আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ !
সুপ্রিয় পাঠক , সরাসরি সহিহ বুখারী শরীফ থেকে বর্ণনা করছি ।
একদিন মদিনার মসজিদে আগমন ঘটলো এক পথিকের । গায়ে ধবধবে সাদা পােশাক। গভীর কালাে চুল। মহানবীর সাক্ষাতে এসেছেন। সঙ্গে একগুচ্ছ প্রশ্ন !
[ হজরত ওমর (রা.) বলেন, “আমরাও নবীজিকে ঘিরে বসে আছি।”]
অপরিচিত পথিক এসে নবীজির সামনে বসলেন। চোখে মুখে খুশির আমেজ। চেনা চেনা মুখ তবুও অচেনা। গায়ে মরুভূমির ধূলাবালির ছিটেফোটাও নেই !!! হাটুঘেরে নবীজির সামনে বসলেন । ঠিক যেন নামাজের বসা ।
পথিক বললেন,” হে মুহাম্মদ! ইসলাম কী? আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন !”
মুখ খুললেন নবীজি!
বললেন, ” ইসলাম হচ্ছে তুমি সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, নামাজ কায়েম করবে,
যাকাত দিবে, রমজানের রােজা পালন করবে এবং হজ্বে যাওয়ার সামর্থ্য থাকলে হজ করবে!”
[ বুখারী]
পথিক বললেন, ” প্রশ্নের জবাবে চমৎকার বলেছেন আপনি! ”
[হজরত ওমরসহ সাহাবারা ঘটনা দেখছে বিস্মিত হচ্ছে। মহানবীকে প্রশ্ন, আবার সেই জবাবের শৈল্পিক সত্যায়ন!]
অবাক হচ্ছেন সাহাবারা। আবারও পথিকের প্রশ্ন!
” ঈমান কাকে বলে! আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন? ”
অবাক সাহাবারা! পথিক আবারও বললেন,
” প্রশ্নের জবাবে চমৎকার বলেছেন আপনি! (পথিকের নতুন প্রশ্ন!)
” ইবাদতের পূর্ণতা লাভ হবে কিভাবে? আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন!”
নবীজি বললেন, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করাে, যেন তুমি আল্লাহ তায়ালাকে দেখছাে। যদি তুমি আল্লাহকে নাও দেখাে, মনের কোণে বদ্ধমূল। রাখাে নিশ্চিয় আল্লাহ তায়ালা তােমাকে দেখছেন। চমৎকার উত্তর, ” বললেন পথিক! পথিকের শেষ প্রশ্ন! কেয়ামত কবে হবে? আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন! ”
নবীজি থেমে গেলেন !
বললেন, “এ বিষয়ে আপনিই আমার চেয়ে বেশি
অবগত !!!”
বেচারা পথিক বললেন,” ঠিক আছে, কেয়ামত
বাদ রাখুন, তাহলে কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে বলুন?
নবীজি বললেন, ” বাদির সন্তানেরা ক্ষমতাধর
হবে, অসহায় গরীবেরা সুউচ্চ প্রাসাধ নিমার্ণে
প্রতিযােগিতা করবে!”
” বাহ! আপনি খুবই অসাধারণ
বলেছেন” -বললেন পথিক।
সাক্ষাৎকার পর্ব এখানেই শেষ! হজরত ওমর মন্ত্রমুগ্ধের মতাে সব শুনলেন।
নবীজি বললেন, “হে ওমর! জানাে এই পথিক কে?”
ওমর বললেন,” আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রাসুলই(সাঃ) ভালাে জানেন!
নবীজি মৃদু হেসে বললেন,
“সে অচেনা পথিক নয়। তিনি ওহির বাহক হযরত জিবরাঈল (আ.)!!! এসেছিলেন তােমাদের দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য!”
আল্লাহু আকবার !!!
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এতো সুন্দর প্রশ্নত্তর থেকেই আমরা সহজেই সম্পূর্ণ রূপে জানতে পারি ইসলাম কি , ইমান কি , কীভাবে এবাদত করলে এবাদত কবুল হবে ! সব কিছুই ।
তিনি কিয়ামতের একটি বড় আলামত সম্পর্কেও বলেন যেটি থেকে স্পষ্ট ও বোধগম্য ।
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন !
ইনশাআল্লাহ ! আবার দেখা হবে ।
আল্লাহাফেজ ।
2 thoughts on "বিষ্ময়কর এক পথিকের সাথে নবী করীম (সাঃ) এর সাথে কথোপকথন এবং রাসুল (সাঃ) এর সুন্দর প্রশ্নত্তর !"