কম্পিউটার নেটওয়ার্ক নিয়ে আমি ইতোমধ্যে ২ টি পোস্ট দিয়েছি। সেখানে আমি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
আপনাদের বোঝানোর স্বার্থে আমি কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে তিনটি ভাগ করে পোস্ট করেছি। আজকের পোস্টে আমি নেটওয়ার্ক টোপোলজি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন শুরু করি…
• নেটওয়ার্ক টপোলজি (Network Topology) কি?
কম্পিউটার গুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য যে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো কে নেটওয়ার্ক টোপোলজি বলে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল লে-আউটকেই বলা হয় টপোলজি।
• নেটওয়ার্ক টোপোলজির প্রকারভেদ:
টোপোলজি অনেক ধরনের হলেও কম্পিউটার টোপোলজি সাধারনত ৬ প্রকার।
১. বাস টপোলজির (Bus Topology):
এই টপোলজিতে মূলত কম্পিউটারগুলোকে একটি মুল লাইন বা ব্যাকবোন এর সাথে জুড়ে দেওয়া হয়। এটি দেখতে অনেকটা বাসের মতো দেখায় বলে এর নাম বাস টপোলজি।
এ নেটওয়ার্ক সিস্টেমে একটি কম্পিউটার নষ্ট হলেও অন্য কম্পিউটার গুলোর নেটওয়ার্কে কোন সমস্যা হয় না। তবে যদি মুল ব্যাকবোন নষ্ট হয়, তাহলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেম অচল হয়ে যাবে।
২. রিং টপোলজি (Ring Topology):
রিং টপোলজির নেটওয়ার্ক সিস্টেমে একটি কম্পিউটার অন্য দুটি কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত থাকে। যার ফলে একটি কম্পিউটার নষ্ট হলে এই নেটওয়ার্ক অচল হয়ে যায়।
৩. স্টার টপোলজি (Star Topology):
এই টপোলজি দেখতে মূলত স্টার বা তারার মত, তাই একে স্টার টপোলজি বলে।
এ টপোলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার একটি কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচের সাথে সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে যদি নেটওয়ার্কের একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়, তাহলে এই নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটারগুলো সচল থাকে। তবে কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচ নষ্ট হলে পুরো নেটওয়ার্ক অচল হয়ে যাবে।
৪. ট্রি টপোলজি (Tree Topology):
এই টপোলজিটি দেখতে অনেকটা গাছের শাখা প্রশাখার মত, তাই একে ট্রি টপোলজি নাম দেওয়া হয়।
ট্রি টপোলজির নেটওয়ার্ক সিস্টেম অনেকটাই স্টার টপোলজির মতোই। অফিস বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই টপোলজির নেটওয়ার্ক বেশি ব্যবহৃত হয়।
৫. হাইব্রিড টপোলজি (Hybrid Topology):
বাস, স্টার, রিং ইত্যাদি টপোলজির সমন্বয়ে যে টোপোলজি তৈরি করা হয় তাকে হাইব্রিড টপোলজি বলে।
উদাহরন হিসেবে আমরা ইন্টারনেটকে ধরতে পারি, ইন্টারনেট হাইব্রিড টপোলজির অন্তর্গত। ইন্টারনেট বৃহৎ পরিসরে হওয়ায়, এখানে সব ধরনের টপোলজির মিশ্রণ দেখা যায়। এই টপোলজিতে প্রয়োজন অনুযায়ী নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে।
এই টপোলজিতে কোন একটি কোন একটি অংশ খারাপ হলে, সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক বন্ধ না হয়ে শুধুমাত্র একটা নির্দিষ্ট অংশ বন্ধ হয়। এছাড়া এই টপোলজিতে কোন একটি অসুবিধা খুব সহজে নির্ণয় করা সম্ভব।
৬. মেশ টপোলজি (Mesh Topology):
এই টপোলজিতে ডেটা কমিউনিকেশনের জন্য অনেক বেশি সুবিধা থাকে। এছাড়া এই টপোলজিতে যদি কোনো অসুবিধা হয়, সেটা সহজে নির্ণয় করা যায়। এই টোপোলজি অনেকটা রিং টপোলজির মত, তবে এখানে কম্পিউটার গুলোর মধ্যে আলাদা অনেকগুলো আলাদা সংযোগ থাকে।
বন্ধুরা আশা করি আজকের পোস্ট এর মাধ্যমে আপনারা টপোলজি বিষয়ে সকল কিছু জানতে পেরেছেন।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।