আমাদের মধ্যে অনেকেরই ইউটিউব চ্যানেল আছে। অনেকে অনেক ভাল ভাল কনটেন্ট তৈরি করেও ইউটিউব চ্যানেলকে রেংকিং করাতে পারছেন না। একটা ইউটিউব চ্যানেল কে তাড়াতাড়ি এবং সহজে রেংক করাতে হলে সেটার সঠিক এসইও (SEO) করা খুবই জরুরী। ইউটিউব চ্যানেল এসইও করার আগে জেনে নিতে হবে এসইও কি।
• এসইও (SEO) কি?
SEO সম্পূর্ণ অর্থ হল “SEARCH ENGINE OPTIMISATION”। এসইও করার মাধ্যমে মাধ্যমে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে গুগল এবং ইউটিউবে ভালোভাবে রেংকিং করাতে পারবেন।
• ইউটিউব এর ভিডিও এসইও করা কেন জরুরি:
আপনি যখন কোনো একটি বিষয়ে গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করেন, তখন দেখবেন কিছু ভিডিও সাজেশন করতেছে। এই ভিডিওগুলো কিন্তু এসইও করা। তাই সেগুলো গুগোল সাজেস্ট করতেছে। আপনি যদি সঠিকভাবে এসইও করেন সেক্ষেত্রে আপনার চ্যানেলের ভিডিও সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজেই থাকবে।
ইউটিউব এর ভিডিও কিভাবে এসইও এবং ভিডিও রেংকিং এ আনবেন:
• চাহিদা সম্পন্ন ভিডিও তৈরি করা:
আপনি যে ভিডিওটি তৈরি করছেন সে ভিডিওটি ইউটিউবে বর্তমানে চাহিদা আছে কিনা সেটা সবসময় খেয়াল রাখবেন। ইউটিউবে চাহিদা নেই এ ধরনের ভিডিও না করাই ভালো। চাহিদা আছে এমন ভিডিও করলে আপনার ভিডিও তাড়াতাড়ি রেংকিং এ আসবে।
তা না হলে আপনি ভিডিও করেই যাবেন কিন্তু ভিডিওতে ভিউ হবে না।
• কিওয়ার্ড রিচার্জ করা:
ইউটিউবে কোন কিওয়ার্ডটি বেশি জনপ্রিয় এবং ব্যবহৃত হয় সেটা অনলাইনে রিচার্জ করতে পারেন। আপনি যদি কম্পিউটার ইউজার হন সেক্ষেত্রে “keyword everywhere”এক্সটেনশন ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি মোবাইল ইউজার হন সেক্ষেত্রে “keyword.io” ওয়েবসাইট টা ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া আপনারা গুগলের কিওয়ার্ড রিসার্চ ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।
প্রথমে আপনি কোন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করবেন সেটা সিলেক্ট করুন। তারপর সেই কী-ওয়ার্ডটি বিভিন্ন কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস দিয়ে চেক করে নিন। যদি সেই কিওয়ার্ড এর রেঙ্কিং ভালো থাকে সেক্ষেত্রে সেটা নিয়ে কাজ করুন।
• ভিডিওর টপিক বাছাই:
আপনি ভিডিও করার আগে আপনার ভিডিওর টপিকের উপর কিওয়ার্ড, কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস এর মাধ্যমে চেক করে নিন। সেই কিবোর্ড এর মাসিক সার্চ যদি ১০০০ এর বেশি থাকে সেক্ষেত্রে সে কিওয়ার্ড আপনি ব্যবহার করতে পারেন। এর কম থাকলে সেটা ব্যবহার না করাই উত্তম।
• ভিডিও টাইটেল এবং ডিসক্রিপশন:
আপনার ভিডিওর মূল কিওয়ার্ডটি যেন আপনার ভিডিওর টাইটেল এবং ডিসক্রিপশন এ থাকে। ভিডিও টাইটেল আকর্ষণীয় ভাবে লিখবেন। তবে ভিডিওর সাথে মিলিয়ে লিখবেন, উল্টাপাল্টা কোন টাইটেল দিতে যাবেন না। তাহলে কিন্তু ইউটিউব চ্যানেল সাসপেন্ড হতে পারে।
আপনার ভিডিওর মূল কিওয়ার্ডটির সাথে মিলিয়ে একটা সুন্দর ডিসক্রিপশন লিখবেন। সেখানে আপনার মূল কী-ওয়ার্ডটি কয়েকবার মেনশন করবেন। ভিডিওর মধ্যে হ্যাস-ট্যাগ ব্যবহার করবেন। আপনার ভিডিও ডিস্ক্রিপশন মিনিমাম ২৫০-৩০০ শব্দের দিবেন।
তবে ভিডিও ডিসক্রিপশন এ অযথা ট্যাগ ব্যবহার করবেন না।
• ভিডিও থাম্বনেইল:
ভিডিওর থাম্বনেইলকে আকর্ষণীয় করে তুলবেন, তবে ভিডিওর সাথে যেন মিল থাকে। ভিডিওর থাম্বনেইলের উপর সময় দেবেন। সেটাকে সুন্দরভাবে ডিজাইন করবেন। এ বিষয়ে ইউটিউবে অনেক ভিডিও আছে সেগুলো দেখতে পারেন।
• ভিডিওর ট্যাগ:
আপনার ভিডিওতে অবশ্যই ট্যাগ ব্যবহার করবেন। ট্যাগ ও কিন্তু ভিডিওকে এসইও করতে সাহায্য করে। আপনার ভিডিওর সাথে সম্পর্কযুক্ত এমন ট্যাগ ব্যবহার করবেন। ট্যাগ ব্যবহার করার আগে সেটা কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস দিয়ে চেক করে নিবেন।
• ভিডিওর ফাইলের নাম:
ভিডিও আপলোড করার আগেই ভিডিওর ফাইল এর নাম আপনার ইউটিউব এর টাইটেল এর সাথে মিলিয়ে লিখুন। এটাও এসইওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
• ভিডিওর মধ্যে যথেষ্ট আলোচনা:
আপনি যে বিষয় ভিডিও তৈরি করবেন ওই বিষয়টা ভিডিওতে ভালোভাবে আলোচনা করবেন। অল্প একটু আলোচনা করে ছেড়ে দিবেন না। আপনার অডিয়েন্সকে ভিডিওতে ধরে রাখার জন্য ভিডিওর মধ্যে কিছুক্ষণ পরপর আকর্ষণীয় কিছু করতে পারেন।
মনে রাখবেন, আপনার ভিডিওর ওয়াচ টাইম আপনার ভিডিওর এসইওর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইউটিউব ভালো ওয়াচ টাইম আছে এমন ভিডিও গুলো তাড়াতাড়ি রেংকিং করে।
আমার কিছু কথা:
ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করার আগে অবশ্যই ইউটিউবের নিয়ম কানুন গুলো ভালভাবে জেনে নেবেন। কারো ভিডিও কপি করার চেষ্টা করবেন না। এমনকি কারো ভিডিওর থাম্বনেইল ও কপি করবেন না।
কারণ কপি ভিডিওগুলো ইউটিউব কখনোই পছন্দ করেনা।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।