Site icon Trickbd.com

[ALERT] আর্নিং সাইট? নাকি স্ক্যাম? স্ক্যামারদের হতে সতর্ক হোন এবং নিজের তথ্য গোপন রাখুন!

Unnamed

স্ক্যামিং একটা খুবই প্রচলিত ক্রাইম। কম-বেশি সব প্লাটফর্মেই স্ক্যামার থাকে। ট্রিকবিডিতেও আছে আমি নিশ্চিত। কিন্তু কারো উপর আঙ্গুল তুলছি না বা তাদের কে উদ্দেশ্য করে কিছু বলছি না। আমি বলতেছি তাদের উদ্দেশ্য করে যারা তাদের নিজেদের অজান্তেই স্ক্যামিং এর শিকার হচ্ছে।

নিচে আর্নিং সাইট বিষয়ক কয়েকটা স্ক্যাম তুলে ধরলাম যেগুলা থেকে নিরাপদ থাকার উপায় সম্পর্কে লিখবো।

বিঃদ্রঃ নিচে যেগুলা দিয়েছি সে সব ধরণের স্ক্যামের শিকার হয়েছিলাম আমি এক কালে। তাই নিজ অভিজ্ঞতায় স্ক্যাম বলতে যা বুঝি সেটাই লিখেছি।


১. উইথড্র স্ক্যামঃ


প্রথম কথা হলো টাকা উপার্জন করা এতো সহজ না যে আপনার কোনো উচ্চশিক্ষা, ডিগ্রী ও চাকরী ছাড়া আপনি প্রতিদিন ঘরে শুয়ে বসে ১/২ ঘন্টা ভিডিও দেখে, এপ ডাউনলোড করে, রেফার করে কাজ করলেন আর মাস শেষে
আপনার হাতে মোটা অংকের টাকা চলে আসলো।
ভুল ধারণা আগে পরিষ্কার করুন।
আপনি আপনার মেন্টর কে ১০টাকা উপার্জন করে দিলেই, তাহলেই সে আপনাকে পারিশ্রমিক হিসেবে ২টাকা দিবে। এভাবেই মুলত বিষয়টা কাজ করে।
এখন কেউ আপনাকে বলল যে ১০টা ভিডিও দেখলে ৫টাকা পাবেন আর ১০০টাকা হলে পেমেন্ট। এতে আপনি হিসাব করলেন যে ১০০টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে ২০০টা ভিডিও দেখতে হবে। সেই হিসেবে আপনি কাজ করতে গেলেন, কিন্তু দেখলেন শর্ত হলো দিনে ৫টির বেশি এড দেখা যাবে না। এভাবে আপনাকে ২০০টি এড দেখতে ৪০দিন সময় লাগবে। আপনি তাও এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না, কারণ ৫টা এড দেখতে আপনার মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে। এভাবে আপনি কাজ শুরু করলেন। এর মধ্যে অনেকেই ধৈর্য হারিয়ে হাল ছেড়ে দিবে এবং আপনার থেকে পাওয়া লাভ টা কিন্তু এডমিনের ই হলো। একদল টিকে থাকবে যে এতোদূর এসেছি হাল ছাড়বোনা। এমনটা জেনেই স্ক্যামাররা কাজ করে৷ রিভার্স সাইকোলজি র সাধারণ একটআ ব্যাবহার এটা৷ যাইহোক, আর এই ৪০ দিন সময়ের মধ্যে এডমিন আরো লোক গোছাবে। এখন দেখলেন যে হুট করে ৩০ দিনের মাথায় উইথড্র বাড়িয়ে দেয়া হলো বা সাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। ফলাফল আপনাদের সময় নষ্ট আর মালিকের লাভ।

মুলত এটা আর্নিং সাইট ই, তবে এডমিন এর জন্য। আপনার জন্য নয়। ?

এর থেকে বাচার উপায়- “অল্প পরিশ্রমে টাকা ইনকামের ভুত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন”।


২. ইনভেস্টিং প্রোগ্রাম বা মাইনিং সাইট স্ক্যামঃ


ইনভেস্টিং এর নেশাগ্রস্থ একদল মানুষ আমাদের আশেপাশেই থাকে। তাদের এই নেশা আর লোভ ই মুলত খায় তাদের।
এই ধরণের স্ক্যামে সাধারণ স্ক্যামার রা মোটা অংকের টাকা ব্যয় করে মেম্বারদের উপর।
ধরুন,
আমার ৫ জন বন্ধু আছে এবং আমরা ৫ জন ই ট্রিকবিডির অথোর। এখন আমরা যেটা করবো তা হলো প্রত্যেকে ১০০০০টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা এক জায়গা করবো এবং তার কিছু অংশ দিয়ে একটা সাইট খুললাম ইনভেস্ট সাইট। যেখানে রেফার বোনাস বা নতুন আইডি খোলার বোনাস হিসেবে এমন এমাউন্ট রাখবো যা উইথড্র এমাউন্ট এর থেকে একটু কম। এখন একজন অথোর ট্রিকবিডিতে প্রথমে এই সাইট নিয়ে পোস্ট করলাম, অন্য ৩ জন আমার এই সাইট ব্যবহার করে রিভিউ দিবে আর একজন এই সাইট নিয়ে কু-মন্তব্য করবে এবং এই টপিকটা মুটামুটি ট্রিকবিডির ট্রেন্ড হয়ে উঠবে। সবাই কৌতুহুলে হোক বা যেভাবেই হোক ১০০০জন মেম্বার পেয়ে গেলাম আমরা। তার মধ্যে ১০০ জন ধরলাম ইনভেস্ট করতে প্রস্তুত আর বাকি ৯০০জন মন বদলে ফেলবে বা অন্য কোনো কারণে হাল ছেড়ে দিবে, কিন্তু এতেও আমাদের যে লাভ টা হয়েছে তা হলো সদস্য পাওয়া।
প্রথমে এই ১০০ জনের কয়েকজন খোদার নামে ৯৯টাকার ইনভেস্ট করে ফেলল এবং ২ দিনে তার উইথড্র এমাউন্ট ৫০০ পৌছানোর সাথে সাথে সে উইথড্র করতে গেল এবং আমরা তাকে তা দিবো নিজ পকেট থেকে।
এটা হলো বিশ্বাসের পিলার গড়া।
এরপর যখন সবাই ইনভেস্ট শুরু করবে এবং আমরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনভেস্টর পেয়ে যাবো তখন ই সব মুছে চলে যাবো।
ব্যাস, এরপর কয়েকদিন আলোচনা হবে, অথোর পদ থেকে আমাকে বাতিল করা হবে। আমার ৪ বন্ধুর ৩ জন পোস্ট এর মাধ্যমে শোক জানাবে আর একজন বলবে যে আমি আগে এর বিরুদ্ধে ছিলাম।
এরপর সবাই ভুলে যাবে, নতুন স্ক্যামার এর আগমন ঘটবে। রিপিটেডলি হবে এবং হয়ে আসছে বিভিন্ন প্লাটফর্মে।

এর থেকে বাচার উপায় – গ্লোবাল ইনভেস্ট সাইট ও মাইনিং সাইট বিশ্বস্ত, সেখানে ইনভেস্ট করুন, কিন্তু সেখানে আপনি লাভগ্লস-পরিশ্রম সব উপলব্ধি করতে পারবেন। সব কথার শেষ কথা “বিনা শ্রমে আয়ের স্বপ্ন বাদ দিন”।


৩. একাউন্ট স্ক্যাম বা রেফারাল স্ক্যামঃ


এ ধরনের স্ক্যামে স্ক্যামার, ধরুন আমি। আমি এখানে একটি সাইট বা এপ লঞ্চ করবো এবং সেটা রেফার করলে প্রতি রেফারে ৫ টাকা এবং ৫০০ টাকা হলে উইথড্র।

এখন আমি এমন ভাবে বিষয়টা প্রচার করলাম যে অনেকে কাজে লেগে পড়লো। এখানে আমি উথড্র এর টাকা তাদের কেই দিবো। কিন্তু আমার লাভ কী? উত্তর হলো- তথ্য।
১০০ টা জেনুইন ইউজার আইডির কম পক্ষে ২৫টা আইডির পাসওয়ার্ড অন্যান্য প্লাটফর্মের সাথে জড়িত। অনেক মানুষ ই এমন যে একই পাসওয়ার্ড ভিন্ন ভিন্ন সাইটে ব্যবহার করে যেন ভুলে না যায়। আর ওয়াপমাস্টার রা ভালো ভাবেই জানেন ইউজার ডাটা পাওয়া কোনো বিষয় না।
এখন হয়তো জিমেইল, ফেসবুক, ইন্সটা বা অন্যান্য কোনো সাইটের পাসওয়ার্ড আপনার অজান্তেই আপনি আমায় হস্তান্তর করে দিলেন। সবচেয়ে বড় কথা যদি আপনার ফোনের গুগল একাউন্ট এর পাসওয়ার্ড যদি আমার কাছে আসে, তাহলে কত পরিমাণ তথ্য লিক হবে ধারনা করুন আর সেটার ব্ল্যাকমেইলের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আপনারটা আপ্নিই বুঝবেন।

বাচার উপায়- ” রেফার সাইটে বা যেকোনো আর্নিং সাইটে আইডি খুলুন নকল তথ্য দিয়ে এবং অন্য পাসওয়ার্ড দিয়ে আর NID এর তথ্য ভুলেও দিবেন না”।

এ পর্যন্তই।

ইদানিং কিছু কমেন্ট আর পোস্ট দেখে আমার পুরাতন কিছু অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়লো যেখানে আমি নিজেই বেশ কয়েককবার এ ধরনের স্ক্যামের শিকার হয়েছি, তাই আপনাদের সতর্ক করতে পোস্ট করলাম।