আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
যারা গোপনে যিনা করেছেন। যে ভাবে তওবা করলে মাফ পাবেন
প্রথমেই বলে রাখা দরকারঃ যে যেনা ভ্যবিচার পরকীয়া এই সমস্ত পাপ গুলো খুবই ভয়াবহ এবং জঘন্য গুনাহ। এর কারণে যেমন সামাজিক ভাবে নিজেকে অপমানিত হতে হয়। তেমনি পারিবারিকভাবেও সমাজের নিকট লজ্জার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন পরকীয়ার মাধ্যমে কমপক্ষে তিন থেকে চারটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি পরকীয়ার কারণে তিন থেকে চারটি পরিবার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। তাই এই সমস্ত পাপ থেকে প্রত্যেক নর-নারী দূরে থাকা দরকার।
এখন প্রশ্ন হলো কেউ এসব পাপ করে ফেললে সে পাপ থেকে তার কি ফিরে আসার কোন পথ আছে কিনা…? আর যদি পথ থেকে থাকে তাহলে তো মানুষ গুনাহ করবে আরো ক্ষমা চাইবে। সেক্ষেত্রে বক্তব্য হলোঃ ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই, মনে করুন আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। সেখানে বিশাল একটি প্রজেক্টে দায়িত্বভার আপনার উপর এবং আপনি কাজটি ভালোভাবেই জানেন। কোন একদিন আপনি জেনে বা না-জেনে একটি ভুল করে ফেললেন অথবা একটি অনৈতিক কাজ করে বসলেন।
এখন কোম্পানি যদি আপনার ভুলের জন্য আপনাকে সেই চাকরি থেকে বের করে দেয় আর এইটা যদি আপনি নিশ্চিত হয়ে থাকেন যে প্রজেক্টেটা শেষ হলে আপনাকে কাজ থেকে বের করে দিবেই। তাহলে আপনি সেই কাজটা আরও মনোযোগ সহকারে যত্ন সহকারে সম্পন্ন করতে পারবেন না। এদিকে আপনি যদি এই কোম্পানিতে ক্রমাগত ভুলের কারণে চাকরি চলে যায়, তাহলে দ্বিতীয় কোন কোম্পানি আপনাকে চাকরিতে নেওয়ার আগে হাজারবার ভাববে।
কিন্তু আপনি যদি এটা শিওর না হতেন যে আপনাকে কাজ থেকে বের করে দিতেও পারে আবার মন থেকে ক্ষমা চাইলে মালিক আপনাকে ক্ষমা করে দিতে পারে। তাহলে কোথাও না কোথাও আপনার মধ্যে প্রজেক্টের বাকি কাজটায় মনোযোগ অধিক হয়ে যাবে এবং আপনি চেষ্টা করবেন কাজের মধ্যে যেন আর কোন ভুল না হয়। যেন মালিক সন্তুষ্ট হয়ে আপনাকে কাজ থেকে বের করে না দেয়। সেজন্য আপনি প্রানপনে ভাবে চেষ্টা করবেন যেন ভবিষ্যতে আপনার কাজের মধ্যে আর কোন ভুল না হয়।
ঠিক একইভাবে আপনি যদি কোন পাপ করার পর নিশ্চিত হয়ে যেতেন যে, এই পাপ করলে আর কোন ক্ষমা নেই তাহলে আপনার মধ্যে এক ধরনের একচেটিয়া মনোভাবের জন্ম নিতো। আপনি ভাবছেন জাহান্নামে যেহেতু যাওয়া নিশ্চিত, তাই আমি দুনিয়াটাকেই জাহান্নাম বানিয়ে দেই। আপনার বেপরোয়া পাপের কারণে সমাজে আরো অন্যান্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এভাবে একজন দুইজন করে যখন সবাই একই চিন্তা করতে থাকতো, তাহলে মানুষ পাপের জন্য মানুষের চূড়ান্ত পর্যায়ের বাড়াবাড়ির জন্য এই দুনিয়াতে সমাজ কাঠামো ভেঙ্গে পড়তো।
অথচ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণেই, মানুষ পাপ কাজ করলেও অধিকাংশ মানুষ পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়। যার ফলে সমাজের ভারসাম্য বজায় থাকে। কেয়ামতের আগে আগে যখন তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে, তখনকার পৃথিবী হবে এক চূড়ান্ত পর্যায়ের নৈরাজ্যের পৃথিবীর। তাই তওবার সুযোগ থাকতে থাকতেই আমাদের সবার নিজেদের পাপের জন্য এখনই ক্ষমা চাওয়া দরকার।
মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেনঃ যখন কেউ অশ্লীল কাজ করে কিংবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং আল্লাহ ব্যতীত কে’বা অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে…? এবং তারা যা করছে সেই ব্যাপারে জেনে শুনে হঠকারিতা করেনা/ জেনেশুনে বার বার করেনা।( সূরা আল ইমরান আয়াত ১৩৫)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেনঃ তারা আল্লাহর সমীপে কেন তওবা করেনা এবং তার কাছে কেন ক্ষমা প্রার্থনা করে না….? অথচ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়।( সূরা আল মায়েদা আয়াত ৭৪)
সুপ্রিয় পাঠক অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে যেনার মতো কাজ করে ফেললে। যেনা-ব্যভিচার মতো অপরাধ করে ফেললে ব্যভিচার বা পরকীয়া করে ফেললে কিভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট তওবা করব এবং কিভাবে এই অপরাধ থেকে আল্লাহ দরবারে ক্ষমা পাবো। তো সুপ্রিয় পাঠক এই সম্পর্কে আমরা সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করবো।
হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিতঃ আবু দাউদ শরীফের এসেছে হাদিস নাম্বারঃ ১৫২১। তিনি বলেনঃ আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ যেকোন বান্দা কোন গুনাহ লিপ্ত হওয়ার পর উত্তমরূপে ওযু করবে। তারপর দন্ডায়মান হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়বে, দু’রাকাত নামাজ পড়ার পর অতঃপর ইস্তেগফার করবে অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহ মার্জনা করে দেবেন এবং সে বান্দাকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন। এই কথা বলার পর রাসূল (সাঃ) সূরা আল ইমরানের ১৩৫ নম্বর আয়াত পাঠ করে শোনালেন।
সুপ্রিয় পাঠক যারা এই সমস্ত কাজে লিপ্ত হয়েছিলেন, এখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট তওবা করতে চান। তাদের জন্য পদ্ধতি হলোঃ প্রথমে ভাল করে অযু করে নেবেন অর্থাৎ উত্তমরূপে অজু করবেন। অজু করার পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। নফল নামাজ পড়ার পর, পূর্বের কাজের জন্য লজ্জিত হবেন, অনুতপ্ত হবেন এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকটে ক্ষমা চাইবেন এবং ভবিষ্যতে এমন পাপ করবেন না এই বলে দূর প্রতিজ্ঞ হবেন। এর সাথে সাথে যদি এই কাজ অপরের, অনিচ্ছায় করে থাকেন, তাহলে তার নিকট ক্ষমা চেয়ে নিবেন।
ইনশাআল্লাহ এভাবে যদি আপনি তওবা করেন এবং ক্ষমা চাওয়ার সময় দু ফোটা চোখের পানি যেন গড়িয়ে পড়ে সেটা খেয়াল রাখবেন এবং কায়মনোবাক্যে অন্তর থেকে দ্বীল থেকে ক্ষমা চাইবেন তওবা করবেন। মনে মনে গুনাহের খেয়াল রেখে অর্থাৎ মনে মনে থাকবে যে আপনি আবার গুনাহ করবেন এবং ক্ষমা চাইবেন। এরকম চিন্তা করবেন না। এরকম চিন্তা না করে মন থেকে ক্ষমা চাইবেন এবং ভবিষ্যতে এই রকম পাপ কাজ করবেন না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবেন। ইনশাআল্লাহ এভাবেই যদি আপনি তওবা করতে পারেন, ইস্তেগফার করেন ক্ষমা চান। তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
Trickbd তে অনেকেই পোস্ট কতে চান কিন্তু করতে পারছেন না। আপনারা Ictbn.Com ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে পারেন।এখানে একাউন্ট করলেই author।এখানে প্রতি পোস্টের জন্য ৫-৫০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।পোস্টের মানের উপর ভিত্তি করে। ICTBN.Com
আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি