স্বাস্থ্যটাকে ঠিক রাখার
কাজে পুষ্টিকর খাদ্য বাছাই
করে মানুষ। এমন অনেক খাবার
আছে যা আমাদের কাছে যুগ যুগ
ধরে পুষ্টিকর খাবার হিসাবে
পরিচিত। কিন্তু প্রচলিত সব তথ্যই সত্য নয়। খাদ্যসহ
বিভিন্ন প্রসঙ্গে কিছু প্রচলিত
ধারণার কথা তুলে ধরেছেন
বিশেষজ্ঞরা যা কিনা মিথ বা
ভুল ধারণা হিসাবে প্রচলিত
রয়েছে।
১. দুধ সব সময় দেহের জন্য
ভালো, এ খবরটি ভুল। এই
পুষ্টিকর খাবারকে দারুণ
স্বাস্থ্যকর হিসাবে চালিয়ে
দেওয়ার ক্ষেত্রে সফল কৌশল
প্রয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশি
দুধ খাওয়া মানেই যে বেশি
ভালো তা সঠিক নয়। ২. অর্গানিক খাবার কীটনাশন
মুক্ত এবং আরো বেশি পুষ্টিকর
কথাটা ভুল। কৃষকরাও অর্গানিক
খাবার উৎপাদনে রাসায়নিক
উপাদান ও কীটনাশক ব্যবহার
করেন। যেকোনো ধরনের খাদ্য উৎপাদনে এগুলোর ব্যবহার
ঘটে। ৩. মাটিতে খাবার পড়ে
যাওয়ার ৫ সেকন্ডের মধ্যে
তুললে তাতে কোনো জীবাণু থাকে
না কথাটা ভুল। এতে তৎক্ষণাৎ
জীবাণু চলে আসতে পারে। ৪. টার্কিতে থাকা ট্রিপটোফান
ঘুম আনে কথাটা ভুল। অনেক
খাবারেই এই রাসায়নিক
উপাদানটি থাকে। এটি ঘুম আনে
না। ৫. চকোলেট খেলে একনি ওঠে
কথাটা ভুল। বহু ভেজাল চকোলেট
বা ক্যান্ডি খেলেও একনি ওঠার
কোনো সম্ভাবনা নেই। ৬. প্রতিদিন একটি আপেল খেলে
সুস্থ থাকবেন কথাটা ভুল। এতে
যথেষ্ট ভিটামিন আছে। কিন্তু
একমাত্র এটি যাবতীয় অসুখ দূরে
রাখতে পারে না। ৭. প্রক্রিয়াজাত চিনির চেয়ে
মধুর মতো প্রাকৃতিক চিনি উত্তম
কথাটা ভুল। কারণ এই চিনিতে
থাকে উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজ যা
ক্ষতিকর। ৮. বেড়ে ওঠা সুষম করে কফি
কথাটা ভুল। গবেষণায় দেখা
গেছে হাড়ের গঠনের সঙ্গে
ক্যাফেইনের সম্পর্ক নেই। ৯. আইসক্রিম খেলে সর্দি লাগে
কথাটা ভুল। এমনকি ঠাণ্ডা
লাগলেও আইসক্রিম খেলে
অবস্থার অবনতি ঘটে না। ১০. চিনি হেরোইনের মতোই
নেশা আনে কথাটা ভুল। মাদক
মস্তিষ্কের যে স্থানকে
উত্তেজিত করে চিনি একই
স্থানকে উত্তেজিত করে। তাই
বলে চিনি তেমনটা হেরোইনের মতো নয়। ১১. চিনি এবং চকোলেট
রোমান্স আনে কথাটা ভুল। এগুলো
আসলে বিজ্ঞাপনের ভাষা। ১২. চিনি শিশুদের আরো চঞ্চল
করে তোলে কথাটা ভুল। কয়েকটি
গবেষণা এটি প্রমাণ করতে
গিয়ে ব্যর্থ হয়। ১৩. রক্ত অক্সিজেন শূন্য হলে তা
নীল হয়ে যায় কথাটা ভুল।
কোনো গবেষণায় তার প্রমাণ
মেলেনি। ১৪. মানুষের ৫টি ইন্দ্রিয়
রয়েছে কথাটা ভুল। দৃষ্টি, গন্ধ,
স্বাদ, শ্রবণ এবং স্পর্শ তো
অনুভূতির শুরু। ভারসাম্য,
গেলে চলবে না। ১৫. হাইমেন একধরনের টিস্যু
যা নারীদের যোনীপথকে আটকে
দিতে পারে কথাটা ভুল। ১৬. গাঁজর খেলে রাতে ভালো
দেখা যায় কথাটা ভুল। যদিও
এতে ভিটামিন এ রয়েছে। তাই
বলে রাতের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি
পায় না। ১৭. গর্ভকালীন নারীদের
মস্তিষ্ক শিশুদের মতো হয়ে যায়
এবং নির্বোধ করে তোলে কথাটা
ভুল। মস্তিষ্কে কিছুটা প্রভাব
পড়লেও তা একেবারে শিশুসুলভ
করে তোলে না। ১৮. মৃত্যুর পরও হাত ও পায়ের
নখ বৃদ্ধি পায় কথাটা ভুল। মূলত
ত্বক শুকিয়ে যাওয়ার কারণে
মনে হয় নখ বেড়েছে। ১৯. মস্তিষ্কের নতুন কোষ
উৎপাদন করতে পারে না মানুষ
কথাটা ভুল। এমন অনেক প্রমাণ
রয়েছে যে মস্তিষ্কে নতুন নতুন
কোষ গঠিত হতে থাকে। ২০. চিউইং গাম খেয়ে ফেললে
তা হজম হতে ৭ বছর লাগে
কথাটা ভুল। এগুলো সহজে হজম
হতে চায় না। কিন্তু অধিকাংশ
ক্ষেত্রে মলের সঙ্গে বেরিয়ে
যায়। ২১. মাইক্রোওয়েভ ওভেনের
কারণে ক্যান্সার হয় এবং
পেসমেকার থাকলেও তা নষ্ট
হয়ে যায় কথাটা ভুল। বিশেষ
কয়েক ধরনের তেজস্ক্রিয়তায়
ক্যান্সার হয়। ২২. মাদক মস্তিষ্কে ফুটো তৈরি
করে কথাটা ভুল। অনেক মাদক
আছে যা মস্তিষ্কের কাঠামোগত
পরিবর্তন আনতে পারে। কিন্তু
ফুটো তৈরি করে না। ২৩. খাওয়ার পর সাঁতার কাটতে
যাওয়ার আগে এক ঘণ্টা সময়
ব্যয় করতে হবে, নয়তো ডুবে
যাবেন- কথাটা ভুল। খাওয়ার
পর সাঁতারাতে গেলে পেশি
নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার কিছু নেই যে ডুবে যেতে হবে। ২৪. বাড়তি ভিটামিন খেলে
স্বাস্থ্য ভালো থাকবে কথাটা
ভুল। যদি ভিটামিন পিল কাজ
করে তবে একটি পিলই যথেষ্ট।
বেশি খেলে উল্টো ক্ষতি। ২৫. প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি
খেতে হবে কথাটা ভুল। যথেষ্ট
পরিমাণ পানি খেতে হবে।
একেক জনের দেহের জন্য একেক
পরিমাণ পানি দরকার। আট
গ্লাসের কোনো প্রমাণ মেলেনি। ২৬. দেহে পানির অভাব পূরণ
করতে পারে না কার্বোনেটেড
ওয়াটার কথাটা ভুল। দেহে
পানির অভাব পূরণে সাধারণ
পানির মতোই কাজ করে
কার্বোনেটেড ওয়াটার। ২৭. হজমের প্রক্রিয়ায় সমস্যা
ঠিক করে দেয় দই কথাটা ভুল।
অনেক সময় দই হজমে সহায়তা
করে। কিন্তু এ কাজ যে দই
করবেই তেমন কোনো কথা নেই। ২৮. দেহের ৯০ শতাংশ তাপ খরচ
হয় মস্তিষ্কের মাধ্যমে কথাটা
ভুল। উন্মুক্ত যেকোনো অংশ দিয়ে
তাপ হারাতে পারে দেহ। ২৯. অ্যালকোহল পানে যে সারা
রাতই প্রস্রাব হবে কথাটা ভুল।
আসলে যত বেশি অ্যালকোহল পান
করবেন তত বেশি মূত্র আসবে। ৩০. কফি পানে অ্যালকোহলের
প্রভাব কাটিয়ে ওঠা যায়
কথাটা ভুল। কফি পানে বরং
দেহ পানি হারায়। এতে প্রভাব
আরো জেঁকে বসতে পারে। ৩১. অ্যালকোহল পানে
মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু ঘটে
কথাটা ভুল। এর সঙ্গে
মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যুর কোনো
সম্পর্ক নেই। ৩২. অ্যালকোহল খাওয়া আগে
নেয় কথাটা ভুল। এতে
অ্যাককোহল রক্তে মিশতে সময়
বেশি লাগে। ৩৩. বাদামী চিনি সাদা
চিনির চেয়ে স্বাস্থ্যকর
কথাটা ভুল। রংয়ের ভিন্নতা
আসে সিরাপের কারণে। ৩৪. টিভির খুব কাছাকাছি
বসলে চোখের ক্ষতি কথাটা ভুল।
আসলে চোখ অবসাদে আক্রান্ত হয়
যা মাথাব্যথার কারণ হতে
পারে। ৩৫. ভ্যাক্সিন দেওয়া হলে
প্রতিবন্ধী হতে পারে শিশু
কথাটা ভুল। এতে বরং রোগ
থেকে দূরে থাকা যায়। একটি
গবেষণায় এমন কথা বলা হলেও
পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়। ৩৬. চিনি খেলে ডায়াবেটিস
হয় কথাটা ভুল। পরিমাণ মতো
চিনি এর কারণ নয় বলে জানায়
আমেরিকান ডায়াবেটিস
অ্যাসোসিয়েশন। ৩৭. মনোসোডিয়াম
গ্লুটামেটপূর্ণ খাবার অসুস্থ
করে দেয় কথাটা ভুল। ১৯৬৮
সালে এক চিকিৎসক এমন দাবি
করলেও অনেক গবেষণায় তাকে
সমর্থন জানায়নি। ৩৮. সোডা পান করা শিশুরা
স্থূলতার ঝুঁকিতে থাকে কথাটা
ভুল। এতে অন্যান্য ক্ষতি হলেও
শিশুকালীন স্থূলতা দেখা দেয়
না। ৩৯. আঙুল ফোটালে আরথ্রাইটিস
দেখা দেয় কথাটা ভুল। এটা
করলে আশপাশের মানুষ বিরক্ত
হতে পারেন। কিন্তু আমন রোগ
হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ৪০. জ্বরের সময় না খেলে শীত
লাগে কথাটা ভুল। ২০০২ সালের
এক গবেষণায় বলা হয়, এ সময়
ক্যালোরি কম গ্রহণ করলে রোগ
প্রতিরোধী ক্ষমতা প্রভাবিত
হতে পারে। ৪১. নাকের শ্লেষ্মার রং সবুজ
হওয়ার অর্থ ব্যাকটেরিয়া আর
হলুদ হলে ভাইরাসের আক্রমণ
ঘটেছে কথাটা ভুল। শ্লেষ্মার
রং আসলে সংক্রমণের মাত্রা ও
সময়ের ওপর নির্ভর করে। ৪২. ট্যুরেটিস সিনড্রোমে
আক্রান্ত মানুষরা খালি কসম
কাটে কথাটা ভুল। এই
সিনড্রোমে আক্রান্ত অল্প
সংখ্যক মানুষের এমন অভ্যাস
দেখা যায়। ৪৩. ভেজা চুল নিয়ে থাকলে
বেশি শীত লাগে কথাটা ভুল।
মূলত শীত লাগা ভাইরাসের
আক্রমণে এমনটা হয়। ৪৪. মানসিক চাপে উচ্চ
রক্তচাপ দেখা দেয় কথাটা ভুল।
এতে সামান্য সময়ের জন্যে এ
সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৪৫. ব্যাঙের স্পর্শে আঁচিল হয়
কথাটা ভুল। বরং
প্যাপিলোমাভাইরাস এ ঘটনা
ঘটায়।
বাংলাদেশের নায়কের দ্বারা নির্মিত Man vs. wild এর মতো একটি সিরিজ।
ভিডিও টি দেখুন নিচের লিন্ক থেকে।
Click here
4 thoughts on "স্বাস্থ্যগত বিষয়ে প্রচলিত কিছু ধারণা যার সবই ভুল জেনে রাখুন"