বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

লেজার প্রযুক্তি হলো(Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation/LASER) আলোর সরু রশ্মি উৎপাদনের জন্য এমন একটি যন্ত্র, যার মাধ্যমে উৎপন্ন রশ্মি ছড়িয়ে বহুদূর অতিক্রমে সক্ষম এবং কেন্দ্রীভূত হয়ে অপরিমেয় শক্তি উৎপন্ন করতে ও সক্ষম।

বেতার তরঙ্গ অপেক্ষা একটি লেজার বীম অনেক বেশি তথ্য বহন করতে পারে। তাই বলাই যায়, এই প্রযুক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে পারে। যেখানে যেখানে লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার হয়ঃ-

  • কাটা
  • ড্রিলিং/খনন
  • ঝালাই
  • উপগ্রহ ট্র্যাকিং
  • চিকিৎসা ও জীববিজ্ঞান গবেষণায়
  • কমপ্যাক্ট ডিস্ক ও বার কোড গঠনে
  • সার্জারি ইত্যাদি কর্মকান্ডে লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।



১৯৫৮ সালে চার্লস টাউনস এবং Arthur Schawlow নামের দুই বিজ্ঞানী লেজারের ধারণাটির সূত্রপাত ঘটান। ১৯৬০ সালে Theodore Maiman প্রথম অপারেশন লেজার তৈরি করেন যাকে রুবী লেজার বলা হয়। লেজার প্রযুক্তির উৎপাদন ও তত্ত্বাবধান খুবই ব্যয়বহুল।

লেজারের সবচেয়ে ব্যাপক ব্যবহার তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারকরণ কাজে। উদাহরণস্বরূপ সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) রাইটার-এর মাধ্যমে সিডি-তে ডাটা লিখতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন লেজার ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেক সিডি পে­য়ার এবং সিডি রম ৭৮০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অল্প কয়েক মিলি-ওয়াট সম্পন্ন নিঃসরণশীল স্বল্প ক্ষমতার ডায়োড লেজার ব্যবহার করে।

ডিভিডি (Digital Versatile Disc) অপেক্ষাকৃত স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে নিঃসরণশীল এমন লেজার ব্যবহার করে, যা এমনকি উচ্চতর ঘনত্বেও তথ্যকে পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ। বাংলাদেশে এ সকল যন্ত্রের ব্যবহার উলে­খযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

দৃশ্যমান ডায়োড লেজারকে কাজে লাগিয়ে অপটিক্যাল বার কোড পাঠ করা যায়। উৎপন্ন দ্রব্য, বইপত্র, পার্সেল প্রভৃতির গায়ে ছাপানো বার কোড দ্রুত পড়ার ক্ষেত্রে লেজার প্রযুক্তি ব্যবহূত হয়।

অপটিক্যাল যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি পাতলা সিলিকা অপটিক্যাল ফাইবারের ভিতর একটি মড্যুলেটেড লেজার বীমকে দীর্ঘ দূরত্বের মধ্যে তথ্য প্রেরণ করতে ব্যবহার করা হয়। প্রতি অপটিক্যাল ফাইবারে তথ্য প্রেরণ হার প্রতি সেকেন্ডে কয়েক হাজার মেগাবাইট।

লেজার প্রযুক্তি প্রথম থেকে ব্যবহার করা হয়েছে শল্য চিকিৎসা ও চক্ষুরোগ চিকিৎসায়। আর্গন লেজার দ্বারা উৎপাদিত উচ্চ ক্ষমতাকে ব্যবহার করা যেতে পারে চোখের রেটিনা পুনঃসংযুক্ত করা বা এর ধমনী/শিরাগুলোর রেটিনোপ্যাথি চিকিৎসায়।

পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নশাস্ত্র এবং জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণায় লেজার প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়। পদার্থবিজ্ঞানে  হিলিয়াম-নিওন লেজারের একত্রিত আলোকরশ্মি গুচ্ছকে (coherent beams) ব্যবহার করা যেতে পারে একটি বস্ত্তর সত্যিকারের ত্রিমাত্রিক ছবি (হলোগ্রাম হিসেবে পরিচিত) নিতে।

বাংলাদেশে লেজারের ব্যবহার যদিও আপেক্ষিকভাবে সাম্প্রতিক এবং সীমিত, তবে এর ব্যবহার দ্রুত লয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা প্রত্যাশিত যে, এই প্রযুক্তির অনেক নতুন ও উত্তেজনাকর প্রয়োগ ভবিষতে সম্ভব হবে।

4 thoughts on "লেজার প্রযুক্তি – বিজ্ঞানের একটি অসাধারণ উদ্ভাবন"

    1. Md Azizur Rahaman Contributor Post Creator says:
      ধন্যবাদ – ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।
    1. Md Azizur Rahaman Contributor Post Creator says:
      ধন্যবাদ – ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।

Leave a Reply