আর্টিফিয়াল ইনটেলিজেন্স (Artificial Intelligence)
ইনটেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা শব্দটি হলো কতকগুলো বিশেষ গুণের সমষ্টিগত রূপ। যেমন- কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ধারণা করতে পারা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা, অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া, যেকোনো বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারা, অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারা, নতুন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত এবং সফলভাবে সাড়া দেওয়া ভাষা বুঝতে পারার ক্ষমতা-এ সবই বুদ্ধিমত্তার অংশ। এ বুদ্ধিমত্তা বা ইনটেলিজেন্স-এর আগে আর্টিফিসিয়াল শব্দটি তখনই বসানো যায় যখন গুণগুলোকে কোনো সিস্টেমের মাঝে সিমুলেট করা সম্ভব হয়।
- সূত্রের প্রতিপাদন ও সমস্যা সমাধান (Deduction and problem solving)
- জ্ঞানের উপস্থাপন (Knowledge representation)
- পরিকল্পনা (Planning)
- যন্ত্রের শিক্ষা (Machine learning)
- স্পিচ ও প্যাটার্ন সনাক্তকরণ (Speech and pattern recognition) ইত্যাদি। রোবোটিক্স (Robotics)
রোবটিক্স (Robotics)
- দর্শনেন্দ্রিয় বা ভিজুয়্যাল পারসেপশন (Visual Perception),
- সংস্পর্শ বা স্পর্শনেন্দ্রিয়গ্রাহ্য সক্ষমতা (Tactile Capabilities),
- নিয়ন্ত্রণ ও ম্যানিপুলেশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা বা নিপুণতা (Dexterity),
- যেকোনো স্থানে দৈহিকভাবে নড়াচড়ার ক্ষমতা বা লোকোমোশন (Locomotion)।
রোবটের অংশসমূহঃ
একটি সাধারণ রোবটে সাধারণত নিচের উপাদানগুলো থাকে—
- পাওয়ার সিস্টেম (Power systam): সাধারণত লেড এসিড দিয়ে তৈরি রিচার্জেবল ব্যাটারি দিয়ে রোবটের পাওয়ার দেওয়া হয়। মুভেবল বডি (Movable Body): রোবটের চাকা, যান্ত্রিক সংযোগসম্পন্ন পা কিম্বা স্থানান্তরিত হওয়ার যন্ত্রপাতি যুক্ত থাকে।
- ইলেকট্রিক সার্কিট (Electric circuit): রোবটকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে। একই সাথে হাইড্রোলিক ও নিউমেট্রিক। ৮ সিস্টেমের রোবটকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে।
- মস্তিষ্ক বা কম্পিউটার (Brain or Computer): রোবটের মস্তিষ্ক রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করে। আচরণ পরিবর্তন করতে হলে মস্তিষ্কে প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে হয়।
- অ্যাকচুয়েটর (Actuator): একটি রোবটের হাত পা ইত্যাদি নড়াচড়া করার জন্য কতকগুলো বৈদ্যুতিক মোটরের ব্যবস্থা থাকে। একে একটি রোবটের হাত ও পায়ের পেশি বলে অভিহিত করা যায়।
- অনুভূতি (Sensing): মানুষের অনুভূতি একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, তেমনি রোবটের অনুভূতি একটি বিশেষ উপাদান। রোবটের হাত বা পায়ের কোনো একটি জায়গায় স্পর্শ করলে সেই জায়গা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। চোখের ন্যায় ক্যামেরা দিয়ে সামনের বা পেছনের দৃশ্য নেওয়া হয় এবং 360° কোণ পর্যন্ত ঘুরাতে পারে।
- ম্যানিপিউলেশন বা পরিবর্তন করা (Manipulation): একটি রোবটের আশপাশের বস্তুগুলোর অবস্থান পরিবর্তন বা বস্তুটি পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে বলা হয় Manipulation। এখানে রোবটের হাতটি এই পরিবর্তনের যাবতীয় কাজ করে থাকে। প্রতিটি রোবটের হাতে কতগুলো আঙুল থাকবে যা নড়াচড়া করে কোনো বস্তু ধরতে পারবে।
রোবট এর ব্যবহার (Application of Robot):
- বিভিন্ন শিল্পকারখানায় যেসব জিনিসপত্র মানুষের পক্ষে ওঠানামা ও স্থাপনের জন্য কঠিন সেসব ক্ষেত্রে রোবট ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে যানবাহন বা গাড়ির কারখানায় রোবট ব্যবহৃত হয়।
- কারখানার জিনিসপত্র সংযোজন, প্যাকিং এবং জিনিসপত্র পরিবর্তনের জন্য রোবট ব্যবহার ফলপ্রসূ।
- যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধযানে ড্রাইভারের বিকল্প হিসেবে রোবটকে ব্যবহার করা যায়। এই সমস্ত রোবট দূর নিয়ন্ত্রিত (Remote Controlled) হওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। যেসব ক্ষেত্রে অতি সূক্ষ্ম কাজ করা দরকার হয় যেমন ইলেকট্রনিক্স-এর আইসিগুলো (IC) বানানোর জন্য এবং
- PCB (Printed Circuit Board) বানানোর জন্য রোবট ব্যবহৃত হয়।
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে সার্জারির কাজে রোবট সফলভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
- বিরক্তিকর ও একঘেয়ে কাজের ক্ষেত্রে।
- বিপজ্জনক কাজের ক্ষেত্রে ও নিরাপত্তার কাজে।
- দুর্গম স্থানে কাজের ক্ষেত্রে।
- বিনোদন, গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে।
- পুঙ্খানুপুষ্প রূপে মাইক্রোসার্কিটের পরীক্ষা করতে।
- সামরিক কাজে যেমন- বোমা নিস্ক্রিয় করা, ভূমি মাইন সনাক্তকরণ, মিলিটারি অপারেশনে ব্যবহৃত হয়।
- ঘরোয়া কাজে রুটিন মাফিক ঘরের কাজকর্ম, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, চা-কফি তৈরি, কথা বলার কাজে রিসিপসনিস্ট হিসেবে।
- মহাকাশ গবেষনায় মানুষের পরিবর্তে রোবট ব্যবহৃত হয় যেমন— নাসার কিউরিসিটি রোবট উল্লেখযোগ্য।
রোবট ব্যবহারের সুবিধাসমূহ—
১. রোবট দ্বারা তৈরি পাণ্যের গুনগতমান খুব ভাল এবং সূক্ষতাও বেশি।
২. রোবটের কাজ করার গতি বেশি এবং আউটপুট বেশি পাওয়া যায়।
৩. বিপজ্জনক পরিবেশে রোবটের সাহায্যে কাজ করা নিরাপদ।
৪. এটি নিরবিচ্ছন্নভাবে দীর্ঘক্ষণ করে কাজ করতে পারে।
রোবট ব্যবহারের অসুবিধাসমূহ
- মানুষের মতো পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। অর্থাৎ রোবট নতুন বা জটিল পরিস্থিতিতে নিজে নেজে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে না। ফলে একটি রোবট দিয়ে ইচ্ছামতো বিভিন্ন কাজ করা যায় না।
- প্রোগ্রাম তৈরি করা কষ্টসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ তাছাড়া রোবোটিক্স যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ লোক প্রয়োজন। রোবটকে সচল রাখতে অধিক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। ফলে এটি ব্যয়বহুল।
- রোবটটের মধ্যে কোনো সৃষ্টিশীলতা নেই এবং ভূল থেকে কোন শিক্ষা গ্রহন করতে পারে না।
তো আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। আশা করছি এই পোস্টের খুব শীঘ্রই তৃতীয় অর্থাৎ শেষ পর্ব নিয়ে আসবো।
উপরের আমার এই পোস্টটি লিখতে অনেক নথির এবং ওয়েসাইটের সাহায্য নিতে হয়েছে। যাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলেই নয়।
সহায়ক,
মোঃ কামরুল হাসান।
1. HSC ict book
2. Wikipedia.com
3. hpe.com
4. history-computer.com
5. civilian
তো আজ এই পর্যন্তই। আপনাদের জন্যই আমরা নিয়মিত নিত্যনতুন পোস্ট নিয়ে হাঁজির হই।
তাই উক্ত পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক দিতে ভুলবেন না। এবং যেকোনো মন্তব্য বা পরামর্শের জন্য কমেন্ট করতে পারেন। পরবর্তীতে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।