আমাদের এই প্রকৃতির সব উপাদান আমাদের কোনো না কোনো প্রয়োজনে লাগে। প্রাকৃতির জিনিস কখনো কোনো মানুষ বা প্রাণীর ক্ষতি সাধন করে না। ঠিক তেমনই খালি পায়ে মাটিতে হাঁটারও অনেক ভালো ভালো দিক রয়েছে।

আপনি যদি সকাল বেলা খালি পায়ে মাটিতে হাঁটেন। তাহলে আপনার শারীর ও মনের অনেক উন্নতি সাধন হবে।

খালি পায়ে মাটিতে হাঁটাকে বলা হয় Grounding বা Earthing. সবুজ ঘাস ই নয়, পানি অথবা বালিতে হাঁটলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।

সকাল বেলা খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করে হাঁটলে আমাদের দেহ মাটি থেকে নেগেটিভ ইলেকট্রন শোষণ করে যা দেহের ফ্রি রেডিকেলস গুলোকে ধ্বংস করে দেয়। এইসব ফ্রি রেডিকেলস আমাদের দেহের টিস্যু ও কোষ গুলোকে ধ্বংস করে ফেলে।

আবার অনেক সময় ঘুমানোর ব্যাতিক্রম হলে শরীরের পেছন দিকে ব্যাথা হয়ে থাকে বা পায়ে জ্বালা পোড়া ভাব দেখা দেয়। সকাল বেলা সবুজ ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটার ফলে উপযুক্ত রক্তসঞ্চালনের মাধ্যমে এই ব্যাথার উপশম হয়।

মাটিতে খালি পায়ে হাঁটলে। আমাদের রক্তের শ্বেত কণিকার পরিমান কমিয়ে তা লোহিত কণিকার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হত । তাছাও কোষের রক্ত জমাট বাধা প্রতিহত হয় যা রক্তের ঘনত্ব কমাই । যেহেতু রক্তের উচ্চ ঘনত্ব সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকির সাথে জড়িত। তাই খালি পায়ে মাটিতে হাঁটা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে সক্ষম।

আমরা মানুষসহ সব প্রাণী একটি জৈবিক প্রক্রিয়ার ঘড়িকে অনুসরণ করে চলি। একে সার্কাডিয়ান ক্লক বলা হয়। খালি পায়ে হাটার ফলে তা ঘুমের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যার ফলে তা জৈবিক ঘড়িকে আবার নতুন উদ্যমে___ চালু করতে সাহায্য করে। পরিবেশ দূষণ, আলো, বাতাস, ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ আমাদের ঘুমের প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি করে থাকে । তাই আমরা যদি মাটির সংস্পর্শে আসি তাহলে এর নেগেটিভ ইলেকট্রন সার্কাডিয়ান ক্লকের তাল এবং অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়াকে সাহায্য করতে পারে।

বাইরে থেকে ঘুরে আসলে তা স্বাভাবিক ভাবেই মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে যার ফলে আমাদের মন ভাল হয়ে যায়। তখম যদি এই সময় শরীরকে সরাসরি মাটির কাছাকাছি আনা যায়। তাহলে অনেকটা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমে আসে। মাটি সবসময় একটি নেগেটিভ চার্জ বহন করে থাকে। চারদিকে সব তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের কারনে আমাদের শরীর সবসময় পজিটিভ চার্জ বহন করছে। তাই শরীরকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বেশি সময় ধরে মাটির সংস্পর্শে থাকা উত্তম।

সাধারণত মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা বিভিন্ন ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাবে বাড়তে পারে। তাই যদি আমরা তখন খালি পায়ে মাটিতে হাটি তখন দেহকে ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব থেকে অনেকটা মুক্ত রাখতে পারবো আর এভাবেই মাইগ্রেইনের মাথা ব্যথা দূর করা যেতে পারে।

প্রতিদিন সকালে খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটলে পায়ের তলায় থাকা একাধিক প্রেশার পয়েন্টে চাপ পড়ে। এসব প্রেশার পয়েন্টে চোখের সাথে সরাসরি যোগসূত্র করে। ফলে পায়ের তলায় যত চাপ পড়ে ,ততে আসতে আসতে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে শুরু করে।

তবে দুঃখের বিষয় যে, শহর অঞ্চলে মাটি তেমন পাওয়া যায় না। তবে, প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট খালি পায়ে ধীরে ধীরে হাঁটার অভ্যাস করুন। যদি বাইরে খালি পায়ে হাঁটার সুযোগ না থাকে তবে ঘরেই খালি পায়ে হাঁটলেও বিভিন্ন শারীরিক উপকার পাবেন।

কোথাও কোনো ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

আমার জন্য দোয়া করবেন

আল্লাহ হাফেজ।

One thought on "খালি পায়ে মাটিতে হাঁটলে কী কোনো উপকার আছে?"

Leave a Reply