Site icon Trickbd.com

ইউটিউব_চ্যানেলের_জন্য_নিশ_বাছাই (দ্বিতীয় পর্ব)

Unnamed

ইউটিউব_চ্যানেলের_জন্য_নিশ_বাছাই (দ্বিতীয় পর্ব)

#লাইফ_হ্যাকঃ বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় নিশ হচ্ছে লাইফ হ্যাক। এই নিশ নিয়ে কাজ করলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চ্যানেল জনপ্রিয় হয় পাশাপাশি প্রচুর ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার পাওয়া যায়। লাইফ হ্যাক চ্যানেল গুলোর আয় তুলনামূলক ভাবে অন্য চ্যানেল থেকে বেশী কারন লাইফ হ্যাকের ভিউয়ার সারা পৃথিবী থেকে পাওয়া যায়। বিভিন্ন দাগ ওঠানো, অপ্রয়োজনীয় জিনিষের ব্যাবহার, একটি জিনিষের একাধিক ব্যাবহার, বিভিন্ন ক্রাফটের ব্যাবহার ইত্যাদি নিয়ে আপনি ভিডিও বানিয়ে আপনার চ্যানেলে শুরু করতে পারেন। লাইফ হ্যাক নিশ নিয়ে কাজ করলে আপনি তুলনামূলক ভাবে দ্রুত সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। 5 Minutes Craft একটি খুব জনপ্রিয় লাইফ হ্যাক চ্যানেল, এই চ্যানেল থেকে ভিডিও বানানোর আইডিয়া নিতে পারেন। 5 Minutes Craft ইউটিউবের শীর্ষ আয়কারী ১০ চ্যানেলের মধ্যে একটি এবং সাবস্ক্রাইবারের দিক থেকে সেরা ১০ এ অবস্থান করছে।

#মিউজিকঃ আপনাকে যদি প্রশ্ন করি ইউটিউবের সবচেয়ে বেশী সাবস্ক্রাইবার কোন চ্যানেলের? আপনি হয়তবা বলবেন pewdewpie চ্যানেলের কথা, pewdewpie চ্যানেলের দীর্ঘ দিনের একচ্ছত্র আধিপত্যকে শেষ করে সবচেয়ে বেশী সাবস্ক্রাইবড চ্যানেলের মুকুট পড়েছে ইন্ডিয়ার মিউজিক চ্যানেল টি সিরিজ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন একটি মিউজিক চ্যানেলের সফলতা কতটুকু। আপনি চাইলেই একটি মিউজিক চ্যানেল শুরু করতে পারেন এর জন্য আপনার স্টুডিও সেটআপের প্রয়োজন নেই, মধু কই কই বিষ খাওইলা গানটির কথা মনে আছে? জাহিদের গাওয়া গানটি কি রকম ভাইরাল হয়েছিল? আপনি বিখ্যাত গানগুলি নিজের গলায় কভার করতে পারেন, সামর্থ থাকলে মিউজিক ভিডিও বানাতে পারেন। মিউজিক চ্যানেল একবার দাড়িয়ে গেলে সাবস্ক্রাইবার খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। এমনকি নিজের মিউজিক চ্যানেল থেকে সেলিব্রেটি হয়ে যাওয়ার অনেক নজির আছে।

#ট্রাভেলঃ আপনি যদি ঘুরতে ভালোবাসেন তবে আপনি খুব সহজেই একটি ট্রাভেল ব্লগ চ্যানেল খুলতে পারেন। ধরুন আপনি কক্সবাজারে ঘুরতে গেলেন আপনার এই ট্যুরের বেশ কয়েকটি ভিডিও আপনি আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে পারেন যেমন কোন গাড়ীতে যাবেন তার ভাড়া কত, কোন হোটেলে থাকবেন তার ভাড়া কত, কোথায় খাবেন, কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন ইত্যাদি। আপনি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাবার তথ্য দিয়ে, সেই সব স্থানের বিভিন্ন ভিডিও দিয়ে আপনার চ্যানেলটি শুরু করতে পারেন। গুগলে ট্রাভেল সম্পর্কিত বিষয়ে প্রচুর সার্চ হয় তাই এই ট্রাভেল চ্যানেলগুলো খুব তাড়াতাড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। আমি এমনও দেখেছি যে উইকএন্ডে ঘুরতে ঘুরতেও একটি ট্রাভেল ব্লগ বানিয়ে ফেলেছে। Jack Harries একটি জনপ্রিয় ট্রাভেল চ্যানেল এই চ্যানেল থেকে ট্রাভেল বিষয়ক ভিডিও বানানোর আইডিয়া নিতে পারেন।

#বিনোদনঃ বর্তমান সময়ে বিনোদনের একটা বড় মাধ্যম ইউটিউব, প্রতিদিন ইউটিউবে টোটাল যত ভিউ হয় তার বড় একটা অংশ ভিউ হয় ফানি ভিডিও, হাসির নাটক, কমেডি, জোকসের ভিডিওতে। আপনি চাইলেই একটি বিনোদনমূলক চ্যানেল খুলতে পারেন। বিনোদন মূলক চ্যানেলে এড থেকে আয় একটু কম হয় কিন্তু ভিউ হয় প্রচুর তাই এভারেজ একটি আয় চলে আসে। বিনোদন মূলক চ্যানেলের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে এই চ্যানেল থেকে নিজেকে একজন সেলিব্রেটি বানিয়ে ফেলা সম্ভব, বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন ইউটিউবার তাদের বিনোদনমূলক চ্যানেল থেকে আজকে নিজেদের সেলিব্রেটি পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আপনি যদি ফানি বা মজার মানুষ হয়ে থাকেন তবে আপনি একটি বিনোদন মূলক চ্যানেল শুরু করতে পারেন।

#মেকাপ_বিউটিঃ এই নিশটি মূলত মেয়েদের জন্য বেশ কার্যকর, আপনি যদি মেকাপ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন বা মেকাপ বিষয়ে আপনার ভালো জ্ঞান থাকে তবে আপনি একটি মেকাপ বিষয়ক চ্যানেল খুলতে পারেন। গুগলে বিউটি টিপস নিয়ে প্রচুর সার্চ হয় তাই আপনি আপনার চ্যানেলে বিভিন্ন বিউটি টিপস, মেকাপ সম্পর্কিত ভিডিও আপলোড করতে পারেন। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও চাইলে এই নিশ নিয়ে কাজ করতে পারেন যেমন হেয়ার স্টাইল, ড্রেস ইত্যাদি নিয়ে ভিডিও দিতে পারেন।

#মোটিভেশনাল_ভিডিওঃ যদি প্যাসিভ ইনকামের জন্য ভালো কোন নিশ চান তবে মোটিভেশনাল ভিডিও একটি পারফেক্ট চয়েজ হতে পারে কারন এই নিশ নিয়ে ভিডিও বানালে আজ থেকে ১০ বছর পরেও এই ভিডিওর ভিউয়ার পাবেন। মোটিভেশনাল ভিডিও একটি এভারগ্রীন নিশ, ইদানিং লোকেরা ক্যারিয়ার, ফ্যামিলি, অর্থ, নিজের জীবন, পড়াশুনা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে, আর তখন তারা ইউটিউবে অনুপ্রেরনামূলক ভিডিও দেখে। মোটিভেশনাল ভিডিওর চ্যানেলগুলি তুলনামূলক ভাবে দ্রুত জনপ্রিয় হয়, sandeep maheshwari চ্যানেলটি একবার ঘুরে আসুন তাহলেই বুঝতে পারবেন তার এক একটি ভিডিওতে কেমন ভিউ হয়, এমনকি যখন তার চ্যানেল শুরু করে তখনকার সময়ের কয়েকটা ভিডিওর ভিউ দেখেন তাহলেই বুঝতে পারবেন মোটিভেশনাল ভিডিও নিশের ক্ষমতা, এই নিশের ভিডিও থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করা যায় এবং অনেক দীর্ঘ সময় টাকা আয় করা যায়।

পরিশেষে একটা কথাই বলবো যে নিশ নিয়েই কাজ করেন না কেন আজকে চ্যানেল খুলে কালকেই হাজার হাজার ডলার আয় করার স্বপ্ন ইউটিউবে না দেখাই ভালো। একটা কথা মনে রাখবেন ইউটিউবে প্রতিদিন যেমন নতুন নতুন ইউজার বাড়ছে তেমন নতুন নতুন চ্যানেলও বাড়ছে সুতরাং এত চ্যানেলের মাঝে আপনাকে টিকে থাকতে হলে ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে তবেই সফলতা পাবেন। স্প্যামিং করে ইউটিউবে বেশিদিন টিকতে পারবেন না। আর হ্যা ইউটিউবকে আপনি ভালো কিছু দিন ইউটিউব আপনার মেধার সঠিক মূল্য দিবে।

*যারা “ইউটিউব চ্যানেলের জন্য নিশ বাছাই” এর প্রথম পর্বটি পড়তে পারেন নাই তারা প্রথম পর্বটি পড়তে চাইলে কমেন্ট বক্সে লিংক দেয়া আছে সেখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।

পরবর্তী পোস্ট করবো “মনিটাইজেশন ছাড়াও ইউটিউবে আয়ের অন্যান মাধ্যম” নিয়ে। ততদিন ভালো থাকবেন আর ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ

Article Credit: Stephen Koel Soren