সাম্প্রতিককালে
বিজ্ঞানীগণ ন্যানোটেকনোলজীর দুটি মহা মহা আবিষ্কারের দিকে আকর্ষণ বোধ করছেন এবং অবিরত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ’ দুই আবিষ্কার হল-

1| ন্যানোওয়্যার (Nonowire)

2| এবং কার্বন ন্যানোটিউব(Carbon-Nano tubes)।

ন্যানোওয়্যার:

ন্যানোওয়্যার হল অতি ক্ষুদ্র ব্যাসবিশিষ্ট সরু তার (ক্ষেত্রবিশেষে এই ব্যাসের পরিমাণ ১ ন্যানোমিটার-ও হয়)। বিজ্ঞানীরা  আশা করছেন যে, কম্পিউটারসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রে ব্যবহারযোগ্য অতি ক্ষুদ্র ট্রানজিস্টর
তৈরি করা সম্ভব এই ওয়্যার দিয়ে। বিগত কয়েক বছরে কার্বন ন্যানোটিউব-এর আবিষ্কার ন্যানোওয়্যার-এর অবস্থানকে ম্লান করে একক আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে নিজ বৈশিষ্ট্যের গুণে। যদিও আমরা কার্বন ন্যানোটিউব সম্পর্কে অতি ক্ষুদ্রই জেনেছি, তবে যা জেনেছি তা আমাদের চমৎকৃত করার জন্য যথেষ্ট।

 

কার্বন ন্যানোটিউব:

কার্বন ন্যানোটিউব? কার্বন ন্যানোটিউব হল, সিলিন্ডার আকৃতিতে প্যাঁচানো গ্রাফিন (Graphene)। গ্রাফিন হল একটি কার্বন পরমাণুর সমান পুরুত্ব বিশিষ্ট একপ্রকার পাত (sheet), যার মধ্যে কার্বন পরমাণুগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে ষড়ভূজাকৃতির গঠন সৃষ্টি করে। গ্রাফিন পাতের প্যাঁচানোর পদ্ধতির উপর এই টিউবের বৈশিষ্টাবলী পরিবর্তিত হয়। ১৯৯১ সালে Dr. Sumio Iijima কার্বন ন্যানোটিউব আবিষ্কার করেন। দুইধরণের কার্বন ন্যানোটিউব পাওয়া যায়
– SWNT : Single-walled Nanotubes (একস্তর গ্রাফিন শীট বিশিষ্ট ন্যানোটিউব) এবং MWNT : Multi-walled Nanotubes (একাধিকস্তর গ্রাফিন শীট বিশিষ্ট ন্যানোটিউব)। ন্যানোটিউবের ব্যাস ১ ন্যানোমিটার (SWNT-এর জন্য) হতে ৫০ ন্যানোমিটার (MWNT-এর জন্য) পর্যন্ত হতে পারে এবং  দৈর্ঘ্য ১ মিলিমিটার-এর উপর পর্যন্ত হয়। MWNT-এর মধ্যে একস্তর হতে অপরস্তরের মধ্যে ০.৩৪ হতে ০.৩৬ ন্যানোমিটার ফাঁক থাকে।

কার্বন
ন্যানোটিউব-এর কিছু অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বিজ্ঞানীগণের মধ্যে অসীম আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে যে, স্টীলের তুলনায় SWNT ৫০ থেকে ১০০ গুণ মজবুত এবং প্রায় ৬ গুণ হালকা! ইহার স্থিতিস্থাপকতা ১১.২ টেরাপ্যাসকেল (TPa)। এই চমৎকার গাঠনিক বৈশিষ্ট্য ছাড়াও আরও কিছু বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করে পাওয়া গিয়েছে। দেখা গেছে যে, SWNT-এর তাপ পরিবাহকত্ব হীরকের তাপ পরিবাহকত্বের চাইতে দুইগুণ বেশি (উচ্চ তাপ পরিবাহকত্ব বিশিষ্ট পদার্থ হিসেবে হীরকের সুখ্যাতি আছে)।

SWNT-এর আরো একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল – ইহার বিদ্যুৎ পরিবাহিতা, যার মান প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১০৯ এম্পিয়ার-যা কিনা কপার (তামা)-এর চাইতেও ১০০ গুণ বেশি!!! শুধু তাই নয়, পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, শূন্যস্থানে ২৭০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত SWNT স্থিতিশীল অবস্থায় থাকে অর্থাৎ এর গঠনের কোনরূপ পরিবর্তন হয় না।

এখন প্রশ্ন হল যে – কি কি কাজে লাগানো যাবে এই কার্বন ন্যানোটিউবকে?

  • সেমিকন্ডাক্টর টেকনোলজীতে
  • সূক্ষ যন্ত্রপাতি তৈরিতে
  • চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমনকি টেক্সটাইল শিল্পেও
  • ননভোলাটাইল মেমোরী (Nonvolatile Memory) চিপ
    তৈরিতে এই টিউবের ব্যবহার বিশেষ লক্ষ্যণীয় ……………..

কার্বন ন্যানোটিউবের অজস্র ব্যবহার রয়েছে। ইলেক্ট্রনিক্সের জগতে এই টিউবের অপ্ররিমেয় ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্যাপক আশাবাদী

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, ন্যানোটেকনোলজীর ইতিহাস মাত্র কয়েক দশকের হলেও ইহার অগ্রগতি এবং মহা
মহা আবিষ্কার  বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। এ’প্রযুক্তি পরিণত হয়েছে বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ শাখায়। অগণিত বিজ্ঞানীদের অসীম আগ্রহ ও পরীক্ষানীরিক্ষা এই প্রযুক্তিকে দিন দিন বহুগুণ এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আর এই প্রযুক্তি মানুষের কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করার পথ দেখিয়ে চলেছে।

4 thoughts on "ন্যানোটেকনোলজী ও কার্বন ন্যানোটিউব [02] – Don’t Miss"

  1. Md Asif Khan Ridoy Subscriber says:
    Per post 5 -15 tk
    site link Tipsjani24.com
    1. Md Azizur Rahaman Contributor Post Creator says:
      এরকম কমেন্ট আর এখানে করবেন না। আমি টাকার জন্য পোস্ট করিনা। ট্রিকবিডিকে ভালো লাগে তাই এখানে পোস্ট করি। ২০১৫ সাল থেকে ট্রিকবিডির সাথে আছি, এবং ইন্সা আল্লাহ সবসময় থাকবো।
    1. Md Azizur Rahaman Contributor Post Creator says:
      ধন্যবাদ – ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।

Leave a Reply