শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রত্যেক মানুষই চায় তার শরীর সুগঠিত ও আকর্ষণীয় রাখতে। খাওয়া-দাওয়া ঠিক রেখে আপনি ব্যায়ামের মাধ্যমেই আপনার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেন। তবে আপনাকে জানতে হবে ব্যায়ামের প্রকৃতি বা ধরন। সুন্দর শরীর গঠনের জন্য আপনার নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম রয়েছে, আপনি সেগুলোই অনুশীলন করুন। দৈনিক না পারলেও সপ্তাহে অন্তত দু-তিন দিন করুন। একটি কথা মনে রাখবেন- যে ১১টি ব্যায়ামের কথা বলা হচ্ছে, তা কিন্তু সবই আপনাকে করতে হবে ১ থেকে ১১ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে। সবচেয়ে ভালো হয় ব্যায়ামগুলো যদি আপনি সূর্য ওঠার সাথে সাথে করেন।
১. প্রার্থনার ভঙ্গিতে দাঁড়ান পা দুটোকে একত্র করে দাঁড়ান এবং হাত দুটোকে সামনে এনে প্রার্থনার ভঙ্গিতে অবস্থান নিন। পায়ের পাতার ওপর চাপ দিন এবং ঊরুর সামনের মাংস টানতে থাকুন। বুক ও মাথা ওঠানোর সময় কাঁধ দুটোকে শিথিল রাখুন। গলার পেশিতে কোনো টান রাখবেন না। এই ভঙ্গিতে অল্প করে শ্বাস নিন।
২. পেছন দিকে বাঁকা হোন শ্বাস নিন এবং আপনার হাত দুটোকে মাথার ওপরে তুলুন। আঙুলগুলো সোজা রাখুন। পা দুটো যেন মাটিতে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। এবার উত্তোলিত বাহুদ্ব্বয়কে হাতসহ পেছনের দিকে নিয়ে আসুন। ধীরে ধীরে পেছন দিকে বাঁকা হোন। তলপেট যেন সামনের দিকে থাকে।
৩. সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুনশ্বাস ছাড়ুন। আপনি সামনের দিকে ঝুঁকে হাত দুটো মেঝেতে রাখুন। খেয়াল রাখবেন, আপনার হাঁটু যেন বেঁকে না যায়। হাতের আঙুল দিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করুন; তবে আপনার হাত মেঝে পর্যন্ত না পৌঁছলে হাঁটু দুটো ভাঁজ করতে পারেন। ঘাড় শিথিল করুন এবং মাথা দুই
হাঁটুর সামনে ফেলে দিন। তবে পা দুটো শক্ত রাখবেন। ঊরুর পেশি এতে সঙ্কুচিত হবে। আপনার মেরুদণ্ডকে যতটা সম্ভব সোজা রাখবেন।
৪. বাম ফুসফুস শ্বাস নিন। আগের মতো হাত দুটোকে পায়ের পাতার কাছে আনুন। হাঁটু দুটো ভাঁজ করুন, তারপর আপনার ডান পা পেছনে নিয়ে যান। মেঝেতে এখন কেবল আপনার বাঁ পা-ই ভর করে আছে। এবার সামনের দিকে আপনার দুই বাহুর মাঝে হাঁটুর সামনে বুক নিয়ে ঠেলুন- জোরে চাপ দিন। খেয়াল রাখবেন, আপনার গোড়ালি ও কাঁধ যেন সোজা লাইনে থাকে
৫. বুকডনের ভঙ্গিশ্বাস ছেড়ে দিন। অন্য পা পেছনে নিয়ে যান। হাত দুটো এবং পায়ের পাতার সামনের অংশ দিয়ে সোজা মেঝেতে ভর দিন এবং নিঃশ্বাস ধরে রাখুন। পা দুটো, বাহু দুটো- সবই সোজা থাকবে, ভাঁজ হবে না কোথাও। মাথাকে মেরুদণ্ডের একই লাইনে রাখুন। আপনার দৃষ্টি রাখুন হাত দুটোর দিকে।
৬. চার হাত-পায়ে বিশেষ ভঙ্গিএবার শ্বাস ছাড়ুন। হাঁটু দুটো ভাঁজ করে এবং নিচু করে মেঝেতে রাখুন। তারপর বাহু দুটো ভাঁজ করুন এবং আপনার বুক ও চিবুক (অথবা কপাল) আস্তে করে মেঝেতে স্থাপন করুন। আপনার মুখটি মেঝের সাথে সমান্তরালভাবে রাখুন। পায়ের আঙুলগুলো বাঁকা করুন।
৭. গোখরা সাপের মতো ভঙ্গিশ্বাস নিন। বাহু দুটো সোজা করুন, তবে কনুই দুটোকে আটকে রাখবেন না। বাহু ঠেলে শরীর সামনে নিয়ে যান- ঠিক যেন সাঁতার কাটছেন আপনি। আপনার পিঠ বাঁকা করতে হবে, তবে পা দুটো পুরোপুরি ছড়ানো থাকবে। পায়ের আঙুলগুলো মেঝের ওপর থাকবে। খেয়াল রাখবেন, আপনার বুকটা যেন উঠানো থাকে।
৮. নিম্নাভিমুখী কুকুরের ভঙ্গিশ্বাস ছাড়ুন। তারপর আপনার নিতম্ব ওপরে তুলুন। হাত দুটো মেঝেতে রেখে শরীর পেছনের দিকে এমনভাবে ঠেলুন যেন আপনাকে ‘ভি’ আকৃতির মতো দেখায়। আপনার গোড়ালি মেঝেতে পুরোপুরিই থাকবে। আপনার মাথা ঝুলে থাকবে এবং গলাকে শিথিল করতে হবে। পা দুটো যেন ভাঁজ না খায়। কনুইও যেন ভাঁজ না খায়।
৯. ডান ফুসফুসশ্বাস নিন। ডান পাকে ভাঁজ করে দুই হাতের মধ্যে আনুন। বাম পা-টা পেছনে ছড়িয়ে থাকবে। ডান পায়ের গোড়ালি মেঝের ওপর থাকবে। হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে বুক দিয়ে হাঁটুতে চাপ দিন। ঘাড় শিথিল রাখুন।
১০. শরীরকে সামনের দিকে বাঁকা করুন শ্বাস ছাড়ুন। পা দুটোকে সোজা করুন। শরীরের সামনের অংশটিকে সামনের দিকে বাঁকিয়ে এনে হাত দুটো আপনার দুই পায়ের পাতার দ’পাশে রাখুন। মাথা দুই হাঁটুর সামনে নিয়ে আসুন। আপনার পায়ে যাতে টানটান ভাব থাকে সেটার দিকে খেয়াল রাখুন। ঊরু দুটোর মাংসপেশির সঙ্কোচন আপনি টের পাবেন। পায়ের পাতা দুটো মেঝের ওপর হালকাভাবে থাকবে।
১১. শরীর পেছনে বাঁকানশ্বাস নিন। আপনার হাত দুটো মেঝে ছেড়ে শূন্যে উঠাতে উঠাতে শ্বাস নিতে থাকুন। হাত দুটো মাথার ওপর দিয়ে নিন। শরীরকে নিতম্ব থেকে পেছনে বাঁকান। বুককে চিতিয়ে ধরুন। আপনার দৃষ্টি পেছনে নিন। হাতের মাঝ দিয়ে দেখুন। সোজা রাখুন হাতের আঙুলগুলো। ওভাবেই বাঁকিয়ে রাখুন শরীরকে।
2 thoughts on "[লাইফ স্টাইল] ফিটনেসের জন্য ব্যায়াম!"