আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধু’রা, কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা কাগজের আবিষ্কার ও তার বিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। চলুন শুরু করি….√
কাগজের আবিষ্কারক কে?
প্রথম যিনি কাগজ আবিষ্কার করেছিলেন তার নাম হলো ‘কাই লুন’,, তিনি চিন দেশের অধিবাসী ছিলেন।
- কবে নাগাদ কাগজ আবিষ্কার হয়?
খ্রীস্টপূর্ব ২০০০ বছর আগে থেকে হান রাজার আমলে কাগজের ব্যবহার শুরু হয়েছিলো। কিন্তু চিনারা তাদের কাগজ আবিষ্কারের কথা গোপন রেখেছি বলে বহু সময় পর্যন্ত কেও কাগজ আবিষ্কার সম্পর্কে কোনো কিছু জানতে পারেনি। - কাগজ আবিষ্কারের পূর্বে কিসের মধ্যে লেখালেখি হতো?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে কাই লুন নামক ব্যক্তি সর্বপ্রথম কাগজের আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু কাই লুনের আগে লেখালেখির কাজে কোন কাগজ ব্যবহার করেছিল? হ্যাঁ লেখালেখির কাজে ২ টি পদ্ধতিতে তারা ব্যবহার করতো।
- তখন কিসের মধ্যে লেখালেখি করা হতো?
একটি পদ্ধতি হলো রেশম কাপড়। তবে সমস্যা হলো রেশম কাপড়ে লিখতে গেলে অনেক ব্যয় বহন করতে হতো। এই কাপড় তখন খুব দামি ছিলো। - লেখার কাজে বাঁশের ব্যবহারঃ
রেশমের দাম খুব বেশি হওয়ায় তখন তারা অন্য উপায় ভাবতে শুরু করে। এক সময় সেখানে বাঁশ গাছের গায়ে আঁকাআকি করতে লাগলো। এসময় রেশম ছেড়ে বাঁশের প্রচলন শুরু হয়ে গেলো। তারপরে যাবতীয় লেখার কাজে বাঁশ ব্যবহার করা হতো।
- কাগজের প্রচলন শুরুর আগেঃ
বাঁশ অনেক ভারী হওয়ার কারণে কাই লুন বাঁশ গাছের গায়ে লিখতে পারছিলোনা। আস্তে আস্তে বাঁশের প্রচলনও বিলুপ্ত হয়ে যেতে থাকলো। কারণ কাই লুন অন্য চিন্তা করছেন, কিভাবে এটাকে পাতলা ও ওজনে হালকা করা যায়। - প্রাকৃতিক উপায়ে কাগজ বানানোঃ
কাই লুন লেখালেখির জন্য এমন কিছু আবিষ্কার করতে চাচ্ছেন যেটা হালকা ও সস্তা হবে। এভাবে ভাবতে ভাবতে একসময় তিনি কাগজ তৈরী করে ফেলেন। কাগজ তৈরীর উপাদান হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছিলেন তুঁত,ভাং পাতা ও গাছের ছালসহ আরো কিছু পদার্থ। কাই লুনের বানানো কাগজগুলো ছিলো খুব চকচকে, মসৃন এবং কোমল। এই কাগজের ব্যবহার ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিলো। - আরো এক প্রকারের কাগজ তৈরী পদ্ধতিঃ
চীন দেশের মানুষেরা তখন বিভিন্ন ধরনের গাছপালা ব্যবহার করে কাগজ তৈরী করতো। বিভিন্ন গাছ থেকে সংগ্রহ করা কাঁচামাল পানিতে ভিজিয়ে মিক্সার বানিয়ে তাতে আরো কিছু উপাদান মিলিয়ে এক প্রকার তরল পদার্থ বানাতো। পরে তা রোদে শুকাতে দেওয়া হতো। শুকানো হয়ে গেলে সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের ভালো মানের কাগজ পাওয়া যেতো। - বিশ্বের প্রথম পেপার মিলঃ
১৮১২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে প্রথম পেপার মিল স্হাপন করা হয়েছিলো। যদিও কাজদের চাহিদা আশানুরূপ কম তাকার কারণে পেপার মিলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৮৭০ সালে কলকাতার বালিগন্জে নতুন করে আরেকটি পেপার মিল স্হাপন করা হয়। তখন থেকে বর্তমান কালেও বারতের পশ্চিমবঙ্গকে প্রধান কাগজ উৎপাদনকারী হিসেবে গন্য করা হয়। ভারতের সেই পেপার মিলের বয়স ১০০ বছরেরও বেশি - বিভিন্ন দেশে কাগজ তৈরী এবং তার বিস্তৃতিঃ
আমেরিকার অধিবাসী চার্লস ফেনেরটি এবং ফ্রেডরিক গোটলব কেলার একটি মেশিন আবিষ্কার করেছে,যেটা দিয়ে কাঠ থেকে তন্তু আলাদা করা যেতো। সেই তন্তু থেকে কাগজ তৈরী করতো তারা। ১৬৯০ সালে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া-তে কাগজ তৈরির কারখানা চালুকরা হয়।
সাদা কাগজের বিস্তার ও প্রয়োজনীয়তাঃ
আমেরিকান বাসিন্দা চার্লস ফেনেরটি সাদা কাগজ বানানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি নিজের কাগজ তৈরীর কারখানায় কাঠের তন্তুকে শুদ্ধিকরণ করে সাদা কাগজ বানান। পরবর্তীতে এই সাদা কাগজ তৈরীর পদ্ধতি এবং ব্যবহার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমান বিশ্বে কাগজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং সকল ক্ষেত্রে কাগজের ব্যবহার বেড়েছে। আমাদের দৈনন্দিন কাজে এমনকি অফিস আদালত সহ এমন কিছু বাকি নেই যেখানে কাগজের ব্যবহার নেই,
ধন্যবাদ সবাইকে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য। পরে আবার দেখা হবো অন্য কোনো আর্টিকেলে। সবাই ভালো থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ…!!