Be a Trainer! Share your knowledge.
Home » Hadith & Quran » চলুন দেখে নেই রাশিফল সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

চলুন দেখে নেই রাশিফল সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

বিভিন্ন পত্রিকায় রাশি সম্পর্কিত অনেক কিছু দেখা যায়। এই রাশিরগুলোর ভিত্তি কী? মানুষের জীবনে এই রাশিগুলোর কি কোন কার্যকারিতা আছে। রাশি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? আবার অনেক মানুষ দেখা যায় তাদের রাশির সাথে মিল রেখে পাথরের আংটি পরে। এগুলো বিশ্বাস কি ইসলাম সমর্থন করে?

রাশিফলরাশিফল সম্পর্কে ইসলামের ব্যাখ্যা

জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা শুধু হারামই নয় একজন জ্যোতিষবিদের কাছে যাওয়া এবং তার ভবিষ্যদ্বাণী শোনা, জ্যোতিষশাস্ত্রের উপর বই কেনা অথবা একজনের কোষ্ঠী যাচাই ইসলামে সম্পূর্ণ নিষেধ। যেহেতু জ্যোতিষশাস্ত্র প্রধানত ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যারা এই বিদ্যা চর্চা করে তাদের জ্যোতিষী বা গণক বলে গণ্য করা হয়। ফলস্বরূপ, যে তার রাশিচক্র খোঁজে সে রাসূল (সা.) প্রদত্ত এই বিবৃতির রায়ের অধীনে পড়ে, হজরত হাফসা (রা.) কর্তৃক বর্নিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে গণকের কাছে যায় এবং কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে তার চল্লিশ দিন ও রাত্রির নামাজ গ্রহণযোগ্য হবে না।” [সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ৫৫৪০]
এমনকি জ্যোতিষের বক্তব্যের সত্যতায় সন্দিহান হওয়া সত্ত্বেও একজনের শুধু তার কাছে যাওয়া এবং প্রশ্ন করার শাস্তি এই হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যদি কেউ জ্যোতিষ-সংক্রান্ত তথ্যাদির সত্য মিথ্যায় সন্দিহান হয়, তবে সে আল্লাহর পাশাপাশি অন্যরাও হয়তো অদৃশ্য এবং ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে জানে বলে সন্দেহ পোষণ করে। এটা এক ধরনের শিরক। কারণ আল্লাহ স্পষ্ট করে বলেছেন, “অদৃশ্যের কুঞ্জি তাঁহারই নিকট রহিয়াছে, তিনি ব্যতীত কেহ জানে না।” [সূরা আন-আনআমঃ ৫৯]
আরো ইরশাদ হয়েছে, “বল আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেউই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখে না।” [সুরা আন-নামল: ৬৫]
যতই জ্যোতিষ বলুক অথবা যা কিছুই জ্যোতিষশাস্ত্রের বইয়ে থাকুক, কেউ তার রাশিচক্রে প্রদত্ত ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বাস করলে সে সরাসরি কুফরি (অবিশ্বাস) করে। কারণ রাসূল (সা.) বলেছেন, ”যে একজন ভবিষ্যতদ্রষ্টা গণকের নিকট গেল এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করল, মুহাম্মদের নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছিল সে তা অবিশ্বাস করল।” [সহিহ আবু দাউদ, হাদিস নং-৩৮৯৫]

পূর্বে বর্ণিত হাদিসের মত এই হাদিসে শাব্দিকভাবে গণকের সম্বন্ধে উল্লেখ করা হলেও জ্যোতিষবিদদের জন্যেও সমভাবে প্রযোজ্য। উভয়ই ভবিষ্যতের জ্ঞানের অধিকারী বলে দাবি করে। জ্যোতিষবিদদের দাবি সাধারণ গণকদের তৌহিদের বিরোধিতা করার মত। সে দাবি করে যে মানুষের ব্যক্তিত্ব নক্ষত্র দ্বারা নিরূপিত এবং তাদের ভবিষ্যৎ কর্মকান্ড এবং তাদের জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী নক্ষত্রে লিপিবদ্ধ রয়েছে। সাধারণ গণক দাবি করে যে একটি কাপের তলায় চায়ের পাতায় গঠন অথবাহাতের তালুর রেখা একই বিষয় বলে। উভয় ক্ষেত্রে তারা সৃষ্ট বস্তর বাস্তব বিন্যাসের মধ্যে অদৃশ্যের জ্ঞানের ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা দাবি করে।
জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস এবং রাশিচক্র পরীক্ষা করা পরিস্কারভাবে ইসলামের শিক্ষা এবং বিশ্বাসের বিপক্ষে। যা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ কর্তৃক আল্লাহর রাসূলকে (সা.) বলা হয়েছে, “বল, আল্লাহ যাহা ইচ্ছা করেন তাহা ব্যতীত আমার নিজের ভাল মন্দের উপরও আমার কোন অধিকার নেই। আমি যদি অদৃশ্যের খবর জানিতাম তবে তো আমি প্রভূত কল্যাণই লাভ করিতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করিত না। আমিতো শুধু মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য সর্তককারী ও সুসংবাদবাহী।” [সুরা আল-আ’রাফঃ ১৮৮]
সুতরাং, সত্যিকার মুসলমানগণ এই সব ক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে থাকতে নৈতিকভাবে বাধ্য। একইভাবে আংটি, গলার হার ইত্যাদির উপর যদি রাশিচক্রের চিহৃ থাকে তবে তা পরা উচিত নয়, এমনকি কেউ তাতে বিশ্বাস না করলেও। এটি একটি বানোয়াট পদ্ধতির অংশ যা কুফর বিস্তার করে এবং একে সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করা উচিত। কোন বিশ্বাসী মুসলমানের রাশিচক্র কি তা জিজ্ঞাসা করা অথবা তার প্রতীকী অনুমান করার চেষ্ট করাও উচিত নয়। কোন পুরুষ অথবা মহিলা কর্তৃক খবরের কাগজের রাশিচক্রের কলাম পড়া অথবা পড়তে শোনাও অনুচিত। যে মুসলমান তার কার্যক্রম নির্ধারণ করতে জ্যোতিষতত্ত্ব সম্বন্ধীয় পূর্বাভাস ব্যবহার করে, তার উচিত আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থণা (তওবা) করা এবং ইসলামের উপর বিশ্বাস নবায়ণ করা। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে শিরক এবং কুফর থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক। আমিন।

6 years ago (Jan 10, 2018)

About Author (28)

Ashraful Islam
author

Help By Others.

Trickbd Official Telegram

11 responses to “চলুন দেখে নেই রাশিফল সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?”

  1. মিঠু Contributor says:

    পোস্ট টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনার মঙ্গল কামনা করছি। “যা যাক আল্লাহু খায়ের”

  2. Astonnoor Subscriber says:

    সুন্দর পোষ্ট

  3. @ishan Subscriber says:

    এখনকার দুনিয়ার মানুষ এতো খারাপ হয়ে গেছে যে;বুঝায়লে তো বুঝবেই না বরং আরো বেশি এসব খারাপ কাজ দেখিয়ে দেখিয়ে করে”সমস্যা নাই মরার পরেই বুঝবেনে

    • Ashraful Islam Author Post Creator says:

      সত্য কথা বলছেন ভাই। “বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এইবার ঘুঘু তোমার বাধিব প্রান”। একদিন সবাইকে আল্লাহপাকের কাছে ধরা দিতেই হবে।

  4. Abdus salam Contributor says:

    ধন্যবাদ ভাই

  5. SAKIB Subscriber says:

    ভালো পোস্ট

Leave a Reply

Switch To Desktop Version