সবার আগে নিজের মন থেকে সব
যুক্তিগুলো সাজিয়ে নিয়ে সীদ্ধান্ত
নিন, মনকে দৃঢ করুন, ইচ্ছা শক্তি বাড়ান।
★ আপনার ব্যক্তিত্বের শক্তিশালী
দিকগুলো নিজের কাছে তুলে ধরুন
এবং ঠিক করুন আজ থেকেই ছেড়ে
দিচ্ছেন ধুমপান।
★ বাসায়, ড্রয়ারে বা
পকেটে সিগারেট থাকলে তা
কোনোরকম দ্বিধা না করে এখনই
ফেলে দিন, শুরু হোক আপনার সাহসী পথ
চলা।
★ যে সকল স্থানে ধুমপান নিষিদ্ধ সে
সকল স্থানে (সেটা হতে পারে
মসজিস, যাদুঘর, লাইব্রেরী অথবা
আপনার অফিসের কক্ষ অথবা
হাসপাতালে) আপনার মূল্যবান সময়
কাটান।
★ ক্যান্সার আক্রান্ত
আত্মীয়স্বজন থাকলে তাদের সাথে
অনেক সময় কাটান।
★হাসপাতালো
কোন পরিচিত রোগী ভর্তি থাকলে
আপনার স্বার্থেই তাকে সংগ দিন।
আত্মীয়দের কবরস্থানে নিরিবিলি
সময় কাটাতে পারেন।
অনুপ্ররণা এবং সহযোগীতা নিন,
আপনার অধুমপায়ী বা ধুমপানত্যাগী
বন্ধুবান্ধব দের কাছ থেকে প্ররণা বা
পরামর্শ নিন।
★ তামাক ছাড়ার জন্য একটি
গ্রুপ তৈরী করতে পারেন, যাদের সবার
ইচ্ছা থাকবে তামাক ছেড়ে দেবার।
এর মধ্যে আপনার ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তার
পরিচয় দিন এবং প্রয়োজনে এই গ্রুপে
অধুমপায়ী বা চিকিৎসক বন্ধুবান্ধব কে
অন্তর্ভুক্ত করুন।
★ খাবার স্থান পরিবর্তন করতে পারেন,
যে সকল রেষ্টুরেন্ট এ ধুমপান নিষিদ্ধ
খরচ একটি বেশী হলেও সেসকল স্থানে
খাওয়া দাওয়া সারুন, আপনার
ধুমপানের বেচে যাওয়া খরচের তুলনায়
সেটা খুব বেশী হবেনা।
★ ধুমপান ত্যাগের সীদ্ধান্তের
প্রাথমিক পর্যায়ে ধুমপায়ীদের সংগ
থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
★ জীবনে বিনোদনের ভুমিকা অনেক,
তাই বিনোদনের জন্য গান শুনুন, গল্প-
উপন্যাস পড়ুন, বিভিন্ন প্রদর্শনী যাদুঘর
গুলোতে যান, নাটক দেখুন, সিনেমা
দেখতে পারেন। গান শোনার সময়
বাসার এমন কোথাও অবস্থান করুন
যেখানে ধুমপান করা যায়না (যেমন
ড্রয়িং রুম বা ডাইনিং রুম), মঞ্চ
নাটকের গ্যালারিতে, আর্ট
কাটালে ধুমপান করা যায়না এবং
এভাবেই একসময় দিনের একটা বড় অংশ
আপনার অধুমপায়ী হিসেবে কেটে
যাবে।★
জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুল,
স্কেটিংক্লাব বা শারীরিক পরিশ্রম
হয় এমন সংস্থাগুলোতে নাম লিখান।
এসব স্থানে নিয়মিত ব্যায়াম করলে
আপনার শারীরিক সুস্থ্যতা বৃদ্ধি
পাবে ধুমপানের ও সূযোগ থাকবেনা।
★
এরপরও মাঝে মাঝে ধুমপান করার প্রবল
ইচ্ছা জাগলে ধুমপান নিষিদ্ধ এমন কোন
যায়গায় গিয়ে প্রিয় কোন বন্ধু /
মানুষের সাথে প্রাণখুলে সময় কাটান।
সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পরুন বা
ভালো কোন পাবলিক পরিবহনে করে
দূর কোন স্থান থেকে বেরিয়ে আসুন,
লক্ষ রাখবেন আপনার সংগী যেন একজন
অধুমপায়ী হয়।
★★ এমনি করে মাসখানেক কেটে গেলে
একসময় দেখবেন আপনার আর ধুমপান
করতে ইচ্ছা করছেনা এবং আপনি একজন
অধুমপায়ী হয়ে গেছেন। ★ তবে লক্ষ
রাখবেন ব্যাপারটা বড়াই করে
কাউকে বলার সময় এখনো আসেনি,
তেমন টি করলে আপনার দুষ্ট বন্ধুদের
অনেকে কৌশলে আপনাকে বোকা
বানানোর জন্য অথবা মজা করে
ধুমপানে আগ্রহী করতে পারে, কাজেই
সাবধান।
★
কারো কারো ক্ষেত্রে ধুমপানের
মাত্রা খুব বেশী থাকে, এমন অল্প কিছু
ক্ষেত্রে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে
কিছু অসুধ সেবন করা লাগতে পারে।
তবে আপনার ব্যক্তিও বা ইচ্ছা শক্তি
যদি প্রবল হয় কোন কিছুই আপনাকে
দমিয়ে রাখতে পারবেনা।
সব কথার শেষ কথা আপনার ইচ্ছা
থাকলেই আপনি ধুমপান ছেড়ে দিতে
পারবেন, নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার
ইচ্ছাটা আছে তো?
★★★★★★
★★★
ধূমপান ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয় শরীরের সব
অঙ্গ। ছেড়ে দেওয়ার পর কিছু বছরের মধ্যে
শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে বলে
জানান ডাক্তাররা।
# ২০ মিনিট:
সিগারেট খাওয়ার ২০ মিনিটের
মধ্যেই আমাদের রক্তচাপ কমে গিয়ে
স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাত ও পায়ে রক্ত
সঞ্চালন বাড়ে।
# ৮ ঘণ্টা:
শেষ সিগারেট খাওয়ার ৮ ঘণ্টার
মধ্যে আপনার শরীরে জমে থাকা কার্বন
যাবে। অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায় ফুসফুস
থেকে ক্ষতিকারক ও অস্বস্তিকর
ব্যাকটেরিয়া দূর হবে।
# ৪৮ ঘণ্টা:
এই সময়ের মধ্যে ফুসফুসে জমে
থাকা নিকোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।
ফলে ঘ্রাণ ও স্বাদ বোধ বাড়বে।
# ৩ দিন:
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ৩ দিনের
মধ্যে আপনার ব্রঙ্কিয়াল টিউব প্রসারিত
হবে। ফলে অনেক স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস-
প্রশ্বাস চালাতে পারবেন, এনার্জি ফিরে
আসবে, স্ট্রেস কমবে।
# ২ সপ্তাহ-২ মাস:
এই সময়ের মধ্যে শরীরে
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে ফুসফুসের
কর্মক্ষমতা ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে
হাঁটাচলা করতে আগে যে হাঁফিয়ে উঠতেন, এই
সময় থেকে তা কমে গিয়ে এনার্জি ফিরে
পাবেন।
# ৩-৯ মাস:
এই সময় থেকেই বুঝতে পারবেন
আপনার আর নিশ্বাস নিতে বিশেষ কষ্ট হচ্ছে
না। ধূমপানের কারণে যে খুকখুকে কাশি হতো
তাও অনেক কমে এসেছে। এই সময় থেকে
ব্রঙ্কিয়াল টিউবের ফাইবার আবার আগের
অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। যা ফুসফুস
থেকে ব্যাকটেরিয়ার দূর করে পরিষ্কার
রাখে।
# ১ বছর:
ধূমপান ছাড়ার ১ বছর পরও যারা
কোনও দিন ধূমপান করেননি তাদের তুলনায়
আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে দ্বিগুণ।
# ৫ বছর:
সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ৫ বছরের
মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে
যায়। কোনও দিন ধূমপান না করলেও যে ঝুঁকি
থাকে, ৫ বছর পর ঝুঁকির পরিমাণ ঠিক ততটাই
কমে আসে।
# ১০ বছর:
ধূমপানের ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি
হয়, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ১০ বছর সময়
লাগে ফুসফুসের আবার আগের অবস্থায় ফিরে
আসতে।
# ১৫ বছর:
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ১৫ বছর পর
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ততটা, যতটা এমন কারও
যিনি কোনও দিন ধূমপান করেননি।
20 thoughts on "দেখে নিন আপনি কিভাবে ধুমপান ত্যাগ করতে পারেন,এবং ধুমপান ছাড়ার পর শরীরে যে পরিবর্তন আসে!"