Site icon Trickbd.com

কেন পাকিস্থানে বারবার YouTube কে ব্যান করা হয়?

Unnamed


২০১৮ সালে ইউটিউব প্লাটফর্মে মুক্তি পাই একটি ডাব সিনেমা যার নাম ছিল *ফিতনাহ* আর যেটি মুক্তি পেতে ই পুরো পাকিস্তান জুড়ে ইউটিউব নিষিদ্ধ করা হয়।

এটি ছিল মূলত একটি এন্ট্রি ইসলামিক সিনেমা যেখানে ডিরেক্টলি এই ধরনের মেসেজ দেয়া হয়েছে যে ইসলাম এমন একটি ধর্ম যে গোটা বিশ্বকে শাসন করতে চাই মহান আল্লাহতালা তখনই খুশি হন যখন একজন নন মুসলিম খুন হন বা তাকে হত্যা করা হয়।

এই ধরনের একটি বিতর্কিত সিনেমা এবং সরাসরি এন্টি ইসলামিক সিনেমা মুক্তির পরেই গোটা বিশ্বের মুসলিম সমাজের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়, যা নিতান্তই স্বাভাবিক কারণ এটা এমন একটি সিনেমা যেখানে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুব খারাপ ভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে এই সিনেমার বিরুদ্ধে অবস্থান করতে দেখা যায়।

আর পাকিস্তান তাদের মধ্যে অন্যতম, শুধু এই ঘটনা নয় পাকিস্তানে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবারই নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম। তবে তার মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে ২০১২ সালে যেটা কিছুটা বিতর্কিত ও বটে। তো চলুন আজকের পোস্টে সেটাই জানা যাক ২০১২ সালে কি এমন ঘটেছিল যার জন্য চিরতরে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ হতে হয় youtube কে?


ইউটিউবে *ইনোসেন্স অফ মুসলিম* নামে একটি শর্ট ফিল্ম ২ ভার্সনে মুক্তি পাই, নামের মাঝে ইনোসেন্স থাকলেও এটা মোটেও কোন ইনোসেন্ট সিনেমা ছিল না বরং এটি ছিল একটি এন্ট্রি ইসলামিক সিনেমা। এটা দেখে কি পুরো দেশের মুসলিমরা চুপ ছিল? উত্তর না এটা মুক্তির পরেই পুরো দেশের মুসলিমদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
একে একে মানুষ এই সিনেমাকে বয়কট করতে শুরু করে ইউটিউব বাধ্য হয়ে সেইসব স্পেসিফিক এরিয়া গুলোতে এই সিনেমা ব্লক করে দেয়।

কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হলো এই সিনেমার অভিনেতা এবং অভিনেত্রীর এই ব্যাপারে কোন ধারনাই ছিল না যে এটি একটি এন্ট্রি ইসলামিক সিনেমা, প্রায় সকল অভিনেতা অভিনেত্রীই এই সিনেমা মুক্তির পরে তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে যে সিনেমার পরিচালক সিনেমার শুটিং চলাকালীন সিনেমার গল্পটাকে তাদের কাছে অন্যভাবে উপস্থাপনা করেছিলেন।

মূলত এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট ছিল মিশরের ২০০০ বছরের আগের কাহিনী যেটার টাইটেল ছিল dress shirt or your এবং তার স্ক্রিপ্টে আপাত দৃষ্টিতে কোন ধরনের ইসলাম ভিত্তিক ডায়লগ লেখা ছি কিন্তু সিনেমা শুট হওয়ার পরে পোস্ট প্রোডাকশনে কিছু ডায়লগ পরিবর্তন করা হয়।

এমনকি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম যুক্ত কিছু ডায়লগ বসানো হয় যা সরাসরি ইসলাম বিদ্বেষী ভাব প্রকাশ করে, যার ফলাফল স্বরূপ পাকিস্তান এবং প্রতিটি মুসলিম দেশেই সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয় নি।

তাই পাকিস্তান এমনকি আফগানিস্তানেও youtube প্ল্যাটফর্ম কে বন্ধ ঘোষণা করে এই শর্ত আরোপ করা হয় যতক্ষণ না অব্দি youtube থেকে এই ভিডিও সরানো হবে ততক্ষণ তাদের দেশে ইউটিউব বন্ধ থাকবে।

পরবর্তীতে হোয়াইট হাউজ যখন ইউটিউব থেকে জবাবদিহিতা চাই তখন youtube জানাই ইউটিউব থেকে এই ভিডিও সারানো হবে না, তাদের যুক্তি ছিল এটি ইসলাম ধর্মের বিপক্ষে কিন্তু এটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিপক্ষে নয়।

আর এরপরেই পাকিস্তানে যারা সামরিক সময়ের জন্য ইউটিউব কে সাময়িক সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল তারা পুরোপুরি ইউটিউবদের নিষিদ্ধ করে দেয় তাও আবার ১ হাজার দিনের জন্য, যা পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচাইতে বেশি সময়ের জন্য ইউটিউব ব্যান করা হয়েছিল।


এই সমস্যার সমাধানে জুলাই ২০১৩ সালে পাকিস্তানের আইটি মিনিস্টার অংশুর রহমান নিজেই একটি কমিটি গঠন করেন তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কিভাবে এই ধরনের কনটেন্ট ইউটিউব থেকে ব্লক করা যায়। কিন্তু এই ধরনের কোন টুলস খুঁজে না পেয়ে ডিসেম্বর ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইউটিউব পাকিস্তানের ব্যান থাকে।

যদিও পাকিস্তান শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয় নিয়ে নয় আরো অনেক সময় অনেক সাধারণ ব্যাপার কেউ ইউটিউব সহ আরো অনেক সোশ্যাল মিডিয়াকেই ব্যান করে রেখেছিল।

যেমন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখে ইমরান খানের রেলির একটি বিশাল আয়োজন হচ্ছিল, স্বাভাবিকভাবেই সে তার অপজিট পার্টির বিরুদ্ধে কিছু কথা বলছিল, আর সেটি ইউটিউবে কেউ একজন প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তান সরকার youtube কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়।

এবং সেই সাথে সেই দেশের নিউজ চ্যানেলেও সেই রেলি কভার করা নিষিদ্ধ ছিল, আর তার কারণ একটাই পাকিস্তানের বর্তমান সরকার চায়না তার অপজিটের কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলুক।

মূলত সেই ভিডিওতে ইমরান খান পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থার অবনতির জন্য ডিরেক্টলি একটি পাকিস্তান আর্মিকেই দায়ী করছিলেন, কিছু জায়গায় ইমরান খান সরাসরি পাকিস্তান আর্মি কে শুধরে যাওয়ার কথা বলেন যাতে করে পাকিস্তানের ইতিহাস তাদেরকে ঘৃণা ভয়ে স্মরণ না করে।

এছাড়াও এর আগে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ব্যান করার নজির রয়েছে পাকিস্তানের।


যেমন ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ড্যানিশ নিউজ এজেন্সি রিটাজু একটি নিউজ আর্টিকেলে বলে তাদের একটা কার্টুনের ম্যাগাজিন এ প্রফিট মোহাম্মদ সাঃ এর কার্টুন ড্র করার জন্য কোন আর্টিস্ট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আর এর কারণটা খুবই পরিষ্কার ইসলামিক প্লাস প্রেমিক লয়ের জন্য কেউ মোঃ সাঃ এর কার্টুন আঁকতে চাইনি, কিন্তু পরবর্তীতে একটি পাবলিক ইভেন্টের মাধ্যমে মাত্র ১২ জনের ড্র করা কার্টুন কালেক্ট করে সেটা পত্রিকায় ছাপানো হয়, আর তার সাথে আরও একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেটিই মোহাম্মদ সাঃ কে পিগ এর সাথে তুলনা করা হয়েছিল আর এই কারনে মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। এই ছবিটা রেনডম একটি ছবি ছিলো যেটার সাথে কম্পিটিশনের কোন সম্পর্ক ছিল না, কিন্তু যতক্ষণে এই ব্যাপারটি সামনে আসে ততক্ষণে বিক্ষোভ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এসব দেখে ডেনমার্কের মানুষেরা অনেক বিরক্ত হয়ে পড়েছিল তারা মনে করতে থাকে তাদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।

আর এরই ধারাবাহিকতায় রাজ রাজনীতিবিদ ২০০৮ *গ্রিট উইল্ডারস ফিতনা*একটি শর্ট ফিল্ম প্রকাশ করে যেটি ক্লিয়ারলি ইসলাম আর মুসলিমদেরকে টার্গেট করে বানানো।

ফিল্মটিতে সরাসরি ইসলামকে কটাক্ষ করা আর অশান্তির জন্য দায়ী করা হয়, আর এই কারণেই আবার পাকিস্তানসহ কিছু ইসলামিক রাষ্ট্র গুলো তে ইউটিউবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় যাতে করে বিক্ষোভের নতুন করে আর কোন সূত্রপাত না ঘটে।

কিন্তু পশ্চিমারা এমন কুকর্ম বহুবার ঘটিয়েছে, যেমন ২০১০ সালে আমেরিকান টিভি চ্যানেল *কমেডি সেন্ট্রাল সাউথ* নামক একটি কার্টুন এ অন্যান্য ধর্মের লোকেদের এর পাশাপাশি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ক্যারেক্টার ও দেখানো হয়, যদিও ধর্মপ্রাণ মুসলিমের জন্য এটি মেনে নেয়া অনেক কঠিন ছিল।


কিন্তু ২০০ আর ২০১ নাম্বার এপিসোডে মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করা হয়, তখন আবার বিক্ষোভ শুরু হয় কার্টুন নির্মাতকদেরকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে পুরো এপিসোডি ক্যানসেল করে দেয় কমেডি সেন্ট্রাল।

কিন্তু এখান থেকে ঘটনা আবারও ইউটার্ন নেয় একজন কার্টুনিস্ট ক্যান্সেল করা সেই এপিসোড এর সাপোর্টে এপিসোড করে, আর মে মাসের ২০ তারিখে এভরি বডি মোহাম্মদ ডে ডিক্লেয়ার করে, এবং এটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে অনেকে কার্টুন ড্র করে পোস্ট করতে থাকে এবং আবারো মুসলিমরা বিক্ষোভ শুরু করে তখন পাকিস্তানসহ কিছু দেশে ইউটিউব, ফেসবুক, ফিলিকার ব্যান করে দেয়া হয়।

আর এভাবেই পাকিস্তানে youtube কে শুরু থেকে এ পর্যন্ত অজস্র বার ব্যান করা হয়েছে।

১ হাজার টাকা দিয়ে আপনি কোন দেশ থেকে কি কিনতে পারবেন ?- https://www.pocobd.com/2022/10/what-can-be-bought-with-one-thousand-taka.html

ছেলেদের জন্য ৫ টি সেরা বডি স্প্রে-https://www.pocobd.com/2022/10/best-body-spray-for-men.html