প্রথমেই সবাইকে আমার সালাম রইলো।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, শুধু আমি ছাড়া কেউ বা কোনো টিউনারই এসইও ফ্রেন্ডলি পোস্ট লেখেন না। আসলে এসইও (SEO) কি অনেকেই তা জানেনই না।
## আবার অনেকে নাম শুনেই ভয় পান। “এসইও বোধহয় শুধু এডভান্সড লোকেরাই পারে।” – এই ভুল ধারণা নিয়ে থাকে। আসলে ট্রিকবিডি টিম বা এডমিন যতই নিজের সাইট SEO করুক, আমরা যদি
আমাদের কন্টেন্ট (পোস্ট)কেই SEO ফ্রেন্ডলি না করতে পারি তাহলে এতো কষ্ট করে লেখা পোস্ট সব মাটি।
## আমি “মাটি” বলব এ কারণেই যে, আমাদের এই ট্রিকবিডিতে এমন অনেক কোয়ালিটি সম্পন্ন আর ইউনিক আইডিয়া সম্পন্ন পোস্ট আছে যেগুলো SEO ফ্রেন্ডলি না হবার কারণে গুগলে শো করে না।
## আর এর ফায়দা নেয় ছোটখাটো ব্লগস্পট ব্লগার ও অন্যান্য টেক সাইটের অথোররা – এখানকার পোস্ট এসইও ফ্রেন্ডলি করে নিজের সাইটে পোস্ট করার মাধ্যমে।
## এতে হয় কি? – নতুন সব ভিজিটর (যারা গুগল থেকে আসে) ঐসব ছোটেখাটো সাইটের পোস্টগুলো সুন্দর দেখে ভেবে নেয় আইডিয়াটা তারই। মাঝখানে ট্রিকবিডি ইজ ফুল অফ “মাটি”
সে যাই হোক, আজ অনেক ভেঙেচুরেই বলব। পোস্টটাও একটু বড় হবে। আমি চাই আপনারা ধৈর্য্য সহকারে পড়বেন। সবাই! যারা টিউনার হননি + যারা হয়ে আয়েশ করছেন।
প্রথমেই – কেনো SEO ফ্রেন্ডলি পোস্ট করব?
## একটা কারণ তো প্রথমেই বলে দিয়েছি। তাছাড়াও, এটা একটি সাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং দুর্ভাগ্যবশত এই কাজটি টিউনারদের ঘাড়ে।
## কে না চায়, তার পোস্টে যথেস্ট ভিউ ও কমেন্ট আসুক! আপনার করা কষ্টের পোস্ট যদি সবার কাছে না-ই পৌছায় তাহলে লাভটা কি হলো। এক্ষেত্রে আজব একটা কথা হলো – আপনারা কষ্ট করে পোস্ট করেন কই?!!
কোথাও আমি একটা পোস্ট দেখেছিলামঃ-আপনি চাকরি না পেয়ে ঘরে বসে আছেন এটা কার দোষে? শিক্ষাব্যবস্থা না আপনার? ডেফিনেটলি আপনার! হাজার এ একটা সিভিতে সুন্দর প্রেজেন্টেশন দেখা যায়। বাকিগুলোর কয়জন এতে সময় দেয়? তারা তো মুভি, গার্ল ফ্রেন্ড নিয়েই ব্যস্ত। একটা দুটাতে জব এপ্লাই করেই খালাস!
এভাবে করলে হয় নাকি? আপনি পরিশ্রম না করেই ফল পেতে চান তা কি করে হয়। আবার ভাল ফল না পেলে খুজতে থাকেন অজুহাত। একবার নিজের দোষটা খুঁজে বের করুন, জীবনটাই বদলে যাবে।
## তাই আপনার পোস্টটিকে SEO ফ্রেন্ডলি করতে হলে একটু কষ্ট তো করতেই হবে। আপনার কষ্ট কোনোদিনও বিফলে যাবে।
## একদিন এই সাইট অনেক পপুলার হবে আর আপনারাই হবেন পপুলার টিউনার।
সবাই আপনাদেরকেই চিনবে।
## এখন আপনারা অনেকেই হয়ত ভাবছেন পেমেন্ট এতো কম কেন। কারণ, ট্রিকবিডিতে গুগল ট্রাফিক একটু কম। এটাকে বাড়াতে হবে। এমন বাড়িয়ে দেবেন যেন এডমিন আপনাকে প্রতি পোস্টে ১০০/- করে দিতে বাধ্য হয়। পপুলার সাইট হলে গুগল এড-ফেড
এর মুখের দিকে – এডমিনদের তাকায়ে থাকতে হবে না । বিভিন্ন কোম্পানিরা নিজেরাই এড দিবে। এই ধরুন লাক্স সাবান ৩০-৪০হাজার টাকার বিনিময়ে আমাদের সাইটে এড দিল।
বড় বড় সপ্ন দেখুন, সফল না হলেও এর ফল হয় যথেষ্ট।
কিভাবে আপনারা এসইও (SEO) ফ্রেন্ডলি পোস্ট করবেন?
## আমি জানি অনেকেরই নিজস্ব সাইট বা ব্লগ আছে। তারা তাদের সাইটে বেশি পরিশ্রম দেন আর এখানে দেন কম। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, একটু তো চালাক হোন, আপনার সাইটের কোয়ালিটি ব্যাকলিংক আর ট্রাফিক সোর্স কিন্তু এই ট্রিকবিডিই।
## এখানকার পোস্ট যথাসম্ভব সুন্দর ও আকর্ষণীয় করবেন তো ভিজিটর কৌতুহলী হয়ে আপনার সাইটে যাবে আরও সুন্দর পোস্ট দেখার জন্য। তাই সব কষ্টই দিন ট্রিকবিডির পোস্টকে আকর্ষণীয় করতে।
## আজও আমার একটি পোস্টে ডেইলি ১০০+ এর বেশি ভিজিটর আসে গুগল থেকে।
যেটা আমি দুবছর আগে করেছিলাম।
আমি আজ কিছু পদ্ধতি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ তুলে ধরব যেগুলোর কোনোটাই যেন আপনার পোস্টে বাদ না পড়ে। চলুনঃ-
পোস্টের শুরুতেঃ কিওয়ার্ড ভাবা
## অনেকেই কিওয়ার্ড শব্দটা শুনেই ভয় পেয়ে যায়। ভাবে কি না কি!! অথচ, প্রতিটা পোস্টেই এটি থাকে। আর গুগল এটিকেই গুরুত্ব দেয়। ওকে, প্রথমে আপনি তে জানেনই আপনি কি নিয়ে পোস্ট করবেন। উদাহরণসরুপ, আপনি আজ একটা এপস রিভিও নিয়ে পোস্ট করছেন। এপটি হলো “MyApp” – ভাবুন গুগলে লোকেরা কিভাবে এটিকে সার্চ করতে পারে!
– MyApp
– MyApp Download
– MyApp Apk
– MyApp রিভিও
– মাইএপ ডাউনলোড
–** দেখুন শেষ দুটা বাংলাদেশি মানুষরা সার্চ করবে। এসব কিওয়ার্ড খালি মাথায় রাখবেন। মুখস্ত করার প্রয়েজন নেই।
লিখার সময়ঃ প্রথম লাইনে কিওয়ার্ডটি দেওয়া
## আমরা অনেকেই ভুল করি প্রথমেই সালাম বিনিময়, ভালো আছেন ইত্যাদি দেই। না! এটা কোনো রিলিজিয়াস প্লাটফর্ম বা এটেনশন পাওয়ার প্লাটফর্ম না। সোজা কথায় রিয়েল লাইফ না, যে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন কাউকে দেখলেন আর সালাম দিয়ে দিলেন বা বন্ধুদেরকে দেখে বললেন কিখবর তোদের? কেমন আছিস! – এটা ভার্চুয়াল লাইফ এখানে এগুলোর প্রয়োগ না করলে কেউ আপনাকে অভদ্র ভাববে না। আপনি রিয়েল লাইফে এগুলো হাই হ্যালো করুন এখানে নয়। কেউ ভুল বুঝবেন না, আমি একেবারে বাদ দিতে বলছি এমন নয়। শুধু বলছি বাদ দেওয়া উচিত!
## আমি সবসময় প্রথম লাইনে কিওয়ার্ড দেওয়ার চেষ্টা করি। যেমনঃ ১) আজ আপনাদের কাছে শেয়ার করব কিভাবে “কিওয়ার্ড” দিয়ে এটা সেটা করতে হয়।
অথবা,
২) “কিওয়ার্ড” একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি নিয়েই আজকের আমার পোস্ট।
অথবা,
৩) … আপনিই ভাবুন আরও কত টাইপের হতে পারে। লেখার সময়ই ঠিকই মাথায় চলে আসবে দেখে নিয়েন।
টাইটেলটা মার্জিত ও সুন্দর করাঃ
## টাইটেলে মূল বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। কিওয়ার্ড দিয়ে করবেন। লং টাইটেল চলবে না।
## টাইটেলে “না দেখলে মিস” বা এজাতীয় কোনো শব্দ লিখবেন না। ঐসব শব্দ দিয়ে কেউ গুগলে সার্চ করবেনা।
## “নিয়ে নিন চমৎকার ও সুন্দর একটি ফটো এডিটর এপস যা দিয়ে আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লুর করতে পারবেন” – এই টাইটেলটির পরিমার্জিতকরণঃ “নিয়ে নিন ফটো ইডিটর “নাম” যা দিয়ে যেকোনো ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড Blur করতে পারবেন।”
## স্পেশাল কারেক্টার শুধু (-,+,!) ব্যবহার করবেন টাইটেলে। @#%৳%&£™ – এগুলো নয়।
## টাইটেলের সঠিক ব্যবহার দেখতে আমার পোস্ট ও পোস্টের টাইটেল গুলো Compare করুন কেননা প্রতিটা পোস্টেই আমি এসইও ফ্রেন্ডলি টাইটেল লিখেছি।
স্ক্রিনশট এসইও (SEO) ফ্রেন্ডলিঃ
## যারা এটি প্রথম শুনলেন তারা জেনে রাখুন এটা কত বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস!
## আর ট্রিকবিডিতে এর কাজ সহজ করা হয়েছে। আপনি যখনই স্ক্রিনশট আপলোড করবেন, টাইটেলের ঘরে “মাথায় রাখা কিওয়ার্ডগুলো” প্রতিটা স্ক্রিনশট এর জন্য আলাদা আলাদা করে লিখবেন।
বর্ধিত পোস্ট কন্টেন্টঃ
## এখানে আমি পোস্ট কন্টেন্ট বলতে পোস্টটাকেই বুঝাচ্ছি। আপনারা আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করুন কেউ ছোট খাটো পোস্ট করবেন না। পোস্টের মূল যে বিষয়টি থাকে এটি লিখেই অনেকে ভাবেন যে ব্যাস হয়ে গেছে। আমি বলব কচু হয়েছে!
## এটি ধরে নিন ভাব সম্প্রসারণ বা রচনা পরিক্ষার মতো। যেখানে ভূমিকা উপসংহার বানিয়ে বানিয়ে লিখে কন্টেন্ট বড় করবেন।
## শব্দসংখ্যা বেশি করবেন আর পোস্টকে যথেষ্ট বড় করবেন যেন ইউজার পড়তে গিয়ে কমপক্ষে দুইবার পেজ স্ক্রল করে।
## যেকোনো একটি প্যারায় আপনার নিজের একটি মন্তব্য দিয়ে দিবেন যে এটির আইডিয়া আপনি কোথায় পেলেন? আপনার কেমন লেগেছে, কেন এটি শেয়ার করলেন……
## কন্টেন্ট অন্তত ৫/৬বার মূল কিওয়ার্ড (MyApp) এর নাম জপ করুন। অর্থাৎ লিখুন। দুইতিন লাইন পর পর “এই এপটি ঐ এপটি” এর জায়গায় “(MyApp)টি খুব ভালো” এভাবে লিখুন।
বানান ভুলঃ
## এটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর! গুগলের কাছে বাংলার প্রতিটা শব্দের স্যাম্পল আছে। তাই আপনার প্রতিটা বানান ভুল গুগল ধরে ফেলে। অনেকটা ১বানান ভুলে ১মার্ক কাটা যাওয়ার মত।
## ইংরেজিতে করা পোস্টে বানান ভুলের জন্য একটি সাইটে ১মিলিয়ন ট্রাফিক হারিয়েছিল। হারাবেই না কেন, ইউজাররা তো আর ভুল বানানে সার্চ দিবে না। দিলেও ঐ ভুল বানানের সাথে আপনার পোস্টের ভুল বানান মিলে যাবে এমন তো নয়। এরপর গুগল Did you mean ফিচার এড করে আর প্রুফরিডিং চালু করে।
## কিন্তু বাংলায় লেখা পোস্টে এ সুবিধা কোথায় পাবেন। তাই বলছি বানান ঠিক করুন।
## আপনি হয়ত ভাবছেন আমি একপোস্ট বারবার রিভিশন দেই তাই আমার পোস্টে বানান ভুলের সংখ্যা কম। না, একদমই না! প্রথম দিকে আমারও অনেক বানান ভুল হচ্ছিল। তখন দুতিনবার রিভিশন দেওয়ার পরও ভুল থেকেই যাচ্ছিল। কিন্তু হার মানিনি প্রতিটা পোস্ট বার বার রিভিশন দেওয়ার পর বার বার ভুলগুলো শোধরানোর পর আজ দেখুন আার বানানই ভুল হয় না। এটা আমার কর্মজীবনেও অনেক প্রভাব ফেলেছে। এমনকি ফেসবুক পোস্ট কিংবা চ্যাটিং এও বানান ভুল নেই বললেই চলে।
## আমি পুরোপুরিভাবে নির্ভুল করতে বলছি না, শুধু প্র্যাকটিস করতে বলছি। প্রথম কয়েকদিন কষ্ট হবেই তারপর আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। যেসকল বানান, ভুল না শুদ্ধ এ নিয়ে কনফিউজড তারা গুগলে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন।
## অনেকেই “অভ্র” দিয়ে পোস্ট লিখেন। অর্থাৎ ইংরেজিতে টাইপ করে বাংলা লিখা। তাদের দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায়। বেশিরভাগ ভুল বানান এই “অভ্র” থেকেই সৃষ্টি বলে আমি মনে করি। একটু কষ্ট করে হলেও “প্রভাত” লেআউটে লিখার প্রাকটিস করবেন। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।
[h2] ট্যাগের ব্যবহারঃ
## ৪-৫টির বেশি নয়। এর ভিতরে দু তিনটিতে – “কিওয়ার্ড” অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
ইনলাইন লিংকিং
## সংক্ষেপে বলি, আপনার পোস্টের ভিতর এই সাইটেরই অন্য কোনো পোস্টের লিংক দেওয়া।
যেমনঃ আপনি চাইলে আমার “এই পোস্টটি পড়ে দেখতে পারেন। “
অথবা,
এ সম্পর্কে এ পোস্টে ভালো বলা হয়েছে “লিংক”
## তবে কখনোই অন্য সাইটের লিংক এভাবে দিবেন না।
রিভিশন দেওয়াঃ
## আপনার পোস্ট সম্পূর্ণ লিখে একবার হলেও রিভিশন দেওয়া তো উচিত। প্রথম প্রথম দিতেই হবে।
## রিভিশন দেওয়ার পর অনেকগুলো ভুল বের হলে সেগুলো ঠিক করে আরও একবার রিভিশন দিবেন।
অতিরিক্ত CSS ব্যবহার
## যদিও এ নিয়ে গুগলের কোনো মত নেই তবে যারা পোস্টটি পড়বেন তাদের সমস্যা থেকেই যায়।
## আপনি বিভিন্ন কালারিং করেন আপনার পোস্ট কে সুন্দর করার জন্য – এটা একদমই ভুল করেন ভাই। কালারিং করলেই পোস্ট পড়ার মতন হবে এমন নয়। সিম্পলিসিটি সবারই পছন্দ। এই ফায়দাটা নিন। যেমন আমার এই পোস্টটি কত সিম্পল কোনো CSS দেওয়া হয়নি। আপনি কালারিং করছেন সেটা অর্ধেকের চোখে আকর্ষণীয় লাগতে পারে, কিন্তু বাকি অর্ধেক পোস্ট দেখেই দূরে পালাবে।
## এসব ডিজাইন করতে যে সময় লাগে তার বদলে সময়গুলো এসইও ফ্রেন্ডলি করতে ব্যবহার করুন। অনেক কাজে দিবে।
— আমি আর এগোচ্ছি না। বেশি বড় হলে বোরিং হয়ে যাবে। আশা করি সবাই মেনে চলবেন।
ধন্যবাদ।
যদি এই পোস্ট ট্রিকবিডির এডমিন পড়ে থাকেন তাদের উদ্দেশ্যেঃ আজও অনেক মেসেজে রিকুয়েস্ট আসে, ট্রিকবিডিতে তাদের আইডি করে দেওয়ার জন্য। তারা এখানে রেজিষ্টার করতে পারছে না। অনেকে এই ক্ষোভে ট্রিকবিডিই ভিজিট করে না। এতদিন ট্রিকবিডির সাথে থেকে একটা আইডিই যদি না পাই, কমেন্টে পোস্টের মতামতই না জানাতে পারি তাহলে ভিজিট করে কি লাভ?
আমি একটা সলুশন দেইঃ প্রতি মাসে অন্তত কিছু আইডি এড করুন আর কিছু ইনএকটিভ আইডি বাদ দিয়ে দিন। এটা আমার রিকুয়েস্ট। অথবা, দু এক মাস পরপর রেজিষ্ট্রেশন খুলে দিন। আর কত দিন পর খুলবেন তা বলে দিন।