সুস্বাগতম সবাইকে ৷ আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ট্রিকবিডির এডমিন পারমিশন নিয়েই আজকের পোস্ট ৷
ধারাবাহিক ভাবে গার্মেন্টস কাজ শিখার খুটি নাটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো ইন্শাল্লাহ ৷?
দারিদ্র্যতা হল বাংলাদেশের একটা বহুমাত্রিক সমস্যা। এইটি অনেক বছর ধরেই এদেশকে আকড়ে ধরে আছে।
বাংলাদেশ গরিব ও দরিদ্র দেশ এদেশে দারিদ্র হার: ২০১৯ তথ্য অনুযায়ী “দারিদ্র্য হার ২০.৫ এবং হত দারিদ্র্য হার ১০.৫”
(আরো জানতে Pdf file দেখুন ) ৷
বর্তমানে এই পোশাক কারাখানাতে (গার্মেন্টস) ভালো চাকরি নিতে গেলে ইন্টারভিও দিতে হয় ৷ কাজের অভিগ্যতা থাকতে হয় ৷ পড়াশুনার সাথে তো আর কাজের অভিগ্যতা আসে না এর জন্য কাজ করেই অভিগ্যতা অর্জন করতে হয় ৷
বাংলাদেশে ৫৫.৮% বেকারত্বের হার (২০১৭ তথ্য অনুযায়ী)
কোন সরকারি বা বেরসরকারি অফিসে চাকরি নিতে গেলে লক্ষ লক্ষ টাকা (ঘুস) চা,পান,বিড়ি,মিস্টি ইত্যাদি ইত্যাদি খাবারের জন্য দিতে হয় ৷
একমাত্র অবল্বন যে টাকা বা ঘুস ছাড়াই চাকরি হয় তা হলো পোশাক শিল্প কারখানায় (গার্মেন্টস) ৷
বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৬ শতাংশ পূরণ করে ‘তৈরি পোশাক শিল্প’ (গার্মেন্টস) খাত যা বাংলাদেশের গত বছরের সর্বমোট রপ্তানির ৮৩ % (৩,০০০ কোটি টাকা)।
বিশ্বে রপ্তানি আয় অর্জনের ক্ষেত্রে বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ছিল ৪২ তম। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের অংশ ছিল ৬ শতাংশ এবং পোশাক রপ্তানিতে একক দেশ হিসেবে বিশ্বে ২য়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপিতে পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাতের অবদান ছিল ১৪.৬ %। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল এর হিসাব মতে তৈরি পোশাক শিল্পে বিশ্বের প্রথম সারির ১০টি উন্নতমানের (পরিবেশবান্ধব) কারখানার ৭টি’ই রয়েছে বাংলাদেশে ৷
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সব চাইতে বেশি অবদান রাখে তৈরি পোশাক শিল্প, এই শিল্প দেশীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মোট প্রবৃদ্ধির ৬-৮% আসে পোশাক খাত থেকে। বাংলাদেশের এই শিল্পকে বর্তমানে উন্নতবিশ্ব সহ উন্নয়নশীল দেশগুলো অনুকরণ করছে। স্বাধীনতার পরে যে শিল্প আমাদের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছে তার মাঝে একমাত্র মাধ্যম কিন্তু এই পোশাক শিল্পই। বিশ্বের বুকে নিজেদের কঠোর শ্রম ও উৎপাদন দক্ষতা দেখাতে পারার প্রমাণ মিলে এই শিল্পের মাধ্যমে।
?পোশাক শিল্পের ইতিহাস?
আদিকাল থেকে মানুষ কোন না কোন বস্ত্র ব্যবহার করে আসলেও আসলে সেলাই মেশিনের সাহায্যে তৈরি বস্ত্র ব্যবহার শুরু হয় সর্বপ্রথম ১৭৫৫ সালে। সেখান থেকে বাংলাদেশে এর ব্যবহার শুরু হয় অনেক পরেই বলা যাই। বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ সালে। আর রিয়াজ গার্মেন্টস ছিল তার পথ-প্রদর্শক। ১৯৬০ সালে ঢাকার উর্দুরোডে রিয়াজ স্টোর নামে একটি ছোট দর্জির কারখানা কাজ শুরু করে। তখন থেকেই রিয়াজ গার্মেন্টস স্থানীয় বাজারে কাপড় সরবরাহ করতো। ১৯৭৩ সালে কারখানাটি নাম পরিবর্তন করে মেসার্স রিয়াজ গার্মেন্টস লিমিটেড নামে আত্মপ্রকাশ করে। রিয়াজ গার্মেন্টস ১৯৭৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিসভিত্তিক একটি ফার্মের সাথে ১৩ মিলিয়ন ফ্রাংক মূল্যের ১০ হাজার পিস ছেলেদের শার্ট রপ্তানি করে। আর এটাই ছিল প্রথম বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পোশাক রপ্তানি। এরপর ২৭ ডিসেম্বর ১৯৭৭ বাংলাদেশের প্রথম সংস্থাপন (বর্তমান জনপ্রশাসন) সচিব মোহাম্মদ নূরুল কাদের খান দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন । ১৯৭৯ সালে দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড দক্ষিণ কোরিয়ার দায়েগু কর্পোরেশনের সহায়তায় প্রথম যৌথ উদ্যোগে নন-ইকুইটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে। ফলে দেশ গার্মেন্টস ও দক্ষিণ কোরিয়ার দায়েয়ু কর্পোরেশনের মধ্যে প্রযুক্তিগত এবং বাজারজাতকরণে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপিত হয়। মেশিনে কাজ করার মতো উপযোগী করে তোলার জন্য প্রথমে শ্রমিকদের এবং পরে পরিদর্শকদের দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই ১৯৮০ সালে উৎপাদন শুরু করে। দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড ছিল প্রথম শতভাগ রপ্তানিমুখী কোম্পানি। ১৯৮০ সালে ইয়াঙ্গুন নামে অপর একটি কোরিয়ান কর্পোরেশন বাংলাদেশি ট্রেকসীম লিমিটেড নামে অপর একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রথম যৌথ উদ্যোগে তৈরি পোশাক কারখানা গড়ে তোলে। বাংলাদেশি অংশীদাররা নতুন প্রতিষ্ঠান ইয়াঙ্গুনস বাংলাদেশ-এ শতকরা ৫১ ভাগ ইকুইটির মালিক হয়। ট্রেকসীম লিমিটেড ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে প্যাডেড এবং নন-প্যাডেড জ্যাকেট সুইডেনে রপ্তানি করে। উভয় ক্ষেত্রেই বাজারজাতকরণের দায় বিদেশি অংশীদাররাই নিয়েছিল। গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক ও গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে প্রকৃতপক্ষে ১৯৮১-৮২ সালে ০.১ বিলিয়ন টাকার রেডিমেইড গার্মেন্টস রপ্তানি করে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের পদচারণা আরম্ভ হয়। উক্ত সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গার্মেন্টস শিল্পের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না। অথচ মাত্র ১০ বৎসরের ব্যবধানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ১৯৯২-৯৩ সালে ১৪৪৫ মিলিয়ন ইউ.এস ডলারে উন্নীত হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। দিনকে দিন পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। যেখানে ২০১১-১২ অর্থবছরে সর্বমোট পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৯,০৮৯.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে তা ২০১২-১৩ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১,৫১৫.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এর পরিমাণ ৯,৬৫৩.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রপ্তানি আয় বাড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সংখ্যাও দিনকে দিন বাড়ছে । বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫০০০ এর উপর গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রয়েছে। যেগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে পোশাক উৎপন্ন করা হচ্ছে। ৯০ দশকের পর নারীদের অন্তর্ভুক্তি এই শিল্পকে আরো গতিশীল করে তোলে ।
তথ্য সুত্রঃ
তথ্য সুত্র ১- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ৷
তথ্যসুত্র ২- একুশে টিভি। ২০২০-০৮-২৫ তারিখ
তথ্যসুত্র ৩: প্রথম আলো 2019-08-08
তথ্যসুত্র ৪: wikipedia
Waiting for next post
যদি পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আমার সাইটটি ঘুরে দেখুন একবার ☞ hmvai.com
ধন্যবাদ ৷
You must be logged in to post a comment.
❤
Next..