Site icon Trickbd.com

দেখুন যেভাবে ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক হতে পারে, এবং জেনে নিন সমাধান

আজকের এই ডিজিটাল বিশ্বে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। আমরা কম বেশি প্রতিদিনই অনলাইনে বিভিন্ন হ্যাকিং নিউজ দেখে থাকি। আমাদের লাইফ যতই দিন দিন অনলাইন নির্ভর হয়ে উঠছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্লাক হ্যাট হ্যাকারের সংখ্যা। সেই সাথে হ্যাকাররা একাউন্ট হ্যাক করার জন্য নুতুন নুতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করছে। আপনার বিভিন্ন একাউন্টের সাথে আপনার ব্যাংক একাউন্টও পৌঁছে যেতে পারে হ্যাকারের হাতের নাগালে। তো বন্ধুরা এই আর্টিকেলে আপনার ব্যাংক একাউন্ট কিভাবে হ্যাক হতে পারে এমন কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো এবং কিভাবে এগুলো থেকে সাবধান থাকবেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

1. Banking Trojans (Smartphone)

হ্যাকার আপনার ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করার জন্য একটি ম্যালিসিয়াস অ্যাপ ইউজ করতে পারে। এই পদ্ধতিতে হ্যাকার আপনার ব্যাংকিং অ্যাপের একটি ক্লোন অ্যাপ তৈরি করে সেটা কোনো থার্ড-পার্টি অ্যাপ স্টোরে আপলোড করে। আপনি যখন সেটা আপনার ফোনে ইনস্টল করে লগইন করেন তখন আপনার লগইন ইনফরমেশন হ্যাকারের কাছে পৌঁছে যায়।
সমাধানঃ থার্ড-পার্টি অ্যাপ স্টোর থেকে এধরনের একাউন্টের অ্যাপ ইন্সটল না করা। এ ধরনের অ্যাপ ইনস্টল করার ক্ষেত্রে সর্বদা ব্যাংকের অফিসিয়াল সাইট থেকে অথবা কোনো ট্রাস্টেড অ্যাপ স্টোর থেকে ইন্সটল করা।
 

2. App Hijacking

এই পদ্ধতিতে হ্যাকার একটি ব্যাংকিং ফরম যুক্ত একটি ম্যালও্যার আপনার ডিভাইজে ইন্সটল করায়। এটা আপনার ফোনে একবার ইন্সটল হওয়ার পর এটা চুপচাপ হয়ে যায়। এতটাই চুপচাপ যে আপনি বুঝতেই পারেন না যে আপনার ডিভাইজে কোনো ম্যালও্যার ইনস্টল হয়ে আছে। এটা ইনস্টল হওয়ার পর এটা আপনার পুরো ফোন স্ক্যান করে এবং আপনার ফোনে থাকা ব্যাংকিং অ্যাপ খুজে বের করে। একবার খুজে পেলে এটা আপনার ব্যাংকিং অ্যাপের লগইন পেজের মতো একটা পপআপ লগইন পেজ আপনার সামনে নিয়ে আসে। এঁর পর যখন আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টের লগইন ডাটা দিয়ে ফরমটি পুরন করেন তখন সেটা হ্যাকারের কাছে পৌঁছে যায়।

সমাধানঃ কোনো পপআপ উইন্ডোতে লগইন ডাটা প্রবেশ করানো থেকে বিরত থাকুন। ফোনের অ্যাপ ম্যানেজার মাঝে মাঝে চেক করুন সেখানে কোনো অপরিচিত অ্যাপ আছে কিনা। কোনো এক্সটারনাল লিঙ্কে প্রবেশ করার পুরবে সতর্ক থাকুন কেননা এধরনের লিঙ্কে ক্লিকের মাধ্যমে আপনার ফোনে হ্যাকারের তৈরিকৃত ম্যালওয়ার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে।

3. Smishing

স্মিসিং হলো ফিশিং এঁর উদ্দশ্যে পাঠানো একধরনের টেক্সট মেসেজ যেটাতে আপনাকে লোভ দেখিয়ে একটি লিঙ্কে প্রবেশ করার কথা বলা হয়। যেমন এই মেসেজটি দেখুনঃ

Congratulations! আপনি ৫০০০৳ একটি গিভওয়ে জিতেছেন। এটি এক্টিভ করতে নিচের লিঙ্কে প্রবেশ করুন। bit.ly/5000giveway

তো আর কি ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনাকে ব্যাংকের লগইন পেজের মতো একটি ফিশিং পেজে নিয়ে যাবে যেখানে লগইন করলে আপনার লগইন ডাটা হ্যাকারের কাছে চলে যাবে।

সমাধানঃ এধরনের মেসেজে থাকা লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরিত থাকুন।

3. Keyloggers

কিলগার একটি পপুলার হ্যাকিং টেকনিক। কিলগার হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে সিস্টেমে কিছু সফটওয়ার রান করা হয় যেটা আপনার টাইপ করা সমস্ত লেখা সেভ করে রাখে। যে ডিভাইজে এই সফটওয়ার রান করা হয়েছে সেই ডিভাইজে আপনি যদি আপনার ইমেইল পাসওয়ার্ড ইত্যাদি ইনপুট করেন তাহলে এই সফটওয়ার আপনার ইনপুটকৃত সব ডাটা সেভ করে রাখবে এবং হ্যাকারকে সরবরাহ করবে।

সমাধানঃ  আপনার ফ্রেন্ড বা অন্য কারুর কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে ইমেইল, ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ইনপুট করার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করুণ।

4. SIM Swapping

এই পদ্ধতিতে হ্যাকার কোনোভাবে আপনার সিম কার্ড অপারেটরকে কনভেন্স করিয়ে আপনার সিম কার্ডের একটি ক্লোন তৈরি করে। এঁর ফলে আপনার সিমে যেসব কল এবং মেসেজ আসার কথা সেগুলো হ্যাকারের সেই ক্লোন করা সিমেও চলে যায়। তারপর কি হবে সেটা তো বুঝতেই পারছেন।

সমাধানঃ অবশ্যই কোনো ট্রাস্টেড অপারেটরের সিম কার্ড ইউজ করুন। আর ভালো হয় যে আপনি যে নাম্বার থেকে আপনার একাউন্ট তৈরি করেছেন সেটা কারুর সাথে শেয়ার না করা।

5. Man-in-the-middle attack

ম্যান-ইন-দ্যা-মিডিল-অ্যাটাক হ্যাকারদের ব্যবহারিত একটি জনপ্রিয় এবং ভয়ংকর হ্যাকিং টেকনিক। এই পদ্ধতিতে হ্যাকার দুই পক্ষের কথপকথনের মধ্যে প্রবেশ করে এবং সবকিছু দেখে নেয়। এখানে দুই পক্ষের মধ্যে একজন ভিক্টিম এবং অপরটি ব্যাংক অ্যাপ্লিকেশন। মানে এই পদ্ধতিতে আপনি ব্যাংক অ্যাপ্লিকেশনে যাকিছু ইনপুট করেন তা হ্যাকার যেনে যায়।
সমাধানঃ ফ্রী পাবলিক অ্যাক্সেস পয়েন্ট থেকে ইন্টারনেট ইউজ না করা। আন সিকিউর প্রটোকলে(http) ব্রাউজিং না করা।
তো এই ছিলো আজকের আর্টিকেল, ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন, ধন্যবাদ।