আ স্টোরি আ কজ, আ টিন, এই তিনে মিলে যখন কোন সিনেমা কে প্রতিনিধিত্ব করে, তখন দাড়ায় আ হেভি ফিল্ম।
এখন কোন সিনেমার ভারততত্ত্ব তার সাফল্য কে নির্ধারণ করে সেটা বলছি না। বরং তার চেয়ে শুরু করি আজকের মুভি রিভিউটি।
আজকের পোস্টে একটি তামিল ফিল্ম বিক্রম।
বিক্রম নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের একটু ব্যাক স্টোরি জানা প্রয়োজন, আর তার জন্য আপনাকে দেখতে হবে ২০১৯ সালের *কাইতি* সিনেমাটি।
উইশিস আলসো তামিল ভাষা ফিল্ম, কিন্তু এই সিনেমা না দেখলে আপনি বিক্রম বুঝবেন না বা দুইটা দুইটার উপর নির্ভরশীল তা কিন্তু নয়।
এই দুইটা সিনেমা আপনি বিচ্ছিন্নভাবেও দেখতে পারবেন, আপনাকে কাহিনী বুঝতে কোন অসুবিধা হবে না।
এজন্য কাইথি কে আসলে সরাসরি বিক্রমের শিকুআল না বলে ফিকুআল বলা যেতে পারে। তো চলুন শুরু করি কাইথীর গল্প দিয়ে।
কাইথি সিনেমাটি আসলে এক রাতের গল্প নিয়েই নির্মিত। একই সাথে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। কোনোটি ভালোবাসার কোনোটি রহস্যের কোনোটি আবার দুঃখের তবে সবগুলো গল্পই এক সূত্রে গাথা।
এখন আসি গল্প যেটা, যেটা আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে সেই ঘটনাটিতে, একটি মাদক চালান বিশাল বড় একটা ড্রাক কন্সাইনমেন্ট ধরা পড়েছে পুলিশের কাছে।
তবে এটা যেন তেন ড্রাক কন্সাইনমেন্ট না কয়েক লক্ষ কোটি টাকার মাদকের মেটেরিয়াল ধরা পড়েছে।
এখন যেই পুলিশ ধরেছে সেটি হচ্ছে পাঁচজনের একটি পুলিশের দল, এই পুলিশদেরকে ধরার জন্য সেই শীর্ষ সন্ত্রাসী গুলো পুরস্কার ঘোষণা করেছে বড়সড় পুরস্কার।
তবে মাদকের কেসাইনমেন্ট নিয়ে আরেকটু বলি, এই মাদকের ক্যান্টসনম্যান্ট কিন্তু এই কাইথি সিনেমা যেখানে শেষ সেখানেই কিন্তু বিক্রমের শুরু এবং এটা আপনাকে এই সিনেমা থেকে সেই সিনেমা টেনে নিয়ে যাবে।
যাইহোক যে মাদকের ক্যান্টসনম্যান্ট এর কথা বলছিলাম, এই ক্যান্টসনম্যান্ট এর সাথে জড়িত উচ্চ পদের কিছু কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দেশের ভয়ংকর সব অপরাধী।
এই অপরাধী রাই এক সময়, এই পুলিশকে ধরার জন্য যে চোর পুলিশের খেলা চলতে থাকে। তার সঙ্গে ঘটনা ক্রমে জড়িয়ে পড়ে এক প্রিজিনার অর্থাৎ তামিল ভাষায় যেটাকে বলা হচ্ছে কাঁইথি।
এইপিজিনার অর্থাৎ জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সদ্য এক আসামিকে নিয়ে চলতে থাকে এই সিনেমার গল্প।
কাইথির গল্প আমরা এর চাইতে বেশি এগোবনা বাকিটা আপনারা সিনেমাতেই দেখে নিবেন।
আমরা এবার সরাসরি চলে আসি বিক্রমের গল্পতে।
গল্পের শুরুতে আপনাকে নির্মাতা কিছুটা হতাশ করতে পারে। আপনার মন ভেঙে যেতে পারে তবে আপনি যদি ধৈর্য ধারণ করতে পারেন। তাহলে আপনার সামনে অনেক বড় বড় চমক অপেক্ষা করছে।
হতে পারে যে বিষয়টি নিয়ে আপনি মন খারাপ করেছিলেন, সেটি আপনার ভুল ভাঙতেও পারে। একশন থ্রিলার এর এই সিনেমায়। গল্পের শুরুতেই দেখা যায় একটি সিরিয়াল কিলিয়ারের দল সরকারের কিছু, প্রশাসনের কিছু পাওয়ারফুল কর্মকর্তা কে খুন করছে এবং সেটা ভিডিও ধারণ করে পুলিশকে পাঠাচ্ছে।
এখন এই খুনগুলোর তদন্ত করার জন্য ডাক পড়ে আন্ডার কভার এজেন্টের একদলের, যার কমান্ডিং অফিসার হচ্ছে অমর যে কিনা যেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফাহাদ ফাজিল।
ফাহাদ ফাজিলকে নিয়ে একটু আলাদা করে বলে রাখি, ফাহাদ ফাজিল খুবই দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন অমর চরিত্রে।
এনি ওয়ে আমরা গল্পে ফিরে যাই।
ওমরের কথা বলছিলাম ওমর যখন এই খুনের তদন্ত করতে যায়, তখন দেখে যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে একজন ভিকটিম একটু অড। যাদেরকে খুন করা হয়েছে তারা প্রশাসনের পাওয়ার ফুল কর্মকর্তা বা পুলিশ অফিসার।
তাহলে এর মধ্যে একজন সাধারণ বয়স্ক ব্যক্তিকে কেন খুন করা হলো?
যার এরকম কোন ব্যাকগ্রাউন্ড নেই মানে পাওয়ার ফুল কোন ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, ইনফ্যাক্ট তিনি ৬৭ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ এবং তাকে এত নির্মমভাবে কেন খুন করা হবে?
তিনি আবার খুন হওয়া আরেক ভিকটিম পুলিশ অফিসার প্রভাব জানের বাবা। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই অমর অর্থাৎ প্রভাব জান এর বাবা এর কথা বলছিলাম ওই সেই সাধারণ ব্যক্তির জীবন তদন্তে লেগে পড়েন।
এরপরই বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক টুইস্ট।
ওদিকে আবার যেই মাদকের চালানোর গল্প আমরা ফেলে এসেছিলাম সেখান থেকে শুরু করি।
এই মাদকের চালান খুঁজছে বিশাল এক শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের একদল, এই গ্রুপের যিনি লিডার তার নাম থাকে হচ্ছে ছানদানান, এই চরিত্রে অভিনয় করেছে বিজয়।
কোন ভিলেন চরিত্র কে যদি মডিফাই করে দেখানোর উদাহরণ টানতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই তামিল সিনেমাকেই টানতে হবে।
এই সিনেমাতেও ঠিক সেভাবে গ্লোরিফাই করে দেখানো হয়েছে। বিজয় সেতু পাতির ক্যারেক্টার কে।
তিনি যতবার স্ক্রিনে এসেছেন ততবার তার দুর্দান্ত অ্যাক্টিং এ ইনফ্যাক্ট যদি আমরা বলি তথাগত সুদর্শন না হয়েও, শুধুমাত্র দারুন এক্সপ্রেশন আর চোখের ভাষা দিয়ে তিনি যে দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। যেটা কোন হিরোকে নিয়েও হয়তো তৈরি হয়নি। সেটার উদাহরণ হতে পারে বিজয়।
এই সিনেমায়ী ও তিনি কিন্তু সেটার প্রভাব এবং ছাপ কিন্তু ফেলে গেছেন।
ইনফ্যাক্ট তার যে গোল্ডেন টুথ অর্থাৎ সোনার দাঁতের যে রহস্য আছে সেটা আপনি সিনেমা দেখলেই জানতে পারবেন।
এটা কিন্তু দর্শকের মধ্যে অনেক বেশি ফ্যাসিনেশন সৃষ্টি করে।
সিনেমাটি যেহেতু রহস্য আর টুইস্টে ঠাসা সেহেতু এর চাইতে বেশি গল্প না বলি তাহলে আপনাকে স্পয়লার দেওয়া হয়ে যেতে পারে। তবে এতটুকু বলতে পারি এটা আসলে গতানুগতিক একশন কিংবা হিরোএজিম এর গল্প নয়।
আমার কাছে মনে হয়েছে সমাজে যে মাদকের একটা নীতি বাচক প্রভাব রয়েছে, এবং তাদের শুধু একদল অসাধু ব্যবসায়িকের মধ্যেই এই মাদক ব্যবসা সীমাবদ্ধ না।
ঠিক চেনের মতো প্রতিটি গিট্টুতে রয়েছে একজন করে মাথা এবং তা আপনাকে একদম উপর পর্যন্ত নিয়ে যাবে, একদম উচ্চ পদর্য কর্মকর্তা পর্যন্ত কিন্তু বিস্তৃত।
এই বিশাল মেসেজটি সিনেমায় দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, এছাড়া তামিল সিনেমায় ইমোশনাল জে সিন সেটা তো আছেই।
আপনাকে বাবার দৃষ্টিকোণ থেকে একজন ছেলের দৃষ্টিকোণ থেকে একজন দাদার দৃষ্টিকোণ থেকে আবেগ আপ্লুত করতে শতভাগ সফল হবে এই সিনেমাটি।
কিছু বিষয় নিয়ে আলাদা করে বলতে চাই সেটি হচ্ছে – সিনেমার মাঝামাঝিতে এসে একটি স্পয়লার দিয়ে দেওয়া হয়। তবে আপনি যেহেতু সিনেমা অর্ধেক পর্যন্ত দেখে ফেলেছেন বাকিটা দেখবেনই।
তবে আমার কাছে মনে হয়েছে এই স্পয়লারটা যদি তখন না দেওয়া হতো আর একটু পরে ডেলিভারি করা হতো তাহলে আরো মজা হত।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সিনেমায় একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। আমরা জানি তামিল সিনেমায় একশন মিউজিক বা রোমান্টিক মিউজিক খুবই সুন্দর হয়।
ব্রাকগ্রাউন্ডে আবহের সঙ্গে যেটা চলতে থাকে, তবে এই সিনেমায় আলাদা করে নজর কাটবে হচ্ছে ক্যারেক্টারগুলোর এন্ট্রি তে।
কমল হাসান যখন স্ক্রিনে ছিলেন বা বিজয় যখন স্ক্রিনে ছিলেন, তখন ইংলিশ কিছু গান চলেছে যা খুবই আইকেচি লেগেছে।
তবে গানগুলো অসাধারণ যেটা আবহাওয়া সংগীতের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেমার ফাইট সিকোয়েন্সি গুলো অসাধারণ লেগেছে তামিল সিনেমার ফাইট সিকোয়েন্স আসলে খুবই নিখুঁতভাবে করা হয়।
অনেক সময় অবাস্তব অনেক বিষয় থাকে কিন্তু এখানে একটি বিষয় আমার নজর কেড়েছে একটি দৃশ্য ফাইট সিকুয়েন্সির সাথে ক্যামেরার একটা খুব দুর্দান্ত কজ ছিল যা সচরাচর কোন সিনেমায় আমি দেখে থাকি না খুবই ইউনিক কাজ ছিল এটি।
এবং একটি দর্শকের নজর কাটবে দর্শকের স্ক্রিন থেকে ওই সময় অন্তত চোখ সরাতে দিবে না।
আলাদা করে বলতে চাই অভিনেতা কমল হাসানের কথা।
যিনি দীর্ঘদিন পদ্মায় ছিলেন না এবং তিনি পর্দায় ফিরেই আসলে দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসলে কি মাপের অভিনেতা।
বিক্রম সিনেমার এক অংশ টেনে নিয়ে গিয়েছে কমল হাসান নিজেই, এবং কোন দৃশ্যই তার বয়স কিন্তু কোন বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি, এবং এখানে আমার মনে হয় একজন অভিনেতার সফলতা।
আরেকটি বিষয়ে আপনাকে বলে রাখি যে সিনেমার শেষে আপনার জন্য একটি বড় সরল চমক অপেক্ষা করছে। যা আপনাকে বিক্রমের পরবর্তী পর্বের জন্য মনে ঝালাফালা করে তোলার জন্য সক্ষম এটা আমি হলফ করে বলতে পারি।
সবশেষে বলতে চাই টাকা অংকে সুপারহিট হয়তো নিশ্চিত হয়েছে, কিন্তু কেজিএফ বা পুষ্পার মত যুব সমাজের উপর প্রভাব কেন পড়েনি? এর কারণ হিসেবে আপনি ধরে নিতে পারেন। এখানে যদি কমল হাসানের বদলে ইয়াং কোন আইকন কে নেয়া হতো তাহলে হয়তো আরো বেশি আলোড়ন সৃষ্টি হতো।
আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরো বেশি আলোচনা শুনতেন, এছাড়াও এর সঙ্গে যদি জুড়ে দেয়া হতো অতিরঞ্জিত মসলা, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে *বিক্রম* সিনেমাটি আসলে সে রকম কোন প্রভাব ফেলতে চাইনি যুবসমাজ এর উপর।
একটা যে মাদকের নিতিবাচকতা, এবং বীরত্ব সততা এই ব্যাপারগুলোকে প্রমোট করা হয়েছে *বিক্রম* সিনেমাটিতে।
আগেই বলে রাখি এতক্ষণ ধরে যা পড়েছেন সব আমার নিজের ব্যক্তিগত মন্তব্য, তাই আপনার ব্যক্তিগত মন্তব্য থাকতেই পারে সেটি আমাদেরকে জানাতে পারেন তবে সেজন্য আপনাকে দেখতে হবে *বিক্রম* সিনেমাটি।
Contract Facebook: Click hereআজকের মত এখানে ই শেষ করছি আশা করছি খুব শিগগিরই নতুন কিছু নিয়ে হাজির হচ্ছি সেই পর্যন্ত সাথেই থাকুন ট্রিকবিডির ধন্যবাদ।❤️
arektu shajiye likhte hbe! ki likhchen sheta ekbr porben. jekhane jekhane aproshongik mone hbe, rewrite it!
এর থেকে কাইথি মুভি অনেক ভালো।