আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।

আমি আজকে আপনাদের জন্য এক ভিন্নধর্মী টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তা হলো, ভবিষ্যতে কি সত্যিই মহাকর্ষ বা মাধ্যাকর্ষণ বাতিল করা সম্ভব হবে কি না। শুনতে একটু আজব লাগলেও এর উপর বিস্তারিত রিসার্চ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

ধরুন, আপনি কোনো এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে! মানে আপনি বাতাসে ভাসছেন, গাছপালা শূন্যে ভেসে যাচ্ছে। কোনো কিছুই যেন আর মাটিতে টিকে নেই। এইটা একটি কল্পকাহিনীর মতো হলেও বিজ্ঞানের অনেক গবেষক সত্যিই প্রশ্ন তুলছেন। ভবিষ্যতে কি আমরা মাধ্যাকর্ষণ কোনোভাবে বাদ দিতে পারবো?

আমরা অনেকেই সায়েন্স ফিকশন মুভি দেখেছি। অনেক গুলো তেই বহুদিন ধরে অ্যান্টি-গ্র্যাভিটি বা মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী টেকনোলজির ধারণা দিয়ে আসছে। Interstellar মুভি টা নিশ্চই দেখেছেন? না দেখে থাকলে দেখে আসতে পারেন। সেখানে টাইম ট্রাভেল এর পাশাপাশি একটা কনসেপ্ট নিয়ে ধারণা দিয়েছে, যা হয়তো অনেকেই ধরতে পারেন নি। কি সেটা? মুভির একদম লাস্ট সিন এ গেলেই দেখতে পাবেন। ওই মুভি তেও অ্যান্টি-গ্রাভিটি নিয়ে ধারণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এটি কি সম্ভব? চলুন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজি।

মাধ্যাকর্ষণ কী? এটি কিভাবে কাজ করে?

মাধ্যাকর্ষণ সম্বন্ধে আমরা সবাই-ই কম বেশি জানি। বিশেষ করে সাইন্সের স্টুডেন্ট হলে তো কথাই নেই! এটা হলো প্রকৃতির চারটি মৌলিক শক্তির মধ্যে একটা। এটা পৃথিবী সহ সমস্ত মহাকাশীয় বস্তুকে আকর্ষণ করে। নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রানুসারে, যেকোনো দুটি ভরের বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে ও আকর্ষণের পরিমাণ বস্তুগুলোর ভর এবং তাদের মধ্যে দূরত্বের উপর নির্ভরশীল।

তবে মাধ্যাকর্ষণ হলো পৃথিবীর সাথে যেকোনো বস্তুর যে আকর্ষণ সেটা। পরবর্তীতে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব আমাদের আরও গভীর ধারণা দেয় যে মাধ্যাকর্ষণ আসলে স্থান-কালের বক্রতা। তাঁর মতে, “ভর এবং শক্তি মহাবিশ্বের স্থান-কালের কাঠামোকে বাঁকিয়ে দেয়। আর এই বেঁকে যাওয়া কাঠামোই বস্তুগুলোকে তাদের গতিপথ নির্ধারণ করতে বাধ্য করে।”

একটু কঠিন কঠিন লাগছে? চলুন একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা ক্লিয়ার করে ফেলি।

ধরুন, আপনি একটা চাদরকে টানটান করে ধরলেন। এখন এর উপরে একটা ভারী বল রাখলেন। দেখা যাবে যে, কাপড় টি সেখানে নিচের দিকে বেঁকে গেছে। এরপর যদি ছোট একটা বল ছেড়ে দেন তাহলে এটা সরলরেখায় না গিয়ে বাঁকা পথে যাবে। আর ভারী বস্তুর চারপাশ দিয়ে ঘুরতে থাকবে। এটাই হচ্ছে স্থান-কালের বক্রতা ও এই বক্রতার কারণেই গ্রহ-উপগ্রহগুলো তাদের কক্ষপথ ধরে চলে।

সূর্য বা পৃথিবী ও তেমনই স্থান-কালের বক্রতা সৃষ্টি করে। যার ফলে ছোট বস্তুগুলো সেই বাঁকা পথে চলে। এই কারণেই আমরা পৃথিবীতে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি ও চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।

 

মাধ্যাকর্ষণ বাতিল করা সম্ভব? বর্তমান গবেষণা কী বলছে?

যদিও এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মাধ্যাকর্ষণ সম্পূর্ণরূপে বাদ দেয়ার টেকনোলজি আবিষ্কার করতে পারেননি। তবে এর কিছুটা প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। চলুন কয়েকটি সম্ভাব্য গবেষণা দেখি।

ম্যাগনেটিক লেভিটেশন

আপনি কি জানেন, চীন ও জাপানে চালিত ম্যাগলেভ ট্রেনগুলোর গতি ঘণ্টায় ৬০০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে? এই ট্রেনগুলো মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে ভাসতে পারে তার নিজস্ব চৌম্বকীয় শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে বস্তুকে বাতাসে ভাসিয়ে রাখা সম্ভব হলেও এটা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু ধাতব বস্তুতে কাজ করে। কোনো জৈবিক বস্তু বা সাধারণ বস্তুতে এটা কার্যকর নয়। এই সীমাবদ্ধতার কারণে মাধ্যাকর্ষণ বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া পুরোপুরি কার্যকর করা যায় না। তবে এটা একটা আশার দুয়ার খুলে দিয়েছে।

সুপারকন্ডাক্টর & অ্যান্টি-গ্র্যাভিটি এক্সপেরিমেন্ট

বিজ্ঞানীরা কিছু বিশেষ ধরনের সুপারকন্ডাক্টর ইউস করে কিছু বস্তুর ওজন কমাতে পেরেছেন। রাশিয়ার পদার্থবিদ ইয়েভগেনি পোডক্লেটনভ একটা পরীক্ষার দাবি করেছিলেন। সেখানে তিনি সুপারকন্ডাক্টর ডিস্ক ঘুরিয়ে মাধ্যাকর্ষণ কমাতে সক্ষম হন। যদিও এই পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করতে কেউ সফল হয়নি। এটা তখন বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় তুলেছিলো। অনেকেই দাবি করেন ভবিষ্যতে এরকম কিছু আবিষ্কার করে মাধ্যাকর্ষণ বাদ দেয়া সম্ভব।

নেগেটিভ মাস & কোয়ান্টাম রিয়্যাকশন

কিছু কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন, যদি আমরা নেগেটিভ মাস বা ভর (Negative Mass) খুঁজে পেতে পারি, তাহলে এটা মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে। নেগেটিভ মাস হচ্ছে একটা তত্ত্বীয় ধারণা। যার মানে হলো- একটা বস্তু যে ধরনের গতি প্রদর্শন করবে সেটা তার বিপরীত দিকে থাকবে। আমরা জানি যে কোনো বস্তু যদি কোনো বাহ্যিক বল দিয়ে প্রভাবিত হয়, তাহলে তারা তার দিকে চলে। যেমনঃ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ। কিন্তু নেগেটিভ মাসের ক্ষেত্রে এইটা উল্টোভাবে কাজ করে। অর্থাৎ নেগেটিভ মাস এর বস্তু কোন বাহ্যিক বল পেলে সে তার বিপরীত দিকে চলে যাবে।

আবার কঠিন লাগছে? আচ্ছা আবার একটু সহজ করা যাক।

ধরা যাক, আপনার কাছে একটা বল রয়েছে। এর ভর কত হতে পারে? ধরা যাক ১ কেজি! আপনি তাকে ধাক্কা দিলে এটা ধাক্কা খেয়ে যেদিকে ধাক্কা দেওয়া হয়, সে দিকে চলে যাবে। তবে যদি সেই বলটির ভর নেগেটিভ হয়? মানে ধরুন মাইনাস ১ কেজি (-১ কেজি)! তাহলে তো আপনি এটাকে ধাক্কা দিলে সে আপনার ধাক্কার বিপরীতে চলে যাবে। যদিও এটা তাত্ত্বিক একটা ধারণা।

২০১৭ সালে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক নেগেটিভ মাস তৈরি করেছেন। গবেষকরা ২০১৭ সালে কৃত্রিমভাবে এক ধরনের বাতাসের তরল (Bose-Einstein condensate) তৈরি করেছিলেন যাতে নেগেটিভ মাস এর বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। Bose-Einstein condensate (BEC) হচ্ছে একটা অতি ঠান্ডা কোয়ান্টাম অবস্থার পদার্থ। এতে অ্যাটম গুলো একসাথে এক ধরনের মিক্স কোয়ান্টাম অবস্থা বানিয়ে থাকে।

এটা সাধারণ বস্তুগুলোর বিপরীতে আচরণ করতে সক্ষম। যদিও এটা এখনো তাত্ত্বিক পর্যায়ে আছে। অর্থাৎ এটা জাস্ট থিওরি ও যুক্তির পর্যায়ে আছে। বাস্তবে এখনো যথাযথ ভাবে কার্যসম্পাদন করতে সক্ষম না। তবে ভবিষ্যতে এটি মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে।

আমাদের জীবনে অ্যান্টি-গ্র্যাভিটির ব্যবহার

মহাকাশ ভ্রমণ

আপনি কি জানেন যে, মহাকাশচারীরা মহাকর্ষ ছাড়া অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকলে তাঁদের হাড় দুর্বল হয়ে যায়? ভবিষ্যতে যদি আমরা মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে মহাকাশে কৃত্রিম মাধ্যাকর্ষণ তৈরি করা সম্ভব হবে। এটা মহাকাশচারীদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

অত্যাধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা

আমরা জানি, এখনো প্লেন ও রকেটের জন্য প্রচুর জ্বালানি খরচ হয়। কারণ, তাদের মাধ্যাকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে যেতে হয়। কিন্তু যদি অ্যান্টি-গ্র্যাভিটি টেকনোলজি কোনোভাবে আবিষ্কার করা সম্ভব হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা জ্বালানিহীন প্লেন বানাতে পারবো। এমনকি উড়ন্ত গাড়ি ও বানাতে পারবো!

ফিউচার আর্কিটেকচার

বড় বড় বিল্ডিং নির্মাণে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব বিশাল। ভবিষ্যতে যদি আমরা মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাহলে এমন ভবন তৈরি সম্ভব হবে যা স্ট্যাবল ও পরিবেশবান্ধব হবে। এমনকি, আমরা হয়তো ভাসমান শহর তৈরি করতেও সক্ষম হবো।

চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

এতক্ষণ তো সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে এটা আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেন্জ ও আছে। এটা আবিষ্কার করা অতটাও সহজ না। কারণগুলো নিচে তুলে ধরছি।

বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা

বর্তমান পদার্থবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে মাধ্যাকর্ষণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিবর্তনীয় শক্তি। এটা মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুর মধ্যে কার্যকরী। আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটি মাধ্যাকর্ষণকে স্থান-কালের বক্রতার মাধ্যমে বর্ণনা করে। এর কোনো প্রমাণস্বরূপ বাতিল বা প্রত্যাখ্যান করার কোনো শক্তিশালী তত্ত্ব বা পরীক্ষামূলক প্রমাণ বর্তমানে নেই।

জ্বালানি ও শক্তির চাহিদা

মহাকর্ষ বাদ দেয়া বা নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী শক্তির উৎসের প্রয়োজন হতে পারে। এর কারণ মহাকর্ষ এমন একটা শক্তি, যা মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুতে কার্যকরী। এর প্রভাব অনেক। যদি ভবিষ্যতে আমরা মহাকর্ষের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ বা বাতিল করতে চাই, তাহলে তার জন্য বিপুল পরিমাণ শক্তি প্রয়োজন হবে।

মহাকর্ষ বাতিল বা নিয়ন্ত্রণের ধারণা ভবিষ্যতের প্রযুক্তির জন্য একটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয় হতে পারে। মাধ্যাকর্ষণ এমন এক শক্তি, যা প্রতিটি বস্তুকে আকর্ষণ করে এবং এটি একপ্রকার লোকাল এনার্জি হিসেবে কাজ করে। বর্তমান ফিজিক্স অনুযায়ী আমরা জানি মাধ্যাকর্ষণ কেবল একটি শক্তি নয়। বরঞ্চ এটা স্থান-কালের বক্রতার অংশ। মহাবিশ্বের বাকি সব শক্তির তুলনায় একে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।

নৈতিক ও সামাজিক প্রভাব

যদি কোনো ব্যক্তি বা দেশ মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রণ বা বাতিল করার প্রযুক্তি পায়, তাহলে এর নৈতিক ও সামাজিক প্রভাব অনেক হতে পারে। এমন প্রযুক্তির ব্যবহারে শক্তির ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা তীব্রভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

সামরিক ও নিরাপত্তার ঝুঁকি

যদি মাধ্যাকর্ষণ বা মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়, তবে তা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে বিপুল শক্তির ব্যবহার ও নতুন ধরনের অস্ত্রের জন্ম দিতে পারে। মহাকর্ষের প্রভাব কে কাজে লাগিয়ে একেবারে মহাকাশ বা পৃথিবীকে আক্রান্ত করতে সক্ষম এমন এমন অস্ত্র তৈরি করা যেতে পারে। এমন অস্ত্র বা প্রযুক্তির মাধ্যমে এক দেশের ওপর অন্য দেশ আক্রমণ করতে পারে। এইটা তীব্র নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করবে ইন ফিউচার।

রোবটিক সেনা

এমন মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রনের প্রযুক্তি হাতে আসলে রোবটিক সেনা, ড্রোন এমনকি অদৃশ্য যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব হতে পারে। এটা সুরক্ষা ব্যবস্থা কে একদম দুর্বল করে দিতে পারে।

গুপ্তচরবৃত্তি ও সাইকোলজিক্যাল ওয়ার

আপনি হয়তো জেনে থাকবেন যে, মহাকর্ষের শক্তি দিয়ে বিভিন্ন স্যাটেলাইট ও মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এটা ইন্টারন্যাশনাল গুপ্তচরবৃত্তি ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের ক্ষেত্রে বিপুল ঝুঁকি তৈরি করে দিবে। দেশগুলো একে অপরকে দমন করতে উঠে পড়ে লাগতে পারে। যেমনঃ মহাকাশে অস্ত্র স্থাপন বা স্যাটেলাইট ধ্বংস করে সিকিউরিটি ডাউন করে দেয়া।

যাচ্ছেতাই নিয়ন্ত্রণ

যদি মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বা মহাকর্ষ-শূন্য প্রযুক্তি কেবল একটি বিশেষ দেশের হাতে থাকে, তাহলে এটা আন্তর্জাতিক স্তরে শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিতে সক্ষম। এটা নির্ধারণ করে দিতে পারে কে কোথায় ও কীভাবে শক্তির দখল করবে। এই ধরনের আধিপত্য বিপুল বৈশ্বিক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। ফলে বিশ্ব এক মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে নিশ্চই আন্দাজ করতে পারছেন!

অনৈতিক বা অস্বাভাবিক ব্যবহারের সম্ভাবনা

মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণ বা বাদ দেয়ার প্রযুক্তির নৈতিক ব্যবহারের জন্য শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দরকার। কোনো দেশ বা ব্যক্তি যদি এর অপব্যবহার করে তাহলে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। মানুষের জন্যও ক্ষতিকর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

অভ্যন্তরীণ সামাজিক বৈষম্য

মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মালিকানা শুধু কিছু দেশ বা শ্রেণির হাতে যদি যায়, তাহলে বৈষম্য আরো বাড়বে। গরিব দেশগুলো বা জনগণ এই প্রযুক্তির সুবিধা পাবে না। এটা তাদের আরও দুর্বল করে তুলবে। যেমন ধরুন, স্টারলিংক বাংলাদেশে আসতে চলছে তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এর আগেই অনেক উন্নত দেশ এর সুবিধা ভোগ করে আসছে। এক্ষেত্রে বলাই যায় যে আমরা বৈষম্যের স্বীকার। ঠিক তেমনই মহাকর্ষ বাদ দেয়ার প্রযুক্তি আবিষ্কার করা হলেও গরীব দেশ গুলো হয়তো পিছিয়েই থাকবে!

মানবাধিকার ও স্বাধীনতা

এর মাধ্যমে কোনো দেশ বা সরকার যদি এমন শক্তি পায়, তাহলে তারা জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার সীমিত করতে পারে। যেমনঃ মহাকাশ বা পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন দেশ বা গোষ্ঠীর উপর নিজেদের বাহাদুরি দেখাতে পারে।

অবহেলা বা আতঙ্ক সৃষ্টি

মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণের মতো শক্তিশালী প্রযুক্তির অধিকারী হওয়া মানুষ বা গোষ্ঠী অপরের নিরাপত্তার প্রতি এক প্রকার অবহেলা দেখাতে পারে। এটা সামাজিক স্থিতীশীলতা ও সুখ-শান্তি বিপন্ন করতে পারে। জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে এটা নিয়ে। তারা ভাববে, কোনো দেশ বা শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের অধিকার বা স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করতে পারে।

বৈশ্বিক সহযোগিতা বা সংঘাত

এমন শক্তির একটি মহাকর্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি যদি কিছু দেশের হাতে চলে আসে, তাহলে এটা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতায় নতুন নতুন দ্বন্দ্ব তৈরি করতে পারে। ফলস্বরূপ, বৈশ্বিক মহাকর্ষ বা মহাকাশের সম্পদ ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়াও নীতি নির্ধারণে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

এটা কি আদৌ আবিষ্কার করা সম্ভব?

বিজ্ঞানের ইতিহাস বলে যে, অনেক অসম্ভব মনে হওয়া জিনিসই একদিন সম্ভব হয়েছে। একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয় টা আরো ক্লিয়ার করি। এখন তো প্রযুক্তি কত সহজলব্ধ। কিন্তু আজ থেকে ১০০ বছর আগে মানুষ কল্পনাও করতে পারে নি, আমরা আজকের মতো স্মার্টফোন ব্যবহার করবো বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সাথে কানেক্ট হতে পারবো। গ্লোবাল ভিলেজ এর আইডিয়া ১০০ বছর আগে ছিলো না। কিন্তু এখন তা অসম্ভব কিছুই না। তাই আমরা আশা রাখতেই পারি, ভবিষ্যতে মাধ্যাকর্ষণ নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তিও একদিন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। অথবা যোগাযোগ করতে পারেন আমার সাথে।

যেকোনো প্রয়োজনেঃ ফেসবুকে আমি

আমার অন্যান্য পোস্ট দেখে আসতে পারেনঃ

সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

9 thoughts on "২০২৫ সালে যা না জানলেই নয়! মহাকর্ষ আর থাকবে না? বিজ্ঞানীরা কি সত্যিই এটি সম্ভব করতে পারবেন?"

  1. cawen82950 Subscriber says:
    Apni ki science er student?

    Title er sathe post er mil koi?

    Just reference less, low info, junk

    Clickbait and shitty post🤮

    1. Redwan Ahmed Sawkhin Author Post Creator says:
      জি আমি সাইন্সের স্টুডেন্ট।টাইটেলের সাথে পোস্ট এর মিল ভালোভাবে পড়লেই পাবেন। হুদাই না পড়ে লাফাইলে লাভ নাই। আর অ্যাড ট্রিকবিডির সাইট থেকে আসে। আমি দেই না। আপনাকে আপনার কমেন্টের কারণে রিপোর্ট করতে বাধ্য হলাম।
    2. cawen82950 Subscriber says:
      Reference koi kon theory kar?
      Ar ur title = 2025 sale

      Are vai kon abiskar ta 2025 er? Sob to ager.

      Clickbait i to.
      Abar amake naki report korechen😂

      Shame on u🤮

    3. Redwan Ahmed Sawkhin Author Post Creator says:
      লিখেছি ২০২৫ সালে যা না জানলেই নয়। মিয়া পোস্ট ভালোভাবে না পড়ে কমেন্ট না করলে খুশি হবো। ফালতু লোকজনে ট্রিকবিডি ভর্তি হয়ে গিয়েছে।
  2. Helping Vhai Author says:
    ভাই মোডারেটররা আমরা পোস্ট আর ট্রেইনার রিকুয়েষ্ট কোনটাই এপ্রুভ করে না। রিপ্লাইও দেয় না।
  3. Sarwartrick76 Contributor says:
    Ad ছাড়া রিমিনি থাকলে দেন
  4. cawen82950 Subscriber says:
    Apni bangla grammar porechen kokono? Mr. Science er student?, 😂 (২০২৫ সালে যা না জানলেই নয়! মহাকর্ষ আর থাকবে না?) Punctuation! And? Mane 2 line i 2025 e indicate kore. Illyterate murukko kotakar,
  5. TrickBD Support Moderator says:
    গঠনমূলক আলোচনা, সমালোচনা করুন সকলে।
  6. rex boy Contributor says:
    Apnar post dekhe mone hoilo akash bormoner video dekhtesi

Leave a Reply