Site icon Trickbd.com

NID কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার সঠিক উপায় | Nid Card Signature Change

জাতীয় পরিচয়পত্রের স্বাক্ষর পরিবর্তন

আসসালামালাইকুম, কি খবর সবার আজকে আমি আপনাদেরকে দেখাবো কিভাবে আপনার এনআইডি কার্ডের স্বাক্ষর চেঞ্জ করবেন। আমরা অনেকেই ভোটার আইডি কার্ডের ছবি এবং বিভিন্ন তথ্য চেঞ্জ করে থাকি কিন্তু আজকে আমি আপনাদেরকে দেখাবো কিভাবে খুব সহজে ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করবেন।

আসলে ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার তেমন কোন প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অনেকেই চান তাদের ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষরটি পরিবর্তন করে সুন্দর পরিমার্জিত একটি স্বাক্ষর ব্যবহার করতে। তো যারা স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই পোস্ট।

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে হয় এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে। তো চলুন শুরু করা যাক,,,

সর্বপ্রথম ২০০৭-০৮ সালের দিকে যখন জাতীয় পরিচয়পত্রের নতুন আবেদন প্রক্রিয়ার শুরু হয় তখন সাদাকালো কাগজের উপর মার্কার দিয়ে স্বাক্ষর করা হতো এবং পরবর্তীতে সেটি ক্রপ করে কেটে লো রেজুলেশনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডে স্বাক্ষর স্থাপন করা হতো। যার ফলে এনআইডি কার্ডে স্বাক্ষর অনেকটা ঘোলাটে এবং অস্পষ্ট হতো।

কিন্তু বর্তমানে নতুন ভোটার নিবন্ধন আধুনিকায়নের ফলে ডিজিটাল সিস্টেমে সিগনেচার নেওয়া হচ্ছে। আর কারণে স্বাক্ষর অনেকটা সুন্দর এবং স্পষ্ট হয়। অনেকেই তাদের পূর্বের স্বাক্ষর নিয়ে অসন্তুষ্ট যার ফলে তারা স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চায়।

কেন ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করবেন?

২০০৭ সালের দিকে যারা স্বাক্ষর করেছিলেন তারা না বুঝেই হয়তো তাদের পুরা নাম এবং ভুল নাম লিখে স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের স্বাক্ষর ছোট এবং পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

প্রথম দিকে অনেকেই স্টুডেন্ট ছিলেন ফলে তারা ইনিশিয়াল স্বাক্ষরের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা না বুঝে পুরা নাম লিখে স্বাক্ষর করেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে কর্মজীবনে প্রবেশ করার ফলে বিভিন্ন জায়গায় ছোট স্বাক্ষর করেন যার ফলে পূর্বের স্বাক্ষরের সঙ্গে বর্তমানের স্বাক্ষরের অনেকটা অসামঞ্জস্য থেকে যায়।

এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় একজনের স্বাক্ষর অন্যজনের আইডি কার্ডে চলে এসেছে। যার ফলে স্বাক্ষর পরিবর্তন করার খুবই প্রয়োজন পড়ে।অনেক সময় দেখা যায় একজনের স্বাক্ষর অন্যজনের আইডি কার্ডে চলে এসেছে। যার ফলে স্বাক্ষর পরিবর্তন করার খুবই প্রয়োজন পড়ে।

আবার আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্টে যদি একরকম স্বাক্ষর থাকে আবার এনআইডি কার্ডে আরেক রকম স্বাক্ষর থাকে তাহলে অনেক সময় বিরম্বনার শিকার হতে হয়।

অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার পদ্ধতিঃ

ভোটার আইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন এবং স্বাক্ষর পরিবর্তন একই পদ্ধতিতে করা হয়। আপনি যদি এনআইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করতে পারেন তাহলে স্বাক্ষর সহজে পরিবর্তন করতে পারবেন।

তবে অনলাইনে মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করা যায় না। এক্ষেত্রে আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনার স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে হবে।

এনআইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে এনআইডি কার্ড সংশোধনের ফরম ২ সংগ্রহ করতে হবে। তবে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ফরমটি ডাউনলোড করে পূরণ করতে পারেন।

?️ অনলাইনে আবেদন ফরম ২

আবেদন ফরমটি পূরণ করার পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলোঃ

◾আপনার এনআইডি কার্ডের স্বাক্ষর পরিবর্তন করার জন্য ১ নং ক্রমিকের (ক) তে আবেদনকারীর নাম লিখতে হবে।

◾১ নং ক্রমিকের (খ) তে আবেদনকারীর NID Card নম্বর লিখুন।

◾২ নং ক্রমিকে কিছু লেখার প্রয়োজন নেই ফাঁকা রাখলেও চলবে।

◾৩ নং ক্রমিকে যে টেবিল রয়েছে তার (ঝ) ঘরে দ্বিতীয় কলামে বর্তমানে আপনার এনআইডি কার্ডে যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি লিখুন এবং (ঝ) রো এ তৃতীয় কলামে বর্তমান যে স্বাক্ষর স্থাপন করতে চান তা লিখুন।

উক্ত ফরমে আবেদন করে স্বাক্ষরের স্থানে আবেদনকারীর স্বাক্ষর এবং টিপসই দিন। তার নিচে আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর লিখুন।

টেবিলের চতুর্থ কলামে আবেদনকারীন সত্যতা যাচাই করার জন্য যে ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে চান সেগুলো লিখুন অথবা না লেখলে কেটে দিলেও কোন সমস্যা নেই।

জাতীয় পরিচয় পত্রে স্বাক্ষর পরিবর্তনের জন্য কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে?

❖ নমুনা স্বাক্ষরের কপি: বর্তমানে আপনি যে স্বাক্ষর টি ব্যবহার করতে চাচ্ছেন সেই স্বাক্ষরটি ইতিপূর্বে কোথায় ব্যবহার করেছেন তার একটি ডকুমেন্ট এর ফটোকপি লাগবে। ধরুন আপনি বর্তমানে যে স্বাক্ষরটি দিতে চাচ্ছেন সেটি যদি আপনার পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সে থেকে থাকে তাহলে তার একটি ফটোকপি সংযুক্ত করুন।

❖ এনআইডি কার্ডের কপি: আবেদনের সাথে অবশ্যই আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

❖ পে স্লিপের কপি: বিকাশ অথবা রকেট একাউন্ট দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রের স্বাক্ষর পরিবর্তনের জন্য যে বিল প্রদান করতে হয় সেই বিলের স্লিপের একটি ফটোকপি প্রিন্ট করে দিবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রের স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে কত টাকা লাগে কিভাবে টাকা জমা দিবেন?

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে চাইলে ২৩০ টাকা অনলাইনে মাধ্যমে জমা দিতে হবে। এজন্য প্রথমে আপনার মোবাইলের বিকাশ অথবা রকেট অ্যাপসে লগইন করতে হবে।

এরপর এখান থেকে Bil pay নামে একটি অপশন পাবেন সেখানে ঢুকতে হবে সেখানে ঢোকার পর nid service লেখে সার্চ দিলে একটি অপশন আসবে। এখানে আপনার এনআইডি কার্ডের নম্বরটি লিখে বিলটি পেমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে। বিল পেমেন্ট করার পরে আবেদন ফরমে ৫ নম্বর অংশে, ফি জমা দানের রশিদ হিসেবে লিখতে পারেন- বিকাশ Transaction ID লিখে দিতে পারেন।

উল্লেখ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সংক্রান্ত কোন ফি এখন আর চালানের মাধ্যমে জমা দেয়া যায় না।

উপরোক্ত সকল কার্যক্রম সম্পূর্ন করে সকল ডকুমেন্ট আপনার নিকটস্থ এনআইডি কার্ডের অফিসে জমা দিবেন কাগজপত্র জমা দিলে তারা আপনাকে একটি পে-স্লিপ দিবে সেটি সংরক্ষণ করুন পরবর্তীতে এটি কাজে লাগবে।

আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হলেই সরাসরি বাসায় চলে যাবেন না। দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে নিন আরো কোন কিছু করতে হবে কিনা বা কবে আপনার সিগনেচার আপডেট করা হবে। এসকল বিষয়ে তাদের কাছ থেকে শুনে নিন এবং পরবর্তীতে আপনাকে আবারো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে কিনা সেটি নিশ্চিত হন।

দায়িত্বরত কর্মকর্তা যদি সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখে সবকিছু ঠিক মনে হয় তাহলে আপনাকে তাদের সার্ভার স্টেশনে পাঠিয়ে দিবে সেখানে গিয়ে ডিজিটাল সিগনেচার পেডের উপর আপনার নতুন স্বাক্ষর সুন্দর করে লিখুন।

সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে দুই থেকে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনার সিগনেচারে আপডেট করা হবে। তবে এক্ষেত্রে একটু সময় বেশিও লাগতে পারে।

◾ Visit: https://www.Minpoints.Com

আশা করি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে অনলাইনে বা ঘরে বসে এই জাতীয় পরিচয় পত্রের স্বাক্ষর সংশোধন করা যায়। যদি বুঝতে কোথাও সমস্যা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।