Site icon Trickbd.com

ওয়েব ডিজাইন শিখুন, ক্যারিয়ার গড়ুন [পর্ব ০৩]

ওয়েব ডিজাইন শিখুন, ক্যারিয়ার গড়ুন [পর্ব ০৩]

মহান বিজয় দিবস এর শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকে পোস্ট শুরু করছি । 

একজন ওয়েব ডিজাইনার বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য প্রাথমিক পরিকল্পনা, ডিজাইন ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) নিয়ে কাজ করে থাকেন। আপনি এই পেশাইয় কাজ করতে চাইলে টেকনিক্যাল এবং নন-টেকনিক্যাল দক্ষতার প্রয়োজন হবে। একজন ওয়েব ডিজাইনার বিভিন্ন শিল্পে চাকরি করা ছাড়াও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পান। প্রতিষ্ঠানভেদে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু ওয়েব ডিজাইনের উপর প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকলে তা কাজ পাবার জন্য সুবিধাজনক।

এখন বলতে পারেন “কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে একজন ডিজাইনার কাজ করে থাকেন?”

আইটি কোম্পানি ও ফার্মগুলোতে ওয়েব ডিজাইনারদের কাজের ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি। তুলনামূলকভাবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি চাকরির সুযোগ কম। অবশ্য এসব প্রতিষ্ঠান সাধারণত আইটি সংক্রান্ত কাজ প্রজেক্ট আকারে সফটওয়্যার ও ডেভেলপার কোম্পানিগুলোকে দিয়ে থাকে। তাই নির্ভরযোগ্য ক্যারিয়ার গড়তে ওয়েব ডিজাইনারদের সমস্যা হয় না। 

আপনারা হয়তো জেনে গিয়েছেন যে, ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ওয়েব ডিজাইনের আন্তর্জাতিক মার্কেট যথেষ্ট বড়। আপওয়ার্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সার ডট কমের মতো প্লাটফর্মগুলোতে কাজ খুঁজে নিতে পারেন আপনি। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ওয়েব ডিজাইনাররা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করতে সক্ষম।

প্রশ্ন করতে পারেন “একজন ওয়েব ডিজাইনার কী ধরনের কাজ করেন?”

প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী ওয়েব ডিজাইনারের কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনের ধরনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

সাধারণত যে ধরনের কাজ ওয়েব ডিজাইনরা করে থাকেন, তার মধ্যে রয়েছেঃ

  1. ক্লায়েন্টের চাহিদাগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেয়া ও পুরো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে যোগাযোগ রাখা;
  2. ওয়েবপেইজ/ওয়েবসাইট/অ্যাপ্লিকেশনের প্রাথমিক লেআউট তৈরি করা;
  3. প্রজেক্টের জন্য গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন কিংবা ডিজিটাল ফটোগ্রাফি ডিজাইন করা;
  4. ক্লায়েন্টের কাছে প্রাথমিক ডিজাইন উপস্থাপন করা;
  5. প্রয়োজনীয় কোড লেখা;
  6. দরকার হলে কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কাজ করা;
  7. প্রজেক্ট বা প্রতিষ্ঠানের সাথে ওয়েবসাইট/অ্যাপ্লিকেশনের ডিজাইনের সামঞ্জস্য বজায় রাখা;
  8. ওয়েবপেইজ/অ্যাপ্লিকেশনের বিভিন্ন কন্টেন্ট এডিট করা ও বারবার এর কার্যকারিতা যাচাই করা;
  9. কাজ শেষ হবার পর ক্লায়েন্টের কাছে প্রজেক্ট হস্তান্তর করা;
  10. প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে ক্লায়েন্টকে টেকনিক্যাল সহায়তা দেয়া।

এখন জানুন “কি ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয় একজন ওয়েব ডিজাইনারের?”

ওয়েব ডিজাইনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়েও কাজের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকা জরুরি। এরপরও নিচের বিষয়গুলোতে ডিগ্রি থাকলে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার যোগ্যতা নিয়ে একজন চাকরিদাতা ভালো ধারণা পেতে পারেনঃ

প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক, কাজের পোর্টফোলিও থাকলে একজন ওয়েব ডিজাইনারের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। আপনি যদি বিভিন্ন ছোট কোর্সের মাধ্যমে বা নিজে নিজে ওয়েব ডিজাইনের কাজ শেখেন, তাহলে আপনার জন্য পোর্টফোলিও থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য ডিগ্রিধারী ডিজাইনারদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার প্রযোজ্য।

এবার পড়ুন “একজন ওয়েব ডিজাইনারের কোন কোন দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?”

প্রজেক্টের উপর টেকনিক্যাল জ্ঞানের ধরন নির্ভর করে। এরপরও সাধারণ উদাহরণ হিসাবে নিচের স্কিলগুলোর কথা বলা যায়ঃ 

বহু কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কিছু কাজ ওয়েব ডিজাইনারদের দিয়ে করানো হয় বলে অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কোডিং (যেমনঃ PHP, Python) নিয়েও ধারণা থাকার দরকার হয়।

নন-টেকনিক্যাল জ্ঞানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

  1. সৃজনশীল উপায়ে ও যৌক্তিকভাবে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা;
  2. বিশ্লেষণী ক্ষমতা, যা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণে সাহায্য করতে পারে;
  3. নিজে নিজে কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের সাথেও কাজ করার মানসিকতা থাকা;
  4. বিভিন্ন ধরনের কাজ একসাথে সামলানোর দক্ষতা।

এখন বলতে পারেন “ওয়েব ডিজাইন কোথায় শিখবেন?”

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, কম্পিউটার সিস্টেম ডিজাইন কিংবা ইনফর্মেশন সিস্টেমের উপর অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি নিতে পারেন।

অন্যথায় ভিন্ন উপায় হিসাবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নিচের বিষয়গুলোর উপর কোর্স করতে পারেনঃ

এটা লোভনীয় ব্যাপার “একজন ওয়েব ডিজাইনারের মাসিক আয় কেমন?”

আমাদের দেশে অভিজ্ঞতা ছাড়া বা স্বল্প অভিজ্ঞ ওয়েব ডিজাইনারের আনুমানিক গড় আয় মাসিক ৳২৫,০০০ টাকা। দেশের বাইরে গেলে যা মাসিক ৳৪০০,০০০ টাকা থেকে ৳৭০০,০০০ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘণ্টা প্রতি গড়ে ১০-১৫ ডলার অর্জন করা সম্ভব। তবে এজন্য চমৎকার পোর্টফোলিও থাকার কোন বিকল্প নেই।

অনেকেই এই প্রশ্ন করে থাকেনঃ 

ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে একজন ওয়েব ডিজাইনারের?

শুরুতে শুধু প্রজেক্ট নির্ভর ছোট বা মাঝারি আকারের কাজ করলেও চার-পাঁচ বছরের মধ্যে সিনিয়র ওয়েব ডিজাইনার পদে উন্নীত হবেন। এক্ষেত্রে বড় আকারের প্রজেক্ট বা বড় মাপের ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া আপনার দক্ষতা আর নন-টেকনিক্যাল জ্ঞানের ভিত্তিতে নিজের দল চালানোর কাজ পেতে পারেন। কনসালট্যান্ট হিসাবেও সার্ভিস দিতে পারেন অন্যদের।

 

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ।

যদি কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করতে পারেন । ইনশাহ আল্লাহ উত্তর দেবো।

প্রথম প্রকাশিত নিজেস্ব ব্লগে। আমার আরো পোস্ট দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুণ

 

যারা প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্ব মিস করেছেন তারা চাইলে পড়ে নিতে পারেন ।

ওয়েব ডিজাইন শিখুন, ক্যারিয়ার গড়ুন  পর্ব  ০১।

ওয়েব ডিজাইন শিখুন, ক্যারিয়ার গড়ুন পর্ব ০২