বেশির ভাগ অফিসের কাজেই এখন প্রচলিত খাতা-কলমের বদলে
কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক বেশি। কারণ আগামীর বিশ্ব ভার্চুয়াল কাজের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। অটোমেশনের এই যুগে এসে তাই কম্পিউটারের ‘অ আ ক খ’ না জানলে চাকরি পেলেও তাতে কত দিন টিকে থাকতে পারবেন, তা বলা মুশকিল।সব ধরনের চাকরির ক্ষেত্রেই কম্পিউটার বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকাটা এখন সবার জন্য আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এটা না থাকলে এখন ভালো ভালো ডিগ্রি নিয়েও চাকরি পাওয়া কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্পিউটারের মৌলিক কাজগুলো না জানলে বেশির ভাগ চাকরিতেই আপনি আবেদন করতে পারবেন না। ফলে কম্পিউটারে যাদের এসব সাধারণ বিষয়ে দক্ষতা নেই, তারা এখন থেকেই শুরু করতে পারেন। চাকরির আবেদন করা শুধু নয়, যারা এখন চাকরিতে রয়েছেন তাদের জন্যও কম্পিউটারের এসব মৌলিক বিষয় জানা খুব দরকার। কেননা কম্পিউটারে মৌলিক দক্ষতা আপনার অফিসের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। অটোমেশনের এই যুগে সব অফিসেই এখন চিরাচরিত খাতাপত্রের বদলে কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের চর্চা শুরু হয়েছে। আপনি এসব কাজে পারদর্শী না হলে চাকরিদাতা নিশ্চয়ই আপনার বদলে অন্য কাউকে খুঁজে নিতে আগ্রহী হবেন। আবার আপনি যদি কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের কাজে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে প্রতিষ্ঠান আপনার ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, যা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। কম্পিউটারের এসব কাজ কেমন করে শিখবেন, আপনার দ্বারা কতটুকু সম্ভব, সেসব বিষয়ে আপনার মধ্যে নিশ্চয়ই দ্বিধা কাজ করতে পারে। এসব ভাবনা দূর করুন। কেননা শুরু না করতে পারলে আসলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। তাই আজ থেকেই বসে পড়ুন বেসিক কম্পিউটার শেখায়। যেকোনো অফিসে কাজ করতে কম্পিউটারের খুব বেশি কাজ আপনাকে জানতে হবে না। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল পাঠানো এবং ডাউনলোড করা এগুলোই প্রাথমিকভাবে আপনাকে অনেকটাই যোগ্য করে তুলবে। সব ধরনের চাকরিতে কী ধরনের কম্পিউটার জ্ঞান জানা থাকা প্রয়োজন তা নিয়ে আজকের আয়োজন।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড
আপনার চাকরির আবেদনপত্র থেকে শুরু করে লেখালেখির সব কাজই সম্পন্ন করা হয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে। ওয়ার্ড প্রসেসিং এই প্রোগ্রামে অফিসের প্রায় সব ধরনের ডকুমেন্ট আপনি তৈরি করতে পারবেন। কোনো লেখাকে ফরম্যাট করা, লেখার মধ্যে টেবিল তৈরি করা, বিভিন্ন ফন্ট ব্যবহার করে লেখাকে সুন্দর করে তোলা, লেখার মধ্যে ডিজাইন করা এমন সব কাজই আপনি সহজে করতে পারবেন মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে। বর্তমানে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার হয় না।
মাইক্রোসফট এক্সেল
বিভিন্ন ধরনের ডাটা নিয়ে কাজ করার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল অপরিহার্য। সাধারণ হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্টের অনেক কাজের জন্যও নির্ভর করতে পারেন এক্সেলের ওপর। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক রিপোর্ট তৈরি থেকে শুরু করে বেতন শিট, প্রতিদিনের খরচের হিসাব রাখার মতো কাজগুলোও এক্সেলে সহজে করা যায়। বিভিন্ন ডাটা সহজে বুঝার জন্য এক্সেল থেকে নানা ধরনের চার্ট বা ডায়াগ্রামও তৈরি করার সুযোগ রয়েছে।
মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট
এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে সহজেই যেকোনো ধরনের প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়। আপনি আপনার বসকে নতুন একটি প্রজেক্ট আইডিয়া দেখাতে চান। সেটার জন্য পাওয়ার পয়েন্ট হতে পারে আদর্শ একটি প্ল্যাটফর্ম। পাওয়ার পয়েন্টে আপনার আইডিয়াগুলোকে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন, ছবি, চার্ট, ডায়াগ্রাম ও টেক্সটের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারবেন। প্রজেক্টের প্রতিটি বিষয়ের জন্য এতে আপনি তৈরি করতে পারবেন আলাদা আলাদা স্লাইড। এই স্লাইডগুলো সঠিকভাবে ডিজাইন করতে পারলে আপনার প্রজেক্ট অন্য কাউকে বুঝানো আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে অডিও এবং ভিডিও যুক্ত করার সুবিধাও রয়েছে। তাই নানা ধরনের মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দিয়ে ডিজাইন করতে পারবেন চমৎকার সব স্লাইড।
ইন্টারনেট ব্রাউজিং
আপনার অফিসের দৈনন্দিন কাজের জন্য ইন্টারনেট প্রয়োজনীয় একটি উপদান। ইন্টারনেট ব্রাউজিং ছাড়া প্রযুক্তিনির্ভর এই বিশ্বে তাল মিলিয়ে চলা মুশকিল। তরুণেরা অবশ্য স্মার্টফোনের কল্যাণে চলতি পথেও ইন্টারনেটের সাথে সার্বক্ষণিক যুক্ত থাকে। ইন্টারনেট আসলে তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। প্রয়োজন কেবল এখান থেকে সঠিকভাবে সঠিক তথ্যটি খুঁজে বের করা। নতুন নতুন আইডিয়ার জন্যও ইন্টারনেট হতে পারে আপনার সহায়। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হবে।
ইমেইল
চিঠিপত্রের চল এখন আর নেই। অফিসের মধ্যে তো বটেই, অফিসের বাইরেও যে কারো সাথে যোগাযোগের জন্য এখনকার সময়ের স্মার্ট পদ্ধতি হলো ইমেইল। তাৎক্ষণিকভাবে ইমেইল আপনার বার্তাটি পাঠিয়ে দেবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। অফিসের নোটিশও এখন ইমেইলের মাধ্যমে সার্কুলেট করা হয়ে থাকে। ইয়াহু মেইল, জিমেইলের মতো ফ্রি ইমেইল সেবাতে তাই আপনার অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত। আর অফিসের নিজস্ব ডোমেইনে ইমেইলও প্রদান করা হয় অনেক জায়গায়।
শিখবেন কোথায়
যদি খোঁজ নিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন যে আপনারই আশপাশে অসংখ্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনার কোনো বন্ধুও হয়তো বিষয়গুলোতে অত্যন্ত দক্ষ। তার শরণাপন্নও হতে পারেন। এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে অবশ্য খুব বেশি টাকাও খরচ হয় না। এগুলোর প্রতিটি বিষয়ে অবশ্য বইও পাওয়া যায় বাজারে। সেগুলো থেকে নিজে নিজেও শিখে নিতে পারেন। ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলে সহজেই ইউটিউব ও খান একাডেমির মতো সাইটে প্রবেশ করে কম্পিউটারের বিভিন্ন বিষয় রপ্ত করার জন্য প্রচুর টিউটোরিয়াল পাবেন।___________________________________________________________ ভাল ভাল টিপস পেতে আমার সাইটে ঘুরে আসবেন TipsaLL24.com