বিএসসি নার্সিং এর বেতন কত? নার্সিং সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাবলী।
বিএসসি নার্সিং এর বেতন কত? বিএসসি নার্সিং এর কাজ কি? বিএসসি নার্সিং পড়ার খরচ কত? সরকারি নার্সদের বেতন কত? বেসরকারি নার্সদের বেতন কত? ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা এই পোস্টটির প্রধান আলোচ্য বিষয়।
যারা জনসেবার স্বপ্ন দেখেন। কিংবা নার্স হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তারা নার্সিং সম্পর্কে জানতে চান। নার্সিং এর বেতন কত এই সম্পর্কে জানতে চান। এছাড়া কিভাবে নার্সিং পড়ে? কীভাবে সরকারি নার্সিং এ চান্স পেতে হয়? সরকারি বা বেসরকারি ভাবে নার্সিং পড়ার জন্য কেমন খরচ হতে পারে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে চান।
আপনার সিদ্ধান্ত নিতে যেন সুবিধা হয় এবং যাতে করে সঠিক তথ্যগুলো জানতে পারেন এটাই এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য। এই পোস্টটি আপনি জানবেন বিএসসি নার্সিং এর বেতন কত? বিএসসি নার্সিং এর কাজ? বিএসসি নার্সিং সুযোগ সুবিধা? নার্সিং পড়ার খরচ কত ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে। প্রথমেই আলোচনা করা যা বিএসসি নার্সিং এর বেতন সম্পর্কে।
সম্মানিত পাঠক, সরকারি বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী সম্ভাব্য বিএসসি নার্সিং এর মাসিক বেতন ৮,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৬,৫৪০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপরদিকে বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সাধারণত ১৪,০০০ টাকা থেকে বেতন নার্সদের বেতন শুরু হয়। এখনো ২০১৫ বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়ে থাকে। পরবর্তীতে এটি পরিবর্তন হলে আমরা জানিয়ে দেবো।
নার্সিং এ ৪ বছরের বিএসসি কোর্স সম্পন্ন করার পর ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। তারপর বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল আয়োজিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে একজন শিক্ষার্থী নার্সিং পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন।
বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স করার পর সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে চাকরি করা যায়।
একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা। সরকারি বেতন স্কেলে সিনিয়র স্টাফ নার্স দশম গ্রেড ভুক্ত এবং তদানুযায়ী বেতন পেয়ে থাকে।
বর্তমানে সরকারি চাকরির দশম গ্রেডের বেতন স্কেল অনুযায়ী সিনিয়র স্টাফ নার্সের মূল বেতন ১৬,০০০ টাকা।
এই মূল বেতনের সাথে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, সন্তানদের শিক্ষাভাতা ও অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন। এছাড়াও প্রতি বছর ৫% হারে বেতন বৃদ্ধি পেয়ে মূল বেতন ৩৮,৬৪০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সরকারি নার্সিং কলেজে পড়তে খরচ-
সরকারি নার্সিং কলেজগুলো থেকে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স করতে চাইলে খরচ পড়বে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এটি চার বছরের আনুমানিক খরচ।
আর বেসরকারি কলেজগুলোতে খরচ হবে চার বছরে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। তবে বেসরকারি পর্যায়ের কলেজগুলোতে খরচ প্রতিষ্ঠানভেদে কমবেশি হয়ে থাকে।
আর সরকারি কলেজগুলোতে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং করতে কোর্স ফি লাগে না। প্রতি মাসে তাঁরা কিছু টাকা ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন।
বর্তমানে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সগুলো তিন বছরের ও বিএসসি কোর্সটি চার বছরমেয়াদি হয়ে থাকে।
এসব কোর্স করানোর জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে।
সুপ্রিয় পাঠক, ভোকেশনাল শাখায় এসএসসি দিয়ে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং করা যাবে। সেই ডিপ্লোমার শেষ করে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইন নার্সিং এবং মাস্টার ইন নার্সিং করা যাবে।
একবার নার্সিং করে অন্য বিষয়ে বিএসসি করা সম্ভব। কিন্তু এতে সমস্যা হতে পারে। কারণ নার্সিং এবং এ বিষয়ে বিএসসি না করা সংযোগবিহীন হতে পারে।
একজন নার্সের কর্মক্ষেত্র নিম্নরূপ –
কাজের ক্ষেত্র ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী আপনি অ্যাসিস্ট্যান্ট নার্স, স্টাফ নার্স, ওটি সিস্টার বা নার্সিং সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
পাশাপাশি নার্সিং কলেজে ইন্সট্রাক্টর বা ডেমোনস্ট্রেটর ইনচার্জ হিসেবেও অনেকে নিয়োগ পান। এছাড়া, নার্সিং অধিদপ্তরে প্রজেক্ট অফিসার, সহকারী পরিচালক পদেও কাজ করতে পারেন।
ইত্যাদি হলো একজন নার্সের প্রধান উল্লেখযোগ্য কাজ।
বিএসসি নার্সিং পড়ার জন্য এসএসসি / সমমান, এইচএসসি/সমমান পরিক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ হতে প্রতি পরীক্ষায় নূন্যতম জিপিএ ২.৫০ এর বেশি এবং মোট জিপিএ ৭.০০ থাকতে হবে।
কোনো পরিক্ষায় যদি জীববিজ্ঞানে জিপিএ ৩.০০ এর নিচে থাকে তবে গ্রহন করা হবে না। নার্সিং এর ক্ষেত্রে এটি একটি ডিগ্রি কোর্স।
ডিপ্লোমা নার্সিং পড়ার জন্য ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি অথবা ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি এর যে কোনো বিভাগ হতে নূন্যতম জিপিএ ৬.০০ থাকতে হবে।
যদি কোনো পরিক্ষায় জিপিএ ২.৫০ এর কম থাকে তবে গ্রহন করা হবে না। ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্সে শুধুমাত্র মেয়েরা পড়তে পারবে।
হ্যাঁ। আপনি চার বছর মেয়াদী বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স করলে সরাসরি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
চাকরি বিধি অনুযায়ী একজন নার্স সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করবেন। শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী রোস্টার ডিউটির ক্ষেত্রে ৪০ ঘণ্টা ডিউটি দৈনিক ৬ দশমিক ৫ ঘণ্টা করে ৬দিন করা যায়। আবার সেটা তিনি সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেও করতে পারেন, আবার দু’দিন ৮+৮ হিসেবে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা করে এবং একদিন ৮ ঘণ্টা, অর্থাৎ তিন দিনেও করতে পারেন।
একজন নার্স অবশ্যই ডাক্তার হতে পারেন। যদি সেই নার্সের ডাক্তারি হবার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে। বিএসসি পাস করতে হবে। আর ডাক্তারি শিক্ষালাভের জন্য যে যে নিয়মাবলী আছে সেগুলোর শর্ত পূরণ হলেই অ্যাডমিশন পাওয়া যায়।
একটি বার্ধক্য জনসংখ্যা মানুষের সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরও স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন, তাই আমরা এই জনসংখ্যার যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করার কারণে যোগ্য নার্সিং পেশাদারদের চাহিদা বেশি। ২০২৫ সালের মধ্যে নার্সদের প্রয়োজনীয়তা ১৬% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে , যা অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক বেশি।
নার্সরা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় নেভিগেট করতে লোকেদের সহায়তা করে, যত্নের ধারাবাহিকতা জুড়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং ফলো-আপ প্রদান করে, পুরো ব্যক্তির প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, এবং উপযুক্ত যত্ন প্রদান করে এবং সাংস্কৃতিক নম্রতা প্রদর্শন করে স্বাস্থ্যসেবা ইক্যুইটি অগ্রসর করতে এবং স্বাস্থ্যের ফলাফল উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।
নার্স শব্দের অর্থ সেবিকা বা সেবক। মিডওয়াইফ শব্দের অর্থ ধাত্রী। নার্স হচ্ছে এক জন প্রশিক্ষিত মানুষ যিনি কোনো দেশ বা সংস্থার নিকট সার্টিফিকেট পেয়ে মানব সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। হসপিটালে প্রতিদিন ৬ থেকে ১২ ঘন্টা নার্সদের ডিউটি করতে হয়। তাই বুঝতেই পারছেন নার্সিং কত গুরুত্বপূর্ণ এবং দায়িত্বের পেশা।
আজকের পোস্টে আমরা নার্সিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। আশাকরি পোস্টটি খুব তথ্যবহুল করে তুলে ধরতে পেরেছি এবং পোস্টি পড়ার পর আর অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
More Post
শেখ রাসেল কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আপনিও জিতে নিতে পারেন ল্যাপটপ !
You must be logged in to post a comment.
কপি পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।
কপি করা নয়, আমার পোস্টই বিভিন্ন প্লাটফর্মে
এই বাক্যগুলোর মানে কী দাঁড়ায়?
আপনার লেখা দাবি করবেন?
দয়া করে নীতিমালা মেনে মানসম্মত পোস্ট করুন।
আপনাকে আগেও সতর্ক করা হয়েছে।
নার্সরা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় নেভিগেট করতে লোকেদের সহায়তা করে, যত্নের ধারাবাহিকতা জুড়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং ফলো-আপ প্রদান করে, পুরো ব্যক্তির প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, এবং উপযুক্ত যত্ন প্রদান করে এবং সাংস্কৃতিক নম্রতা প্রদর্শন করে স্বাস্থ্যসেবা ইক্যুইটি অগ্রসর করতে এবং স্বাস্থ্যের ফলাফল উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।