Site icon Trickbd.com

★ রাসূল সাঃ, পীর বা ওলি কেউ ই গায়েব জানতেন না [পর্ব –৩] + বিরুদ্ধবাদী দের উত্তর

আসসালামু আলাইকুম,  ইসলামী আকিদা বিষক পোস্টে আপনাদের স্বাগতম।  আগের পোস্ট ১ আগের পোস্ট  ২  .

গালি দেওয়া হারাম, এটা জেনেও গালি দেওয়া কুফুরী। বিস্তারীত সুরাহ হুজুরাত এর ১১ আয়াত থেকে দেখলে পাবেন। লম্বা হচ্ছে পোস্ট তাই সব  উত্তর সংক্ষেপে দিচ্ছি। বাকি গুলো সকল -আমি যে যে তাফসীরের কথা বলছি শুধি তা নয় – যেকোন তাফসিরের বই পড়ে দেখতে পারেন। তাহলে শুরু করা যাক ——- 



যারা বলেন আল্লাহর ছাড়াও নবীরা, ওলি রা গায়েব জানেন।  তাদের কাছে ২ টি প্রশ্ন।

প্রশ্ন ১ – নবী রা ও অলি রা কি জানেন বা জানতেন যে – তার সামনে উপস্থিত কেউ, বা তিনি নিজে – আগামিকাল কি খাবেন? একটু পর কি খাবেন? কোথায় খাবেন? কার মৃত্যু কখন হবে? কার জন্ম কখন হবে? কে একটু পর কোথায় যাবে? পেছনে কি আছে না দেখে বলতে পারেন? কোথায় তার মৃত্যু হবে? কোথায় কবর হবে? কখন কোথায় বৃষ্টি হবে? কবে কেয়ামত হবে ইত্যাদি। 

এগুলি ই গায়েবের জ্ঞান । কেউ কেউ আছে যারা নবীদের কাছে আসা ওহি কে গায়েবের জ্ঞান বলছেন। যারা এই ওহি কে গায়েব এর জ্ঞান দাবি করছেন তারা স্রেফ পাগলামি করছেন। নবী (সঃ) জান্নাত জাহান্নাম দেখে এসেছেন, কিন্তু তিনি দেখেন নিকখন কার মৃত্যু হবে, বা যে প্রশ্ন গুলো বলেছি তার একটাও। যারা এই দাবি করছেন তারা একটা আয়াত থেকে, বা হাদিস থেকে ইঙ্গিত ইশারা খুজে বের করে বলছেন যে এই আয়াতে একথার ইঙ্গিত আছে যে নবী (আ) রা গায়েব জানতেন, ওলি রা গায়েব জানেন। যা আমি উত্তর নিচে দিয়েছি আজকে। যেখানে আগের পোস্ট ১ আগের পোস্ট  ২  এ কুরআন পাকের স্পস্ট আয়াত আমি উল্লেখ করেছি সেখানে ইঙ্গিত ইশারা তে প্রমান হয়না, আর ইঙ্গিত নিলে অনেক অর্থই আসে যা বলতে গেলে কুফুরিও হবে। আর বর্তমানে বাংলাদেশের কিছু দরবার শরীফের আলেম (!) দের ব্যাখ্যা গ্রহনযোগ হবে নাকি ১৪০০ বছর ধরে সাহাবী, তাবেয়ী, সুন্নাত ভিত্তিক জ্ঞানে জ্ঞানী  মুফতিগনের দের ব্যাখ্যা গ্রহনযোগ্য হবে তা সবাই বোঝে। 



প্রশ্ন ২ –  আল্লাহ গায়েব জানেন, সাথে নবী বা ওলি রা গায়েব জানলে এই ওলি ও নবী দের কি আল্লাহর সাথে শরিক করা হলোনা? সুরাহ কাওসার দেখুন। তিনি এক ও একক। কেউ ই তার সমকক্ষ নয়।

অনেকে মনে করেন শুধু আল্লাহর সাথে আর কারো ইবাদত করলে সেটা  শিরক, অনেকে ভাবেন শুধু  মুর্তি পুজা করা শিরক। না ভাই।  আল্লাহর কোন সিফাত অস্বীকার করা ই শিরক, এবং আল্লাহর কোন সিফাত  এর সাথে অন্য কাউকে সেই সিফাতের অধিকারী মনে করাও শিরক। ।

সিফাত কি ? – যেমন আল্লাহর ৯৯ টা নাম কুরআন কালামে এসেছে, সেগুলো সিফাত বা আল্লাহর গুণ। আল্লাহর কোন সিফাত অস্বীকার করা ই শিরক কিভাবে? – কেউ যদি বলে আল্লাহ রিজিক দাতা নয়। সে আল্লাহর রাজ্জাক সিফাত অস্বীকার করলো, এতে দুনিয়ার সকল মাখলুক ই যে রিজিকদাতা নয় আল্লাহ কে তাদের সাথে এক করে দেখা হলো। এজন্য এটা শিরক। 



যারা ইংগিতে বিশ্বাসী, স্পস্ট আয়াত স্বীকার করেনা । দরবার শরীফের ভুল অর্থ করা  লেখা দলিল কপি করে বার বার লেখার চেষ্টা করছেন কিন্তু কমেন পেন্ডিং এ থাকছে। তাদের কিছু লেখা ও উত্তর নিচে দেওয়া হলোঃ 



আমার নবীজী গায়েব এর সংবাদ জানে কিনা, হাজির শব্দের অর্থ যিনি
উপস্হিত হন । আর নাজির
মানে যিনি দেখেন ।
আল্লাহ তাআলা রাসূল
দঃ কে হাজির নাজির এর
ক্ষমতা দান করেছেন ।
————————-
দলীল ১ ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺍﻧﺎ ﺍﺭﺳﻠﻨﻚ
ﺷﺎﻫﺪ ﻭ ﻣﺒﺸﺮ ﻭ ﻧﺬﻳﺮﺍ
হে নবী দঃ আমি আপনাকে
স্বাক্ষী হিসেবে ,
ভীতি প্রদর্শনকরী ও
সুসংবাদ
দানকারী হিসেবে প্রেরণ
করেছি । (আল কোরআন)

এখন প্রশ্ন হল স্বাক্ষী কে
হতে পারে ? অবশ্যই
যিনি ঘটনাস্হলে উপস্হিত
থাকবেন
এবং ঘটনা দেখবেন । এখন
আমার রাসূল
দঃ যদি হাযির না হন এবং
নাযির না হন
তাহলে তিনি কিভাবে
স্বাক্ষী দিবেন ?? 

উত্তরঃ এই রকম যুক্তি ভুল; এটি আছে সুরাহ আহযাবের  ৪৫ নং আয়াতে । তার আগের আয়াত দেখুন ৪৪ নং আয়াত এ কি আছে তাহলে বুঝবেন, আর এই ৪৫ নং আয়াতের সঠিক অর্থ দেখুন ,

তাছাড়া কোনো একটি সহীহ, যয়ীফ বা মাউযূ হাদীসেও বর্ণিত হয় নি যে, তিনি বলেছেন ‘আমি হাযির-নাযির’। অথচ তাঁর নামে এই মিথ্যা কথাটি বলা হচ্ছে। এমনকি কোনো সাহাবী, তাবিয়ী, তাবি-তাবিয়ী বা ইমাম কখনোই বলেন নি যে, ‘রাসূলুল্লাহ (সঃ) হাযির-নাযির’। 



দলীল২
ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺍﻭﻟﻲ ﺑﺎﻟﻤﻮﻣﻨﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻧﻔﺴﻬﻢ
নবী মুসলমানদের
কাছে তাদের প্রাণের
চেয়েও নিকটতর । (আল
কোরআন)



উত্তরঃ এই আয়াত টি আছে সুরাহ আহযাব এর ৬ নং আয়াতে, যা এই লেখক ৫ ভাগের ১ ভাগ উল্লেখ করছেন, পুরো আয়তা টি হলো (বাংলা)

নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মুমিন ও মুহাজিরগণের মধ্যে যারা আত্নীয়, তারা পরস্পরে অধিক ঘনিষ্ঠ। তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধুদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য-সহোযোগিতা করতে চাও, করতে পার, সেকথা আলাদা। এটা কিতাবে  লিখিত আছে।

 আর বুখারী- ১৪, মুসলিম- ৪৪ এ এসেছে

তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি ততক্ষণ মুমিন হতে পারবেনা যতক্ষন না আমি তার কাছে তার পিতা, স্ত্রী বা সন্তান দের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।  

তাই উক্ত আয়াত এর কিছু অংশ বলে নবী (স) কে মানুষের অন্তরের খবর জান্তা বানিয়ে আল্লাহর সাথে সরাসরী শিরক করা হচ্ছে, আল্লাহ বার বার বলেছেন – “আমি ই জানি বান্দাহর অন্তরে কি আছে”। 



দলীল ৩

ﺍﻟﻢ ﺗﺮﺍ ﻛﻴﻒ
ﻓﻌﻞ ﺭﺑﻚ ﺑﻌﺎﺩ হে মাহাবুব
আপনি কি দেখেননি ,
আযনার প্রতিপালক আদ
নামক
জাতির সাথে কিরূপ আচরণ
করেছেন? (আল কোরআন)



উত্তরঃ  এটা আরবী গ্রামারের বিষয়। শুধু দরবার শরীফ ই নয়, অনেক কম জানা আলেমও গ্রামার কম জানায় ভুল করেন, নিচে আমি একটি তাফসিরের ছবি দিলাম, পড়ে নিন।  যদি পাঠকের জ্ঞানে ভুল   থাকে ঠিক করে নিন। আমি এখানে সুরাহ ফীল এর আয়াত থেকে তাফসির টি দিচ্ছি। উভয় যায়গাতে একই তাফসীর। 



এরকম শব্দ দিয়ে অনেক আয়াত পবিত্র কালামে এসেছে, কিন্তু সব মুফাসসির গন , আরবী গ্রামারে পারদর্শী গণ বলছেন – এটা কুরআনের বাদশাহী ভাষা, যেমন আল্লাহ অনেক যায়গাতে বলেছেন – আমরা থাকি, আমরা আসি, আমরা দেখি। এর মানে এই দরবার শরীফ রা কি করবে? যারা গ্রামারের জ্ঞান রাখেনা! এর মানে এরা করবে হয়তো (নাউযুবিল্লাহ) – আল্লাহ অনেক, বা আল্লাহ অনেকের সাথে ছাড়া নিজে কিছ করতে পারেনা। আস্তাগফিরুল্লাহ। আসলে এটা ও একটা বাদশাহী ভাষা, যেমন কোন কোম্পানীর পরিচালক একা অথচ বলেন – আমরা দেখছি, প্রধান মন্ত্রি একা অথচ বলেন  – আমরা দেখবো। ইত্যাদি।  তাই যারা ভুল অর্থ করে মানুষ এর ভেতর শিরক প্রচার করছে তাদের থেকে সাবধান থাকবেন। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন ।


 



শিরক মুক্ত তাওহিদ ভিত্তিক জ্ঞানার্জনে সহায়ক – এই পোস্টের নিচে >  আমার নামের নিচে ফলো করুন।