আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।
জন উইক মুভি দেখেন নি এমন মুভি লাভার খুব কমই আছে। যারা দেখেন নি তাদের জন্যই আমার আজকের এ পোস্ট। মুভিগুলোর রিভিউ সহ হিন্দি ডাবিং এর ডাউনলোড লিংক নিয়ে এসেছি। তো চলুন শুরু করা যাক।
John Wick Chapter 1 (2014)
Genre: Action, Crime, Thriller
Imdb rating: 7.4/10
Personal rating: 8/10
***হালকা স্পয়লার***
২০১৪ সালে John Wick ফ্রেঞ্চাইজির প্রথম মুভিটি রিলিজ হয়। রিলিজের পর’ই সিনেমাটি দর্শকদের মন জয় করে নিতে সমর্থ হয়। হলিউডে মোটামুটি যত একশন & থ্রিলার সিনেমা রিলিজ হয়েছিল সেগুলোর একটা বেঞ্চমার্ক বানিয়ে দিয়ে যায় মুভিটি। আজকের রিভিউ এই ফ্রেঞ্চাইজির তিনটি সিনেমা নিয়ে।
দি ম্যাট্রিক্স এর পর চ্যাড স্টাহেলস্কি এবং কিয়ানু রিভস’কে আবার একসাথে কাজ করতে দেখা যায় সিনেমাটিতে। মুভির প্লট অতি তুচ্ছ হলেও একশন, সিনেমেটোগ্রাফি, অভিনয়, মার্শাল আর্ট, ডায়লগ এটিকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। আপন মানুষের মৃত্যুর পর তার স্মৃতিগুলো নিয়ে বেচে থাকার জন্য একাকী জীবনযাপনকালে যখন একজন মানুষকে বাধ্য হয়ে আবারো তার পুরনো অন্ধকার জগতে ফিরে যেতে হয় ও কিভাবে সে বিষয়গুলো হ্যান্ডেল করে এবং প্রিয় মানুষের ছেড়ে যাওয়া জিনিসগুলো কতটা মূল্যবান হয় তার কাছে সেটাই মুভিতে দেখানো হয়েছে।
আমার মতে ২০২০’এ এসে এরকম মানুষ পাওয়াই যাবেনা যে জন উইক দেখেনি। এটি এমন একটি মুভি, যেটা বারবার দেখা যায়। অন্যসব বাদ দিয়ে শুধুমাত্র একশনের কথা বললে এটা সর্বকালের সেরা একশন মুভির তালিকায় থাকবে, নির্দ্বিধায়। এই মুভি নিয়ে এটা আমার তৃতীয় পোস্ট, বারবার পোস্ট করার একটাই কারন; আমি চাইনা কোন একশন মুভি লাভার অথবা কোন একজন সাধারণ মুভি লাভারও এই মুভি ওয়াচলিস্টের বাইরে রাখুক।
মুভির কাহিনী সারসংক্ষেপ এমন যে, একজন এক্স হিটম্যান অবসরজীবন ছেড়ে দিয়ে নিজের কাজে ফিরে আসে। সে ফিরে এসে আরেকজন গ্যাংস্টাররে পিছে ছুটে, যে তার আদুরে কুকুরকে মেরে স্বাদের গাড়ীটা নিয়ে পালিয়েছে।
মুভির সারসংক্ষেপ শুনে মনে হবে, হয়তো আপনি মুভির মেইন প্লট জেনে গিয়েছেন, বাকী কাহিনী আগের থেকে আন্দাজ করতে পারবেন। আসলে এমন কিছুই নাহ। শুরুতে মনে হবে এটা অন্যসব ওই ধরনের সাধারন একশন মুভির মতোই, যেখানে ভিলেন শুরুতে হিরোকে মারে আর তার কিছু নিয়ে যায় এরপর পরে হিরো এসে তার প্রতিশোধ নেয়। আসলে এটা ওই ধরনের মুভির কাতারেই নেই। এটা এমন একটি একশন মুভি, যেমন একশন মুভি আমরা সবসময় চেয়ে এসেছি। অনেকেতো এই কথাও বলেন যে “একশন মুভি কেমন হওয়া দরকার, জন উইক তার উদাহরণ”।
মুভির প্রতিটা মুহূর্তই অনেক শার্প আর সুন্দর ছিলো। ডিরেক্টর প্রতিটা ফ্রেমে একটিং, মেকাপ, লাইটিং এসবের মধ্যেই থেমে থাকেননি; সিনেমাটোগ্রাফিও ছিলো অনেক দারুণ মানে তিনি সবকিছুতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। একজন হিটম্যানের লাইফ কেমন হওয়া দরকার, একজন হিটম্যান কিভানে বিহেভ করবে, কিভাবে চলবে, দৈনন্দিন জীবন কেমন হবে তার এসব কিছুই ছিলো একদম অন্য মাত্রায়।
একশন মুভি বলেই মুভিটা শুধু একশনে থেমে থাকেনি, প্রথম কয়েক মিনিট মুভির কাহিনীটা সাজানো হয়েছে এরপর প্রতিটা মুহূর্তই ছিলো এঞ্জয়েবল। মুভির গল্প এতো আহামরি না হলেও অনেক ভালো ছিলো, আমরা যদি একশন মুভি হিসেবে দেখি তাহলে সচরাচর একশন মুভির কাহিনীতে তেমনিভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়না, হিরো আসলো-বসলো-মারলো আর মুভি শেষ তবে এখানে আসলো-বসলো-মারলোর বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে যেটা মুভির শেষ পর্যন্ত আপনাকে ধরে রাখবে স্ক্রিনে । প্রত্যেকের অভিনয় থেকে শুরু করে জন উইককে নিয়ে দেওয়া বর্ণনা, আমার কাছে একটুও বোরিং লাগেনি। মুভি জুড়ে এমন সিচুয়েশন তৈরি করা হচ্ছিলো যে, এমন একটা দুনিয়া যেখানে একজন মানুষ সবার ভয়ের কারন আর সে আসছে আপনার জন্য।
সবকিছু বাদ দিয়ে জন উইক ক্যারেকটারটাকে এভাবে বিল্ড করা হয়েছে যে, মুভি ভালো লাগুক না লাগুক জন উইককে আপনার কাছে ভালো লাগবেই। একজন ভয়ংকর মানুষকে এভাবে ভালো লেগে যাবে যে, তার হাতে মেশিন গান M249 ধরিয়ে আপনার সামনে দাড় করিয়ে দিক অথবা তাকে একটা পেন্সিল দিক, আপনি কনফিউজড থাকবেন যে ভয় পাবেন নাকি খুশী হবেন। একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত আর পছন্দের একটা ক্যারেক্টার এই জন উইক।
সাধারণত মুভিগুলোতে ওভারপাওয়ার নিয়ে আমাদের সবারই একটু কম বেশী সমস্যা থাকে, সুপারম্যান থেকে বলিউডের টাইগার শ্রফ পর্যন্ত, ওভারপাওয়ার কাউকেই মানায় নাহ তবে জন উইক এমন একটা ক্যারেক্টার; তার মধ্যে যতো পাওয়ারই এড করা হোক আপনার কাছে কখনো অতিরিক্ত মনে হবেনা। আপনি আরো বলবেন এটাইতো ওর কাজ, খুশীতে তালি দিবেন। মোট কথা জন উইকের আলাদা একটা বিশাল ফ্যানবেজ আছে, আমিও তার মধ্যে একজন। হতে পারে মুভি দেখার পর আপনিও আমাদের দলে যোগ দিবেন।
শেষে সম্পূর্ণ মুভি নিয়ে বলতে গেলে, একশন মুভি হিসেবে যদি দেখেন তাহলে নিরাশ হবেন নাহ। প্রতিটা সিন থেকে শুরু করে জন উইকের স্যুটটা পর্যন্ত একেবারে বেস্ট ইন দ্যা ক্লাস। আমার কাছে শেষে বস ফাইটটা পুরো মুভির তুলনায় তেমন ভালো লাগেনি। একেবারে খারাপ লেগেছে তাও বলছিনা, তবে সেটা আরো ভালো হতে পারতো। তবে মুভি ভালো লেগেছে অনেক, আমার দেখা সেরা একশন মুভির মধ্যে এটাকে প্রথম দিকে রাখবো।
এই মুভিতে আন্ডারগ্রাউন্ডকে অনেক ভালো ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সুন্দর একটা কাহিনীকে থ্রিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। একটা একশন মুভির যা যা দরকার, তার কোন অভাব দেখবেন না এখানে।
Download Links (Dual Audio Hindi Dubbed)
480p (306 MB):
720p (1.02 GB):
1080p (1.74 GB):
Bangla Subtitle : Download Link Here
[ সাবটাইটেল দিয়ে মুভি দেখার নিয়ম ]
John Wick Chapter 2 (2017)
Genre: Action, Crime, Thriller
Imdb rating: 7.5/10
Personal Rating: 8/10
***হালকা স্পয়লার***
চ্যাপ্টার ১ এ লোসেফ কে হত্যার পর জন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়। কিন্তু হঠাৎ একদিন তার পুরনো বন্ধু স্যান্টিনো তার নিকট সাহায্য চায় একটি এসেসিনেশন এর জন্য। কিন্তু যেহেতু জন স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে চায় তাই সে স্যান্টিনো কে ফিরিয়ে দেয়। তবে হাই টেবিল এর রুলস যে কেউ যদি আপনাকে বা আপনি যদি তাদের কারও থেকে সাহায্য নিয়ে থাকেন তাহলে সেটা একরকম প্রমিস হয়ে যায়। এমন প্রমিস যা ভাঙলে সে আপনার সাথে যেকোনো কিছু করার অধিকার রাখে এতে হাই টেবিল ভুক্তভোগীর সাহায্য করবে না। আর জন কোনো এক মিশনে স্যান্টিনোর সাহায্য নিয়েছিলো তাই সে এখন তার কাজ করতে বাধ্য । মুভির বাকি অংশ জানতে দেখে ফেলুন এই হাই ভোল্টেজ একশন সিনেমাটি।
সিক্যুয়েল হিসেবে আগের সিনেমাটির মতো সব ডিটেইলস ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে ডিরেক্টর। যদিও প্লট নতুন তাও পুরনো অনেক ঘটনার সাথে সামঞ্জস্য আছে এটার কাহিনির। আন্ডারওয়ার্ল্ড-এ থেকে এসাসিয়েন রা কিভাবে কাজ করে, ব্লাড ওথ ‘র মূল্য, কিভাবে খুব কাছের সম্পর্কও ক্ষমতার সামনে তুচ্ছ হয়ে যায় সেটাই দেখিয়েছেন ডিরেক্টর। বরাবরের মতো কিয়ানু’র অভিনয় অনবদ্য। তার প্রত্যকটি মুভমেন্ট, এক্সপ্রেশন, সায়লেন্স চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
এই ইউনিভার্স যে কতটা হাইলি ডিটেইল্ড সেটা এই মুভিতে আরও ক্লিয়ার করা হয়েছে যেখানে প্রথম মুভিতে সিনেমা সম্পুর্ন টাই জন উইকের দিকে ফোকাস ছিলো। সেখানে এই সিনেমায় হাই টেবিল তাদের কিছু রুলসের ব্যাপারে এক্সপ্লেইন করা হয়েছে।সাথে একশন সিন যেনো ডাবল এই সিনেমায়। প্রথম সিনেমায় মেজর একটা টাইম গান ফাইটে ফোকাস করলেও জন উইক যে আরও বিভিন্ন ফাইটে পারদর্শী তা এখানে ক্লিয়ার করা হয়েছে আর কেনো তাকে Baba-yaga বলা হয় তা এটা দেখলে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
Download Links (Dual Audio Hindi Dubbed)
480p (406 MB):
720p (1.2 GB):
1080p (2.07 GB):
Bangla Subtitle: Download Link Here
[ সাবটাইটেল দিয়ে মুভি দেখার নিয়ম ]
John Wick Chapter 3 (2019)
Genre: Action, Crime, Thriller
Imdb rating: 7.4/10
Persona rating: 8.3/10
***হালকা স্পয়লার***
John Wick -2 এর পরবর্তী ঘটনাগুলো থেকে শুরু হয় ফ্রেঞ্চাইজির তিন নম্বর মুভিটি। জন’কে মারার জন্য ১৪ মিলিয়ন ডলারের একটি কন্ট্রাক্ট দেয়া হয় এসাসিয়েনদের মাঝে। কিন্ত কেন? শান্ত স্বভাবের জন’কে এদের সাথে ডিল করতে হয়।
জন উইক ফ্রেঞ্চাইজির ক্যারেক্টর গুলোর কথা না বললেই নয়। প্রত্যকটি ক্যারেক্টর দারুণ অভিনয় করেছেন।জনের পারস্পেকটিভে আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াল্ড’কে দেখানো হয়েছে। আন্ডারগ্রাউন্ডে এসাসিয়েন’রা কিভাবে কাজ করে, এর পেছনের ডার্ক স্টোরি কি, রিটায়ার্ড লাইফ থেকে জন কেন বেক করে তার এসাসিয়েন লাইফে? সবকিছু মিলিয়ে অত্যন্ত গোছানো একটি ফ্রেঞ্চাইজি এটি।
কিয়ানু রিভসকে আলাদাভাবে ধন্যবাদ দিতে হয় সিনেমাগুলোর জন্য। জন যেরকম শান্ত, ভদ্র, সু-ভাষী এবং সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখে কিয়ানুর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা দেখা যায়। তার হাম্বলনেস খুব সহজেই সবার চোখে পড়েব।
চ্যাপটার ২ এর মত চ্যাপটার ৩ ও নিরাশ করে নি। যারা উরাধুরা মারামারি পছন্দ করেন তাদের জন্য বেস্ট চয়েজ। দুই ঘন্টা কেমনে কাইটা গেল বুঝলামই না। ট্রেইলার দেখেই অনেকে বুইঝা গেছেন এইবার উইক ভাই বই দিয়ে মারামারি করবে সেটাতো করছেই সাথে ঘোড়া দিয়াও মারামারি করছে। আবারো বলছি ঘোড়া দিয়া মারামারি আর কিভাবে সেটা দেখতে হইলে মুভি দেখতে হবে। সংলাপ গুলা যথেষ্ট ভালো ছিলো। খালি একটা জিনিস বুঝলাম না জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই উইক ভাই এর উপর এত ক্ষ্যাপা কেন! কিন্তু ওরা জানে না ওরা কার সাথে লাগতে আসছে। স্টোরিটাও ভালো ছিল অবশ্য স্টোরির প্যাটার্ন সেইম। বাট দেখলে ঠকবেন না। আর একশন খুবই ভালো ছিলো।
John Wick Chapter 4 আসছে ২০২২ সালে।
Download Links (Dual Audio Hindi Dubbed)
480p (466.17 MB):
720p (1.08 GB):
1080p (1.88 GB):
Bangla Subtitle:
[ মুভি ডাউনলোড করার পর যে সাবটাইটেল মুভির সাথে মেলে সেটা দিয়ে মুভিটি উপভোগ করুন]
সাবটাইটেল দিয়ে মুভি দেখার নিয়ম
( .zip ফাইলের ক্ষেত্রে ZArchiver এপ দিয়ে এক্সট্র্যাক্ট করে নিন । এরপর ও না বুঝলে এই লিংকে ক্লিক করে পোস্টটি দেখে নিন। পিসির জন্য WinRar সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন )
ডাউনলোড করার জন্য যেসব লিংকে গুগল একাউন্টে লগিন করার প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে গুগল একাউন্টে লগিন করে নিবেন। এরপর গুগল ড্রাইভে ফাইলটি নিয়ে সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিবেন। কোনো ডাউনলোড লিংকে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করার পর অন্য কোনো লিংক বা পেইজে নিয়ে গেলে আবার ব্যাক করে আগের পেইজে এসে অর্থাৎ ডাউনলোড পেইজে এসে পুনরায় ডাউনলোড এ ক্লিক করবেন। আর যাদের গুগল একাউন্টে লগিন করলে ড্রাইভ হ্যাক হওয়ার ভয় আছে তারা এই লিংকে ক্লিক করে পোস্টটি পড়ে নিবেন। অথবা যে গুগল একাউন্ট আপনি ইউজ করেন না বা আপনার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় সেই একাউন্টে লগিন করে নিবেন। আশা করছি ভয় কেটে যাবে। আমি ইউজারদের কথা বিবেচনা করেই লিংক দিয়ে থাকি। কাজেই কোনো হ্যাকিং লিংক প্রোভাইড করার প্রশ্নই আসে না।
[Links Credit: Mlwbd, Freedrivemovies, Filmybro, GDTot]
মাছ ধরার বিভিন্ন পদ্ধতি দেখতে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন চ্যানেলটিঃ RTFishing
আজকে এই পর্যন্তই।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।আল্লাহ হাফেজ।