আমরা অনেকেই “মোটিভেশন” নামক শব্দটার সাথে কমবেশি পরিচিত; মোটিভেশন জিনিসটাও আসলে চমৎকার!
এই যেমন ধরুন আপনি তিন মাস ধরে জুতার শুকতলা খয়িয়েও একটা চাকুরী না পেয়ে হতাশায় সায়োনাইড বিষ খেতে যাচ্ছেন এমন সময় আমি যদি আপনাকে সফলতার গল্প শুনিয়ে অনুপ্রাণিত করি তাহলে নিশ্চিত আপনার চোখে আমি আইডল কিংবা এ্যঞ্জেল হয়ে যাবো ; ফলশ্রুতিতে আপনি বাজার হতে আরও একজোড়া নতুন জুতা কিনে চাকুরীর আশায় পথে পথে ঘুরবেন….
জীবন বাঁচানো কিংবা হতাশা হতে মুক্তি দেওয়া নিশ্চয়ই মহৎ কাজ তবে রোগের কার্যকর ঔষধ না দিয়ে শুধুমাত্র স্বান্তনা নামক এনাসথেসিয়াতে জীবন স্বার্থক হয়না; অনিয়ন্ত্রিতভাবে এন্টিবায়োটিকও একটা সময় অকার্যকর হয়ে যায়!
বাংলাদেশ এবং মোটিভেশন:
বাংলাদেশে খুব পরিচিত দুই জন মোটিভেশন স্পিকার হলেন সেলাইমান শুখন এবং আইমান সাদিক ( আমি কখনোই বলছি না সোলাইমান শুখন মোটিভেশন নামক মুখোশের আড়ালে অমুক দলের সুবিধাভোগী হয়ে গুণগান গায় কিংবা আইমান সাদিক সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে বুজরুকী করেন) আমি বলবো তারা নিজ নিজ অবস্থান হতে সফল মানুষ।
তবে আপনি বিশ্বাস করুন কিংবা না করুন এইসব মোটিভেশন স্পিকারের পিছনে শুধুমাত্র আপনার-আমার-আমাদের ফ্যান-ফলোয়ারের সাপোর্ট’ই তাদের আজকের দিনে সেলিব্রেটি শাহেনশাহ বানিয়েছে….
“সেলিব্রেটি পচিয়ে সেলিব্রেটি হওয়া” একটি সহজতম সমীকরণ তবে আমি এখানে তর্ক করতে আসিনি কিংবা সমালোচনাও করতে আসিনি; শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্বাপেক্ষে মোটিভেশনের স্বরূপ তুলে ধরতেই উদাহরন দিলাম মাত্র।
বাংলাদেশে মোটিভেশন বিষয়টা হলুদ প্রশ্নবোধক চিহ্ন হলেও উন্নত বিশ্বে সাইকোলজিক্যালি মোটিভেশন বিষয়টি দৈনন্দিন জীবনেরই একটি অংশ; সেখানে একজন মানুষ টাকার বিনিময়ে সাইকিয়াট্রিস্টের (সাইকোলজি স্পেশালিষ্ট এর) নিকট কনসার্ন গ্রহণ করেন।
সুতরাং মোটিভেশনের সাথে ধনী-গরীবের কোন সম্পর্ক নেই; তবে সাঠিক ও কার্যকর মোটিভেশন একজন গরীবকেও ধনী মানুষে পরিণত করতে পারে; মূলত মোটিভেশন হলো সফলতার মহাঔষধ!
মোটিভেশন কোন প্যারাসিটামল নয়!
হাতুড়ে ডাক্তারেরা যেমন যেকোনো রোগেই প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করেন; তেমনি খোলা মঞ্চে মাইক হতে পেলেই মাইকেল বনে যাওয়া মোটিভেশন স্পিকারেরা হাততালি পান বটে তবে হাততালি দেওয়া সেইসব হাতগুলিতে আদতেই কি সফলতার স্বর্ণপ্রদীপ পৌছায়???
আমরা প্রতিটি মানুষ ইউনিক-আমাদের সকলের ব্রেইন ইউনিক-আমাদের প্রত্যকের লাইফ ইউনিক-আমাদের প্রত্যেকের লাইফের সমস্যাগুলিও ইউনিক…..তাহলে আমাদের সমস্যার সমাধানও ইউনিক হওয়া উচিত।
তাই মোটিভেশন মানেই খোলা উপদেশ নয়, কেননা খোলা উপদেশের ভেতরটা প্রায়শ খেলো হয়!
[তবে হ্যা, কিছু কমন বিষয়ে মোটিভেশন সবার জন্যই প্রযোজ্য বটে]
আদর্শ মোটিভেশন:
আমি আবারো বলছি “আদর্শ মোটিভেশন ইউনিক হওয়া উচিত” তাই আমার এই লেখার মাঝেই যে আপনার লাইফের সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমন মহা-মাদুলী বিক্রি করার নাম আর যায় হউক মোটিভেশন নয়।
আমাদের লাইফের জন্য শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তি+ ধৈর্য্য+পরিশ্রম+জ্ঞান হলেই চলবে না বরং সফলতার রাস্তায় এইসব ইলিমেন্ট কিভাবে ইউটিলাইজ করতে হবে সেই পথটাও তো দেখাতে হবে নাকি??
আমি বলতেই পারি যে “একটা সময় শাহরুখ খান মুম্বাই এর রাস্তায় রাস্তায় রাত কাটিয়ে গৌরির খোজে আজ সুপারস্টার হয়ে গিয়েছে” অথচ সেই সময়ে তার যেই বন্ধুটি সামান্য কয়টা টাকা দিতো সেটিই তাকে পথ চলার অনুপ্রেরণা আর শুকনা রুটিতে পেট ভরানোর মতোন শক্তি যুগিয়েছিলো; এটাই আদর্শ মোটিভেশন!
শুকনা কথাতে চিড়া ভিজতে পারে বটে তবে সফলতার জন্য শুধুমাত্র উপদেশ নয় বরং সঠিক পথের অনুসন্ধান দেওয়াও আবশ্যক।
আই এ্যাম দ্যা অনলি পারফেক্ট মোটিভেশনাল স্পিকার!
ইউটিউব- ফেসবুকে এতোসব সেলিব্রেটি মোটিভেশনাল স্পিকারের ভীড়ে কেবলমাত্র “আমিই একমাত্র পারফেক্ট মোটিভেশনাল স্পিকার” কথাটা শুনতে খুবই হাস্যকর লাগবে, কিন্তু আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আমিই একমাত্র পারফেক্ট মোটিভেশনাল স্পিকার…ইউ ক্যান ফেয়ার আদার ওয়াইজ থোরাই কেয়ার।
সত্যিই আমি পারফেক্ট মোটিভশনাল স্পিকার তবে সেটা আমার নিজের জন্য, ঠিক আপনার জন্যই পারফেক্ট মোটিভেশনাল স্পিকার যেমন আপনি নিজেই।
উদারণস্বরূপ আমার নিজের বাসার টয়লেট ছাড়া আমি অন্য কারো বাসার টয়লেট উইজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করিনা; তাইবলে পথের মাঝে প্রাকৃতিক ডাক দিলে ঠিকই কিন্তু পাঁচ টাকা খরচ করে পাবলিক টয়লেটে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিই!
বিষয়টা যতোই ঘেন্নার হউক আমি কিন্তু ঠিকই ইভ্যুউলুটেড হয়েছি আইমিন অভিযোজিত হয়েছি।
একইভাবে সমগ্র সমস্যা আর পরিস্থিতি মেকাবেলায় আপনার ব্রেইন স্বকীয়ভাবে মোটিভেশনের কাজ করে; আপনার প্রয়োজন শুধু “দুঃশ্চিন্তা” হতে “দুঃ” নামক দূরব্যাধি করে “চিন্তা” করা।
খুবই সহজ সলুউশান তাইনা??
আমাদের লাইফের সকল প্রকার হতাশা এবং সমস্যা সমাধানের জন্য দুইজন ফ্রি মোটিভেশন গাইড আছে (১) মন(মাইন্ড) আর (২) মাথা(ব্রেইন); তাদেরকে কাজে লাগিয়েই লাইফের সকল প্রবলেমের সলুউশান সম্ভব।
আসুন আমি ডেমো হিসেবে আপনাকে কিছু পথ বাতলে দিই…..
★সমস্যা: প্রেমে পড়েছি;এতে তো পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে। আবার মনের মানুষকে ভুলতেও পারছি না…কি করবো?
♦সমাধান: মোটেই তাকে ভুলে যাবার দরকার নেই; তবে পড়াশোনার টাইম ভুলে না গেলেই হলো। এইটুকু করতে পারলে গো এ্যাহেড….আদারওয়াইজ ফরগেট!
★সমস্যা: বাপের তো টাকা নাই তাইলে সায়েন্স নিয়ে কি করবো? ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া কি মুখের কথা নাকি?
♦সমাধান: আপনি সায়েন্সই নিন, বাপের টাকা না থাকলে টিইশান করে টাকা জমান। টিফিনে উপোষ করে টাকা জমান নইলে তিনবেলা না খেয়ে দিনে দুইবেলা খাবেন…একান্ত দরকার হলে দুয়ারে দুয়ারে হাত পাতবেন।
লজ্জা লাগবে? অথচ টাকার অভাবে যদি স্বপ্ন পূরণ করতে না পারেন সেই লজ্জা তো আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
আর চূড়ান্ত সত্যটা হলো ইশ্বর স্বার্থপর নয়।
★সমস্যা: ধূর….লাইফটাই পানসা পানসা লাগে!!
♦সমাধান: নূন দিয়ে আমড়া কাইট্টা কাইট্টা খান; বুঝছেন? অর্থাৎ সময়টাকে কাজে লাগান। মানুষের যখন পরিশ্রমের তুলনায় অবসর বেশী হয় তখনই লাইফটা বোরিং বোরিং লাগে।
সুতরাং এমন কিছু করুন যেটা করতে ভালো লাগে এবং পকেটে কিছু টাকা আসে…এমনিই মনটা ভালো হয়ে যাবে।
আর ঘরে বসে শর্ট প্যান্ট পড়েও টাকা ইনকাম করার ওপেন প্লাটফর্ম হলো ই-ন-টা-র-নে-ট; এখন আপনি সেই নেটে ইন করবেন কিনা সেইটা আপনার ব্যাপার!
এমন করে বহু বহু সলুউশান লেখা যেতেই পারে; সেগুলি পড়ে হয়তো আপনার মনটাও ভালো লাগবে…কিন্তু আপনি যদি সেগুলি মাথাতে ইনপুট করে কাজে না লাগান তাহলে সবই সারশূন্য…..সো লেটস গো টু ওয়ার্ক।
ফেসবুকে আমি→নিশান আহম্মেদ নিয়ন
আল্লাহ হাফেজ
Nice Post???
https://trickbd.com/windows-pc/442881
And the activator from here:
https://trickbd.com/windows-pc/362995
https://trickbd.com/windows-pc/430849
আর গতকাল রাত হতে জ্বর এসেছে তাই রিপ্লাই করতে পারিনি ভাই, সরি
এত্তোগুলা ভালোবাসা রইলো
Ekhon earn korar valo kono site suggest korte parben?
Edward Mordrake – The Two-Faced Man
……
360 ডিগ্রী কোণে মাথা ঘুরে যাওয়ার ব্যাপারটা হয়তো অনেকেই আপনারা হরর মুভিগুলোতে দেখে থাকবেন। প্যারানরমাল এক্সপার্টদের মতে,একটা মানুষের উপর যখন এভিল স্পিরিট বা জ্বীন ভর করে তখনই এই ব্যাপারটা ঘটে থাকে। আই মিন, ডেমনিক পোজেশন!
কিন্তু,কি হতো,যদি আমরা সামনে-পিছনে উভয়দিকেই দুটো মুখ নিয়ে জন্মাতাম? আর দুটো মুখই যদি কথা বলতে পারতো?
হয়তো দেখা গেল আপনি এক মুখে মিথ্যা বললেন,কিন্তু আপনার আরেকটা মুখ আবার সত্যিটা বলে দিলো! নিশ্চয়ই সুখকর না ব্যাপারটা মোটেও!
হয়তো আপনার কাছে এই ব্যাপারটা বিদঘুটে মনে হতে পারে,কিন্তু এমন অদ্ভুদ ধরনের মানুষ হিসেবেই অনেককে জন্ম নিতে দেখা গেছে পৃথিবীর ইতিহাসে। তবে,সামনে-পিছনে উভয়দিকেই মাথা নিয়ে জন্মানোর ব্যাপারটা খুবই রেয়ার বলা যেতে পারে। তো,এই রেয়ার জেনেটিক ডিসঅর্ডারটার মেডিকেল টার্মে যাওয়ার আগে এই ডিসঅর্ডার নিয়েই জন্মানো এডওয়ার্ড মডরেককে নিয়ে কিছু বলা যাক…..
.
এডওয়ার্ড মর্ড্রেকের জন্ম হয় মূলত উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো একটা সময়ে,অভিজাত এক ব্রিটিশ পরিবারের উত্তরাধিকারী হিসবে। আঠারো শতকের দিকে ইংল্যান্ডে বেশ কিছু অভিজাত পদবি ছিলো এই যেমন ডিউক,আর্ল,ব্যারন ইত্যাদি। এখানে কথা হচ্ছে,শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট অভিজাত ব্রিটিশ পরিবারই এসব পদবির উত্তরাধিকারী হতো। তো,সেসময় শুধু ব্রিটিশ রয়্যাল ফ্যামিলিই তাদের উত্তরাধিকারী নির্বাচন করতে পারতো এবং এই উত্তরাধিকারীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াটা “হাউস অব লর্ডস”-এ খুব জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই পালন করা হতো। তো,এডওয়ার্ডও সেরকমই এক পরিবারে জন্ম নেয় এবং সবরকম সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে থাকে। এই ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে,জন্মের সময়ই আপনি লটারি জিতে নিলেন! কিন্তু,এডওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক সেরকম ছিল না……
.
এডওয়ার্ডের কন্ডিশনের ব্যাপারে সবচাইতে ভালোভাবে উল্লেখ এসেছে ডক্টর জর্জ গোল্ডের লেখা “এনোমেলিস এন্ড কিউরিয়োসিটিস অফ মেডিসিন(১৯০০)” বইটাতে….এই বইটাতে এডওয়ার্ডের এই জেনেটিক ডিসঅর্ডারের ভয়ংকর সব ব্যাপার তুলে ধরেন ডক্টর গোল্ড।
.
দুর্ভাগ্যক্রমে এডওয়ার্ডকে পরীক্ষা করার সুযোগ হয়েছিলো ডক্টর গোল্ডের। এবং,এডওয়ার্ড তার কন্ডিশনের ব্যাপারগুলো একেবারে খোলাসা করেই বলে ডক্টর গোল্ডের কাছে এবং ভয়ংকর কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরে। তো,ডক্টর গোল্ড তার বইটিতে লিখেছিলেন যে,এডওয়ার্ড তার মাথার পিছনের দিকে সম্পূর্ণভাবেই দ্বিতীয় আরেকটা মুখ নিয়ে জন্মেছিলো। মূলত এই ব্যাপারটা মারাত্মক রকম অস্বস্তিতে ভোগাতো এডওয়ার্ডকে। অবস্থা এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছিলো যে, এডওয়ার্ড পুরোপুরিই তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করা শুরু করে,এমনকি সে নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলো। বুঝতেই পারছেন যে,সেসময় ব্রিটিশ অভিজাত পরিবারগুলোকে যথেষ্ট রেস্ট্রিকশনের মধ্যে থাকতে হতো। আর এর কারণেই এডওয়ার্ডের ডিসঅর্ডারটা মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার। এ ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলো এডওয়ার্ড আর সেকারণেই আশপাশের সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
.
এডওয়ার্ডের ব্যাপারে ডক্টর গোল্ড তার বইতে লিখেছিলেন যে,”Edward was a young man of fine attainments,a profound scholar and a musician of rare ability….”
.
এডওয়ার্ডের প্রথম মুখটা অর্থাৎ আসল চেহারাটা ছিলো স্বাভাবিক,সুদর্শন কিন্তু দ্বিতীয় মুখটা অর্থাৎ মাথার পেছন দিকের চেহারাটা ছিলো অনেকটাই বৃদ্ধ মহিলার মতো। এ দ্বিতীয় মুখটার ব্যাপারে ডক্টর গোল্ড লিখেছিলেন, “The second face is lovely as a dream,hideous as a devil!”
এডওয়ার্ড বলতো যে,সে যখন এসব ব্যাপারে চিন্তা করে কান্না করতো,তখন মাথার পিছন থেকে সে তাচ্ছিল্যের হাসি শুনতে পেত…. ব্যাপারটা একটু ভাবুন,আপনি যখন একমুখে কাঁদছেন আর আপনার অন্য মুখটাই তখন টিটকারি মেরে হাসছে! It’s horrible!
.
এখানে একটা কথা হলো যে,এডওয়ার্ডের সেকেন্ড ফেস মানে পেছনের মুখটা অনেকটাই তার কন্ট্রোলের বাইরে ছিলো,শুধুমাত্র চোখ দুটো ছাড়া!
.
এডওয়ার্ড বলতো যে,মাথার পেছনের চোখ দুটো দিয়ে সে পেছনের প্রায় সবকিছুই দেখতে পেতো; এই যেমন ধরুন,আপনার পেছনে হয়তো কেউ দাঁড়িয়ে আছে,আমি আপনি হয়তো তাকে দেখতে পাবো না,কিন্তু এডওয়ার্ড তার পেছনের চোখদুটো দিয়ে প্রায় সবকিছুই দেখতে পারতো এবং তার পেছনের চোখ দুটোর অপটিক স্নায়ুগুলো ছিলো পুরোপুরি সচল!
.
সবচাইতে মারাত্মক আর ভয়ংকর যে ব্যাপারটা এডওয়ার্ডের সাথে ঘটতো সেটা হলো,এডওয়ার্ড যখন রাতে ঘুমাতো তখন প্রায় সময়ই তার ঘুম ভেঙে যেত, সে শুনতে পেত যে তার রুমে কেউ ফিসফিস করে কথা বলছে। পরে এডওয়ার্ড বুঝতে পারতো যে,তার ওই দ্বিতীয় মুখটাই আসলে ফিসফিস করছে। যদিও এই দ্বিতীয় মুখটার ভয়েস অডিবল ছিলো না। প্রথমদিকে এই ব্যাপারটাতে মারাত্মক রকমের ভয় পেয়ে যেত সে,পরে অবশ্য এই ব্যাপারটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ভয়ংকর এসব অভিজ্ঞতার কারণে এডওয়ার্ড তার সেকেন্ড ফেসটাকে “Devil Twin” বলে অভিশাপ দিত। এডওয়ার্ড ডক্টর গোল্ডকে কাঁদতে কাঁদতে বলতো যে,এসবই তার পূর্বপুরুষদের পাপাচারের ফল, যার পরিণাম তাকে ভোগ করতে হচ্ছে।
.
এসব কারণে এডওয়ার্ডের শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছিলো আর একারণেই ম্যানভার্স আর ট্রেডমিল নামে দুজন ফিজিশিয়ান নিয়োগ করে তার পরিবার। এডওয়ার্ড মাঝে মাঝে ওই দুজন ফিজিশিয়ানকে বলতো,”আপনারা আমার শরীর থেকে ওই শয়তানের মাথাটাকে সরিয়ে দিন,এতে আমি যদি মারাও যাই তবুও আমি শান্তি পাবো। কিন্তু এভাবে আমি আর ওই “ডেমন ফেস”টা নিয়ে বাঁচতে চাই না…”
.
এত সিকিউরড থাকার পরও কোনো একদিন বিষ পান করে সুইসাইড করে এডওয়ার্ড। যেসময় তার বয়স ছিলো মাত্র তেইশ বছর! এটা খুবই অনুমেয় যে,এই সেকেন্ড ফেসটাই এডওয়ার্ডের মৃত্যুর জন্য দায়ী,যেকারণে তার মেন্টাল হেলথের উপর মারাত্মক চাপ পড়েছিল। আর মূলত এর ফলেই সুইসাইড করতে বাধ্য হয় এডওয়ার্ড। মৃত্যুর আগে এডওয়ার্ড একটা সুইসাইড নোট লিখে যায়,যেটাতে লিখা ছিলো,
“Please,destroy the ‘demon face’ before my burial,lest it continues it’s dreadful whispering in my grave”
.
এবার এই সেকেন্ড ফেসটার মেডিক্যাল টার্মে আসি। মেডিকেলের ভাষায় এই জেনেটিক ডিসঅর্ডারটাকে বলা হয় “Diprosopus”…. এই ডিপ্রোসোপাস শব্দটা একটা গ্রীক শব্দ যেটা কিনা ল্যাটিন ভাষা থেকে উদ্ভুত। এর অর্থ হলো “দুই মুখওয়ালা মানুষ” বা “Two-faced man”। অনেকসময় এই জেনেটিক ডিসঅর্ডারটাকে “Craniofacial duplication” ও বলা হয়ে থাকে। এই ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশন খুবই রেয়ার একটা কনজেনিটাল ডিসঅর্ডার যা দ্বারা আপনার পুরো মুখ কিংবা মুখমণ্ডলের অংশবিশেষের প্রতিলিপি তৈরি হয়। অনেকেই আবার এই ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশনকে “পলিসেফালি”র সাথে গুলিয়ে ফেলে। যদিও দুটো ডিসঅর্ডার একে-অন্যের থেকে পুরোপুরিই আলাদা। “পলিসেফালি” মানে হলো দুটো ভিন্ন ভিন্ন মাথা নিয়ে জন্মানো। আর ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশনের কথা তো বললামই!
.
তো,কথা হলো,এই ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশন কি কারণে হয়ে থাকে?
– অনেকেই বলে থাকেন যে,এই অস্বাভাবিকতা দুটো ভ্রূণের মিলন বা অসম্পূর্ণ পৃথকীকরণের কারণে হয়। আসলে এটা পুরোপুরিই ভুল ব্যাখ্যা। এই ডিসঅর্ডারটা হয় মূলত SHH(Sonic Hedgehog) প্রোটিনের অস্বাভাবিক আচরণের কারণে। গবেষণায় দেখা গেছে যে,ভ্রূণের ক্রমবিকাশের সময় এই SHH প্রোটিন এবং তার অনুরূপ জিনগুলো ক্রেনিওফেসিয়াল প্যাটার্নিংয়ে সংকেত প্রদান করে।
.
কিভাবে হয় এই ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশন?
– মূলত এই SHH প্রোটিন আমাদের মুখের অাকৃতি সম্প্রসারণে এবং গাঠনিক প্রতিলিপি তৈরিতে কাজ করে থাকে। আর,এই SHH প্রোটিন যখনই অস্বাভাবিক আচরণ করে ঠিক তখনই শুরু হয় বিশৃংখলা। ব্যাপারটা কিভাবে ঘটে জানেন?
আপনার মুখমন্ডল যতই সম্প্রসারিত হতে থাকে ততই আরো কিছু প্রতিলিপি তৈরি হতে থাকে অনেকটা আয়নার প্রতিবিম্বের মতো। আর,এই SHH প্রোটিন অস্বাভাবিক আচরণ করলেই ব্যাপারটা কন্ট্রোলের বাইরে চলে আর ঠিক তখনই জেনেটিক ডিসঅর্ডার দেখা যায়!
.
এই সেকেন্ড ফেসের ব্যাপারটাতে এডওয়ার্ড মর্ড্রেক-কেই একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়,যার দুটো মুখই প্রায় সমানভাবে নিজেদের এক্সপ্রেস করতে পারতো। আই মিন, হাসি,কান্না,রাগ অভিমান এসব এক্সপ্রেশন গুলো শুধুমাত্র এডওয়ার্ডের মধ্যেই দেখা গেছিলো। যদিও এই ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশন ডিসঅর্ডার আরো অনেকের মধ্যেই দেখা গেছে। কিন্তু তাদের কারোরই এই সেকেন্ড ফেসটা ঠিক ততটা কার্যকরী ছিলো না,যতটা না এডওয়ার্ডের ছিলো।
.
এডওয়ার্ডের সমসাময়িক আরো একজন মানুষের মধ্যে craniopagus parasiticus( কনজেনিটাল ডিসঅর্ডারের আরেক রূপ) দেখা গিয়েছিলো; মেক্সিকোর প্যাসকুয়েল পিনোন(১৮৮৯-১৯২৯)। তার ক্ষেত্রে সেকেন্ড ফেসটা ছিলো মূলত মাথার উপরের দিকে… একারণেই পিনোনকে ডাকা হতো “Two-headed Man” নামে।
.
দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো,ডিপ্রোসোপাস বা সিডি(Craniofacial Duplication) নিয়ে জন্মানো বেশিরভাগ শিশুই খুব বেশিদিন বাঁচে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভ্রূণ অবস্থায় মৃত্যু হয় তাদের। এ ব্যাপারে ভালো উদাহরণ হতে পারে, ২০০৮ সালে ভারতের দিল্লীর সোহানপুরে জন্ম নেওয়া চার চোখ,দুই নাক আর দুই মুখওয়ালা শিশু লালী সিং।জন্মের মাত্র দুই মাসের মাথায় মারা লালি…. একইভাবে ২০১৪ সালের ৮ই মে জন্ম নেয় ফেইথ এন্ড হোপ হাওয়ি। এদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়েছিলো ব্রেনে। আর একারণেই একই দেহে জন্মাবার পরও তারা একেবারে দুটো ভিন্ন মানুষের মতো আচরণ করতো। অবশ্য দুর্ভাগ্যজনকভাবে জন্মের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় ফেইথ ও হোপ হাওয়ি মারা যায়….
.
তবে,এই ডিপ্রোসোপাস বা ক্রেনিওফেসিয়াল ডুপ্লিকেশন যে শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই হয়,তা না। অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটা লক্ষ্য করা যায়। তবে,খুব কম ক্ষেত্রেই তারা সার্ভাইভ করতে পারে।
“জেনাস ক্যাটস” ছিলো এরকমই একটা বিড়াল,যদিও তার মধ্যে ব্যতিক্রম দেখা গেছিলো। ডিপ্রোসোপাস ডিসঅর্ডার নিয়েও প্রায় ১২ বছর বেঁচে থেকে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিলো “ফ্র্যাংক এন্ড লোয়ি” নামের এই জেনাস ক্যাট….
.
তো,ডিপ্রোসোপাসের এই ব্যাপারটার কারণেই অনেকে ভাবে যে,যেখানে এই ডিসঅর্ডার নিয়ে জন্মানো মানুষ বা অন্যান্য প্রাণীর সার্ভাইভাল রেট একেবারেই শূন্যের কোটায় সেখানে এডওয়ার্ড মর্ড্রেক কিভাবে এতদিন বেঁচে ছিলো! ব্যাপারটা নিয়ে আজও পর্যন্ত ডিবেট রয়ে যায়। তবে,এডওয়ার্ড যদি এই ডিপ্রোসোপাস নিয়ে ২৩ বছর বেঁচেও থাকে,তবে সেটা হবে সম্পূর্ণই মিরাকল! কেননা এডওয়ার্ডের এতগুলো বছর বেঁচে থাকার পেছনে আসলে রহস্য কি সেটা এখনো পর্যন্ত গবেষকরা সমাধান করে উঠতে পারেননি!
….
পুরো টপিকটার মোরাল কি জানেন?
– “সৃষ্টিকর্তা আসলেই আমাদের অনেক বেশি ভালো অবস্থায় রেখেছেন,এ ব্যাপারটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই!”
তাই হিন্দু-মুসলিম সবার জন্যই কমন হিসেবে ইশ্বর বলা হয়েছে
আর পেমেন্ট যোগ্য হলে অবশ্যই পাবেন, যদিও তা অথোরিটির ব্যাপার।
আর আমি ট্রিকবিডি হতে টাকা আর্ন ডিসার্ভ করি না; বরং প্রয়োজনে ডোনেট করতে রাজী যাতে প্লাটফর্ম’টি আরও বিকশিত হয়।
আর পেমেন্ট আমি সবার মাঝেই রিচার্জ আকারে দিয়ে দিয়েছি
রানা ভাই আমর রিলেটিভ নয়; আমরা মুসলিম সবাই ভাই-ভাই
আমি ট্রিকবিডিতে লগিন করিনা বললেই চলে।
কিন্তু আজ লগিন না করে পারলাম না।
বিশেষ করে আপনার ৫৪(নাম্বার) পর্ব দেখে তো আমি বিমুগ্ধ।
আমার মনে হয় ট্রিকবিডি কেন পুরো পৃথিবীর ব্লগ এবং ফোরাম সাইটে হারিকেন নিয়া খুজলেও আপনার মতো এমন উদার মানুষ পাওয়া যাবেনা।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যাবাদ আশা করি এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন।
দোয়া করি অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যান।
আর হ্যাঁ আমার জন্যাও দোয়া করবেন।
আমার মনে হয়না আমি জিবনে এত বড় কমেন্ট করেছি।
সেল্যুট ইউ বস।
নিয়নবাতি জ্বলবে আজিবন।
কীন্তু অামি এখোনো ট্রানজিস্টর এর কাজ ও ব্যাবহারই জানি না।
ভাই দয়া করে যদি অাপনার হাতের সহজ ভাষাই বাস্তব উদাহরণসহ বুঝাই দিতেন।
pls pls pls ভাইয়া……