গত পর্বে আমি আলোচনা করেছিলাম ব্লগিং করার জন্য আমাদের যে নিশ নির্বাচন করা হয় সেই বিষয়ে এবং একই সাথে আমাদের ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং শুরু করা উচিত সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছিলাম।আজকের এই পোস্টে আমি ব্লগিং করার জন্য আমাদের ডোমেইন নাম নির্বাচন করতে হয়,সেই ডোমেইন নাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ডোমেইন কি?
ডোমেইন কি এটি প্রায় সবারই জানা।এই বিষয় নিয়ে যদি আমি আলাদা পোস্ট করি,তবে অনেকেই বলবে এই টপিক সম্পর্কে অনেকেরই জানা আছে।অযথা পোস্ট করা।তবু আমি ডোমেইন সম্পর্কে আপনাদের একটু ছোট পরিসরে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করি।
ডোমেইন হলো আমাদের ওয়েবসাইটের নাম।ওয়েবসাইট চালাবো কিন্তু নাম না থাকলে কিভাবে হবে?আমাদের যেমন নাম রয়েছে,তেমনি আমাদের ওয়েবসাইটের নাম থাকা আবশ্যক।নয়তো মানুষ আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে কিভাবে?এছাড়াও এখানে আরেকটি ব্যাপার আছে।একেক ওয়েবসাইটের আইপি অ্যাড্রেস একেক রকম হয়ে থাকে।এই ওয়েবসাইটগুলোর আইপি অ্যাড্রেস গুলো মুখস্ত করে রাখা সম্ভব না।তাই ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়।যেনো আমরা সহজেই সেই ওয়েবসাইটের নাম মনে রাখতে পারি এবং ব্রাউজার দিয়ে ব্রাউজ করতে পারি।
পূর্ববর্তী পোস্ট ২টি :
- ব্লগিং এ নতুন?ব্লগিং করলে জানতে হবে যেসব বিষয়।
- ব্লগিংয়ে নিশ কি? ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগিং করবো?
ওয়েবসাইটের আবার আইপি অ্যাড্রেস হয়? এই বিষয় জানা আছে আপনার? আচ্ছা আপনি কি জানেন গুগলের আইপি অ্যাড্রেস আছে।গুগলের আইপি অ্যাড্রেস হলো — 172.217.168.238 এটি।আপনি এই আইপি এড্রেসটি কপি করে আপনার ব্রাউজারের ইউআরএল বারে পেস্ট করে এন্টার করে দেখেন গুগলের সার্চ পেজে নিয়ে যাবে আপনাকে।এই আইপি অ্যাড্রেসটি ব্যবহার করে থাকে ডোমেইন নাম।যেমন গুগলের ডোমেইন নাম হলো google.com । আবার,আপনি আমার এই পোস্টটি যে সাইটে পড়ছেন সেটির ডোমেইন নাম হলো Trickbd.com ।
এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন,ডোমেইন নাম কোনটি? Trickbd? নাকি .com ? trickbd হলো ডোমেইন নাম,কিন্তু ডোমেইন নামের সাথে এক্সটেনশন থাকে।এক্সটেনশন ছাড়া কোনো ডোমেইন নাম হয় না।এক্সটেনশন বিহীন trickbd একটি শব্দ মাত্র।যখনই এটির শেষে আমরা .com/.co/.net/.in/.info/.org যুক্ত করে দিবো,তখনই এটি একটি ডোমেইন নাম হয়ে যাবে।
ব্লগিং শুরু করার সময় ডোমেইন নাম কিনতে হয়।আমরা সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং সর্বনিম্ন ১ বছরের জন্য ডোমেইন নাম রেজিষ্টার করতে পারি।এক্ষেত্রে প্রতিবছর ডোমেইন নাম রিনিউ করার খরচ পড়ে প্রায় ১ হাজার বাংলাদেশি টাকার মত।আপনি যদি আমার পূর্বের পোস্টটি পরে থাকেন,তবে হয়তো জানেন যে ব্লগার দিয়ে আমরা ফ্রী সাবডোমেইন নিয়েও ব্লগিং করতে পারি।কিন্তু ভালোভাবে ব্লগিং করতে হলে আমাদের একটি ডোমেইন নাম কেনা আবশ্যক।বিশেষ করে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং করলে আমাদেরকে ডোমেইন নাম কিনতে হবে।
ডোমেইন নাম কেনার সময় আমাদের ডোমেইন নামটি নতুন নাকি পুরনো সেটা চেক করতে হবে।এছাড়াও ডোমেইন নামটি যদি পুরনো হয়ে থাকে এটির স্প্যাম স্কোর কত সেটিও চেক করা জরুরি।অধিক স্প্যাম স্কোর থাকা কোনো ডোমেইন না কেনাই ভালো।কারণ,গুগলের কাছে কেউ ই পেনাল্টি খেতে চাইবে না।ডোমেইনের স্প্যাম স্কোর এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করতে এই লিংকে ভিজিট করে আপনার নির্বাচন ডোমেইন নামটি লিখে সার্চ দিলেই তথ্য পেয়ে যাবেন।
সবকিছু ঠিক থাকলে এখন আমাদের আরেকটি জিনিস চেক করতে হবে।সেটি হচ্ছে অ্যাডসেন্স চেক।আমরা যে ডোমেইন নামটি নিয়ে ব্লগিং করবো,সেটিতে অ্যাডসেন্স পাবো কি না।অ্যাডসেন্স যদি উক্ত ডোমেইন নামে ব্লক করা থাকে,তবে আমরা চেস্টা করেও অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল নিত পারবো না।আর আমরা তো অনেকেই ব্লগিং করে থাকি অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল নিয়ে সেটা দিয়ে টাকা ইনকাম করতে।আমাদের নির্বাচন করা ডোমেইনে অ্যাডসেন্স পাবো কি না সেটা চেক করতে এখানে ক্লিক করুন।তারপর আপনার নির্বাচন করা ডোমেইন নামটি লিখে এন্টার করলে দেখতে পারবেন অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া যাবে কি না উক্ত ডোমেইনটি দিয়ে।
হোস্টিং কি?
হোস্টিং হচ্ছে যেখানে আমাদের ওয়েবসাইটের সকল তথ্য জমা থাকে।এটা একটা সার্ভার।অর্থাৎ, আমাদের ওয়েবসাইটের সকল ডাটা একটি সার্ভারে জমা করা থাকবে যেনো কেউ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে চাইলে সহজেই সেই সার্ভার থেকে ডাটা অ্যাকসেস করতে পারে।আপনি যদি গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং শুরু করেন,তবে আপনাকে ডোমেইন এর মত হোস্টিং নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।গুগল ব্লগার এর ক্ষেত্রে ফ্রী হোস্টিং ব্যবহার করার সুবিধা রয়েছে।আমরা শুধু পোস্ট লিখে পাবলিশ করলেই হয়ে যায়।
গুগল ব্লগার এর সকল ডাটা হোস্ট করা আছে গুগলের নিজস্ব সার্ভারে।তাই আমাদের হোস্টিং এর জন্য কোনো প্রকার টাকা খরচ করতে হয় না।এছাড়াও হোস্টিং এর স্পীড নিয়ে কোনো মতবাদ নেই।গুগলের সার্ভার,ফাস্ট তো হবেই।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগিং করতে হলে আমাদের হোস্টিং নিয়ে চিন্তা করতেই হবে।প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং করতে হলে আমাদের হোস্টিং নিতে হবে ভালোমানের।যেনো,ওয়েবসাইটের স্পীড এ কমতি না পরে।ওয়েবসাইটের স্পীড হলো টেকনিক্যাল এসইও এর একটি।ওয়েবসাইটের স্পীড কম হলে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের র্যাঙ্ক হারিয়ে ফেলতে পারি সার্চ ইঞ্জিন থেকে।তাই হোস্টিং এর স্পীড আসলেই ম্যাটার করে।তাই হোস্টিং কেনার সময় অবশ্যই সবকিছু ভালোভাবে বিবেচনা করবেন।
উপসংহার
আজকের এই পোস্টে আমি ব্লগিং করার জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার সময় যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।জানিনা কতটুকু সফল হয়েছি।পায় সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে।আজকের মত এতটুকুই।
আরও পড়ুন —