ফ্রি ডোমেইন, ফ্রি হোস্টিং এইসব অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু যারা ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে ব্যবহার করতে চান, তারা কি কি ফিচার দেখে কিনবেন? আমি আজকে যা লিখতে চলেছি, সেইসব সাধারনত কোনো ওয়েবসাইটে লেখা পাবেন না। একান্তই ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই লেখা লিখতে চলেছি, এবং, এর সবটাই আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা নাহলেও অনেক কাছে থেকে দেখা অন্যান্যদের সুবিধা ও অসুবিধা দেখেই এই লেখা। ফ্রি জিনিসের প্রতি মায়া তেমন হবেনা যেমনটা হবে নিজের কষ্টের টাকা দিয়ে কেনা জিনিসের প্রতি। তাই, প্রতিটি টাকার মূল্য যাতে সঠিকভাবে আপনি পান, তা আপনি নিশ্চয় চাইবেন? বিনামূল্যের জিনিস, তার ফিচার পছন্দ নাহলেই তা বদলে ফেলা যাবে, ছেড়ে দেওয়া যাবে, কিন্তু একবার টাকা দিয়ে কেনা মানে সাধারনত সেটা এক বছরের জন্য, মাঝে ছেড়ে দেওয়ার অর্থ নিজের টাকা অপচয় হওয়া।
এইসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে হলে স্থানীয় বিক্রেতার কাছে থেকেই কেনা ভালো। তারাও হয়তো তাদের ক্রেডিট কার্ড দিয়েই কেনে, আপনি যেখান থেকে কিনবেন তারাও হয়তো সেখান থেকেই কেনে, কিন্তু তার পরেও তারা হচ্ছে রিসেলার এজেন্ট, কোম্পানীর সাথে আপনার চেয়ে তাদের আরও কাছের যোগাযোগ, ব্যবসায়িক সম্পর্কের ভিত্তিতে তারা অনেক সহজেই আপনার ডোমেইন আপনাকে ফেরত এনে দিতে পারবে। যেহেতু স্থানীয়, তাই তারা আপনাকে চিনবে, আইডেন্টিটি প্রমাণের প্রশ্ন আসবেনা। তাই, আমি বলবো যে ডোমেইন স্থানীয় বিক্রেতার কাছে থেকেই কেনা ভালো।
এবারে আসছি হোস্টিংয়ের কথায়। স্থানীয় বিক্রেতার কাছে হোস্টিং কেনা অনেক ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। তাই, হোস্টিং কিনতে পারেন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে, পেপাল দিয়ে ইত্যাদি। কিন্তু কি কি ফিচার আপনার প্রয়োজন? তালিকায় অনেক কিছুই লেখা থাকে, সব কি আপনার দরকার? তালিকায় লেখা প্রচুর ফিচার দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়ে হোস্টিং না কেনাই ভালো। আবার এও ঠিক যে তালিকায় লেখা অনেক ফিচার আপনার অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে ভবিষ্যতে। আসুন জেনে নিই?
আপনি কি একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বানাতে চান? সেক্ষেত্রে তথাকথিত ‘আনলিমিটেড’ হোস্টিং আপনার একেবারেই প্রয়োজন নেই। কম টাকায় পেয়ে গেলেও তাতে কিই বা হোস্টিং করবেন যাতে ‘আনলিমিটেড’ স্পেস লাগতে পারে? কারন আপনি প্রচুর পরিমানে অডিও/ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। সার্ভারে MP3 রেখে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেইসব ডাউনলোডের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া কিন্তু বেআইনি। কপিরাইটের ঝামেলা আছে। আপনি গানবাজনার সাথে যুক্ত হলে আপনার নিজস্ব মিউজিক ফাইলগুলি রাখার ক্ষেত্রেও আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন, অনেক হোস্টিং বিক্রেতা তাদের terms & conditions ’এ লিখেই দেন যে বহু পরিমানে মিডিয়া ফাইল লোড করে রাখা যাবেনা। ব্যক্তিগত কিছু ভিডিও নিশ্চয় রাখতে পারেন, তাও কতোখানি, সেটা জিজ্ঞেস করে নেবেন সাপোর্টে ইমেইল করে।
ঢাকার এক গ্রাহক এই অসুবিধার মধ্যে পড়েছিলো। জটিল এক সমস্যা। তার bandwidth unlimited, কিন্তু নামী এক ওয়েবসাইট তার সাথে লিঙ্ক করার সঙ্গে সঙ্গে তার ওয়েবসাইটে প্রতি মিনিটে প্রায় ১০,০০০ করে পাঠক আসছিল। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমি দেখলাম ৬০,০০০ ভিজিটার ছাড়িয়েছে! ব্যাস, এর পরে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তার হোস্টিং একাউন্ট সাসপেন্ড হল। কেন? কোম্পানী জানালো যে এতো সংখ্যায় ভিজিটার আসলে সেক্ষেত্রে যেন বিজনেস হোস্টিং নেওয়া হয়, নয়তো ডেডিকেটেড সার্ভার নেওয়া হয়। যে ওয়েবসাইট তার সাথে লিঙ্ক করেছিল তাদের ভিজিটার দিনে প্রায় ১০ লাখের উপরে (ইউনিক + রিটার্নিং মিলিয়ে), একটি পথ দুর্ঘটনার কিছু ছবি, তারা নিজেরা সেইসব ভয়ঙ্কর ছবি প্রকাশ করতে চায়না বলে এই ওয়েবসাইটে লিঙ্ক করে দিয়েছিল, তাই পাঠকরা সেইসব ছবি দেখতেই ভীড় করেছিলো।
ভাবতে পারছেন? একদিন সারাদিন যদি এইভাবে পাঠক আসতো, তাহলে তার পেজ র্যাঙ্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? আর গুগল এডসেন্সে কতো আয় হতে পারতো? কিন্তু সে এই লাভ তুলতেই পারলোনা তার হোস্টিং কোম্পানীর কারনে, নাম জানতে চান সেই হোস্টিং কোম্পানীর? Trickrun.com