ভিডিও এডিটিং বর্তমান সময়ে এক জনপ্রিয় স্কিল, যা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ফিল্মমেকার ও ডিজিটাল মার্কেটারদের জন্য অপরিহার্য একটা বিষয়। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে ভালো ভিডিও মেকিং করা মানে আপনার মেসেজ আরো ভালোভাবে ভিউয়ার দের কাছে পৌঁছানো। তাই এই পোস্টে আমরা ভিডিও এডিটিং কে শুরু থেকে প্রোফেশনাল লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস এন্ড ট্রিকস আলোচনা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
এটি কেবল মাত্র একটি ক্রিয়েটিভ স্কিল নয়, আপনার আইডিয়া ভিউয়ার দের কাছে কার্যকরভাবে পৌঁছে দেওয়ার একটি মাধ্যম ও বটে। আপনি যদি ভিডিও এডিটিংয়ে নতুন হন বা আরও স্কিলড হতে চান, তাহলে এই পোস্ট টি আপনাকে শুরু থেকে প্রো লেভেলে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে, ইনশা আল্লাহ।
ভিডিও এডিটিং এর জন্য ভালো পিসি বা ডেস্কটপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। নিচে রিকমেন্ডেড কিছু হার্ডওয়্যার এর কনফিগারেশন দেয়া হলো যা মিনিমাম লাগবেই ভিডিও এডিটিং এর জন্য:
ভিডিও এডিটিং এর জন্য বেশ কিছু সফটওয়্যার রয়েছে। নিচে জনপ্রিয় কয়েকটি সফটওয়্যার নিয়ে ধারণা দেয়া হলো:
ভিডিও এডিটিং শুরুর সময় কিছু বেসিক টেকনিক রপ্ত করা জরুরি। এগুলো আপনার এডিটিং স্কিল এর বেইস তৈরি করবে।
ভিডিও এডিটিং এর সবচেয়ে মৌলিক স্টেপ হলো অপ্রয়োজনীয় অংশ কাট করে ফেলা। সঠিক স্থানে কাট করা আপনার ভিডিওকে আরো গতিশীল করবে আর ভিডিও এর বিষয়বস্তুকে আরও সুসংগঠিত করে তুলবে।
ভিডিও এর সিন চেঞ্জিং এর সময় স্লাইড, ফেইড বা কাস্টম ট্রানজিশন ব্যবহার করা ভিডিওকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে অতিরিক্ত ট্রানজিশন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন যাতে ভিডিওটি আন-প্রোফেশনাল না লাগে।
ভিডিওর ওপর টাইটেল, সাবটাইটেল বা ইনফো-গ্রাফিক অ্যাড করতে ভুলবেন না কিন্তু! Adobe Premiere Pro তে টাইটেল ডিজাইন খুবই সহজ । এছাড়া Filmora সফটওয়্যার দিয়ে দৃষ্টিনন্দন টেমপ্লেট ব্যবহার করা যায়।
ভিডিওর ফুটেজের লাইটিং বা কালার ঠিক করার প্রোসেস কে কালার কারেকশন বলা হয়। ঠিকভাবে কালার কারেকশন ভিডিওর গুণমান বাড়িয়ে তোলে আর একটি প্রফেশনাল লুক দেয়। DaVinci Resolve দিয়ে সহজেই কালার কারেকশন এর কাজ করা যায়।
আপনার ভিডিওর মুড বা টোন সেট করার জন্য কালার গ্রেডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, কোনো রোমান্টিক দৃশ্যের জন্য ওয়ার্ম টোন ব্যবহার করতে পারেন, আর থ্রিলারের জন্য ঠান্ডা নীল শেড ব্যবহার করতে পারেন। কালার গ্রেডিং আপনার স্টোরি টেলিং কে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
ভালো অডিও একটি ভিডিওর মান কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ভিডিওর ভিজ্যুয়ালের সঙ্গে মানানসই অডিও যোগ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
Adobe Audition বা Audacity ব্যবহার করে অডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েস খুব সহজেই রিমুভ করা যায়। এটা আপনার ভিডিও এর অডিও কোয়ালিটি আরো বাড়িয়ে দিবে।
আপনাকে ভিডিওর জন্য উপযুক্ত সাউন্ড ইফেক্ট এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাছাই করতে হবে। এর জন্য YouTube Audio Library এর ফ্রি সাউন্ড এফেক্ট গুলো মিউজিকের ভালো একটা সোর্স। এছাড়া কপিরাইট ফ্রি মিউজিক লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলে ভালো ভালো অনেক সাউন্ড পেয়ে যাবেন খুব সহজেই।
ভিডিও তে দেখানো মেসেজ কে আরো ক্লিয়ার করতে একটি ক্লিন ভয়েস ওভার অ্যাড করতে পারেন। এটি ভিউয়ার দের মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
Adobe After Effects দিয়ে বেসিক মোশন গ্রাফিক্স তৈরি করতে পারেন। যেমন, লোগো অ্যানিমেশন, টাইটেল কার্ড ইত্যাদি।
স্লো-মোশন, গ্রিন স্ক্রিন এবং ট্র্যাকিং ইফেক্ট প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং এ বড় একটা ভূমিকা রাখে। VFX ব্যবহার করে ভিডিওকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য শর্ট ভিডিও এডিটিংয়ের বিশেষ কিছু টেকনিক রয়েছে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
প্রজেক্ট ফাইল গুলো সাজিয়ে রাখুন। প্রতিটি ক্লিপের নাম সহজবোধ্য রাখুন যাতে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায়।
ক্লায়েন্টদের সাথে ভিডিওর প্রতিটি স্টেপ ব্যাখ্যা করুন ও তাদের ফিডব্যাক অনুযায়ী কাজ করুন। এটি কাজের মান আরো ইম্প্রুভ করতে সহায়তা করবে।
ভিডিও রেন্ডার করার সময় সঠিক ফরম্যাট এবং রেজোলিউশন সিলেক্ট করুন। সাধারণত, YouTube বা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য H.264 ফরম্যাট এবং 1080p রেজোলিউশন ভালো কাজ করে।
এছাড়াও আরো কিছু নির্দেশনা, যা আপনার ভিডিও এডিটিং এর সময়ে জানা দরকার।
1080p (1920×1080) হলো স্ট্যান্ডার্ড রেজোলিউশন। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী 720p বা 4K (2160p) রেজোলিউশন ব্যবহার করতে পারেন।
ভিডিও রেকর্ডিং বা এডিটিং অনুযায়ী 24fps, 30fps, অথবা 60fps সিলেক্ট করতে হবে। YouTube এ 60fps ফ্রেম রেট পর্যন্ত সাপোর্ট করে।
YouTube-এর জন্য 1080p ভিডিওতে 8 Mbps (SDR) বা 10 Mbps (HDR) বিট রেট ভালো কাজ করে। 4K এর ক্ষেত্রে 35-68 Mbps বেছে নেওয়া উচিত।
AAC ফরম্যাট এবং 320kbps অডিও বিট রেট সিলেক্ট করলে ভিডিও এর অডিও ভালো পাওয়া যায়।
আপওয়ার্ক, ফাইভার এবং ফ্রিল্যান্সার এর মাধ্যমে ভিডিও এডিটিং এর কাজ খুঁজে পাওয়া যায়। এর জন্য একটি প্রোফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করতে হবে আর কাজের নমুনা আপলোড করতে হবে।
আপনার সেরা কাজগুলো একটি পোর্টফোলিওতে সাজিয়ে রাখুন। এর জন্য Behance বা Vimeo ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কোর্স করতে পারেন। যেমন Udemy, Coursera বা LinkedIn Learning।
ভিডিও এডিটিং শেখা একটি ধৈর্যের কাজ। তবে, সঠিক প্ল্যান ও প্রাক্টিসের মাধ্যমে আপনি দ্রুত প্রোফেশনাল লেভেলে পৌঁছাতে পারবেন। উপরের টিপসগুলো ফলো করে নিজের কাজের লেভেল আরো উন্নত করার চেষ্টা করুন এবং ভিডিও এডিটিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তুলুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন টেকনিক শিখুন এবং নিজের কাজের মান আরও বাড়ান।
You must be logged in to post a comment.
Kinemaster is the best for mobile user
তাই নাকি ভাই
vai post approved hoi na kano. Help