বর্তমানে মোবাইলের সাথে সাথে ল্যাপটপ ও অনেক বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে মানুষ এখন অনলাইন ইনকামের দিকেই বেশি ঝুঁকছে এবং প্রফেশনাল কাজগুলো শেখার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। বাজারে অনেক ধরনের ল্যাপটপ রয়েছে, আপনার কাজের উপর নির্ভর করে আপনাকে ল্যাপটপ নিতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই ল্যাপটপ কেনার আগে কি কি বিষয় গুলো জেনে নেওয়া উচিত…
• অপারেটিং সিস্টেম:
যে কোন কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। বর্তমানের লেটেস্ট ভার্সন উইন্ডোজ ১১ সহকারে বাজারে অনেক ল্যাপটপ রয়েছে। তবে আমি সাজেস্ট করব আপনি যদি এখন ল্যাপটপ নেন সে ক্ষেত্রে উইন্ডোজ ১০ এর ল্যাপটপ নিবেন। কারণ উইন্ডোজ ১১ তে অনেক টেকনিকেল ত্রুটি আছে। এটা পরবর্তীতে হয়তো আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
• ডিসপ্লের আকার:
একটি ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই সেই ল্যাপটপের স্ক্রিনের সাইজ বা ডিসপ্লের আকার সম্পর্কে জেনে নিবেন। ১৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের ল্যাপটপ নেওয়া ভালো। কারণ এখানে কনটেন্ট গুলো অনেক বড় দেখা যাবে। যার ফলে আপনার কাজ করতে সুবিধা হবে।
• ডিসপ্লের রেজুলেশন:
ল্যাপটপের ডিসপ্লে রেজুলেশন অবশ্যই ফুল এইচডি (Full HD) নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনি যদি ফুল এইচডি ছাড়া কম কোয়ালিটির ডিসপ্লে নেন, সেক্ষেত্রে আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি গুলো ভালো দেখা যাবে না। এতে আপনার কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে।
• প্রসেসর (CPU):
ল্যাপটপের প্রসেসর ওপর নির্ভর করে একটি ল্যাপটপের পারফরমেন্স কেমন হবে। তাই চেষ্টা করবেন লেটেস্ট মডেলের প্রসেসরগুলো ব্যবহার করার।
বর্তমান বাজারে Intel ও AMD কোম্পানির প্রসেসরগুলো বেশি চলতেছে। এই দুটি কোম্পানির প্রসেসরগুলো অনেক ভালো কোয়ালিটির। তবে আমি আগেই বলে রাখি, আপনার প্রসেসর এর কোয়ালিটি যত বেশি হবে আপনাকে ততবেশি বাজেট বাড়াতে হবে।
• ল্যাপটপের Ram:
ল্যাপটপের জন্য Ram অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই সেই ল্যাপটপের Ram এর পরিমাণ জেনে নিবেন। অবশ্যই সর্বনিম্ন ৮ জিবির Ram ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
তবে যদি আপনি ভারি কোন কাজ (যেমন: গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, গেমিং ইত্যাদি) করেন সেক্ষেত্রে আপনার Ram এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা লাগবে।
• গ্রাফিক্স কার্ড (GPU):
GPU এর পুরো নাম হলো Graphics processing unit (গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট)। আপনার ল্যাপটপে যদি ভালো কোয়ালিটির গ্রাফিক্স কার্ড না থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার ল্যাপটপে ফুল এইচডি ভিডিও চালাতে পারবেন না এবং ভালোভাবে গেমিং করতে পারবেন না।
তাই ভালো কোয়ালিটি গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করবেন।
• এসএসডি (SSD) স্টোরেজ:
আপনার ল্যাপটপের পারফরমেন্স যদি ভালো করতে চান তাহলে এসএসডির কোন বিকল্প নেই। তাই ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই এসএসডি আছে কিনা, সেটা দেখে নিবেন।
এছাড়া আপনার ল্যাপটপ যদি পুরনো হয়, সেক্ষেত্রেও আপনি এসএসডি ব্যবহার করতে পারেন। এতে ল্যাপটপের পারফরমেন্স অনেক বৃদ্ধি পাবে। তবে মনে রাখবেন HDD এর তুলনায় SSD এর মূল্য বেশি। HDD এর তুলনায় SSD এর পারফর্মেন্স ও অনেক বেশি।
• ব্যাটারি ব্যাকআপ:
ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকআপ টা দেখে নিবেন। ল্যাপটপের মধ্যে কত সেল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা দেখে নেবেন।
কারণ আপনি কোথাও গেলে যাতে অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা সেই ল্যাপটপটা ব্যবহার করতে পারেন (এটা অবশ্য আপনার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে)।
• ল্যাপটপের ওজন:
ল্যাপটপ কেনার আগে ল্যাপটপের ওজনটা দেখে নেবেন। অনেকে শুধুমাত্র আপনাকে ব্যাটারি ছাড়া ল্যাপটপের ওজন বলবে, তাই ব্যাটারিসহ ল্যাপটপের ওজন দেখে নেবেন।
কারণ ল্যাপটপের ওজন যদি বেশি হয়, তাহলে সেটা আপনার হাতে নিয়ে চলতে ও অসুবিধা হবে।
• সঠিক দাম:
ল্যাপটপের সঠিক দাম অবশ্যই অনলাইনে চেক করে নিবেন। অনেকেই বেশি দাম দিয়ে ল্যাপটপ কিনে নিয়ে আসেন। তাই অবশ্যই ল্যাপটপ কেনার আগে অনলাইনে সঠিক নামটা জেনে নেবেন।
• অন্যান্য বিষয়:
১. ল্যাপটপ বেশি গরম হয় কিনা।
২. ল্যাপটপের সাউন্ড কোয়ালিটি কেমন
৩. ক্যামেরা কেমন
৪. ল্যাপটপের চার্জার কোয়ালিটি কেমন
৫. চার্জ হতে কতক্ষণ সময় লাগে
৬. ল্যাপটপের বডি কি দিয়ে তৈরি
৮. built-in ব্লুটুথ ও ওয়াইফাই আছে কিনা (তবে লেটেস্ট মডেলের সব ল্যাপ্টপে এগুলো থাকে)।
আর সবশেষে বলবো, ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই ল্যাপটপ সম্পর্কে ধারণা আছে এমন কাউকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এছাড়া আপনি যে ল্যাপটপটা কিনতে ইচ্ছুক, ওই ল্যাপটপ এর রিভিউ ইউটিউবে দেখে নিবেন।
আর অনলাইনে অনেকেই আপনাকে কম দামে ল্যাপটপ এর এসেসরিজ অফার করবে, সেগুলো নেওয়ার আগে অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে ভেরিফাই করে নিবেন।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।