আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র মাইক্রোওয়েভ ওভেনের উৎপত্তির কাহিনী। চলুন শুরু করি।
ড. পার্সি স্পেন্সার ছোটবেলা থেকেই খুব কৌতূহলী ছিলেন। মাত্র আঠারো বছর বয়সেই তিনি আমেরিকান নৌবাহিনীতে যোগ দেন। সেসময় রাডার ব্যবহারে ড. পার্সি বেশ দক্ষ হয়ে উঠেন। ১৯৩৯ সাল নাগাদ তিনি হয়ে উঠেন রাডার বিষয়ে পৃথিবীর অন্যতম এক্সপার্ট। পার্সি তখন কাজ করতেন “রেইথিওন” নামের এক কোম্পানিতে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ভাগ্যক্রমে এই কোম্পানিটি ছিল আমেরিকান প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্যতম সহযোগী। তারা রাডার ব্যবহার করে শত্রুদের অবস্থান নির্ণয় করার জন্য গবেষণা শুরু করে। বিশ্ববিখ্যাত ম্যানহাটন প্রজেক্টের পর এই রাডার প্রজেক্ট ছিলো আমেরিকার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ মিলিটারি গবেষণা।
পার্সি সেই কোম্পানিতে কাজ করতেন ক্ষুদ্রতরঙ্গ উৎপাদনকারী রাডার নিয়ে, যা ব্যবহার করে দূরের কোনো বস্তুর অবস্থান বোঝা যাবে। ১৯৪৫ সালের দিকে তিনি নিজের কোম্পানির ল্যাবে কাজ করছিলেন। হঠাৎ অসাবধানতাবশত বেশ কয়েকবার তিনি হেঁটে যান কতগুলো রাডারের সামনে দিয়ে। তিনি এই ভুল বারবার করতে থাকেন। হঠাৎ, পকেটে রাখা চকলেটের বারের দিকে হাত বাড়ালেই তার আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায়! তিনি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলেন, চকলেট বারটি একেবারে গলে তরল হয়ে গেছে!
সাধারণ মানুষ হলে হয়তো ব্যাপারটা নিয়ে এত মাথা ঘামাতো না। কিন্তু, ড. স্পেন্সার ছিলেন অসাধারণ পর্যবক্ষেণ শক্তির অধিকারী। তিনি এই চকলেট গলে যাওয়ার রহস্য উদঘাটনে লেগে গেলেন! ধারণা করলেন, এতে হয়তো রেডিও তরঙ্গের ভূমিকা আছে। তাই তিনি এক বস্তা ভুট্টার মধ্য দিয়ে চালিয়ে দিলেন সেই রাডার তরঙ্গ। ফটফট করে তৈরি হতে লাগলো পপকর্ণ! তার পরেরটা ইতিহাস।
আগেকার দিনের ওভেন গুলো ছিলো ফ্রিজের মতো বড়। মাইক্রোওয়েভ ওভেন হচ্ছে ঐ ড. পার্সির ভুলের ফসল!
5 thoughts on "মাইক্রোওয়েভ ওভেনের উৎপত্তির কাহিনী, দুর্ঘটনা থেকে দারুণ কিছু!"