ফেসবুকের এক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে- ‘একশন ব্লক।’ যেটাকে অনেকেই বিরক্ত মনে করে। কিন্তু এটা কি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের উপর জোরপূর্বক চেপে দেয়? না, কখনই না। ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গ করে ফেসবুক ইউজ করলেই কেবল এসব সমস্যায় মুখাপেক্ষী হতে হয়।
.
যেসব কারণে আপনি টেম্পরারি বা একশন ব্লক খেতে পারেন অথবা আপনার আইডি ডিজেবলও হতে পারে :
১। ফেসবুকের অতিরিক্ত কোনো ফাংশন ব্যবহার করলে কিংবা লাইক বাটন অতিরিক্ত চাপলেই তারা আপনাকে একশন ব্লক তথা লাইক ব্লক করে দিবে।
২। রোবট তথা বুট সাইট বা সফ্টয়্যর ব্যবহার করলে লাইক ব্লক খাবেন।
৩। কারো ইনবক্সে বা কমেন্টবক্সে নিষিদ্ধ, অশ্লীল, পর্ণ ও বুট লিংক (ফেসবুকের কমিউনিটির অনুমোদিত লিংক নয়) এমন লিংক সেন্ট করলে আপনাকে তারা অস্থায়ী ব্লক করে দিবে।
৪। একই কমেন্ট অনেক স্যাটাসে দিলে।
৫। অতিরিক্ত ইমুজি ব্যবহার করলে।
৬। দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা বিরামহীন চ্যাটিং করলেও এই অস্থায়ী ব্লক খায়।
৭। নিজের টাইমলাইন, ইনবক্স ও কমেন্টবক্সে অতিরিক্ত লিংক শেয়ার করলেও এই একশন ব্লক খেতে পারেন।
৮। প্রতিদিন অতিরিক্ত ফেন পেজে লাইক করলে।
৯। প্রতিদিন নিজের টাইমলাইনে ঘনঘন পোস্ট করলে। একই পোস্ট বারবার করলে কৃর্তপক্ষ স্প্যাম মনে করে আপনাকে অস্থায়ীভাবে ব্লক দিবে।
১০। বিভিন্ন ফেসবুক এপস বা সাইটে আইডি এক্সেস তথা লগিন করলে।
১২। কমেন্টে অতিরিক্ত ছবি বা স্টিকার দিলে।
১৩। মানুষদেরকে অতিরিক্ত ট্যাগ করলে ফেসবুকে তা স্প্যামিং মনে করে অস্থায়ী ব্লকে রেখে দেয়।
১৪। দিনে অতিরিক্ত ফেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালে এবং তারা যদি ঝুলিয়ে রাখে। তাহলেও আপনি ব্লক খেতে পারেন।
১৫। সাধারণত মেয়েরা বেশি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পায়। আর এতেই তারা মহাখুশি হয়ে ৭জি স্প্রিডে এ্যাকচেপ্ট করতে থাকে। ব্যস, লও ঠেলা! ফেসবুক এটাকে রোবোটিক সিস্টেম মনে করে- হয় ‘ফেস লক’ অথবা ‘ফটো ভেরিফিকেশন’ লকে ফেলে দিবে। আর না হয় আইডি ‘ডিজেবল’ করে দিবে।
১৬। এরকম সবগুলো পয়েন্টেই যখন আপনি অপরাধী হয়ে যান, তখনই আপনার আইডি ডিজেবল হয়ে যায়।
.
উপরোক্ত লেখাগুলোকে আপনারা ফান মনে করলেও করা কিছু নাই। কারণ এসব বাস্তব অভিজ্ঞতা, ফেসবুক কমিউনিটির নিতীমালা ও শর্তাবলী ঘেটেই লিখলাম। ফেসবুক আইডি অস্থায়ী লক, একশন লক, ফেইস লক, ফটো ভেরিফিকেশন লক ও ডিজেবল হওয়া কেবলমাত্র আমাদের নিজেদের দোষেই হয়।
.
এসব থেকে মুক্তি পাবার উপায় :
১। এখন আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন- ‘এসব থেকে মুক্ত পাওয়ার উপায় কী?’ আমি আপনাকে দুই বাক্যে উত্তর দিব- ‘ফেসবুক কমিউনিটির নীতিমালা পরিপন্থি কাজগুলো থেকে বিরত থাকুন। তাহলে আপনার আইডি আজীবন তারা কিছু করবে না।’
২। সুষ্ঠু ও সুন্দর মন মানসিকতা নিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করুন।
৩। তাদের নীতিমালার বহির্ভুত কোনো কাজ করবেন না।
৪। আপনার সঠিক নাম দিয়ে অ্যাকাউন্ড খুলুন। জন্ম সনদ পত্র, সার্টিফিকেট কিংবা ভোটার আইডি কার্ডানুযায়ী নাম ও জন্ম তারিখ দিন। প্রয়োজনে ইংলিশ ভাষার নাম ব্যবহার করুন। (‘খোলা আকাশের নিচে, ফুটন্ত গোলাপ, কবিতার শেষ প্রান্তে।’ এরকম ইত্যাদি স্টাইলিস নামের আইডিগুলোর ফেসবুকে কোনো নিশ্চয়তা নেই। যখন তখন ডিজেবল হতে পারে।)
৫। ফেসবুক অ্যাকাউন্ডে বায়ো-ডাটা সঠিক তথ্য দিয়ে কমপ্লিট করুন।
৬। আজ্ঞে হ্যাঁ, ইদানিং ফেসবুকের আপডেটজনিত সমস্যার কারণে ‘লাইক ব্লক, একশন ব্লক, টেম্পোরারি ব্লক’ হচ্ছে। নো টেনশন। নিচের নিয়মে আবেদন করুন…
লাইক বাটনে চাপলে এরকম দেখালে, “If you think you’re seeing this by mistake, please let us know.” তাহলে ‘let us know’ এ ক্লিক করুন। নিচের ফাঁকা বক্সে এই টেক্সটা লিখে সাবমিট করুন। প্রয়োজনে বারবার সাবমিট করুন। এক্কেবারে ত্রিশবার সাবমিট করুন। তাহলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনাকে লাইক ব্লক থেকে আনব্লক করতে বাধ্য।
৭। পরিশেষে বলতে চাই- ফেসবুকে কারো সাথে শত্রুতা করবেন না। কাউকে গালি দিবেন না। অলওয়েজ সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। তাহলে কেউ আপনাকে রিপোর্ট মারবে না। ফলে আইডি নষ্ট হওয়ার ভয়ও থাকবে না।
৮। এর পরও যদি কেউ আপনাকে অনর্বত রিপোর্ট মারে। তাহলে কয়েক দিনের জন্য ‘Deactivate Account’-এ যেয়ে এই অপশনে টিক চিহ্ন দিয়ে ‘I don’t feel safe on Facebook’ সাবমিট করে আইডি ডিএক্টিভ করে রাখুন। তিন-চারদিন পর কিংবা আপনার সুবিধামতো আবার রিএক্টিভ করতে পারেন।
.
– ‘কাওছার আজাদ’ (কচু)