Site icon Trickbd.com

ওয়েবসাইট তৈরি করবেন ভাবছেন? জেনেনিন ওয়েবসাইট তৈরির আগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। না জানলে ভুল করবেন পদে পদে

দ্রুততম সময়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম ওয়েবসাইট । উন্নত বিশ্বে অনেক আগেই ওয়েবসাইট তৈরির সংস্কৃতি চালু হলেও আমাদের দেশে সম্প্রতি এ ধারা শুরু হয়েছে। ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে বেশ কিছু নিয়ম মানতে হয়।

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য মূলত তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। প্রথমে নিজের পছন্দসই একটি ডোমেইন নাম কেনা, এরপর তথ্যগুলো অনলাইনে আপলোড করে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য হোস্টিং কেনা এবং সর্বশেষ ব্রাউজার পড়তে পারে এমন ভাষায় কনটেন্টগুলোকে তুলে ধরা।

ডোমেইন নাম নির্বাচন 

ধরুন, কেউ আপনার অফিসের তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে চায়, তবে তাকে আপনার অফিসের ওয়েবসাইটটির ঠিকানা ধরে আসতে হবে। আর ওয়েবসাইটের এ ঠিকানাই মূলত আপনার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ডোমেইন নাম। সাধারণত প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে ডোমেইন কেনা হয়। যেমন ট্রিকবিডির ওয়েবসাইটের ঠিকানা : https://www.trickbd.com। এ নামই একটি ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম। ডোমেইন নামের মধ্যেও বেশ কিছু ভাগ রয়েছে। যেমন: বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ডোমেইন নাম সাধারণত .কম দিয়ে শেষ হয় (যেমন http://www.yahoo.com)। আবার সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট সাধারণত ডট ওআরজি (যেমন : http://www.undp.org) দিয়ে শেষ হয়। তবে ইন্টারনেটে ডটকম ডোমেইনই সবচেয়ে জনপ্রিয়। ডোমেইন কেনার সময় ব্যবহারকারীর পছন্দই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ডোমেইন নাম প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা উচিত। এতে ভিজিটররা প্রতিষ্ঠানের নাম মনে রেখেই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবে।

ওয়েব হোস্টিং

ডোমেইন নাম কেনার পরের বিষয়টি হচ্ছে ‘হোস্টিং’ । হোস্টিং মূলত অনলাইনে তথ্য আপলোড করার সার্ভার। ওয়েবসাইটের ডোমেইন নামকে যদি একটি অফিসের ঠিকানা হিসেবে ধরা হয়, তবে হোস্টিং হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের অফিস বিল্ডিং, রুম, আসবাবপত্র ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের মালিক যত মেগাবাইট ওয়েব হোস্টিং কিনবেন তিনি ততটুক তথ্যই আপলোড করতে পারবেন। অনেকটাই এ রকম – একজন ব্যবসায়ী যত বড় গোডাউন ভাড়া নিচ্ছেন ততটুকুই কেবল মালামাল রাখার সুযোগ পাচ্ছেন।

ওয়েবসাইট ডিজাইন

যাঁরা কম বাজেটের মধ্যে ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাঁরা ওয়ার্ডপ্রেস এবং জুমলাসহ ওপেনসোর্স কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সিএমএস ব্যবহার করতে পারেন। আর ওয়েবসাইট ডিজাইনের আগে অবশ্যই ডেভেলপারকে আপনার চাহিদাগুলো ভালোভাবে বলতে হবে। তাহলে ডেভেলপারই নিজ থেকে পছন্দ করে নিতে পারবে উপযুক্ত ওয়েবসাইট প্ল্যাটফর্মটি।

সেবা দেয় যারা

ইন্টারনেটে ডোমেইন নাম নিয়ন্ত্রণ করে ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন নেমস অ্যান্ড নাম্বারস বা আইসিএএনএন। এ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী এদের বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং বিক্রি করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এদের কাছ থেকে ডোমেইন কেনা যায়। তবে সরাসরি কেনার চেয়ে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেই ডোমেইন কেনার পরামর্শ দেন অধিকাংশ ওয়েব ডেভেলপার। তাদের মতে, কোনো ধরনের সমস্যায় পড়লে বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান করার সুযোগ কম। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেই বরং ভালো সেবা পাওয়া যায়। বাংলাদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের ‘ডোমেইন রিসেলার’ হিসেবে ডোমেইন নাম বিক্রি করে থাকে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই এসব প্রতিষ্ঠানের হোস্টিং সেবাও রিসেলার হিসেবে বিক্রি করে। অনেক প্রতিষ্ঠানের আবার যুক্তরাজ্য বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে নিজস্ব সার্ভার রয়েছে। ডোমেইন কেনার জন্য এখানে জান । তবে যে প্রতিষ্ঠান থেকেই কিনুন না কেন, ইন্টারনেটে ওই প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকসেবাসংক্রান্ত তথ্য ও রিভিউ দেখে নেবেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন হোস্টিং ফোরামের পাশাপাশি এখন বাংলা ভাষায়ও হোস্টিং-সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা করার ফোরাম রয়েছে। সেখানেও আলোচনা করে পছন্দের প্রতিষ্ঠান থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন।

হোস্টিং কেনার আগে বিবেচ্য

হোস্টিং কেনার আগে ব্যবহারকারীকে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়।

যার যেমন সার্ভার লাগে : যেসব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট দিনে প্রচুর ভিজিট হয় এবং একই সময়ে কয়েক হাজার ভিজিটর ওয়েবসাইটে থাকে সেগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত ডেডিকেটেড সার্ভার কিনতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে দেড় শ থেকে ছয় শ মার্কিন ডলার পর্যন্ত গুনতে হয়। তবে যেসব ওয়েবসাইটে কমসংখ্যক ভিজিটর আসবেন এবং একই সময়ে অল্পসংখ্যক ভিজিটর সাইটে থাকেন সেসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শেয়ারড সার্ভার, ক্লাউড সার্ভার বা স্পেসিফিক ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং সার্ভার ব্যবহার করা যায়। শেয়ারড সার্ভারে খরচ অনেক কম। বছরে মাত্র ৪০০ টাকা খরচ করেও শেয়ারড সার্ভার ব্যবহার করা যায়। শেয়ার্ড হোস্টিং কিনতে এখানে দেখুন ।
ডিস্ক স্পেস : সার্ভারের পরে হিসাব করতে হয় ডিস্ক স্পেস। ব্যক্তিগত আর ছোট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে ৫১২ মেগাবাইট বা ০.৫ জিবি হোস্টিংই যথেষ্ট। যেসব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে একটু বেশি পরিমাণ ছবি আপলোড করতে হবে সেগুলোর হোস্টিং ১০২৪ (১ জিবি) থেকে ২০৪৮ (২ জিবি) মেগাবাইটই যথেষ্ট। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওয়েব হোস্টিং নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রয়োজনের বেশি ওয়েব হোস্টিং নিলে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায় না। বরং ব্যবহারকারীর অতিরিক্ত কিছু টাকা নষ্ট হয়। তা ছাড়া পরে আরো হোস্টিং স্পেসের প্রয়োজন হলে তো প্যাকেজ বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

DMCA পলিসি ইগনোর হোস্টিংঃ DMCA ইগনোর মানে হলে শুধুমাত্র আপনি হ্যাকিং বা Phising সাইট বাদে সব ধরনের সাইট এই হোস্টিং এ বানাতে পারবেন। যেমনঃ পর্নোগ্রাফি সাইট, ক্রাক এ্যাপ বা সফটওয়্যার সাইট, যেকোন ধরনের কপিরাইট করা কন্টেন্ট বা আর্টিকেল নিয়ে বানানো সাইট সহ সকল সাইট। DMCA ইগনোর সার্ভার কখনোই আপনার সাইটকে সাসপেন্ড করবেনা। সো, সম্পূর্ন নির্ভার থাকতে পারেন। DMCA ignored হোস্টিং সব কোম্পানি বিক্রি করেনা৷ DMCA ignored হোস্টিং কিনতে চাইলে এখানে যান। May be, নেমচিপ, গো ড্যাডিও এই হোস্টিং প্রভাইড করেনা।

প্রতিষ্ঠান দেখে হোস্টিং কেনা : ডোমেইন ও হোস্টিং স্পেস কেনার আগে অবশ্য সে প্রতিষ্ঠানের সেবার মান যাচাই করে নেওয়া উচিত। হোস্টিং ও ডোমেইন কেনার পর ওই প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিক্রয়োত্তর সেবা দেবে কি না সেটিও যাচাই করে নিতে হবে। আর সাপোর্টের জন্য ব্যবহারকারীকে অতিরিক্ত কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে কি না বা হলেও সেটি কত পরিমাণ সেটি নির্দিষ্ট করে নিতে হবে।

কন্ট্রোল প্যানেল : ওয়েবসাইটে কোনো পরিবর্তন আনা বা কোনো সেবা পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজন ওয়েবসাইট কন্ট্রোল প্যানেল। আবার ডোমেইনটিকে অন্য প্রতিষ্ঠানের সাইটে হোস্ট করার জন্যও ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেলের প্রয়োজন। এ জন্য যে প্রতিষ্ঠান থেকে সেবাটি নেবেন সেখান থেকে অবশ্যই ডোমেইন ও হোস্টিংয়ের পূর্ণ কন্ট্রোল প্যানেল (ইউজার নেইম-পাসওয়ার্ড) নিজের কাছে রাখবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের জোর করে নিজ প্রতিষ্ঠানে ধরে রাখার জন্য কন্ট্রোল প্যানেল প্রদান করে না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এড়িয়ে চলা উচিত।

খরচাপাতি

ডোমেইন ও হোস্টিংয়ের খরচ সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই অভিন্ন। কেবল ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টেই একেক চাহিদার ক্ষেত্রে একেক রকম বিল হয়ে থাকে। অনলাইন থেকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ডোমেইন কিনলে খরচ ১০ থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত পড়ে। তবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ৪০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যেই ডোমেইন বিক্রি করে থাকে। আর হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে মধ্যম ও ছোট প্রতিষ্ঠানের খরচ পড়ে বছরে ৪০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। আর সাধারণ ওয়েবসাইট ডিজাইনের ক্ষেত্রে খরচ পড়ে ৮ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট প্রতিষ্ঠান বা যেসব প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট করার প্রয়োজন পড়ে না তারা স্ট্যাটিক ডিজাইন করিয়ে নিতে পারে। তবে যেসব ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট করার প্রয়োজন তাদের অবশ্যই ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। সাইটগুলো যে কেউ সহজে আপডেট করতে পারেন। সাইট আপডেট করার জন্য প্রোগ্রামিং জানার দরকার পড়ে না।
তথ্যঃ সামহোয়্যারিং ব্লগ
_________________________________

সৌজন্যেঃ HosterPlan.com ( বাজেটের ভিতর সর্বোচ্চ মানের ডোমেইন হোস্টিং কিনুন & DMCA ignored hosting )