ইউটিউব বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের নিজেদের কনটেন্ট তৈরি করে, ইউটিউব এর মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার তৈরি করেছে।
কোন টাকা খরচ না করে ইউটিউব হলো একমাত্র মাধ্যম, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ক্যারিয়ারকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবেন। সে জন্য দরকার একটি সঠিক দিকনির্দেশনা। আজকের পোস্টে আমরা জানবো কিছু ইউটিউব চ্যানেল আইডিয়া সম্পর্কে, যেগুলো কম সময়ে অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়। তাহলে চলুন জেনে নিই…
• আপনার দৈনন্দিন জীবনের মুহূর্ত নিয়ে ভিডিও:
আপনি চাইলে আপনার দৈনন্দিন জীবনে কি কি কাজ করেন, কোথায় কোথায় যান, এসব ভিডিও করে ইউটিউবে ছাড়তে পারেন। ইউটিউবে এসব ভিডিওগুলো দে অনেক পরিমানে ভিউ পাওয়া যায়।
আপনি আপনার নিজের মোবাইল দিয়েও এসব ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এসব ভিডিও তে বেশি এডিট করা লাগেনা। আপনার মোবাইল দিয়েও এডিট করতে পারবেন।
• পণ্য আনবক্সিং ভিডিও:
ইউটিউব এ প্রডাক্ট আনবক্সিং এর ভিডিও গুলো ও অনেক ভিউ পায়। এর কারণ হচ্ছে মানুষ যদি একটি পণ্য কিনতে চায়, তাহলে সেটার ভালো দিক ও খারাপ দিক গুলো জানতে ইউটিউবে সার্চ করে।
আপনি চাইলে এই ধরনের ভিডিও তৈরী করতে পারেন। তবে প্রডাক্ট আনবক্সিং এর ভিডিও তৈরি করতে হলে হয়তো আপনাকে প্রথমে ওই প্রোডাক্টগুলো কিনে নিতে হবে, অথবা আপনার কোন পরিচিত দোকান থেকে নিতে হবে। পরবর্তীতে আপনি ভালো পরিমাণে স্পনসর্শিপ পেয়ে যাবেন।
• প্রডাক্ট রিভিউ:
প্রডাক্ট রিভিউ হলো প্রোডাক্ট আনবক্সিং এর মতই, তবে এখানে আপনি চাইলে ভিডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন এ্যানিমেশন যুক্ত করে প্রোডাক্টের রিভিউ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার কোন প্রোডাক্ট এর প্রয়োজন হচ্ছে না।
তবে প্রোডাক্ট যদি আপনার হাতে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি আনবক্সিং এবং রিভিউ দুইটা একসাথে করতে পারবেন।
• গেমিং ভিডিও:
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর মধ্যে গেমিং চ্যানেল গুলো একটি। আপনি যদি গেম খেলতে ভালো পারেন, সেক্ষেত্রে আপনি গেম খেলার সময় সেটা ভিডিও করে আপনার ইউটিউবে ছাড়তে পারেন। গেমিং ভিডিওগুলো মনিটাইজেশন করে আপনি ভালো পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন।
এছাড়া গেমিং চ্যানেল গুলোতে অনেক ভালো ভালো স্পনসর্শিপ পাওয়া যায়। এছাড়া আপনি সুপার্চাট ব্যবহার করেও ভালো আয় করতে পারবেন।
• টিউটোরিয়াল চ্যানেল:
টিউটোরিয়াল চ্যানেল ইউটিউবে অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। টিউটরিয়াল ভিডিও গুলোতে ভালো পরিমাণে ভিউ পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
আপনি বিভিন্ন ধরনের টিউটোরিয়াল তৈরি করতে পারেন। যেমন: টেকনোলজির টিউটিরিয়াল, অ্যাপ্লিকেশন টিউটরিয়াল, শিক্ষামূলক টিউটোরিয়াল ইত্যাদি। এসব ভিডিও তে কিন্তু আপনি স্পনসর্শিপ পেয়ে যাবেন।
• বিনোদনমূলক চ্যানেল:
বিনোদনমূলক চ্যানেলগুলো ইউটিউবে সব সময় এগিয়ে থাকে। বিশ্বের যত বড় বড় ইউটিউব চ্যানেল গুলো রয়েছে সবগুলোই বিনোদনমূলক ক্যাটাগরিতে তৈরি। বিনোদনমূলক চ্যানেলগুলোতে আপনি বিভিন্ন ধরনের ফানি ভিডিও, নাটক, প্রাঙ্ক ইত্যাদি ভিডিও করে ছাড়তে পারেন। এছাড়া সবচেয়ে বেশি স্পনসর্শিপ পাওয়া যায় বিনোদনমূলক চ্যানেলগুলোতে।
তবে বিনোদনমূলক চ্যানেলগুলোতে প্রথম অবস্থায় কিছু খরচ হতে পারে। এছাড়া এই ধরনের চ্যানেল চালাতে গেলে আপনার অবশ্যই একটি ভাল মানের ক্যামেরা লাগবে। আপনি মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে পারেন, তবে মোবাইলের ক্যামেরা অবশ্যই ভালো হতে হবে।
• ফুড রিলেটেড ভিডিও:
আপনি বিভিন্ন ধরনের খাদ্য তৈরি বা রান্না করার সময় সেগুলোর ভিডিও করে ইউটিউবে ছাড়তে পারেন। বর্তমানে এই ধরনের চ্যানেলগুলো অনেক ভিউ পাচ্ছে। এই ধরনের চ্যানেলে ভালো স্পনসর্শিপ পাওয়া যায়।
• স্বাস্থ্য বিষয়ক চ্যানেল:
ইউটিউবে স্বাস্থ্যবিষয়ক চ্যানেলগুলোর রেংকিং অনেক ভালো। কারণ বর্তমানে মানুষ তার স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। আপনি যদি স্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে ভালো জানেন, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
এবিডি গুলো আপনি আপনার নিজের মোবাইল দিয়েও তৈরি করতে পারেন।
• মোটিভেশনাল ভিডিও:
আপনি যদি কাউকে মোটিভেট করতে পারেন বা ভাল উপদেশ দিতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনি সেগুলোর ভিডিও করে ইউটিউবে ছাড়তে পারেন।
• শিক্ষামূলক চ্যানেল:
শিক্ষা বিষয়ক টিউটোরিয়াল এবং গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও তৈরি করে আপনি ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়তে পারেন। এবং সেগুলো মনিটাইজেশন করে আয় করতে পারেন।
• বিউটি এবং মেকআপ এর ভিডিও:
আপনার চ্যানেলটি যদি মানসম্মত হয়, সেক্ষেত্রে আপনি এই ক্যাটাগরিতে ভালোই স্পনসর্শিপ ও পাবেন। তবে এই চ্যানেলটিতে প্রথম অবস্থায় আপনার খরচ হতে পারে।
আপনারা যদি উপরের এসব ক্যাটাগরি নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেন, সেক্ষেত্রে আশাকরি আপনার ইউটিউবে ভালো কিছু করতে পারবেন। অবশ্যই কনটেন্টগুলো মানসম্মত হতে হবে।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
3 thoughts on "কোন টপিক নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন? লাভজনক কিছু ইউটিউব চ্যানেল টপিক আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নিন"