আমার ব্যক্তিগত মতামতে সবচেয়ে সেরা কীবোর্ড হলো “বর্ণ”, ইংরেজীতে “Borno” ।
নিচে বর্ণ সম্পর্কে অবিস্তারিত অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হলো:
বর্ণ কীবোর্ড:
বর্ণ যিনি ডেভেলপ করেছেন তাঁর নাম হলো জনাব জায়েদ আহসান সা’দ। এই সুন্দর সফটওয়্যারটি প্রথম প্রকাশিত হয় ০৯ নভেন্বর ২০১৮ তে। এই কীবোর্ড ইউনিকোডের সর্বশেষ ভার্সন সমর্থন করে। আপনি এই কীবোর্ড ব্যহবার করে ফনেটিকে অর্থাৎ ইংরেজী টাইপ করে বাংলায় লিখেতে পারবেন অথবা ফিক্সট কীবোর্ড লে-আউট ব্যবহার করেও বাংলায় লিখতে পারবেন, যেমন ইউনিবিজয়, প্রভাত, ন্যাশনাল এক একটি ফিক্স কীবোর্ড লে-আউট। এতে আপনি বর্ণের নিজস্ব এনকোডিং ব্যবহার করে আনসিতেও লিখতে পারবেন।
বর্ণের দুইটি ফন্ট আছে “Bornomala” এবং “Bornopata” নামে, এই দুইটা ফন্টে আপনি একই সাথে ইংরেজি লিখতে পারবেন, ইউনিকোডে বাংলা লিখতে পারবেন এবং বর্ণ এনকোডিংও এই একই ফন্টে লিখতে পারবেন।
ফনেটিকে লেখার জন্য অভ্রের মতো এতেও অটো কম্প্লিটেশন অপশন রয়েছে যার মাধ্যমে মাত্র দুই তিনটা বর্ণ লিখেই আপনার কাঙ্খিত শব্দ লিখে ফেলতে পারবেন, এতে ১৫০০০০ ওয়ার্ড বা শব্দ যুক্ত করে দেয়া আছে। এই অটো কম্প্লিটেশনে কিছুটা ভিন্নতাও রয়েছে, তা হলো এই অটো কম্প্লিটেশন অপশন আপনি ফিক্সট কীবোর্ড লে-আউটে লেখার সময়ও ব্যবহার করতে পারবেন। কন্ট্রোল+স্পেস এর মাধ্যমে কিবোর্ড মোড পরিবর্তন করতে পারবেন, সেজন্য অপশন থেকে শর্টকার্ট হিসেবে কন্ট্রোল+স্পেস এনাবেল করে দিতে হবে। কন্ট্রোল+স্পেস শর্টকার্টটা আগে ছিলোনা, আমি ডেভেলপার এর সাথে মেইলে যোগাযোগ করে এই ফিচারের কথা বলার পর উনি সেদিনই শর্টকার্ট টা যুক্ত করে দিয়েছেন। যে কোনো সমস্যায় মেইলে দ্রুত রেসপন্সও করেন। আপনাদের যদি কোনো মতামত বা পরামর্শ থাকে তবে মেইলে উনাকে অবগত করতে পারেন এবং এই কীবোর্ডকে আরো উন্নয়নে সংযুক্ত হতে পারেন। বর্ণ কীবোর্ডের আরো বিশেষত্ব আছে… যার জন্য এই কীবোর্ডকে আমি সেরা হিসেবে দেখি…।
বর্ণ কীবোর্ডে এর সাথে লে-আউট এডিটর আছে, যেটার মাধ্যমে আপনি যেকোনো প্রকার লে-আউট তৈরি করে নিতে পারেন। ইউনিবিজয় লে-আউটও তৈরি করতে পারবেন অথবা বিজয়ের ক্লাসিক এনকোডিং-এ যে লে-আউট ব্যবহৃত হয় সেরকম লে-আউটও তৈরি করে নিতে পারবেন।
তবে আপনাদের এত কষ্ট করে আর লে-আউট তৈরি করতে হবেনা, আমি নিজেই ইউনিবিজয়ের মত লে-আউট তৈরি করে ফেলেছি। এবং এই লে-আউটে আরো সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
এই লে-আউটে দুইটা পদ্ধতির যে কোনো পদ্ধতিতে যে কোনো ফলা এবং রেফ ব্যবহার করতে পারবেন, যা বিজয় কীবোর্ডের লে-আউটের মাধ্যমে লেখা যায়না। বিজয়ের সকল সুবিধাতো আছেই, সাথে এই পদ্ধতিটা বোনাস ! + Sutonnymj সহ বিজয়ের সকল ফন্ট ব্যবহার করতে পারবেন ?। ইউনিবিজয়ের মতো করে চারটা লে-আউট তৈরি করে ফেলেছি সবগুলোতেই এই সুবিধা যুক্ত করা আছে।
লে-আউট এবং তার শর্টকার্টগুলো :
1. UNICODE BANGLA : Ctrl+Alt+U 2. CLASSIC ENCODING : Ctrl+Alt+Z 3 EKATTOR ENCODING : Ctrl+Alt+E 4. BORNO ALL ENCODING : Ctrl+Alt+A
এগুলো হলো লে-আউটে সুইচ করার শর্টকার্ট, বর্ণ কীবোর্ড অন অফ করার জন্য কন্ট্রোল+স্পেস ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ অন থাকলে কাঙ্খিত লে-আউট কাজ করবে এবং অফ থাকলে ইংরেজী লেখা যাবে।
সর্বশেষ আপডেট বর্ণ কীবোর্ড ডাউনলোড করতে বর্ণের অফিসিয়াল সাইট ভিজিট করুন-
সেইসাথে “Bornopata” ফন্টটিও এই পেজ থেকেই ডাউনলোড করে নিন- কীবোর্ড ইন্সটল শেষে নিজের নামে লাইসেন্স করে নিতে পারবেন।
বর্ণ অফিসিয়াল ডাউনলোড লিংক :
Layout -এর ডাউনলোড লিংক ( Google Drive Link) :
ধন্যবাদ।