Site icon Trickbd.com

এই ৫টি magisk module দিয়ে Rooted device customization নিয়ে যান অন্য মাত্রায়!

Magisk কি?

Magisk হল রুট করার একটি টুল যা John Wu নামক ডেভেলপারের ছোট একটি প্রজেক্ট থেকে সৃষ্ট। SuperSU এর পরে ম্যাজিস্ক বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম কারন সিস্টেমলেস ও মডিউলার অ্যাপ্রোচ।
সিস্টেমলেস মানে এটি অ্যান্ড্রয়েডের গুরুত্বপূর্ণ কোর ফাইল টাচ না করেই ডিভাইস রুট করতে পারে, যা অনেক বড় একটি সুবিধা।
কারন রুট করতে মানুষের অন্যতম ভয় ছিল যদি ডিভাইস ব্রিক করে। ম্যাজিস্ক যেহেতু আলাদা একটি লেয়ারে ইনস্টল হয়, তাই ব্রিক হওয়ার ভয় থাকে না
যদিও কিছু বেসিক ফিচার ম্যাজিস্কে অলরেডি দেয়া আছে, মডিউলার হওয়ায় এখানে সহজেই প্রয়োজনভেদে অনেক ফিচার আলাদা অ্যাড করা যায়।
ম্যাজিস্কের জনপ্রিয়তা পাওয়ার পেছনে মডিউল ভালো রকমের প্রভাব ফেলেছে।

Magisk Module কি?

Magisk Module হল নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি ক্ষুদ্র, লাইটওয়েট, ও কার্যকরী টুলস, বা অ্যাপস। কিছু মডিউল রিকভারী থেকে ফ্ল্যাশ করা গেলেও এগুলো মেইনলি ম্যাজিস্কের উপর নির্ভরশীল, তাই ম্যাজিস্ক থেকেই ফ্ল্যাশ করতে হয়।
সিস্টেমে বিভিন্ন মডিফিকেশন ও এক্সট্রা ফিচার যুক্ত করতে ম্যাজিস্ক মডিউলের তুলনা নেই।
কোনো সিস্টেম ফাইলে হাত দেয়ার দরকার নেই, ফোন ব্রিক করার ভয় নেই। জাস্ট কাঙ্খিত মডিউলটি বের করুন, ম্যাজিস্ক থেকে ফ্ল্যাশ করুন, ডিভাইস রিবুট করুন, আর এনজয় করুন।
আবার ওপেন সোর্স মডেলের কারনে যে কেউই চাইলে নিজের দরকার মত মডিউল বানিয়ে নিতে পারে। একই কারনে অনেক আজেবাজে মডিউলের প্রাদুর্ভাবও কম নয়।
তাই আগে অ্যাপের ভেতরই মডিউল পাওয়া গেলেও মডারেশনের ঝামেলায় মেইন ডেভেলপার রিপোজিটরি বন্ধ করে দেন।
কিন্তু রুট প্রেমীরা অবশ্যই প্রয়োজনমতো মডিউল খুঁজে নিচ্ছে রুটের ষোলকলা পূর্ণ করতে।
তারই ধারাবাহিকতায় আজ গভীর ওয়েব ঘেঁটে গোপন কুঠুরী থেকে দুঃসাধ্য অভিযানের বদৌলতে আপনাদের জন্য হাজির করলাম ৫টি চমকপ্রদ magisk module for deep customization.
আজকের মডিউলে অ্যান্ড্রয়েডকে মনমতো কাস্টমাইজ করে উৎকৃষ্ট লুক দেয়ার পেছনে ফোকাস থাকবে।
নোটঃ যদিও আমি এখানে ৫টা মডিউল দেখাচ্ছি, এর কোনোটাই আমি নিজে ব্যবহার করিনি। তবে এমন মডিউলই দিয়েছি যা ব্যক্তিগতভাবে আমার ভালো লেগেছে ও অদূর ভবিষ্যতে আমি নিজেও ইউজ করবো।
সব কাজ নিজ দায়িত্বে, নিজ পয়সায় ও নিজ গবেষনায় করবেন!
হাই অ্যান্ড্রয়েড ভার্শন ও AOSP based rom হলে বেটার হয়। আর সব মডিউলের লিংক হেডিংয়ে যুক্ত থাকবে।

অ্যান্ড্রয়েডকে সূক্ষ্মভাবে কাস্টমাইজ করতে ৫টি সরেস magisk module

1. iOS Emoji

ইমোজি হল একপ্রকার ক্ষুদ্র রূপক যা ডিজিটাল মাধ্যমে মনের অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য লেখার পাশাপাশি ব্যবহার হয়।
অ্যাপল, গুগল, স্যামসাং, হুয়াই সবার নিজস্ব স্টাইলের ইমোজি সেট আছে। পছন্দ-অপছন্দ ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু ডিফল্ট ইমোজি যদি ভালো না লাগে, আর আপেল খাওয়ারও সাধ্যি না থাকে, তো ফ্ল্যাশ মেরে দিন iOS emoji for magisk.
‎‎
এই মডিউল ফোনের স্টক ইমোজি সরিয়ে iOS emoji বসিয়ে দিবে।
ডেভেলপার অলস হওয়ায় Whatsapp এর সাপোর্ট এখনো অ্যাড করেনি। ওটা ব্যতীত সব অ্যাপসই চলার কথা। স্যামসাংয়ের যেহেতু আলাদা ইমোজি, তাই ওসব ফোনের জন্য আলাদা মডিউল ফ্ল্যাশ করতে হবে।

একনজরে iOS emoji module এর হাইলাইটস –

2. Rboard Theme Manager

গুগলে যদি Best android keyboard সার্চ দেন, রেজাল্টের প্রায় সব আর্টিকেলেই Gboard থাকে প্রথম দিকে। বলাই বাহুল্য –
Gboard is the best.
নামেই বর্ণিত, rboard হল জিবোর্ডের জন্য এক্সট্রা কিছু থিম ও ফিচারসমৃদ্ধ ওপেন সোর্স মডিউল। এটি আলাদা কোনো অ্যাপ নয় বরং জিবোর্ডের ফাংশনালিটি বাড়ানোর জন্য বেস্ট একটা টুল।
একনজরে Rboard Theme Manager –
তাই যদি হন জিবোর্ডের ভক্ত, ফ্ল্যাশ করে ফেলুন Rboard অদ্য।

বাগসঃ MIUI ইউজার প্রতিবার কোনো থিম ডাউনলোডের পর ডিভাইস রিবুট দিতে হবে। ColorOS এ কিছু ফিচার অনুপস্থিত কিন্তু কাজ চালানোর মত। ColorOS, Realme ইউজারদের সেটিংস থেকে use magisk অফ করতে হবে। যদি এমন কোনো অ্যাড ব্লকার/ডিএনএস চালান যেটা গিটহাবের ডোমেইন ব্লক করে, তাহলে এই মডিউল কাজ করবে না; যেহেতু গিটহাবেই এর সব রিসোর্স হোস্ট করা।
প্রসঙ্গক্রমে, আমি Yandex Keyboard ইউজ করি, কারন এত রঙচঙা ফিচার আমার দরকার নাই। ইয়ানডেক্স ভালো লেগে গেছে তাই অন্য কিছুতে আর সুইচ করিনি ?

3. Pixelify

আহা পিক্সেল!
গুগলের অফিশিয়াল ডিভাইস, ফাস্ট আপডেট, ক্যামেরার অসাধারন ইঞ্জিনিয়ারিং, আর এখন তো Tensor চিপসেটও গুগলের নিজস্ব ডিজাইন করা। পিক্সেল ফোনের ভক্ত নন এমন পাবলিক খুব কমই আছে এই দুনিয়ায়।
পিক্সেলের একটা প্লাস পয়েন্ট এর সফটওয়্যার। এক কথায়, অ্যান্ড্রয়েডের পরিপূর্ন স্বাদ পাবেন এখানে। গুগল এমন অনেক ফিচার অ্যাড করেছে যা পিক্সেল এক্সক্লুসিভ, মানে এগুলো শুধু পিক্সেল ফোনেই পাবেন।
কিন্তু মামা, পকেটে যদি নয় থাকে টাকা,
কেমনে করি পিক্সেল কেনার ধান্দা?
তা হয়তো আমি বলতে পারবো না। কিন্তু দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর একটা ব্যবস্থা তো করতে পারি। এখানেই আসে Pixelify.
কাস্টম রম ব্যবহারকারীরা Pixel Experience এর নাম শুনে থাকবেন। শুনে থাকবেন আবার কি, আপনাকে শুনতেই হবে। এটা না চিনলে তো আপনার কাস্টম রম চালানোই বৃথা!
পিক্সেল এক্সপেরিয়েন্স হল গুগল পিক্সেলের পিউর সফটওয়্যার এক্সপেরিয়েন্স দেয়ার উদ্দেশ্যে বানানো। কিন্তু সব ডিভাইসের জন্য তো এই রম নেই। তাহলে উপায়?
Pixelify.
এই মডিউল আপনার ডিভাইসকে পিক্সেলের ইন্টারফেসের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। মানে ডিভাইসের লুকস পুরোই পিক্সেলের মত করে দিবে।
গুগলের যে এক্সক্লুসিভ ফিচারের কথা বলছিলাম, বিশেষ করে google photos unlimited backup পাবেন এই মডিউলে।
একনজরে Pixelify এর গুণসমূহ –

একটাই সমস্যাঃ মডিউলটি ইউজ করতে মিনিমাম android 13 হতে হবে।
প্রসঙ্গক্রমে, আমি নিজেও একটি পিক্সেল কেনার লক্ষ্যে আছি (লেখক ততদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকলে হয়তো ফোনের রিভিউও পাবেন)। বাংলাদেশে অবশ্য গুগল অফিশিয়ালি ফোন সেল দেয় না তাই অনেকে পিক্সেল নিয়ে তেমন জানেও না।
কেন অন্য ফোন বাদে পিক্সেল কিনবেন তা নিয়ে আরেকদিন লিখব। আশা করি আপনাকেও পিক্সেলের কাস্টমার বানিয়ে ছাড়তে পারবো ?

4. Iconify

Iconify আরেকটি ওপেন সোর্স ইউজার ইন্টারফেস কাস্টমাইজেশন মডিউল। এটা ইউজ করতেও মিনিমাম android 12 লাগবে।
Magisk, KarnelSU দুই সিস্টেমেই এটি ফ্ল্যাশ করা যাবে। যদিও ম্যাজিস্কই রিকোমেন্ডেড। আর যদিও ওরা বলছে LSPosed না থাকলেও চলবে, কিন্তু ভালো আউটপুটের জন্য ইনস্টল দিবেন।
LSPosed একটি সিস্টেমলেস Xposed Firmware যা স্যান্ডবক্সে চলে। তাই ফোন ব্রিক হওয়ার চান্স নাই। বুটলুপে পড়লেও রিকভারী থেকে ফাইল ডিলিট করলে ফিক্স হয়ে যায়, যেহেতু এটা সিস্টেম ফাইল মডিফাই করে না।
Read more: [LSPosed] Android 8.1-13 এ System less Xposed Firmware ইনস্টল করুন একটি Magisk মডিউল এর মাধ্যমে।

Iconify দিয়ে চেঞ্জ করতে পারবেন না এমন কিছু খুঁজে পেতেই কষ্ট হবে। নোটিফিকেশন বারের ব্যাটারী, ওয়াইফাই আইকন থেকে শুরু করে কুইক সেটিংসের প্রতিটা টাইলস/বাটনের ডিজাইন – প্রচুর অপশন আর ফিচার থাকছে পুরো ডিভাইসের সুরত বদলে দিতে।
একনজরে Iconify ফিচারসমূহ –
এক কাজের জন্য অনেক মডিউল আছে। তাই পিক্সেলিফাইয়ে কাজ না হলে আইকনিফাই ট্রাই করবেন।
আফটার অল, কাস্টমাইজেশনই তো অ্যান্ড্রয়েডে রুট করার অন্যতম প্রধান আকর্ষন!

5. HideNavBar

নাম দিয়েই বলে দিচ্ছে, এটি নেভিগেশন বার হাইড করে। কিন্তু নেভিগেশন বার তো অলরেডি হাইডই থাকে, তাহলে?
বেশ।
যদি ৩ বাটন অপশন দিয়ে রাখেন, সেটা তো সবসময় কিছু জায়গা খায়। Gesture দিলেও কিন্তু মাঝের চিকন চ্যাপ্টা হাইফেনের মত বাটনটা হালকা কিছু জায়গা খেয়ে থাকে। তো ঐ সামান্য কয়েক পিক্সেল পরিমান জায়গার কন্ট্রোলও যদি নিতে চান, কেবল তাহলেই HideNavBar আপনার জন্য।
এখন এটা নিয়ে অনেকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে। বলতে পারেন, ঐ সামান্য কয়েক পিক্সেল ক্লেইম করে হবেটা কি? ঐ জায়গায় তো একটা চারাও লাগানো যাবে না।
কিন্তু মনে রাখবেনঃ
necessity is the mother of invention
কারো প্রয়োজন হয়েছে বলেই মডিউলটি বানানো হয়েছে। হতে পারে আপনার স্ক্রিন ছোট, বা ঐ জায়গায় জন্য কিবোর্ড সামান্য উপরে উঠে থাকে এটা আপনার বিরক্ত লাগে।
ল্যান্ডস্কেপ রোটেশনে ঐ কয়েক পিক্সেলের জায়গা দিতে গিয়ে আমার ইয়ানডেক্স কিবোর্ডটা ছোট হয়ে যায়। তাই মডিউলটি আমার ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যায়।

ব্যাপারটা বিস্ময়কর যে এইরকম সামান্য একটা ইস্যুর জন্যও কত অসামান্য সলিউশন রুট করলে পাওয়া যায়!

Magisk Module Install/Uninstall করবেন কিভাবে?

ম্যাজিস্ক অলরেডি একটা সিস্টেমলেস টুল। এর মডিউলগুলোও একইভাবে কাজ করে। সো ডিভাইস ব্রিক করার চান্স কম। হলেও ফিক্স করা ইজি। আরো ইজি মডিউল ইনস্টল বা আনইন্সটল করা।
টার্গেট মডিউলটি খুঁজে নিয়ে install from storage থেকে ফ্ল্যাশ দিয়ে রিবুট মারলেই সেটাপ কমপ্লিট। কোনো মডিউল ভালো না লাগলে জাস্ট remove ক্লিক করলেই সেটা চিরতরে মুছে যাবে আপনার ডিভাইস থেকে।
সবসময় একটু বুঝে শুনে মডিউলস ইনস্টল দিবেন। অন্যরা একটা মডিউলে কেমন রেজাল্ট পাচ্ছে, কোথাও প্রবলেমে পড়ছে কিনা, ডেভেলপাররা কেমন সাপোর্ট দিচ্ছে এগুলো দেখবেন। কোনো magisk module কাজ না করলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সমাধান একটু অনলাইন ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন।

অব্যাহত থাকুক রুটের যাত্রা

এখনো পর্যন্ত রুট অ্যান্ড্রয়েডে যে লেভেলের কন্ট্রোল দেয় তা স্টক ভার্শনে পাওয়া যায় না। যদিও রুটের অনেক ফিচার বর্তমানে স্টক অ্যান্ড্রয়েডে চলে এসেছে, তাও রুটের যাত্রা অব্যাহত থাকবে দূর ভবিষ্যৎ পর্যন্ত।
সে অনিশ্চিত কামনায়, আজকের মত এখানেই বিদায়! ?