আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
ফেসবুকে হা হা রিএ্যাক্ট দেওয়া বন্ধ করুন
এক ভাই প্রশ্ন ছিল কাউকে নিয়ে ঠাট্রা বা হাসাহাসি করা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে….?আলহামদুলিল্লাহ, প্রিয় ভাই আপনি অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন। আজকাল দেখা যায়, সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশেষ করে ফেসবুকে এটির ব্যবহার অনেক বেশি দেখা যায়। ধরুন কেউ একটি কমেন্ট করেছেন, কেউ একটি পোস্ট করেছেন, তাকে তাচ্ছিল্য করবার জন্য আমরা হা হা রিএ্যাক্ট দিয়ে থাকি।
তারমানে বিদ্রুপ করে থাকি, যদি রসিকতা করে মজা করে আমরা এরকম কোন রিয়াক্ট করে থাকি, যার সঙ্গে করছি, যার পোষ্টে মন্তব্যে হাহা রিয়েক্ট দিয়েছি। জাস্ট আনন্দের জন্য মজা করার জন্য, এবং তিনি নিজেও এটা নিয়ে মজা করেছেন, এ টাকে মজার ছলে নিয়েছেন তাহলে তো সেটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু তাকে তাচ্ছিল্য করার জন্য বিদ্রুপাত্মক ভাবে এটি করি, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে এটা হারাম কাজ এবং সম্পূর্ণ নাজায়েজ একটি কাজ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, পবিত্র কোরআনুল কারিমে সূরা হুজরাতে অতন্ত্য স্পষ্ট ভাষায় বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন অন্য কাউকে নিয়ে বিদ্রুপ না করে ঠাট্টা না করে।( সূরা হুজুরাত আয়াত ১১)
হযরত আবু বকর (রাঃ) অসুস্থ হলে একটি কবিতা পড়তেন, যার ভাবার্থ এই, প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজ পরিবারে সুপ্রভাত বলা হয়, অথচ মৃত্যু তার জুতার ফিতার চাইতেও অতি নিকটে। মানুষ যেকোন সময় আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে হতে পারে। কেউ জানে না কখন, কোথায় কিভাবে আল্লাহ তাকে তলব করবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন →কেউ জানে না, আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে, আর কেউ জানে না, কোন স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সম্যক। (সূরা লুকমান আয়াত ৩৪)
এ কারণে কারো কথা নিয়ে, কারও কাজ নিয়ে বা কারও অসুস্থতা ও মৃত্যু নিয়ে ট্রল করা বা বিদ্রপ করতে নেই। সে ব্যক্তি কাফের হলেও না। একদিন আমাদের রাসুল (সাঃ) এর পাশ দিয়ে একটি জানাজা যাচ্ছিল অর্থাৎ লাশ যাচ্ছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। এসময় একজন বলছিল জানাজাটি একজন ইহুদির। নবী করীম (সাঃ) তাকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন সে কি মানুষ নয়। (বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ১৩১২)
দেখুন মহানবী (সাঃ) একজন অমুসলিমের মৃত্যুতেও কিভাবে সহমর্মিতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আর আমরা এখন অনেকেই নোংরা মন-মানসিকতার কারণে নোংরা রাজনীতি করতে গিয়ে হিংসার বশীভূত হয় অপর মুসলমানকে নিয়ে কুৎসা রটনা করছি প্রতিনিয়ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেন→ তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারণা থেকে বিরত থাকো। কেননা কারো প্রতি খারাপ ধারণা করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ করোনা, গোয়েন্দাগিরি করোনা, পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করো না, এবং পরস্পর বিরোধী লিপ্ত হয়োনা। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থাকো। (সহিহ বুখারি হাদিস নাম্বার ৬০৬৪)
মুসলমানদের ইজ্জত এবং সম্মান লুণ্ঠন করাকে নষ্ট করাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। নবী করীম (সাঃ) বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন, যে এই জায়গা এই মাস এই সময়টা যেরকম আল্লাহর কাছে সম্মানিত, তেমনি ভাবে একজন মানুষের ইজ্জতও এরকম আল্লাহর কাছে সম্মানিত। কাউকে কোনভাবেই তাচ্ছিল্য বা বিদ্রুপ করা যাবে না।
আজকাল ফেসবুকে হাহা রিয়েক্ট দেওয়াটা একটা নরমাল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখেন। যারা আখেরাতে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে এটি বিশ্বাস রাখেন। যারা বান্দার ছোট-বড় প্রত্যেকটা বিষয়ই জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এটি বিশ্বাস রাখেন তারা কখনোই বিদ্রূপাত্মক ভাবে কোন পোষ্টে বা কোন কমেন্টে হাহা রিয়েক্ট দিতে পারেন না।
অথচ আমরা কিন্তু এটাকে দোষোণীয় মনে করি না। বরং এটাকে অনেকে মনে করেন, যে এটা আমাদের ফেসবুকীয় বৈধ কর্মকান্ডের মধ্য থেকে একটা কাজ বা একটা রুটিন ওয়ার্ক। প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আপনাদের প্রতি আমার একান্ত অনুরোধ দয়া করে এই কাজটি থেকে বেরিয়ে আসুন। কাউকে নিয়ে বিদ্রুপ করে কোনভাবে হাহা রিয়েক্ট দিবেন না।
একজন ঈমানদারকে আপনি কষ্ট দিলেন।তিনি হয়তো এমন কিছু বললেন, যেটি হয়তো আপনার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়, তখন সম্ভব হলে সুন্দর ভাষায়, মার্জিত ভাষায় যুক্তিনির্ভর ভাবে আপনি গঠনমূলকভাবে আপনি তার বক্তব্য খন্ডন করুন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। আর সেটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে আপনি এড়িয়ে যান। কিন্তু তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করে তাকে হাসির পাত্র বানিয়ে আপনি নিজে গুনাহগার হচ্ছেন।
তিনি হয়তো একটু ভুল করেছেন, একটি ত্রুটি করেছেন আপনি কিন্তু তার চাইতেও আরেকটি ত্রুটি করলেন, আরেকটি বড় ভুল করলেন। যদি বেশি ভয়ানক হতে পারে। বান্দার হক নষ্ট করার মতো বিষয় হতে পারে, বান্দার হক নষ্ট করলে কিয়ামতের দিন আপনার আমলনামা থাকে কিন্তু সাওয়াব কেটে নেওয়া হবে। অতএব ফেসবুকে হা হা রিয়েক্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ কাউকে নিয়ে হাসাহাসি তামাশা বিদ্রুপ করা এটি ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম কাজ। কোন অবস্থাতেই কাউকে নিয়ে হাসাহাসি করা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা ইসলামের দৃষ্টিতে কোনোভাবেই জায়েজ নয়।
আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা আমাদেরকে সব ধরনের হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আর আল্লাহ তায়ালা কখনো মাফ করবেন না, আপনি যদি কোন বান্দার হক নষ্ট করেন। তাই এই কাজটিকে এই অপরাধীকে ছোট পাপ হিসেবে দেখলে হবে না। এটি আল্লাহর নিকট অনেক বড় পাপের সমান। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা সকল ধরনের পাপ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন আমীন।
Trickbd তে অনেকেই পোস্ট কতে চান কিন্তু করতে পারছেন না। আপনারা Ictbn.Com ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে পারেন।এখানে একাউন্ট করলেই author।এখানে প্রতি পোস্টের জন্য ৫-৫০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।পোস্টের মানের উপর ভিত্তি করে। ICTBN.Com
আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি
12 thoughts on "ফেসবুকে হা হা রিএ্যাক্ট দেওয়া বন্ধ করুন। আপনার অজান্তে ফেসবুকে হা হা রিএ্যাক্ট দিয়ে জাহান্নামি হচ্ছেন।"