সবাইকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের পোস্ট শুরু করছি। পোস্টের নাম দেখেই হয়তো বুঝে গিয়েছেন আজকে কি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি । তাই সময় নষ্ট না করে আলোচনা শুরু করে দেই ।
আজকে যে সকল বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবো সেগুলো নিম্নরুপঃ
- অফিসিয়াল ও আন অফিসিয়াল ফোনের পার্থক্য কি?
- কিভাবে অফিসিয়াল ও আন অফিসিয়াল ফোন চিনতে পারবেন।
- অফিসিয়াল ও আন অফিসিয়াল ফোনের সুবিধা অসুবিধা এবং অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় বের করা নিয়ম ।
কারণ গ্লোবাল ভার্সন ফোন এবং গ্লোবাল রম ব্যবহার করতে হলে আর ফোনের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে আপনাকে অফিসিয়াল ফোন কিনতে হবে।
অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল ফোনঃ
অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে গেলে দেখা যায় একই কোম্পানির দুই-তিন ধরণের ফোন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, কোনটার দাম বেশি আবার কোনটার দাম কম। কিন্তু আপনি যদি না জানেন কোনটা অফিসিয়াল আর কোনটা আনঅফিসিয়াল ফোন তাহলে ঠকার চান্স অনেকটা থেকে যায়। কারণ নতুন অবস্থায় আসল ফোন চেনা অনেকটা কষ্টের ব্যাপার। আপনি যদি কোন ফোন ক্রয় করতে চান তাহলে আপনাকে অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল ফোনের পার্থক্য র্নিণয় নিয়ম গুলো জানতে হবে। যেগুলো আমি ধীরে ধীরে এই পোস্টে আলোচনা করবো ইনশাহ আল্লাহ্ । যেগুলা সচরাচর সবারই জানা থাকলে ভালো হবে । যাতে করে আগামীতে ফোন কিনতে আর কোন সমস্যা না হয় ইনশাহ আল্লাহ্ ।
অফিসিয়াল ফোন কিঃ
যেসকল মোবাইল ফোন সরকারী অনুমোদন নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়ে দেশের বাজারে প্রবেশ করে কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করা হয় তাকে অফিসিয়াল ফোন বলা হয়। অর্থাৎ ফোন কোম্পানি বৈধ ভাবে বিভিন্ন দেশে পৌছানোর জন্য সরকারী সকল কার্যক্রম বৈধ রেজিস্টেশন করণের পর কাস্টমারের হতে তুলে দিয়ে ওয়্যারেন্টি মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত সকল দায়-দায়িত্ব বহন করে তাকে অফিসিয়াল ফোন বলা যায়। যেসব ফোনে পূর্ণ গ্যারান্টি ওয়ারেন্টি আপডেটসহ সকল সার্ভিস পাওয়া যায়।
আন অফিসিয়াল ফোন কি :
অন্যদিকে যেসকল মোবাইল ফোন সরকারী অনুমোদন না নিয়ে চোরাই পথে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে দেশের বাজারে প্রবেশ করে এবং সরকারী ভাবে রেজিস্ট্রেশন না করে, ভ্যাট ও ট্যাক্স না দিয়ে, সরাসরি কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করা হয়ে থাকে তাকে আনঅফিসিয়াল ফোন বলা হয়। অর্থাৎ ফোন কোম্পানি, ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে বিভিন্ন দেশের ফোন সরকারী সকল ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে, নিবন্ধন, রেজিস্টেশন না করে, কাস্টমারের কাছে সরাসরি বিক্রয় করে থাকে। যেগুলো ফোন কোম্পানি ওয়্যারেন্টি দেয় না বা কোন দায়-দায়িত্ব বহন করে না, তাকে আন অফিসিয়াল ফোন বলা যায়।
অফিসিয়াল ফোনের সুবিধা অসুবিধাঃ
- অফিসিয়াল ফোনের দাম অনেক বেশি হয়।
- ফোনের সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
- পূর্ণ সার্ভিস ওয়্যারেন্টি পাওয়া যায়।
- ফোনের বৈধ মালিকানা পাওয়া যায়।
- ফোন হারালে সহজে ট্রাকিং করা যায়।
- আসল অরিজিনাল ফোন পাওয়া যায়।
- লিখিত ভাবে ফোনটি মালিকের নামে থাকে।
- নিয়মিত ফোনের সকল আপডেট পাওয়া যায়।
আনঅফিসিয়াল ফোনের সুবিধা অসুবিধাঃ
- আনঅফিসিয়াল ফোনের দাম অনেক কম হয়।
- ফোনের কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না।
- পূর্ণ সার্ভিস ওয়্যারেন্টি পাওয়া যায় না।
- ফোনের বৈধ মালিকানা পাওয়া যায় না।
- ফোন হারালে সহজে পাওয়া যায় না।
- আসল অরিজিনাল ফোন পাওয়া যায় না।
- লিখিত ভাবে ফোনের মালিকানা যায় না।
- ফোনের কোন আপডেট পাওয়া যায় না।
অফিশিয়াল ফোন যেভাবে চিনবেনঃ
আসল বা বৈধ মোবাইল ফোন চেনার উপায় গুলোর মধ্যে কিছু সহজ উপায়ে যেকোন কোম্পানির অফিসিয়াল ও আন অফিসিয়াল ফোন বৈধ কি-না তা যাচাই করে কিনতে পারেন। যেগুলোর মধ্যে নিচে কয়েকটা উপায় উল্লেখ করা হলোঃ
- #06# ডায়াল করে IMEI রেব করে আইএমইআই চেকার ওয়েবসাইটে গিয়ে মোবাইলের IMEI নম্বর দিলে মোবাইলের সকল ইনফরমেশন চলে আসবে। যেখান থেকে আপনার মোবাইলের ব্রান্ড, মডেল, ভার্সন, ডেট সব আসছে কি-না দেখে মিলিয়ে নিতে পারবেন।
- সকল মোবাইলের সিক্রেট কোড থাকে যেগুলো মোবাইলের নাম ও মডেল লিখে গুগলে সার্চ দিলে চলে আসে। সেই সিক্রেট কোড দিয়ে ফোন যাচাই করে নিতে পারেন। সিক্রেট কোডের মাধ্যমে মোবাইল সম্পর্কে সকল তথ্য বের করে অফিসিয়াল ও আন অফিসিয়াল মোবাইল ফোন চেনা সম্ভব।
- মোবাইল ক্রয় করার সময় ফোন কোম্পানি, ব্রান্ড, অনুমোদিত ওয়ারেন্টি সিল, স্বাক্ষর এবং ক্রয়কৃত আসল মেমো দেখে মোবাইল কিনলে অফিসিয়াল ফোন পাওয়া যায় সম্ভব।
- প্রতিটা নতুন অফিসিয়াল মোবাইল ফোনের IMEI নম্বর মোবাইলের কাভার বক্সের উপরে দেওয়া থাকবে। যেটা নিয়ে আপনি আপনার অন্য মোবাইলে IMEI. INFO সাইটে নেট ব্রাউজ করে সকল তথ্য আসল কি-না নকল দেখে নিতে পারবেন।
- 2018 সালের পর বাজারে আসা অফিসিয়াল সকল মোবাইল ফোনের ডাটা রেকর্ড বি.টি.আর.সি তে থাকবে। আপনি চাইলে এস.এম.এস করে জেনে নিতে পারেন।
যেমনঃ KYD IMEI-NUMBER send 16002
খুব দ্রুত আনঅফিসিয়াল ফোন বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছেঃ
সরকারী ভাবে আন অফিসিয়াল ফোন যেকোন সময় বন্ধ হতে পারে। যার প্রতিবেদন কয়েক বার টিভি নিউজে দেখানো হয়েছে। তবে কবে থেকে দেশে আন অফিসিয়াল ফোন বন্ধ হবে তা হয়ত আমাদের জানা নেই। নিশ্চই সরকার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এজন্য এখন থেকে আমাদের আন অফিসিয়াল ফোন কেনা বন্ধ করা উচিৎ।
এবার গ্লোবাল ভার্সন সম্পর্কে জেনে আসি চলুন।
GLOBAL VERSION হলো ইন্টারন্যশনাল ভাবে মোবাইলের যে ভার্সন ব্যবহার করা হয় তাকে বোঝায়। যেমন- মনে করুন আপনি একটা শাওমি মোবাইল ক্রয় করলেন এক ভার্সনে যেটা সেই সময়ের ভার্সন ছিলো কিন্তু কিছুদিন পর সেই ফোনের নতুন ভার্সন আপডেট আসলো যেটা অফিসিয়াল ফোন হলে গ্লোবলি আপডেট করতে পারবেন। কিন্তু আন অফিসিয়াল ফোনের গ্লোবাল ভার্সন আপডেট করা সম্ভব নয়।
প্রথম প্রকাশিতঃ মামুন্স ব্লগে