লেখাটি তীর্থেরকাক নামে এক ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেয়া ।

আমার ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্তে আমার বাবা
আমাকে অনেক মেরেছিলেন। বড়দা হাত-পা বেঁধে
ঘরে আটকে রাখলেন। মা অনেক কাঁদছিল। বারংবার
বলছিল পাগলামো না করতে।
কিন্তু পাগলামো থামার কোন কারণ ছিল না।
নিরানব্বই জন পাগলের মধ্যে একজন সুস্থ ব্যাক্তিই
পাগল হিসেবে গণ্য হয়, এটাই স্বাভাবিক।
পাগলামো শুরু আমার নবম শ্রেণী থেকেই। খুব ঝোঁক
ছিল খ্রিষ্ট ধর্মের প্রতি। যদিচ এই ঝোঁক সৃষ্টির
কারণ ছিল এক খ্রিষ্টান মিশনারী, চট্রগ্রামের
সেইন্ট প্লাসিডস স্কুলে যার সাথে পরিচয়।
আল্লাহ যাকে সাহায্য করতে চান শয়তান দ্বারাও
সাহায্য করাতে পারেন। হ্যাঁ, সেই পাদ্রীই
সর্বপ্রথম আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমার বাপ-
দাদার সনাতন ধর্মকে বানোয়াট প্রমাণ করিয়ে
দেন।
একত্ববাদে বিশ্বাসের ভূত মাথায় সেখানেই
চাপে।
খ্রিষ্ট ধর্মের খুবই কাছে চলে যাই।
আমার এস.এস.সি পরীক্ষা ছিল সামনে।
পাঠ্যপুস্তকের ৯৯%-ই নতুন, ওদিকে আমার হাতে
বাইবেলের পিডিএফ। সত্য অনুসন্ধান না করে ঘুম
নেই।
ছোটবেলা থেকে প্রথম সারির ছাত্র হয়েও
যথারীতি রেজাল্টটা খারাপ হল।
হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। শুরু হল কলেজ জীবন।
খ্রিষ্ট ধর্মেও মনে খুঁতখুঁত লাগছিল।
ধর্ম একটা অথচ ধর্ম গ্রন্থের এতগুলো ভার্সন কেন!
তবে ইসলামের ভাষ্য কি সঠিক যে, বাইবেল
ইঞ্জিলেরই বিকৃত রূপ?

উফফ… অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম এসবে।
ইচ্ছে করত আত্মহনন করে আসল সৃষ্টিকর্তা কে ওপর
থেকে দেখে আসি।
এরমধ্যে একটা বই পেলাম “বাইবেল-কুরান এবং
আধুনিক বিজ্ঞান”। বইটা ডা. মরিস বুকাইলির-
যিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন গবেষণা করে।
নিরপেক্ষ মস্তিষ্কে বইটা পড়লাম।
ইসলামের অনেকিগুলো নিদর্শনে ক্রস কোশ্চেন করা
গেলেও কিছু নিদর্শনে হতবাক হয়ে গেলাম। যেমন,
দু’শ বছর পূর্বে পাওয়া ফিরাউনের মমি সংরক্ষণের
ভবিষ্যদ্বাণী ১৪০০ বছর পূর্বে রচিত কুরানে
(১০ঃ৯২)।
তাছাড়াও পুরো বইটা নিরপেক্ষ মস্তিষ্কে পড়ে
আমাদের কাছে পরিষ্কার হল কুর’আন কোন মানব
রচিত ধর্মগ্রন্থ হতে পারে না।
আগে ডা. জাকির নায়েক লোকটাকে দেখতে পারতাম
না।
খ্রিষ্টান পাদ্রী ডা. উইলিয়াম ক্যাম্পবেইলের
সাথে বিতর্কের অনুষ্ঠান দেখে জাকির নায়েকের
ভক্ত হয়ে গেলাম। নিঃসন্দেহে ইসলামই সত্য।
ততদিনে আমার এইচ.এস.সি পরীক্ষা দরজায় কড়া
নাড়ছে। এদিকে আমাদ্বারা অসম্ভব ইসলাম
ব্যাতিত অন্য কোন ধর্ম পালন।
মা’কে বললাম। সেদিনই আমাকে বাড়িতে বাবা,
বড়’দা সবাই খুব মারল। পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা
করলাম। রেজাল্টটা ভাল না হওয়াটাই স্বাভাবিক
ছিল, তাই হল।
অতঃপর আমি প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণ করলাম। আমার
ঘরে আর আমার স্থান হল না। হয়ত তাদের ভগবান
বুরা মানবেন আমি মুসলমান যদি সেথায় থাকি।
চোখ মুছতে মুছতেই ঘর ত্যাগ করলাম, কেননা
ইসলাম ত্যাগ আমাদ্বারা অসম্ভব। মা’র জন্যে
বেশি কষ্ট হচ্ছিল। মা যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন
আমাকে বাড়িতে রাখতে। আসলেই মা জিনিসটাই
আলাদা।
তারপর মেসে উঠলাম চকবাজারে।
হাতে একটা কানাকড়িও নাই।
জানিনা কিভাবে চলব, কিভাবে খাব- পরব।
সিজদায় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলাম।
মাধ্যমটা বলতে চাই না।
দৈবভাবেই হাতে দুটো টিউশনি পেলাম।
টিউশনির অফার পাবার পর কুরান খুলতেই একটা
আয়াত চোখে পড়ল।
“বিশ্বাসীদের কোন চিন্তা নেই, তাদের অভিভাবক
এবং সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।”
সত্যি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হল।
আজ আমার মা-বাবা-ভাই-বোন কেউ পাশে নেই।
তবে সত্যিই উপরের আল্লাহ আমাকে শুনছেন,
দেখছেন। তিঁনিই যথেষ্ট এ জীবনের জন্য।
আজও জানি না আগামী মাস কিভাবে চলব। তবে
জানি আমার অভিভাবক আল্লাহই আমার ব্যাবস্থা
করে দেবেন।”
– উপরিউক্ত কথাগুলো আমায় গতকাল একজন
রিভার্টেড ভাই বললেন।
আমি নিজের ভাষায় উল্লেখ করলাম মাত্র। পূর্বের
নাম “সজীব দে”, বর্তমান নাম “মুহাম্মদ সজীব
আহমেদ”। তার সাথে পরিচয় ফেসবুকে। এখন তিনি
মহসিন কলেজে অনার্সে পড়ছেন।
দেশের বৃহৎ সাইন্স ওয়েবে যুক্ত হন

3 thoughts on "একজন নও-মুসলিম এর কাহিনী । একত্ববাদ (আল্লাহ) বিশ্বাস । সব ধর্মের উপর গবেষনা করে ইসলাম বেছে নিলেন!"

  1. rupok12 Contributor says:
    সুবহানাল্লাহ।
  2. 1Fahim786 Contributor says:
    subhanallah

Leave a Reply